ঢাকা ০৩:১৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২১ মে ২০২৫, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজঃ
তাবাসসুমের নেতৃত্বে আওয়ামী প্রেতাত্মারা এখনো সক্রিয় ভারতীয় বিভিন্ন সংস্থার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞা ইসরাইলি সব পণ্য বয়কট করছে যুক্তরাজ্যের বৃহৎ সুপারমার্কেট ফিলিস্তিনের পক্ষ নেয়ায় ইংলিশ কিংবদন্তি লিনেকারকে ছাঁটাই করল বিবিসি কুবিতে বহিষ্কৃত শিক্ষার্থী দিলেন সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা নির্বাচন পেছাতে ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত শুরু হয়েছে : মির্জা ফখরুল আইনশৃঙ্খলা নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক ইসরাইলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা যুক্তরাজ্য, কানাডা ও ফ্রান্সের মিথ্যা তথ্য দিয়ে জনগণকে ভুল বুঝানোর চেষ্টা করছে সরকারের উপদেষ্টা : ইশরাক সরকার গায়ের জোরে ইশরাককে মেয়র হতে দিচ্ছে না : রিজভী

মিথ্যা তথ্য দিয়ে জনগণকে ভুল বুঝানোর চেষ্টা করছে সরকারের উপদেষ্টা : ইশরাক

রাজনীতি ডেস্ক
  • Update Time : ০৮:২৯:৩৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫
  • / ৯২ Time View

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ও বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন।

মেয়র হিসেবে ইশরাক হোসেনের শপথ নিয়ে অনেক আইনি সমস্যা ও মেয়াদ সংক্রান্ত জটিলতা আছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। এবার এ বিষয়ে মুখ খুললেন বিএনপি নেতা ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন।

মঙ্গলবার (২০ মে) সকালে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে যুক্তি তুলে ধরে এ বিষয়ে কথা বলেন তিনি।

ভিডিও বার্তায় ইশরাক হোসেন বলেন, জনগণকে ক্রমাগত মিথ্যা তথ্য ও আইনি অপব্যাখ্যা দিয়ে নিজেদের অপকর্ম ঢাকার চেষ্টা করছে সরকারের উপদেষ্টা। সম্পূর্ণ ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে যে ১০টি তথাকথিত পয়েন্ট হাজির করা হয়েছে তা ভিত্তিহীন। এবার তথাকথিত ‘১০টি’ পয়েন্টের জবাব দিলাম।

ইশরাকের শপথ নিয়ে যা বললেন আসিফ মাহমুদ

গতকাল সোমবার (১৯ মে) উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পোস্টে যে ১০টি পয়েন্ট তুলে ধরেন।
তার প্রথমটি হলো, আর্জি সংশোধন অবৈধ মর্মে হাইকোর্টের রায় ভায়োলেট করে নির্বাচন কমিশন ট্রাইব্যুনাল এই রায় প্রদান করেছে।

এর জবাবে ইশরাক হোসেন বলেন, আর্জি সংশোধন কোর্ট অব সিভিল প্রসিডিউর আইনের অর্ডারে ৬ রোল ১৭ অনুযায়ী আর্জি সংশোধন করা যায়। এক্ষেত্রে হাইকোর্টের কোনো আইনকে ভায়োলেট করা হয়নি। অথচ স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আইন না জেনে শুধু সাধারণ জনগণকে ভুল বুঝানোর জন্যে এ কথা বলেছেন।

বিএনপি গায়ের জোরে নগর ভবন বন্ধ করে আন্দোলন চালাচ্ছে

তিনি বলার চেষ্টা করছেন, একটি নির্বাচনের মামলার অর্ডারে হাইকোর্টের একটি অবজারভেশন ছিল। আর সেই অবজারভেশন অনুসারে তিনি বলছেন, আমরা ভায়োলেট করছি। কিন্তু অবজারভেশন ইজ অবজারভেশন। এটা আইনের ঊর্ধ্বে যেতে পারে না। এটা আইনের অর্ডার ৬ রোল ১৭ অনুযায়ী আর্জি সংশোধন করা যায়।

