ঢাকা ০৯:১১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
উজা‌নের ঢল ও বিরামহীন বর্ষণ

রংপুরে বন্যায় ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দি

কামরুল হাসান টিটু, রংপুর ব‌্যু‌রো
  • Update Time : ০৪:৫৬:১০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • / ৪ Time View

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও বিরামহীন বর্ষণে তিস্তা নদীর পানি এখন বিপদসীমার ওপর দিয়ে বইছে।অ‌তিমাত্রায় বৃ‌ষ্টির প্রভা‌বে অর্ধশতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়ে অন্তত ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।

রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে তিস্তার পানি রংপুরের কাউনিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ৩৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, টানা বৃষ্টি আর উজানের ঢলের কারণে ভয়ংকর রূপ ধারণ করেছে তিস্তা। পানি বৃদ্ধি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রংপু‌রের তিস্তার আশপাশের এলাকা গংগাচড়া উপজেলার লক্ষ্মীটারী, কোলকোন্দ, গজঘণ্টা, আলমবিদির, নোহালী, কাউনিয়া উপজেলার বালাপাড়া, মধুপুর, হারাগাছ, ঢুসমারা, শহীদবাগের গান্নার চর, পীরগাছা উপজেলার ছাওলা, পাওটানার প্রায় ৫০টি গ্রামের ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। অনেক রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। বন্যার আতঙ্কে এসব এলাকার মানুষের নির্ঘুম রাত কেটেছে।

চরম দুর্ভোগে পড়ছে বানভাসি মানুষগুলো। পানিবন্দি পরিবারগুলো খেয়ে না খেয়ে দিনাতিপাত করছে। আর এই নিয়ে ৮ম বারের মতো বন্যার কবলে পড়ল তিস্তাপাড়ের মানুষ।

পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, দুপুরের দিকে পানি সামান্য কমলেও সন্ধ্যা থেকে তিস্তার পানি আবারও বাড়বে। তাই চরাঞ্চলবাসীকে সর্তক থাকতে বলা হয়েছে। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে নিয়ে ইতোমধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সবার ছুটি বাতিল করা হয়েছে। সবাই এখন যে যার স্থানে দায়িত্ব, সেই স্থানে দায়িত্ব পালন করছেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা।

গংগাচড়া উপজেলার ইউপি সদস্য মনোয়ারুল ইসলাম বলেন, গত কয়েকদিন থেকে যে বন্যা ও পানির আশঙ্কা করা হয়েছিল তাই হয়েছে। এ বিষয়ে প্রশাসনের খুব বেশি তৎপরতা লক্ষ্য করা যায়নি। হয়তো এখন আসবে, খোঁজখবর নেবে। আমরা জনপ্রতিনিধি হিসেবে কী করতে পারি, প্রশাসন বরাদ্দ দিলে তখন আমরা বানভাসি মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারি।

কাউনিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মহিদুল হক বলেন, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় কয়েক দফা মিটিং করা হয়েছে। ইতোমধ্যে প্লাবিত এলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে সবসময় কথা হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ত্রাণ বিতরণসহ অন্যান্য বিষয়গুলো নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পর্যাপ্ত ত্রাণ রয়েছে। এছাড়াও আশ্রয় কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত করা হয়েছে। প্রধান শিক্ষকদের সঙ্গে কথা হয়েছে। প্রয়োজন হলে আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিতে পারবে। অন্যান্য বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করা হচ্ছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড রংপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম জানান, তিস্তার কাউনিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ৩৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহ হচ্ছে। যা রাতে আরও বাড়বে। তাছাড়া পানি বাড়ায় তিস্তা সংলগ্ন নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বিষয়গুলো নিয়ে সবসময় মনিটরিং করা হচ্ছে। যাতে রাস্তা ঘাট, ব্রিজ ভেঙে না যায় সেই বিষয়গুলো মাথায় রেখে কাজ করা হচ্ছে।

