ঢাকা ১১:৪৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজঃ
ঢাবির ব্যবসায় শিক্ষা ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষা শুরু বাবরি মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন হচ্ছে, নিরাপত্তা জোরদার ঢাকা প্রেস ক্লাব নির্বাচনে সভাপতি শাহীন, সম্পাদক বাচ্চু মার্কিন হামলার আশঙ্কায় ভেনেজুয়েলাজুড়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা ভারতে নিরবচ্ছিন্ন তেল সরবরাহে প্রস্তুত রাশিয়া : পুতিন খালেদা জিয়ার এন্ডোসকপি সম্পন্ন, বন্ধ করা গেছে পাকস্থলির রক্তক্ষরণ গণতন্ত্রের পুনরুজ্জীবনে নিরলস সংগ্রাম অব্যাহত রাখতে হবে: তারেক রহমান ৮ দলের নয়, ১৮ কোটি মানুষের বিজয় চাই : জামায়াত আমির প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের ‘শাটডাউন’ কর্মসূচি স্থগিত বেগম জিয়ার অসুস্থতার সঙ্গে নির্বাচনের কোনো সম্পর্ক নেই

রংপুরে কৃষি সাফল্য: এক দশকে আমনের আবাদ বেড়েছে ৩৭ হাজার হেক্টর জমিতে

আলমগীর হোসেন অপু, রংপুর জেলা প্রতিনিধি
  • Update Time : ০৬:২৮:১৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ৬ অক্টোবর ২০২৫
  • / ১৪১ Time View

রংপুর অঞ্চলে আমন ধানের আবাদ প্রতিবছরই বাড়ছে। গত ১০ বছরে আমনের আবাদ বেড়েছে ৩৭ হাজার হেক্টরের বেশি জমিতে। উৎপাদন বেড়েছে ৬ লাখ মেট্রিক টনের বেশি। রংপুরে চলতি মৌসুমে আমন ধানের বাম্পার ফলনের আশা করা হচ্ছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রাও ছাড়িয়ে গেছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার আমন ধানের চাল উদ্বৃত্ত থাকবে বলে আশা প্রকাশ করছেন কৃষি বিশেষজ্ঞরা। উদ্বৃত্ত চাল দেশের অন্য জেলার চালের চাহিদা মেটাতে সহায়তা করবে।

রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালে রংপুর, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, নীলফামারী ও গাইবান্ধা জেলায় আমন ধানের আবাদ হয়েছিল ৫ লাখ ৮৫ হাজার ৬১৩ হেক্টর জমিতে। উৎপাদন হয়েছিল ১৪ লাখ মেট্রিক টনের বেশি। এবার আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৬ লাখ ২০ হাজার ৪৩০ হেক্টর জমিতে। এবার লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে আবাদ হয়েছে ৬ লাখ ২১ হাজার ৫০৫ হেক্টর জমিতে। এই পরিমাণ জমি থেকে উৎপাদন হবে ২০ লাখ ১০ হাজার ৪০৫ মেট্রিক টন। দেখা গেছে, গত ১০ বছরে উৎপাদন বেড়েছে ৬ লাখ মেট্রিক টনের ওপরে।

২০২৩ সালে রংপুর অঞ্চলের ৫ জেলায় আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬ লাখ ১৪ হাজার ৪০০ হেক্টর জমিতে। সেখানে আবাদ হয়েছিল ৬ লাখ ১৬ হাজার ৬৬২ হেক্টর। প্রতি হেক্টরে গড় উৎপাদন ধরা হয় ৩ মেট্রিক টনের কিছুটা বেশি। দেখা গেছে, প্রতি বছরই আমনের আবাদ বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে বৃষ্টি-নির্ভর এই ধানে কাঙ্ক্ষিত বৃষ্টির দেখা পাননি এই অঞ্চলের কৃষকরা। ফলে সেচ দিয়ে আবাদ করতে হয়েছে। এতে উৎপাদন খরচ কিছুটা বেড়েছে।

রংপুর সিটি করপোরেশন এলাকার আমন চাষি গৌরাঙ্গ রায়, আসাদ ও তাজিরুল ইসলামসহ নগরীর খাসবাগ এলাকার আমন চাষি আসাদুজ্জামান ও আফজাল হোসেন জানান, আমনের চারা রোপণ থেকে শুরু করে ধান কাটা-মাড়াইয়ের আগে পর্যন্ত জমিতে সেচ দিতে হচ্ছে। আমন আবাদের মৌসুমে যে পরিমাণ বৃষ্টি হওয়ার কথা ছিল, এলাকায় সেই পরিমাণ বৃষ্টি পাওয়া যায়নি। তারা জানান, এক বিঘা জমিতে প্রতি ঘণ্টায় ১২০/১৩০ টাকা করে ১৬ ঘণ্টা সেচ দিয়ে চারা রোপণ করেছেন। এতে তাদের বাড়তি খরচ পড়েছে দুই হাজার টাকার বেশি। সদর উপজেলার আমন চাষি আমিনুর রহমান ২ একর জমিতে আমন আবাদ করেছেন। ক্ষেতে পানি না থাকার কারণে প্রতি ঘণ্টায় ১২০ টাকা করে সেচের মাধ্যমে পানি দিয়েছেন।