আসিফ মাহমুদের দ্বিতীয় পয়েন্ট ছিল, নির্বাচন কমিশন শুনানিতে অংশগ্রহণ না করায় একপাক্ষিক রায় হয়েছে এবং পরবর্তীতে কমিশন আপিলও করেনি।

এর জবাবে বিএনপি নেতা বলেন, এ মামলাটি একতরফা রায় হয়নি। মামলার বিপক্ষে পলাতক মেয়র ফজলে নূর তাপস প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। মামলার জবাবও দাখিল করেন। দীর্ঘদিন হাইকোর্টে এ মামলা স্টে করে রাখেন। এ কারণে এটি একতরফা রায় নয়। যথাযথ আইন মেনে ও আইনি অসামঞ্জস্যতা না পাওয়ায় নির্বাচন কমিশন গেজেট প্রকাশ করেছে। এতে আইনের কোনো ব্যত্যয় ঘটেনি।

আসিফ মাহমুদের তৃতীয় পয়েন্টটি ছিল, আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত চাওয়া হলেও, মতামত দেওয়ার আগেই এবং একই সাথে দুজন নাগরিকের পাঠানো লিগ্যাল নোটিশ উপেক্ষা করে রাত ১০টায় গেজেট প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন।

এর প্রতি উত্তরে ইশরাক বলেন, নির্বাচন কমিশন একটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠান। তাদের নিজস্ব আইনজীবী প্যানেল থাকার পরও অধিকতর বুঝার জন্য আইন উপদেষ্টার নিকট তারা ফাইলটি পাঠায়। পরে তারা দেখে-শুনে আইনের কোনো ব্যত্যয় না হওয়ায় ফাইল পুনরায় ফেরত পাঠায়। এরপর নির্বাচন কমিশন গেজেট প্রকাশ করে।

রাত ১০টায় গেজেট প্রকাশ হওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাদের রায়ে স্পষ্ট লেখা ছিল, ১০ দিনের মধ্যে গেজেট প্রকাশ করতে হবে। ওইদিন রাত বারোটা হলে ১০ কার্যদিবস পার হয়ে যেত, তাই সেদিন রাত ১০টায় গেজেট প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন। আর দুজন নাগরিকের পাঠানো লিগ্যাল নোটিশ প্রেরণকারী ঢাকা দক্ষিণ সিটির ভোটার না। অতএব এখানে তাদের সংক্ষুব্ধ হওয়ার সুযোগ নেই।

আন্দোলনকারীদের নতুন নির্দেশনা দিলেন ইশরাক

আসিফের চতুর্থ পয়েন্টটি ছিল, ওই মামলায় স্থানীয় সরকার বিভাগ পক্ষভুক্ত ছিল না এবং রায়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের প্রতি কোনো নির্দেশনার উল্লেখ নেই।

এ বিষয়ে ইশরাক হোসেন বলেন, আমি বলব এটা চরম অজ্ঞতা। স্থানীয় সরকার বিভাগকে পক্ষভুক্ত করার কোনো কারণ নেই। এটা হয় না। কারণ স্থানীয় সরকার বিভাগ নির্বাচনের কোনো পক্ষ না। স্থানীয় সরকার বিভাগের কাজ হলো নির্বাচন কমিশনের আদেশ মেনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা।

উপদেষ্টা আসিফের পঞ্চম পয়েন্টটি ছিল, শপথ না দেওয়ার কারণে নির্বাচন কমিশন স্থানীয় সরকার বিভাগকে বিবাদী করে রিট পিটিশন দায়ের করা হয়েছে, যা এখনো বিচারাধীন।

যার জবাবে বিএনপি নেতা বলেন, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা রিট সংক্রান্ত যত মতামত দিয়েছেন- উনার (উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া) অজ্ঞতার বহিঃপ্রকাশ। কোনো মামলার শুনানির জন্য কোনো অর্ডার বা শপথ বন্ধ হবে না।

উপদেষ্টার ষষ্ঠ পয়েন্টটি ছিল, বরিশাল সিটি করপোরেশন সংক্রান্ত মামলায়, আর্জি সংশোধন সংক্রান্ত হাইকোর্টের রায়কে আমলে নিয়ে খারিজ করেছে ট্রাইব্যুনাল। ফলে ট্রাইব্যুনালের দ্বিমুখী অবস্থান বোধগম্য হচ্ছে না।