Please Share This Post in Your Social Media

উজা‌নের ঢল ও বিরামহীন বর্ষণ

রংপুরে বন্যায় ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দি

কামরুল হাসান টিটু, রংপুর ব‌্যু‌রো
Update Time : ০৪:৫৬:১০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও বিরামহীন বর্ষণে তিস্তা নদীর পানি এখন বিপদসীমার ওপর দিয়ে বইছে।অ‌তিমাত্রায় বৃ‌ষ্টির প্রভা‌বে অর্ধশতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়ে অন্তত ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।

রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে তিস্তার পানি রংপুরের কাউনিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ৩৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, টানা বৃষ্টি আর উজানের ঢলের কারণে ভয়ংকর রূপ ধারণ করেছে তিস্তা। পানি বৃদ্ধি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রংপু‌রের তিস্তার আশপাশের এলাকা গংগাচড়া উপজেলার লক্ষ্মীটারী, কোলকোন্দ, গজঘণ্টা, আলমবিদির, নোহালী, কাউনিয়া উপজেলার বালাপাড়া, মধুপুর, হারাগাছ, ঢুসমারা, শহীদবাগের গান্নার চর, পীরগাছা উপজেলার ছাওলা, পাওটানার প্রায় ৫০টি গ্রামের ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। অনেক রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। বন্যার আতঙ্কে এসব এলাকার মানুষের নির্ঘুম রাত কেটেছে।

চরম দুর্ভোগে পড়ছে বানভাসি মানুষগুলো। পানিবন্দি পরিবারগুলো খেয়ে না খেয়ে দিনাতিপাত করছে। আর এই নিয়ে ৮ম বারের মতো বন্যার কবলে পড়ল তিস্তাপাড়ের মানুষ।

পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, দুপুরের দিকে পানি সামান্য কমলেও সন্ধ্যা থেকে তিস্তার পানি আবারও বাড়বে। তাই চরাঞ্চলবাসীকে সর্তক থাকতে বলা হয়েছে। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে নিয়ে ইতোমধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সবার ছুটি বাতিল করা হয়েছে। সবাই এখন যে যার স্থানে দায়িত্ব, সেই স্থানে দায়িত্ব পালন করছেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা।

গংগাচড়া উপজেলার ইউপি সদস্য মনোয়ারুল ইসলাম বলেন, গত কয়েকদিন থেকে যে বন্যা ও পানির আশঙ্কা করা হয়েছিল তাই হয়েছে। এ বিষয়ে প্রশাসনের খুব বেশি তৎপরতা লক্ষ্য করা যায়নি। হয়তো এখন আসবে, খোঁজখবর নেবে। আমরা জনপ্রতিনিধি হিসেবে কী করতে পারি, প্রশাসন বরাদ্দ দিলে তখন আমরা বানভাসি মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারি।

কাউনিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মহিদুল হক বলেন, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় কয়েক দফা মিটিং করা হয়েছে। ইতোমধ্যে প্লাবিত এলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে সবসময় কথা হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ত্রাণ বিতরণসহ অন্যান্য বিষয়গুলো নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পর্যাপ্ত ত্রাণ রয়েছে। এছাড়াও আশ্রয় কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত করা হয়েছে। প্রধান শিক্ষকদের সঙ্গে কথা হয়েছে। প্রয়োজন হলে আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিতে পারবে। অন্যান্য বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করা হচ্ছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড রংপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম জানান, তিস্তার কাউনিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ৩৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহ হচ্ছে। যা রাতে আরও বাড়বে। তাছাড়া পানি বাড়ায় তিস্তা সংলগ্ন নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বিষয়গুলো নিয়ে সবসময় মনিটরিং করা হচ্ছে। যাতে রাস্তা ঘাট, ব্রিজ ভেঙে না যায় সেই বিষয়গুলো মাথায় রেখে কাজ করা হচ্ছে।