ঢাকা ০৫:০২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫, ২৮ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজঃ
নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে শর্টকোড চালুর সিদ্ধান্ত কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে চালু হচ্ছে বাস ট্র্যাকিং সিস্টেম ধর্ষণকারীর মৃত্যুদণ্ডের দাবিতে গাজীপুরে ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ মিছিল নোয়াখালীতে নামাজ পড়তে গেলে মসজিদের শৌচাগারে শিশুকে বলৎকার বান্দরবানে দলবদ্ধ ধর্ষণের মামলায় ৪ আসামীর যাবজ্জীবন, ১ লাখ টাকা জরিমানা ধর্ষণ বিরোধী স্লোগানে মুখরিত কুবি ক্যাম্পাস বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়কসহ ৭ জন কারাগারে মেয়েকে ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় বাবাকে কুপিয়ে জখম কিশোরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বহির্বিভাগের টিকিট বাণিজ্য ধর্ষণের বিরুদ্ধে কুবিতে মানববন্ধন 

মক্কা-মদিনায় এবারও ১০ রাকাত তারাবিহ

ধর্ম
  • Update Time : ১০:৫৩:৪৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • / ৪৬ Time View

রমজান মাস উপলক্ষে সৌদি আরবের পবিত্র দুই মসজিদ—মক্কার মসজিদুল হারাম এবং মদিনার মসজিদে নববীতে এবারও ১০ রাকাত তারাবিহ নামাজ আদায়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

হারামাইন শরিফাইনের জেনারেল প্রেসিডেন্সির সভাপতি শায়খ আবদুর রহমান আস-সুদাইস সোমবার এ সিদ্ধান্তের ঘোষণা দেন।

প্রতি বছর রমজান মাসে মক্কা ও মদিনার এই দুই পবিত্র মসজিদে মুসল্লিদের ঢল নামে। বিশ্বব্যাপী মুসলমানদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এই মসজিদ দুটিতে সাধারণত ২০ রাকাত তারাবিহ পড়া হলেও করোনাভাইরাস মহামারির পর থেকে তা ১০ রাকাতে সীমাবদ্ধ রাখা হয়। মূলত, স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতকরণ ও মুসল্লিদের নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রেখে এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছিল, যা এখনো বহাল রাখা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারাবিহ নামাজ ৫ সালামে ১০ রাকাত পড়ানো হবে, এরপর ৩ রাকাত বিতর নামাজ আদায় করা হবে। মহামারির সময় সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে ও নামাজের সময় সংক্ষিপ্ত করতে ২০২০ সালে এই পরিবর্তন আনা হয়। এরপর থেকেই মসজিদ পরিচালনা পরিষদ এটিকে স্থায়ী নিয়ম হিসেবে বজায় রেখেছে।

মক্কা ও মদিনার দুই পবিত্র মসজিদে দীর্ঘসময় ধরে তারাবিহ নামাজ পড়ানো হয়, যা প্রায় চার থেকে সাড়ে চার ঘণ্টা স্থায়ী হয়। বিশেষত, উমরাহ পালনকারী ও অন্যান্য ইবাদতে মনোনিবেশ করা মুসল্লিদের জন্য দীর্ঘ সময়ের নামাজে অংশ নেওয়া চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে। ফলে, ১০ রাকাত তারাবিহের ফলে মুসল্লিদের ইবাদতের জন্য অতিরিক্ত সময় মিলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বে অনেক মুসল্লি এবং ইসলামি স্কলাররা এই সিদ্ধান্তের বিষয়ে বিভিন্ন মত প্রকাশ করেছেন। কারণ, ইসলামের ইতিহাসে দীর্ঘ ১৫০০ বছর ধরে মক্কা ও মদিনায় ২০ রাকাত তাবিহ নামাজ আদায়ের প্রচলন ছিল। সাহাবায়ে কেরাম ও পরবর্তী খলিফাদের সময়েও ২০ রাকাত তারাবিহ পড়ার প্রথা বহাল ছিল।

বিশ্বের অন্যান্য মসজিদে এখনো ২০ রাকাত তারাবিহ নামাজ পড়া হয়ে থাকে। ইসলামি স্কলারদের মতে, এটি নবীজি (সা.)-এর সুন্নাহ এবং সাহাবাদের আমল। তবে, হারামাইন শরিফাইনের কর্তৃপক্ষের যুক্তি হলো—সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসল্লিদের সুবিধার্থে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার স্বার্থে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

মক্কা ও মদিনার দুই পবিত্র মসজিদের সিদ্ধান্ত বিশ্বব্যাপী মুসলমানদের মধ্যে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। অনেক মুসল্লি এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানালেও, কেউ কেউ ২০ রাকাত তারাবিহের ঐতিহ্য ধরে রাখার আহ্বান জানিয়েছেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পরিবর্তন উমরাহ পালনকারীদের সুবিধার জন্য হলেও ইসলামিক ঐতিহ্যের ওপর এর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব নিয়ে বিতর্ক রয়েছে।

যদিও সৌদি কর্তৃপক্ষ এই নিয়ম স্থায়ীভাবে বহাল রাখার বিষয়ে নিশ্চিতভাবে কিছু জানায়নি, তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে এটি কার্যকর থাকবে বলে মনে করা হচ্ছে। মুসল্লিরা সরাসরি উপস্থিত হয়ে অথবা টেলিভিশন ও অনলাইন সম্প্রচারের মাধ্যমে মক্কা-মদিনার তারাবিহ নামাজে অংশগ্রহণ করতে পারবেন।