প্রতি জবাবে ইশরাক বলেন, কার্যত বরিশাল সিটি করপোরেশনের এ ঘটনা নিয়ে কোনো মামলা হয়নি। নির্বাচনের সময় ট্রাইব্যুনাল করা হয়। সেখানে স্পষ্ট লেখা থাকে, ৩০ দিনের মধ্যে কোনো অভিযোগ থাকলে দায়ের করতে হবে। আর সে সময় বরিশাল সিটি করপোরেশনের নির্বাচন নিয়ে কোনো মামলা হয়নি। পরে আবেদন করলে আদালত তাদের আবেদন খারিজ করে দেন। তারা সম্ভবত হাইকোর্টে এই নিয়ে আবেদন করবেন।

আসিফ মাহমুদের সপ্তম পয়েন্ট ছিল, মেয়াদ সংক্রান্ত জটিলতা দেখা দিয়েছে; কতদিন মেয়র থাকবেন বা আদৌ মেয়াদ আছে কিনা তা স্পষ্ট নয়।

মেয়াদ সংক্রান্ত জটিলতা নিয়ে ইশরাক বলেন, এই সংক্রান্ত মতামত শিশুসুলভ। আগে শপথ পরে মেয়াদ কতদিন থাকবে সে সিদ্ধান্ত নির্বাচন কমিশন দিতে পারে। আর নির্বাচন কমিশন যদি অপারগতা প্রকাশ করে তাহলে উচ্চ আদালতে যাব।

উপদেষ্টার অষ্টম পয়েন্টটি ছিল, নির্বাচন কমিশনের চিঠিতে ‘কোনো প্রকার আইনি জটিলতা না থাকলে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণের’ কথা বলা হয়েছে। স্পষ্টতই বিতর্কিত রায়, স্থানীয় সরকার বিভাগের প্রতি কোনো নির্দেশনা না থাকা, লিগ্যাল নোটিশ এবং রিট পিটিশন বিচারাধীন থাকা সংক্রান্ত আইনি জটিলতা রয়েছে।

নির্বাচন কমিশনের চিঠির জটিলতা বিষয়ে বিএনপি নেতা বলেন, নির্বাচন কমিশনের চিঠিতে কোনো জটিলতা না থাকলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু স্থানীয় সরকার বিভাগ এই সংক্রন্ত চিঠি পাওয়ার পর নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দেয়। সেখানে নির্বাচন কমিশন কেন আপিল করল না বা আপিল করা যায় কি না জানতে চায়। আর এই সমস্ত কথা বলে নির্বাচন কমিশনকে দিকনির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। এটা খুব ভয়ানক। তারা নির্বাচন কমিশনের ওপর হস্তক্ষেপ করছেন। আর নির্বাচন কমিশনের চিঠির জবাবে বলা হয়, তারা কোনো আইনের ব্যত্যয় পায়নি। আর এই কপিটি আমার কাছে রয়েছে, যা এক সময় প্রকাশ হবে।

উপদেষ্টা আসিফের নবম পয়েন্টটি ছিল, এই জটিলতা নিরসনে আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত চাওয়া হয়েছে।

আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত চাওয়ার বিষয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, তারা স্পষ্টত মাথার ভেতর থেকে জটিলতা তৈরি করছে। যেন আমি মেয়র না হতে পারি। যার কারণে তারা নতুন নতুন জটিলতা তৈরি করছে। এখন বলছে, আবার জটিলতা নিরসনে আইন মন্ত্রণালয়ে মতামত চাওয়া হয়েছে। তারা এক মন্ত্রণালয় থেকে আরেক মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে কালক্ষেপণ করছে।

উপদেষ্টার দশম পয়েন্টটি ছিল, আওয়ামী আমলের অবৈধ নির্বাচনগুলোকে বৈধতা দেওয়ার প্রশ্নও প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে। রাজনৈতিক দলগুলো যদি স্বীকার করে যে আওয়ামী আমলের নির্বাচনগুলো বৈধ, তবে সরকারের জন্য এসব প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হবে না।

