ঢাকা ০৫:৪৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ অগাস্ট ২০২৫, ১৩ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজঃ
চব্বিশের বিজয়ীদের কার্যকলাপে দেশের মানুষ অতিষ্ঠ : কাদের সিদ্দিকী এবার যুক্তরাজ্য থেকে ফেরত পাঠানো হচ্ছে অবৈধ বাংলাদেশি অভিবাসীদের ১.২৫ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ প্রস্তাব পেয়েছে বাংলাদেশ সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনায় ডিআরইউ’র নিন্দা ও প্রতিবাদ দেশের তিনটি স্থলবন্দর বন্ধ করার প্রস্তাব অনুমোদন ভিক্ষুক বেশে অভিনব কৌশলে চুরি, ১০ লক্ষাধিক টাকার চোরাই মালামালসহ আটক লভ্যাংশ দেবে না ইসলামী ব্যাংক যারা নির্বাচনে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করবে তারা নিশ্চিহ্ন হবে: ফখরুল উপদেষ্টা হতে চিকিৎসকের ২০০ কোটি টাকা লেনদেন, দুদকের অভিযান প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি চলছে

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ১৯ সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার দাবি

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
  • Update Time : ০৮:১৩:৩৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ অগাস্ট ২০২৫
  • / ১৩১ Time View

গত বছরের ৫ই আগস্টের পর ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কর্মরত জেলার ১৯ সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা এবং বিভিন্ন ট্যাগ লাগিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কুরুচিপূর্ণ লেখালেখিসহ পেশাদার সাংবাদিকদের চরিত্র হননের প্রতিবাদে কর্মসূচি পালন করেছেন জেলার সংবাদকর্মীরা।
ধারাবাহিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে প্রতিকার চেয়ে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, এনএসআইয়ের মহাপরিচালক, পুলিশের মহাপরিদর্শক, র‍্যাবের মহাপরিচালক ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক বরাবর স্মারকলিপি দেন সাংবাদিকরা।

স্মারকলিপিতে বলা হয়, গত বছরের ৫ই আগস্টে সরকার পরিবর্তনের পর জেলা ও উপজেলায় কিছু সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মিথ্যা, বানোয়াট মামলা রুজু করে সাংবাদিকদের হয়রানি করা হচ্ছে। এতে করে সাংবাদিক এবং তার পরিবারের লোকজন ভয়ভীতির মধ্যে দিনযাপন করছেন।
স্মারকলিপিতে সাংবাদিকেরা দাবি করেন, ‘পেশাদার সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে দায়ের করা প্রতিটি মামলার অভিযোগ পর্যালোচনা করলে অসত্য, অবান্তর বলেই প্রমাণিত হবে। এছাড়া কিছু অসাধু ব্যক্তি, দুষ্কৃতকারী ফেসবুক, ইউটিউবে বিকৃত ও কুরুচিপূর্ণ শব্দ ব্যবহারের মাধ্যমে পেশাদার সাংবাদিক এবং তাদের পরিবারকে টার্গেট করে হেয়প্রতিপন্ন ও মানসিকভাবে নির্যাতন করছে।

স্মারকলিপিতে আরও উল্লেখ করা হয়, হয়রানির শিকার সাংবাদিকদের মধ্যে গাজী টিভির জেলা প্রতিনিধি জহির রায়হানকে ডিবি পুলিশ গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠিয়েছে। এছাড়া গত ৬ই জুলাই আখাউড়ায় দৈনিক যুগান্তরের স্টাফ রিপোর্টার ফজলে রাব্বী ও আরটিভির আখাউড়া প্রতিনিধি সাদ্দাম হোসেনের বিরুদ্ধে ইমিগ্রেশন পুলিশের বিরুদ্ধে ঘুষ-দুর্নীতির সংবাদ প্রকাশের জেরে ‘রোজায় ইফতারের জন্য চাঁদা চাওয়ার অভিযোগ এনে’ ইমিগ্রেশন পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আবদুস সাত্তার বাদী হয়ে আখাউড়া থানায় চাঁদাবাজি ও মানহানির মামলা দায়ের করেন। মামলা নং-১৪, তারিখ:১২/০৮/২৫ইং। বিজয়নগরে ফসলী জমির মাটি কাটার রিপোর্ট করায় মামলা দেয়া হয় দেশরূপান্তর পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি মাঈনুদ্দিন মো. রুবেলের বিরুদ্ধে।