রমজান মাস মুসলমানদের জন্য আত্মশুদ্ধি, ইবাদত ও তাকওয়া অর্জনের সময়। তাই মুসল্লিদের সুবিধা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই সৌদি কর্তৃপক্ষের মূল লক্ষ্য বলে জানানো হয়েছে।

Please Share This Post in Your Social Media

মক্কা-মদিনায় এবারও ১০ রাকাত তারাবিহ

ধর্ম
Update Time : ১০:৫৩:৪৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

রমজান মাস উপলক্ষে সৌদি আরবের পবিত্র দুই মসজিদ—মক্কার মসজিদুল হারাম এবং মদিনার মসজিদে নববীতে এবারও ১০ রাকাত তারাবিহ নামাজ আদায়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

হারামাইন শরিফাইনের জেনারেল প্রেসিডেন্সির সভাপতি শায়খ আবদুর রহমান আস-সুদাইস সোমবার এ সিদ্ধান্তের ঘোষণা দেন।

প্রতি বছর রমজান মাসে মক্কা ও মদিনার এই দুই পবিত্র মসজিদে মুসল্লিদের ঢল নামে। বিশ্বব্যাপী মুসলমানদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এই মসজিদ দুটিতে সাধারণত ২০ রাকাত তারাবিহ পড়া হলেও করোনাভাইরাস মহামারির পর থেকে তা ১০ রাকাতে সীমাবদ্ধ রাখা হয়। মূলত, স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতকরণ ও মুসল্লিদের নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রেখে এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছিল, যা এখনো বহাল রাখা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারাবিহ নামাজ ৫ সালামে ১০ রাকাত পড়ানো হবে, এরপর ৩ রাকাত বিতর নামাজ আদায় করা হবে। মহামারির সময় সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে ও নামাজের সময় সংক্ষিপ্ত করতে ২০২০ সালে এই পরিবর্তন আনা হয়। এরপর থেকেই মসজিদ পরিচালনা পরিষদ এটিকে স্থায়ী নিয়ম হিসেবে বজায় রেখেছে।

মক্কা ও মদিনার দুই পবিত্র মসজিদে দীর্ঘসময় ধরে তারাবিহ নামাজ পড়ানো হয়, যা প্রায় চার থেকে সাড়ে চার ঘণ্টা স্থায়ী হয়। বিশেষত, উমরাহ পালনকারী ও অন্যান্য ইবাদতে মনোনিবেশ করা মুসল্লিদের জন্য দীর্ঘ সময়ের নামাজে অংশ নেওয়া চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে। ফলে, ১০ রাকাত তারাবিহের ফলে মুসল্লিদের ইবাদতের জন্য অতিরিক্ত সময় মিলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বে অনেক মুসল্লি এবং ইসলামি স্কলাররা এই সিদ্ধান্তের বিষয়ে বিভিন্ন মত প্রকাশ করেছেন। কারণ, ইসলামের ইতিহাসে দীর্ঘ ১৫০০ বছর ধরে মক্কা ও মদিনায় ২০ রাকাত তাবিহ নামাজ আদায়ের প্রচলন ছিল। সাহাবায়ে কেরাম ও পরবর্তী খলিফাদের সময়েও ২০ রাকাত তারাবিহ পড়ার প্রথা বহাল ছিল।

বিশ্বের অন্যান্য মসজিদে এখনো ২০ রাকাত তারাবিহ নামাজ পড়া হয়ে থাকে। ইসলামি স্কলারদের মতে, এটি নবীজি (সা.)-এর সুন্নাহ এবং সাহাবাদের আমল। তবে, হারামাইন শরিফাইনের কর্তৃপক্ষের যুক্তি হলো—সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসল্লিদের সুবিধার্থে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার স্বার্থে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

মক্কা ও মদিনার দুই পবিত্র মসজিদের সিদ্ধান্ত বিশ্বব্যাপী মুসলমানদের মধ্যে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। অনেক মুসল্লি এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানালেও, কেউ কেউ ২০ রাকাত তারাবিহের ঐতিহ্য ধরে রাখার আহ্বান জানিয়েছেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পরিবর্তন উমরাহ পালনকারীদের সুবিধার জন্য হলেও ইসলামিক ঐতিহ্যের ওপর এর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব নিয়ে বিতর্ক রয়েছে।

যদিও সৌদি কর্তৃপক্ষ এই নিয়ম স্থায়ীভাবে বহাল রাখার বিষয়ে নিশ্চিতভাবে কিছু জানায়নি, তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে এটি কার্যকর থাকবে বলে মনে করা হচ্ছে। মুসল্লিরা সরাসরি উপস্থিত হয়ে অথবা টেলিভিশন ও অনলাইন সম্প্রচারের মাধ্যমে মক্কা-মদিনার তারাবিহ নামাজে অংশগ্রহণ করতে পারবেন।

রমজান মাস মুসলমানদের জন্য আত্মশুদ্ধি, ইবাদত ও তাকওয়া অর্জনের সময়। তাই মুসল্লিদের সুবিধা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই সৌদি কর্তৃপক্ষের মূল লক্ষ্য বলে জানানো হয়েছে।