ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে গোপন সামরিক অভিযানের প্রস্তুতি যুক্তরাষ্ট্রের
- Update Time : ০৪:০৬:৪৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৫
- / ২২ Time View
যুক্তরাষ্ট্র ভেনেজুয়েলাকে কেন্দ্র করে একটি নতুন ধরনের অভিযান শুরু করার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে চার মার্কিন কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানিয়েছেন। প্রেসিডেন্ট নিকোলা মাদুরো সরকারের ওপর চাপ বাড়ানোর মধ্যেই এ সিদ্ধান্ত নিচ্ছে ট্রাম্প প্রশাসন। রয়টার্স এ নতুন অভিযানের সঠিক সময় বা পরিধি নিশ্চিত করতে পারেনি। এমনকি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কি না, তা–ও স্পষ্ট নয়। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোয় সম্ভাব্য পদক্ষেপ নিয়ে নানা জল্পনা-কল্পনা বাড়ছে। কারণ, যুক্তরাষ্ট্র ক্যারিবীয় অঞ্চলে তার সামরিক বাহিনী মোতায়েন করেছে এবং ওয়াশিংটনের সঙ্গে কারাকাসের সম্পর্ক আরও খারাপ হচ্ছে।
চার মার্কিন কর্মকর্তার মধ্যে দুজন বলেছেন, মাদুরোর বিরুদ্ধে নতুন অভিযানের প্রথম ধাপ হতে পারে গোপন সামরিক কার্যক্রম। চারজনই নাম প্রকাশ না করার শর্তে কথা বলেছেন। কারণ, বিষয়টি অত্যন্ত সংবেদনশীল।
পেন্টাগন এ বিষয়ে মন্তব্য করার অনুরোধ হোয়াইট হাউসে পাঠিয়েছে। তবে সিআইএ কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
হোয়াইট হাউসের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা গতকাল শনিবার বলেছেন, ভেনেজুয়েলার ক্ষেত্রে ‘কিছুই বাদ দেওয়া হচ্ছে না’।
এই কর্মকর্তা বলেন, ‘মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্প আমাদের দেশে মাদকের প্রবেশ রুখতে এবং যাঁরা এর জন্য দায়ী তাঁদের বিচারের মুখোমুখি করতে প্রয়োজনে যুক্তরাষ্ট্রের সব ধরনের ক্ষমতা ব্যবহার করতে প্রস্তুত।’
ট্রাম্প প্রশাসন ভেনেজুয়েলাকে ঘিরে বিভিন্ন বিকল্প বিবেচনা করছে। তাদের দাবি, প্রেসিডেন্ট মাদুরো অবৈধ মাদকের সরবরাহে ভূমিকা রাখছেন। এসব মাদক যুক্তরাষ্ট্রে বহু মানুষকে হত্যা করছে। মাদুরো অবশ্য এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
মার্কিন কর্মকর্তাদের মধ্যে দুজন রয়টার্সকে বলেছেন, বিবেচনায় থাকা বিকল্পগুলোর মধ্যে মাদুরোকে ক্ষমতাচ্যুত করার বিষয়টিও থাকতে পারে।
২০১৩ সাল থেকে ক্ষমতায় থাকা মাদুরো অভিযোগ করেন যে ট্রাম্প তাঁকে সরাতে চান এবং ভেনেজুয়েলার জনগণ ও সামরিক বাহিনী এমন চেষ্টা প্রতিরোধ করবে। আজ রোববার ৬৩ বছর পূর্ণ করতে যাওয়া মাদুরো গতকাল রাতে কারাকাসের প্রধান থিয়েটারে তাঁর জীবন নিয়ে নির্মিত একটি টিভি সিরিজের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে হাজির হন। কয়েক মাস ধরেই ক্যারিবীয় অঞ্চলে সামরিক উপস্থিতি বাড়িয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। ট্রাম্প ইতিমধ্যে ভেনেজুয়েলায় মার্কিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার (সিআইএ) গোপন অভিযান অনুমোদন করেছেন।
গত শুক্রবার মার্কিন ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ) প্রধান বিমান সংস্থাগুলোকে সতর্ক করে বলেছে, ভেনেজুয়েলার আকাশসীমায় উড়তে গেলে ‘সম্ভাব্য বিপজ্জনক পরিস্থিতি’ হতে পারে। এ অবস্থায় বিমান সংস্থাগুলোকে সতর্ক থাকার অনুরোধ জানিয়েছে এফএএ। এ সতর্কতার পর গতকাল তিনটি আন্তর্জাতিক বিমান সংস্থা ভেনেজুয়েলা থেকে ছেড়ে যাওয়ার ফ্লাইট বাতিল করেছে।
যুক্তরাষ্ট্র আগামীকাল সোমবার ‘কার্টেল দে লস সোলেস’–কে বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণার পরিকল্পনা করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ, এ চক্র যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ মাদক পাঠায় এবং প্রেসিডেন্ট মাদুরো নিজেই এ চক্রের নেতৃত্ব দেন। মাদুরো এ অভিযোগও অস্বীকার করেছেন।
সন্ত্রাসী তালিকাভুক্তির পর নতুন বিকল্প
মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ গত সপ্তাহে বলেছেন, একটি সংগঠনকে সন্ত্রাসী তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হলে ‘যুক্তরাষ্ট্রের সামনে অনেক নতুন বিকল্প খুলে যায়।’
ট্রাম্প বলেছেন, এ সম্ভাব্য তালিকাভুক্তির ফলে যুক্তরাষ্ট্র মাদুরোর সম্পদ ও ভেনেজুয়েলার অবকাঠামোতে হামলা চালাতে পারবে। তবে তিনি এ–ও ইঙ্গিত দিয়েছেন যে কূটনৈতিক সমাধানের জন্য আলোচনা করার সম্ভাবনাও খোলা রয়েছে।
দুজন মার্কিন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ওয়াশিংটন ও কারাকাসের মধ্যে কথাবার্তা চলছে। এগুলো নতুন সামরিক অভিযানের সময় বা পরিধিতে কোনো প্রভাব ফেলবে কি না, তা এখনো পরিষ্কার নয়।
মার্কিন নৌবাহিনীর সবচেয়ে বড় বিমানবাহী জাহাজ ‘জেরাল্ড আর ফোর্ড’ ১৬ নভেম্বর ক্যারিবীয় অঞ্চলে পৌঁছেছে। এটি অন্তত সাতটি যুদ্ধজাহাজ, একটি পারমাণবিক সাবমেরিন এবং এফ–৩৫ যুদ্ধবিমান নিয়ে অবস্থান করছে সেখানে।
Please Share This Post in Your Social Media
-
সর্বশেষ
-
জনপ্রিয়






































































































































































