এছাড়া গত বছরের ৫ আগস্টপরবর্তী ঘটনার ১১ মাস পর গত ৬ জুলাই ব্রাহ্মণবাড়িয়া কর্মরত দৈনিক কালের কণ্ঠের জেলা প্রতিনিধি বিশ্বজিৎ পাল বাবু ও যমুনা টিভি ও যুগান্তরের আখাউড়া প্রতিনিধি মহিউদ্দিন মিশুর বিরুদ্ধে লোকসমাগম করে এক ব্যক্তিকে মারধরের অভিযোগ এনে রাজধানীর বিমানবন্দর থানায় একটি হয়রানিমূলক মামলা দায়ের করা হয়েছে।

স্মারকলিপিতে আরও উল্লেখ করা হয়, গত ৫ আগস্ট পরবর্তী সারা দেশে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে বিশেষ করে মফস্বল সাংবাদিকরা যখন ভুয়া মামলায় দিশেহারা, তখন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আপনি জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী নির্দেশ দিয়েছিলেন যে, কোনো সাংবাদিকের বিরুদ্ধে তদন্ত না করে মামলা বা গ্রেফতার করা হবে না।
কিন্তু ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আপনার এ আদেশ উপেক্ষিত। সাংবাদিকেরা প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হচ্ছেন।
সাংবাদিকদের এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দিদারুল আলম জানান, সব অপকর্মের বিরুদ্ধে তিনি পেশাদার সাংবাদিকদের পক্ষে অবস্থান করবেন। পাশাপাশি গত বছরের ৫ আগস্টের পরে দায়েরকৃত রাজনৈতিক মামলায় কোনো পেশাদার সাংবাদিক যেন অযথা হয়রানি শিকার না হন সেই বিষয়টিও তিনি গুরুত্ব সহকারে দেখার আশ্বাস দেন।

এ সময় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি জাবেদ রহিম বিজন, সাধারণ সম্পাদক বাহারুল ইসলাম মোল্লাসহ জেলায় কর্মরত প্রিন্ট এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়ার অর্ধশতাধিক গণমাধ্যমকর্মী উপস্থিত ছিলেন।

Please Share This Post in Your Social Media

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ১৯ সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার দাবি

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
Update Time : ০৮:১৩:৩৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ অগাস্ট ২০২৫

গত বছরের ৫ই আগস্টের পর ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কর্মরত জেলার ১৯ সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা এবং বিভিন্ন ট্যাগ লাগিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কুরুচিপূর্ণ লেখালেখিসহ পেশাদার সাংবাদিকদের চরিত্র হননের প্রতিবাদে কর্মসূচি পালন করেছেন জেলার সংবাদকর্মীরা।
ধারাবাহিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে প্রতিকার চেয়ে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, এনএসআইয়ের মহাপরিচালক, পুলিশের মহাপরিদর্শক, র‍্যাবের মহাপরিচালক ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক বরাবর স্মারকলিপি দেন সাংবাদিকরা।

স্মারকলিপিতে বলা হয়, গত বছরের ৫ই আগস্টে সরকার পরিবর্তনের পর জেলা ও উপজেলায় কিছু সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মিথ্যা, বানোয়াট মামলা রুজু করে সাংবাদিকদের হয়রানি করা হচ্ছে। এতে করে সাংবাদিক এবং তার পরিবারের লোকজন ভয়ভীতির মধ্যে দিনযাপন করছেন।
স্মারকলিপিতে সাংবাদিকেরা দাবি করেন, ‘পেশাদার সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে দায়ের করা প্রতিটি মামলার অভিযোগ পর্যালোচনা করলে অসত্য, অবান্তর বলেই প্রমাণিত হবে। এছাড়া কিছু অসাধু ব্যক্তি, দুষ্কৃতকারী ফেসবুক, ইউটিউবে বিকৃত ও কুরুচিপূর্ণ শব্দ ব্যবহারের মাধ্যমে পেশাদার সাংবাদিক এবং তাদের পরিবারকে টার্গেট করে হেয়প্রতিপন্ন ও মানসিকভাবে নির্যাতন করছে।