কৃষিবিদ আবিদ করিম মুন্না বলেন, আমন ধান এই অঞ্চলের কার্তিকের মঙ্গা দূর করেছে। ফলে কার্তিক মাসেও কৃষকের মুখে হাসি থাকে। এখন পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় কৃষক ও কৃষি কর্মকর্তাদের মাঝে স্বস্তির ভাব দেখা গেছে।

রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক সিরাজুল ইসলাম জানান, এই অঞ্চলের কৃষকদের মাঝে আমন ধান চাষে আগ্রহ বেড়েছে। তাই লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি ধান চাষ হচ্ছে।

Please Share This Post in Your Social Media

রংপুরে কৃষি সাফল্য: এক দশকে আমনের আবাদ বেড়েছে ৩৭ হাজার হেক্টর জমিতে

আলমগীর হোসেন অপু, রংপুর জেলা প্রতিনিধি
Update Time : ০৬:২৮:১৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ৬ অক্টোবর ২০২৫

রংপুর অঞ্চলে আমন ধানের আবাদ প্রতিবছরই বাড়ছে। গত ১০ বছরে আমনের আবাদ বেড়েছে ৩৭ হাজার হেক্টরের বেশি জমিতে। উৎপাদন বেড়েছে ৬ লাখ মেট্রিক টনের বেশি। রংপুরে চলতি মৌসুমে আমন ধানের বাম্পার ফলনের আশা করা হচ্ছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রাও ছাড়িয়ে গেছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার আমন ধানের চাল উদ্বৃত্ত থাকবে বলে আশা প্রকাশ করছেন কৃষি বিশেষজ্ঞরা। উদ্বৃত্ত চাল দেশের অন্য জেলার চালের চাহিদা মেটাতে সহায়তা করবে।

রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালে রংপুর, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, নীলফামারী ও গাইবান্ধা জেলায় আমন ধানের আবাদ হয়েছিল ৫ লাখ ৮৫ হাজার ৬১৩ হেক্টর জমিতে। উৎপাদন হয়েছিল ১৪ লাখ মেট্রিক টনের বেশি। এবার আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৬ লাখ ২০ হাজার ৪৩০ হেক্টর জমিতে। এবার লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে আবাদ হয়েছে ৬ লাখ ২১ হাজার ৫০৫ হেক্টর জমিতে। এই পরিমাণ জমি থেকে উৎপাদন হবে ২০ লাখ ১০ হাজার ৪০৫ মেট্রিক টন। দেখা গেছে, গত ১০ বছরে উৎপাদন বেড়েছে ৬ লাখ মেট্রিক টনের ওপরে।

২০২৩ সালে রংপুর অঞ্চলের ৫ জেলায় আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬ লাখ ১৪ হাজার ৪০০ হেক্টর জমিতে। সেখানে আবাদ হয়েছিল ৬ লাখ ১৬ হাজার ৬৬২ হেক্টর। প্রতি হেক্টরে গড় উৎপাদন ধরা হয় ৩ মেট্রিক টনের কিছুটা বেশি। দেখা গেছে, প্রতি বছরই আমনের আবাদ বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে বৃষ্টি-নির্ভর এই ধানে কাঙ্ক্ষিত বৃষ্টির দেখা পাননি এই অঞ্চলের কৃষকরা। ফলে সেচ দিয়ে আবাদ করতে হয়েছে। এতে উৎপাদন খরচ কিছুটা বেড়েছে।

রংপুর সিটি করপোরেশন এলাকার আমন চাষি গৌরাঙ্গ রায়, আসাদ ও তাজিরুল ইসলামসহ নগরীর খাসবাগ এলাকার আমন চাষি আসাদুজ্জামান ও আফজাল হোসেন জানান, আমনের চারা রোপণ থেকে শুরু করে ধান কাটা-মাড়াইয়ের আগে পর্যন্ত জমিতে সেচ দিতে হচ্ছে। আমন আবাদের মৌসুমে যে পরিমাণ বৃষ্টি হওয়ার কথা ছিল, এলাকায় সেই পরিমাণ বৃষ্টি পাওয়া যায়নি। তারা জানান, এক বিঘা জমিতে প্রতি ঘণ্টায় ১২০/১৩০ টাকা করে ১৬ ঘণ্টা সেচ দিয়ে চারা রোপণ করেছেন। এতে তাদের বাড়তি খরচ পড়েছে দুই হাজার টাকার বেশি। সদর উপজেলার আমন চাষি আমিনুর রহমান ২ একর জমিতে আমন আবাদ করেছেন। ক্ষেতে পানি না থাকার কারণে প্রতি ঘণ্টায় ১২০ টাকা করে সেচের মাধ্যমে পানি দিয়েছেন।

কৃষিবিদ আবিদ করিম মুন্না বলেন, আমন ধান এই অঞ্চলের কার্তিকের মঙ্গা দূর করেছে। ফলে কার্তিক মাসেও কৃষকের মুখে হাসি থাকে। এখন পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় কৃষক ও কৃষি কর্মকর্তাদের মাঝে স্বস্তির ভাব দেখা গেছে।

রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক সিরাজুল ইসলাম জানান, এই অঞ্চলের কৃষকদের মাঝে আমন ধান চাষে আগ্রহ বেড়েছে। তাই লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি ধান চাষ হচ্ছে।