এর জবাবে ইশরাক হোসেন বলেন, আওয়ামী আমলের নির্বাচন নিয়ে আমার কথা বলার কিছু নেই। আমরা তাপসের মেয়রের প্রজ্ঞাপনকে চ্যালেঞ্জ করে মামলা করেছি। আর মামলার সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে জিতে এসেছি। তাপসের মেয়রের প্রজ্ঞাপনকে অবৈধ করা হয়েছে এবং আমাকে মেয়র হিসেবে রায় দিয়েছে।

সরকার গায়ের জোরে ইশরাককে মেয়র হতে দিচ্ছে না : রিজভী

ইশরাক হোসেনকে শপথ না পড়ালে আন্দোলন অন্যভাবে রূপ নেবে : সালাহউদ্দিন

Please Share This Post in Your Social Media

মিথ্যা তথ্য দিয়ে জনগণকে ভুল বুঝানোর চেষ্টা করছে সরকারের উপদেষ্টা : ইশরাক

রাজনীতি ডেস্ক
Update Time : ০৮:২৯:৩৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫

মেয়র হিসেবে ইশরাক হোসেনের শপথ নিয়ে অনেক আইনি সমস্যা ও মেয়াদ সংক্রান্ত জটিলতা আছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। এবার এ বিষয়ে মুখ খুললেন বিএনপি নেতা ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন।

মঙ্গলবার (২০ মে) সকালে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে যুক্তি তুলে ধরে এ বিষয়ে কথা বলেন তিনি।

ভিডিও বার্তায় ইশরাক হোসেন বলেন, জনগণকে ক্রমাগত মিথ্যা তথ্য ও আইনি অপব্যাখ্যা দিয়ে নিজেদের অপকর্ম ঢাকার চেষ্টা করছে সরকারের উপদেষ্টা। সম্পূর্ণ ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে যে ১০টি তথাকথিত পয়েন্ট হাজির করা হয়েছে তা ভিত্তিহীন। এবার তথাকথিত ‘১০টি’ পয়েন্টের জবাব দিলাম।

ইশরাকের শপথ নিয়ে যা বললেন আসিফ মাহমুদ

গতকাল সোমবার (১৯ মে) উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পোস্টে যে ১০টি পয়েন্ট তুলে ধরেন।
তার প্রথমটি হলো, আর্জি সংশোধন অবৈধ মর্মে হাইকোর্টের রায় ভায়োলেট করে নির্বাচন কমিশন ট্রাইব্যুনাল এই রায় প্রদান করেছে।

এর জবাবে ইশরাক হোসেন বলেন, আর্জি সংশোধন কোর্ট অব সিভিল প্রসিডিউর আইনের অর্ডারে ৬ রোল ১৭ অনুযায়ী আর্জি সংশোধন করা যায়। এক্ষেত্রে হাইকোর্টের কোনো আইনকে ভায়োলেট করা হয়নি। অথচ স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আইন না জেনে শুধু সাধারণ জনগণকে ভুল বুঝানোর জন্যে এ কথা বলেছেন।

বিএনপি গায়ের জোরে নগর ভবন বন্ধ করে আন্দোলন চালাচ্ছে

তিনি বলার চেষ্টা করছেন, একটি নির্বাচনের মামলার অর্ডারে হাইকোর্টের একটি অবজারভেশন ছিল। আর সেই অবজারভেশন অনুসারে তিনি বলছেন, আমরা ভায়োলেট করছি। কিন্তু অবজারভেশন ইজ অবজারভেশন। এটা আইনের ঊর্ধ্বে যেতে পারে না। এটা আইনের অর্ডার ৬ রোল ১৭ অনুযায়ী আর্জি সংশোধন করা যায়।

আসিফ মাহমুদের দ্বিতীয় পয়েন্ট ছিল, নির্বাচন কমিশন শুনানিতে অংশগ্রহণ না করায় একপাক্ষিক রায় হয়েছে এবং পরবর্তীতে কমিশন আপিলও করেনি।

এর জবাবে বিএনপি নেতা বলেন, এ মামলাটি একতরফা রায় হয়নি। মামলার বিপক্ষে পলাতক মেয়র ফজলে নূর তাপস প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। মামলার জবাবও দাখিল করেন। দীর্ঘদিন হাইকোর্টে এ মামলা স্টে করে রাখেন। এ কারণে এটি একতরফা রায় নয়। যথাযথ আইন মেনে ও আইনি অসামঞ্জস্যতা না পাওয়ায় নির্বাচন কমিশন গেজেট প্রকাশ করেছে। এতে আইনের কোনো ব্যত্যয় ঘটেনি।

