ভারতীয় আমের চালান ফেরত দিল যুক্তরাষ্ট্র

- Update Time : ১১:৩০:১০ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৯ মে ২০২৫
- / ৩৩ Time View
যুক্তরাষ্ট্র-ভারত যখন দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বৃদ্ধির পথে এগোচ্ছে, তখনই নতুন করে বিপত্তি ঘটল আম রপ্তানি নিয়ে। রপ্তানিতে ভারতের অন্যতম বিশাল বাজার যুক্তরাষ্ট্র। এই দেশে প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ আম রপ্তানি করে দেশটি। কিন্তু সম্প্রতি ভারত থেকে রপ্তানি করা বিভিন্ন প্রজাতির আমের অন্তত ১৫টি চালান বাতিল করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
কাগজপত্রে অনিয়মের অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেস, সান ফ্রান্সিসকো ও আটলান্টা শহরের বিভিন্ন বিমানবন্দর থেকে এসব আমের চালান বাতিল করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসন এসব চালান বাতিল করায় ভারতীয় রপ্তানিকারকদের আম ধ্বংস অথবা দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে পচনশীল এসব আম ফিরিয়ে আনার খরচ বেশি হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রেই স্থানীয়ভাবে আমগুলো ধ্বংস করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রপ্তানিকারকরা।
ভারতীয় আমের রপ্তানির প্রাথমিক গন্তব্যের শীর্ষে রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
আমের চালান বাতিলের এই ঘটনা দুই দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্কে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ করে তুলেছে। পচনশীল আমের বিপুল এই চালান বাতিলের ঘটনায় ভারতীয় রপ্তানিকারকরা অন্তত পাঁচ লাখ মার্কিন ডলারের ক্ষয়ক্ষতির মুখোমুখি হয়েছেন।
দেশটির সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ৮ ও ৯ মে ভারতের বাণিজ্যিক রাজধানী খ্যাত মহারাষ্ট্রের মুম্বাইয়ে আমগুলোতে প্রয়োজনীয় বিকিরণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছিল। মার্কিন কর্মকর্তারা এই বাধ্যতামূলক প্রক্রিয়া সংশ্লিষ্ট নথিপত্রে অসংগতি পেয়েছেন।
সাধারণত এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নির্দিষ্ট মাত্রার বিকিরণ প্রয়োগ করে ফলের পোকামাকড় ধ্বংস ও সংরক্ষণের সক্ষমতা বৃদ্ধি করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মুম্বাই থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো আমে কোনো ধরনের পোকা ছিল না; বরং পোকা নিয়ন্ত্রণসংক্রান্ত কাগজপত্রে প্রশাসনিক ভুলের কারণে এই সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি দপ্তর (ইউএসডিএ) থেকে ভারতীয় এক রপ্তানিকারকের কাছে পাঠানো বার্তায় বলা হয়েছে, মার্কিন শুল্ক ও সীমান্ত সুরক্ষা বিভাগ ‘ভুলভাবে ইস্যু করা পিপিকিউ ২০৩’-এর কারণে আম আমদানির অনুমতি দেয়নি। এতে বলা হয়েছে, চালানটি ‘পুনরায় ফেরত নেওয়া অথবা ধ্বংস করে ফেলতে হবে’ এবং এ ক্ষেত্রে এই চালানের কোনো ব্যয়ই যুক্তরাষ্ট্রের সরকার বহন করবে না।
ইকোনমিক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মুম্বাইয়ে অবস্থিত একটি কেন্দ্রে ওই বিকিরণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছিল।
সে সময় যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি দপ্তরের একজন প্রতিনিধি পুরো প্রক্রিয়া তদারকি করেছিলেন। মার্কিন ওই প্রতিনিধি পিপিকিউ২০৩ ফর্ম যাচাই ও অনুমোদন দেন, যা যুক্তরাষ্ট্রে আম রপ্তানির জন্য বাধ্যতামূলক। মুম্বাইয়ের একজন রপ্তানিকারক বলেন, ‘আমরা সেই কেন্দ্রের ভুলের জন্য শাস্তি ভোগ করছি।’
দেশটির অপর এক রপ্তানিকারক বলেছেন, তার আমের চালান যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের শর্ত পূরণে ব্যর্থ হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। বিশেষ করে বিকিরণ প্রক্রিয়াসংক্রান্ত শর্ত পূরণ করা হয়নি বলে যুক্তরাষ্ট্রের কর্তৃপক্ষ আমাদের জানিয়েছে। এই রপ্তানিকারক বলেন, তার পাঠানো আমের চালান গত ৯ থেকে ১১ মে পর্যন্ত লস অ্যাঞ্জেলেসের বিমানবন্দরে আটকা ছিল। পরবর্তী সময়ে তা ধ্বংসের নির্দেশ দেওয়া হয়।
সুত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া