যে আন্দোলনে আওয়ামীলীগ রসাতলে,সেই কোটাবিরোধী সমর্থনে এবার আ’লীগ

- Update Time : ০২:৪৬:২৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারী ২০২৫
- / ৯২ Time View
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে পতন হয় আওয়ামী লীগ সরকারের। সেই আওয়ামী লীগ এখন কোটার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে, সমালোচনা করছে কোটার।
মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে মেডিকেল কলেজে ভর্তি পরীক্ষায় কোটায় সুযোগ পাওয়া নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ তাদের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একটি পোস্ট দিয়েছে।
পোস্টে আওয়ামী লীগ লিখেছে, ‘ঢাকা মেডিকেল কলেজে ৭০ নম্বর পেয়েও চান্স মেলেনি, কোটায় ৪০/৪১ পেয়ে ভর্তির সুযোগ।’
পোস্টের সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ কয়েকজন উপদেষ্টা, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলনের কয়েকজন নেতা এবং ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীকে যুক্ত করে একটি ফটোপোস্ট দিয়েছে। এতে আরও লিখেছে, ‘অবৈধ সরকার দেশটাকে করেছে ছারখার’।
রোববার (১৯ জানুয়ারি) ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর। এতেই সামনে আসে কোটা নিয়ে প্রশ্ন। মেধা থেকে ৭৩ নম্বর পেয়েও ভর্তির জন্য প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত হতে পারেননি, কিন্তু কোটায় ৪১ নম্বর পেয়েও নির্বাচিত হতে পেরেছেন।মেডিকেল কলেজে ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল বাতিল করে পুনরায় প্রকাশের দাবি জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। একই দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল, সমাবেশ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা কলেজ ও ঢাকা মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা।
এদিকে কোটা নিয়ে আওয়ামী লীগের এই পোস্টের পক্ষে-বিপক্ষে মন্তব্য করেছেন অনেকে। কেউ কেউ এই পোস্টের সমর্থন করলেও বেশিরভাগ মন্তব্যকারী সমালোচনা করেছেন।
পোস্টে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ইরফান ইসমাইল মন্তব্য করেন, ‘এই ধরনের কথা ৬ মাস আগে বললে এখনও ক্ষমতায় থাকতো।’
তার মন্তব্যের জবাবে মো. জহিরুল ইসলাম মিঠু লিখেন, ‘সব রায় পাল্টে গেলো অনেক আগেই। তাহলে যেটাকে কেন্দ্র করেই এতোকিছু হলো এখন অবদি সেটাই বিরাজমান কেনো? এটা তো রায় দিয়ে পরিবর্তন করার কথা না। কই ৭০, কই ৪০, হাস্যকর।’
পোস্টে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ইরফান ইসমাইল মন্তব্য করেন, ‘এই ধরনের কথা ৬ মাস আগে বললে এখনও ক্ষমতায় থাকতো।’
তার মন্তব্যের জবাবে মো. জহিরুল ইসলাম মিঠু লিখেন, ‘সব রায় পাল্টে গেলো অনেক আগেই। তাহলে যেটাকে কেন্দ্র করেই এতোকিছু হলো এখন অবদি সেটাই বিরাজমান কেনো? এটা তো রায় দিয়ে পরিবর্তন করার কথা না। কই ৭০, কই ৪০, হাস্যকর।’
মো. তোফাজ্জল হোসেন লিখেন, ‘যারা কোটা ইস্যুতে ক্ষমতা ছাড়া হয়েছে তারাই কোটা নিয়ে কথা বলে। কি নির্লজ্জ!’
শরিয়াহ ফারুক ওমর লিখেন, ‘যাক ভাল লাগলো নিজেরা কোটা চালু করে। আবার নিজেরাই কোটার বিরুদ্ধে বললো।’
তানভীর হোসেন লিখেন, ‘নিজেরাই কোটা প্রথা চালু করে আবার তার বিরুদ্ধে বলতেছে। এরকম সার্কাস আমি আগে দেখি নাই।’
আওয়ামী লীগের এই পোস্ট সমর্থন করে তাপসী তাবাসসুম উর্মি নামে একজন লিখেছেন, ‘দেশে যা শুরু হইছে সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ আবারও বিপুল ভোটে জয়লাভ করবে ইনশাআল্লাহ।’
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গত বছরের ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে দেশ থেকে পালিয়ে ভারতে যান আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। মূলত ২০১৮ সালে শুরু হওয়া কোটা আন্দোলনই নতুন করে মাত্রা নেয় ২০২৪ সালে। ২০১৮ সালে বিষয়টি আদালতে গেলে তা প্রায় থেমে যায়। তবে আদালতের এক রায়ের পরে দ্বিতীয় দফা আন্দোলন শুরু হয় গত জুন থেকে।
গত ৫ জুন সরকারি দপ্তর, স্বায়ত্তশাসিত ও আধা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান এবং বিভিন্ন করপোরেশনের চাকরিতে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে (৯ম থেকে ১৩তম গ্রেড) মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন আদালত। ফলে ৯ম থেকে ১৩তম গ্রেডে নিয়োগের ক্ষেত্রে মুক্তিযোদ্ধা কোটার বাধা কেটে যায়। মূলত বিপত্তি বাধে আদালতের এই নির্দেশের পর থেকেই।