আসিফ মাহমুদের তৃতীয় পয়েন্টটি ছিল, আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত চাওয়া হলেও, মতামত দেওয়ার আগেই এবং একই সাথে দুজন নাগরিকের পাঠানো লিগ্যাল নোটিশ উপেক্ষা করে রাত ১০টায় গেজেট প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন।

এর প্রতি উত্তরে ইশরাক বলেন, নির্বাচন কমিশন একটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠান। তাদের নিজস্ব আইনজীবী প্যানেল থাকার পরও অধিকতর বুঝার জন্য আইন উপদেষ্টার নিকট তারা ফাইলটি পাঠায়। পরে তারা দেখে-শুনে আইনের কোনো ব্যত্যয় না হওয়ায় ফাইল পুনরায় ফেরত পাঠায়। এরপর নির্বাচন কমিশন গেজেট প্রকাশ করে।

রাত ১০টায় গেজেট প্রকাশ হওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাদের রায়ে স্পষ্ট লেখা ছিল, ১০ দিনের মধ্যে গেজেট প্রকাশ করতে হবে। ওইদিন রাত বারোটা হলে ১০ কার্যদিবস পার হয়ে যেত, তাই সেদিন রাত ১০টায় গেজেট প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন। আর দুজন নাগরিকের পাঠানো লিগ্যাল নোটিশ প্রেরণকারী ঢাকা দক্ষিণ সিটির ভোটার না। অতএব এখানে তাদের সংক্ষুব্ধ হওয়ার সুযোগ নেই।

আন্দোলনকারীদের নতুন নির্দেশনা দিলেন ইশরাক

আসিফের চতুর্থ পয়েন্টটি ছিল, ওই মামলায় স্থানীয় সরকার বিভাগ পক্ষভুক্ত ছিল না এবং রায়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের প্রতি কোনো নির্দেশনার উল্লেখ নেই।

এ বিষয়ে ইশরাক হোসেন বলেন, আমি বলব এটা চরম অজ্ঞতা। স্থানীয় সরকার বিভাগকে পক্ষভুক্ত করার কোনো কারণ নেই। এটা হয় না। কারণ স্থানীয় সরকার বিভাগ নির্বাচনের কোনো পক্ষ না। স্থানীয় সরকার বিভাগের কাজ হলো নির্বাচন কমিশনের আদেশ মেনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা।

উপদেষ্টা আসিফের পঞ্চম পয়েন্টটি ছিল, শপথ না দেওয়ার কারণে নির্বাচন কমিশন স্থানীয় সরকার বিভাগকে বিবাদী করে রিট পিটিশন দায়ের করা হয়েছে, যা এখনো বিচারাধীন।

যার জবাবে বিএনপি নেতা বলেন, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা রিট সংক্রান্ত যত মতামত দিয়েছেন- উনার (উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া) অজ্ঞতার বহিঃপ্রকাশ। কোনো মামলার শুনানির জন্য কোনো অর্ডার বা শপথ বন্ধ হবে না।

উপদেষ্টার ষষ্ঠ পয়েন্টটি ছিল, বরিশাল সিটি করপোরেশন সংক্রান্ত মামলায়, আর্জি সংশোধন সংক্রান্ত হাইকোর্টের রায়কে আমলে নিয়ে খারিজ করেছে ট্রাইব্যুনাল। ফলে ট্রাইব্যুনালের দ্বিমুখী অবস্থান বোধগম্য হচ্ছে না।

প্রতি জবাবে ইশরাক বলেন, কার্যত বরিশাল সিটি করপোরেশনের এ ঘটনা নিয়ে কোনো মামলা হয়নি। নির্বাচনের সময় ট্রাইব্যুনাল করা হয়। সেখানে স্পষ্ট লেখা থাকে, ৩০ দিনের মধ্যে কোনো অভিযোগ থাকলে দায়ের করতে হবে। আর সে সময় বরিশাল সিটি করপোরেশনের নির্বাচন নিয়ে কোনো মামলা হয়নি। পরে আবেদন করলে আদালত তাদের আবেদন খারিজ করে দেন। তারা সম্ভবত হাইকোর্টে এই নিয়ে আবেদন করবেন।