স্মারকলিপিতে আরও উল্লেখ করা হয়, হয়রানির শিকার সাংবাদিকদের মধ্যে গাজী টিভির জেলা প্রতিনিধি জহির রায়হানকে ডিবি পুলিশ গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠিয়েছে। এছাড়া গত ৬ই জুলাই আখাউড়ায় দৈনিক যুগান্তরের স্টাফ রিপোর্টার ফজলে রাব্বী ও আরটিভির আখাউড়া প্রতিনিধি সাদ্দাম হোসেনের বিরুদ্ধে ইমিগ্রেশন পুলিশের বিরুদ্ধে ঘুষ-দুর্নীতির সংবাদ প্রকাশের জেরে ‘রোজায় ইফতারের জন্য চাঁদা চাওয়ার অভিযোগ এনে’ ইমিগ্রেশন পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আবদুস সাত্তার বাদী হয়ে আখাউড়া থানায় চাঁদাবাজি ও মানহানির মামলা দায়ের করেন। মামলা নং-১৪, তারিখ:১২/০৮/২৫ইং। বিজয়নগরে ফসলী জমির মাটি কাটার রিপোর্ট করায় মামলা দেয়া হয় দেশরূপান্তর পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি মাঈনুদ্দিন মো. রুবেলের বিরুদ্ধে।

এছাড়া গত বছরের ৫ আগস্টপরবর্তী ঘটনার ১১ মাস পর গত ৬ জুলাই ব্রাহ্মণবাড়িয়া কর্মরত দৈনিক কালের কণ্ঠের জেলা প্রতিনিধি বিশ্বজিৎ পাল বাবু ও যমুনা টিভি ও যুগান্তরের আখাউড়া প্রতিনিধি মহিউদ্দিন মিশুর বিরুদ্ধে লোকসমাগম করে এক ব্যক্তিকে মারধরের অভিযোগ এনে রাজধানীর বিমানবন্দর থানায় একটি হয়রানিমূলক মামলা দায়ের করা হয়েছে।

স্মারকলিপিতে আরও উল্লেখ করা হয়, গত ৫ আগস্ট পরবর্তী সারা দেশে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে বিশেষ করে মফস্বল সাংবাদিকরা যখন ভুয়া মামলায় দিশেহারা, তখন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আপনি জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী নির্দেশ দিয়েছিলেন যে, কোনো সাংবাদিকের বিরুদ্ধে তদন্ত না করে মামলা বা গ্রেফতার করা হবে না।
কিন্তু ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আপনার এ আদেশ উপেক্ষিত। সাংবাদিকেরা প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হচ্ছেন।
সাংবাদিকদের এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দিদারুল আলম জানান, সব অপকর্মের বিরুদ্ধে তিনি পেশাদার সাংবাদিকদের পক্ষে অবস্থান করবেন। পাশাপাশি গত বছরের ৫ আগস্টের পরে দায়েরকৃত রাজনৈতিক মামলায় কোনো পেশাদার সাংবাদিক যেন অযথা হয়রানি শিকার না হন সেই বিষয়টিও তিনি গুরুত্ব সহকারে দেখার আশ্বাস দেন।

এ সময় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি জাবেদ রহিম বিজন, সাধারণ সম্পাদক বাহারুল ইসলাম মোল্লাসহ জেলায় কর্মরত প্রিন্ট এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়ার অর্ধশতাধিক গণমাধ্যমকর্মী উপস্থিত ছিলেন।