আসিফ মাহমুদের সপ্তম পয়েন্ট ছিল, মেয়াদ সংক্রান্ত জটিলতা দেখা দিয়েছে; কতদিন মেয়র থাকবেন বা আদৌ মেয়াদ আছে কিনা তা স্পষ্ট নয়।

মেয়াদ সংক্রান্ত জটিলতা নিয়ে ইশরাক বলেন, এই সংক্রান্ত মতামত শিশুসুলভ। আগে শপথ পরে মেয়াদ কতদিন থাকবে সে সিদ্ধান্ত নির্বাচন কমিশন দিতে পারে। আর নির্বাচন কমিশন যদি অপারগতা প্রকাশ করে তাহলে উচ্চ আদালতে যাব।

উপদেষ্টার অষ্টম পয়েন্টটি ছিল, নির্বাচন কমিশনের চিঠিতে ‘কোনো প্রকার আইনি জটিলতা না থাকলে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণের’ কথা বলা হয়েছে। স্পষ্টতই বিতর্কিত রায়, স্থানীয় সরকার বিভাগের প্রতি কোনো নির্দেশনা না থাকা, লিগ্যাল নোটিশ এবং রিট পিটিশন বিচারাধীন থাকা সংক্রান্ত আইনি জটিলতা রয়েছে।

নির্বাচন কমিশনের চিঠির জটিলতা বিষয়ে বিএনপি নেতা বলেন, নির্বাচন কমিশনের চিঠিতে কোনো জটিলতা না থাকলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু স্থানীয় সরকার বিভাগ এই সংক্রন্ত চিঠি পাওয়ার পর নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দেয়। সেখানে নির্বাচন কমিশন কেন আপিল করল না বা আপিল করা যায় কি না জানতে চায়। আর এই সমস্ত কথা বলে নির্বাচন কমিশনকে দিকনির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। এটা খুব ভয়ানক। তারা নির্বাচন কমিশনের ওপর হস্তক্ষেপ করছেন। আর নির্বাচন কমিশনের চিঠির জবাবে বলা হয়, তারা কোনো আইনের ব্যত্যয় পায়নি। আর এই কপিটি আমার কাছে রয়েছে, যা এক সময় প্রকাশ হবে।

উপদেষ্টা আসিফের নবম পয়েন্টটি ছিল, এই জটিলতা নিরসনে আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত চাওয়া হয়েছে।

আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত চাওয়ার বিষয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, তারা স্পষ্টত মাথার ভেতর থেকে জটিলতা তৈরি করছে। যেন আমি মেয়র না হতে পারি। যার কারণে তারা নতুন নতুন জটিলতা তৈরি করছে। এখন বলছে, আবার জটিলতা নিরসনে আইন মন্ত্রণালয়ে মতামত চাওয়া হয়েছে। তারা এক মন্ত্রণালয় থেকে আরেক মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে কালক্ষেপণ করছে।

উপদেষ্টার দশম পয়েন্টটি ছিল, আওয়ামী আমলের অবৈধ নির্বাচনগুলোকে বৈধতা দেওয়ার প্রশ্নও প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে। রাজনৈতিক দলগুলো যদি স্বীকার করে যে আওয়ামী আমলের নির্বাচনগুলো বৈধ, তবে সরকারের জন্য এসব প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হবে না।

এর জবাবে ইশরাক হোসেন বলেন, আওয়ামী আমলের নির্বাচন নিয়ে আমার কথা বলার কিছু নেই। আমরা তাপসের মেয়রের প্রজ্ঞাপনকে চ্যালেঞ্জ করে মামলা করেছি। আর মামলার সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে জিতে এসেছি। তাপসের মেয়রের প্রজ্ঞাপনকে অবৈধ করা হয়েছে এবং আমাকে মেয়র হিসেবে রায় দিয়েছে।

সরকার গায়ের জোরে ইশরাককে মেয়র হতে দিচ্ছে না : রিজভী

ইশরাক হোসেনকে শপথ না পড়ালে আন্দোলন অন্যভাবে রূপ নেবে : সালাহউদ্দিন