ঢাকা ০৯:৫৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৬ জুন ২০২৫, ২৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজঃ
ব্রাহ্মণবাড়িয়া চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ৪ বিচারকের বিদায় সংবর্ধনা কিসের পাওয়ারে ট্রিপল মার্ডারের আসামি জহিরুল বাহিরে টঙ্গীর জাভান হোটেলে পুলিশের অভিযানে বিদেশি মদ জব্দ, গ্রেফতার ৭ ছাত্র-জনতার উপর হামলা মামলার আসামী ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার ইরানি দম্পতির ওপর হামলা, কারাগারে ৪ আসামি চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের মাসিক নিষ্পত্তি সভা অনুষ্ঠিত রোহিঙ্গা ক্যাম্পের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা! ঢাকায় যুক্ত হচ্ছে ৪০০ ইলেকট্রিক বাস! ছিনতাইকারীর কবল থেকে ইরানী দম্পতিকে উদ্ধার করলো সেনাবাহিনী রোহিঙ্গা ক্যাম্প থাকলে স্থানীয়দের চাকরি থাকবে এটাই শেষ কথা!

বিয়ের প্রলোভনে ছাত্রীর সঙ্গে অনৈতিক সর্ম্পক, জগন্নাথের শিক্ষককে অব্যাহতি

মো রাকিব হাসান, জবি প্রতিনিধি
  • Update Time : ০১:৪৩:১৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩
  • / ৩৪০ Time View

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) গণিত বিভাগের এক নারী শিক্ষার্থীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগে একই বিভাগের এক শিক্ষককে বিভাগীয় সকল কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে।

সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে গনিত বিভাগের একাডেমিক সভায় সর্বসম্মতি ক্রমে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সেই সাথে বিভাগের পক্ষ থেকে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর লিখিত আবেদন দেয়া হয়েছে।

অভিযুক্ত ওই শিক্ষক বিশ্ববিদ্যালয়ের গনিত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এ. বি. এস. মাণিক মুনসী এবং ভুক্তভোগী ওই নারী শিক্ষার্থী একই বিভাগের বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রী।

জানা যায়, অভিযুক্ত ওই শিক্ষক তার নিজ বিভাগের শিক্ষার্থীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে দীর্ঘ এক বছর প্রেম ও সম্পর্কে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেন। সেই সঙ্গে ওই শিক্ষক তার স্ত্রীর সাঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়েছে বলে ভুক্তভোগী ছাত্রীকে বিয়ে করার আশ্বাস দেন।

কিন্তু গত বুধবার ওই শিক্ষকের নিজ কক্ষে ওই ছাত্রীসহ দীর্ঘসময় দরজা বন্ধ অবস্থায় থাকে। বিষয়টি বিভাগের অন্য একজন শিক্ষকের নজরে আসলে ঘটনাটি প্রকাশ হয়। এ ঘটনার পর ওই নারী শিক্ষার্থী শিক্ষককে বিয়ে করতে বললে তিনি আপত্তি জানায়।

পরবর্তীতে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বিভাগীয় চেয়ারম্যান বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গনিত বিভাগের একজন শিক্ষক বলেন, ‘তিনি ওই শিক্ষার্থীর সাথে কিভাবে এমন একটি জঘন্য কাজ করতে পেরেছে আমরা সবাই হতবাক। যদি না বিষয়টি হাতেনাতে ধরা না পড়তো তাহলে হয়তো আড়ালেই থাকতো। তিনি ওই শিক্ষার্থীকে মধু এবং পানি পড়া পর্যন্ত খাইয়েছেন, কারণ ওই শিক্ষার্থীর আচরণ নাকি অস্বাভাবিক- আমাদের বলেছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী প্রথমে ঐ শিক্ষকের কাছে কাউন্সিলিং এবং বিভিন্ন পরামর্শের জন্য আসেন। এই সুযোগে ওই শিক্ষক ছাত্রীর সাঙ্গে সখ্যতা গড়ে তোলেন এবং একপর্যায়ে শিক্ষার্থীকে বিয়ে করবে বলে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন।’

এ বিষয়ে গনিত বিভাগের অভিযুক্ত শিক্ষক সহকারী অধ্যাপক এ. বি. এস. মাণিক মুনসী বলেন, ‘আমি এ বিষয় নিয়ে আপনাকে কিছু বলতে চাচ্ছি না। যা বলার আমার বিভাগে চেয়ারম্যানকে বলব।’

অভিযোগের বিষয়ে গণিত বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. শরিফুল আলম বলেন, আমাদের বিভাগের একজন মেয়ে শিক্ষার্থী লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন শিক্ষকের বিরুদ্ধে। আমরা বিষয়টি বিভাগের একাডেমিক সভায় তুলেছি এবং প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় ওই শিক্ষককে বিভাগের সকল একাডেমিক কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে। আমরা বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্ত এবং অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বিভাগের পক্ষ থেকে উপাচার্য বরাবর লিখিত আবেদন দিয়েছি।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদ বলেন, ‘আমরা গণিত বিভাগের পক্ষ থেকে উপাচার্য বরাবর একটি লিখিত আবেদন পেয়েছি। উপাচার্য অসুস্থ হওয়ায় তাঁরা আবেদনটি আমাকে দিয়েছে। বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় আগামীকাল সকালে উপাচার্য মহোদয়ের সাথে বসে সিদ্ধান্ত নিব।’

তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন মোতাবেক তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে এবং অভিযুক্তের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ হলে কঠোর শাস্তি প্রদান করা হবে। এ বিষয়ে কোন ছাড় দেয়া হবে না।

Please Share This Post in Your Social Media

বিয়ের প্রলোভনে ছাত্রীর সঙ্গে অনৈতিক সর্ম্পক, জগন্নাথের শিক্ষককে অব্যাহতি

মো রাকিব হাসান, জবি প্রতিনিধি
Update Time : ০১:৪৩:১৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) গণিত বিভাগের এক নারী শিক্ষার্থীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগে একই বিভাগের এক শিক্ষককে বিভাগীয় সকল কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে।

সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে গনিত বিভাগের একাডেমিক সভায় সর্বসম্মতি ক্রমে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সেই সাথে বিভাগের পক্ষ থেকে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর লিখিত আবেদন দেয়া হয়েছে।

অভিযুক্ত ওই শিক্ষক বিশ্ববিদ্যালয়ের গনিত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এ. বি. এস. মাণিক মুনসী এবং ভুক্তভোগী ওই নারী শিক্ষার্থী একই বিভাগের বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রী।

জানা যায়, অভিযুক্ত ওই শিক্ষক তার নিজ বিভাগের শিক্ষার্থীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে দীর্ঘ এক বছর প্রেম ও সম্পর্কে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেন। সেই সঙ্গে ওই শিক্ষক তার স্ত্রীর সাঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়েছে বলে ভুক্তভোগী ছাত্রীকে বিয়ে করার আশ্বাস দেন।

কিন্তু গত বুধবার ওই শিক্ষকের নিজ কক্ষে ওই ছাত্রীসহ দীর্ঘসময় দরজা বন্ধ অবস্থায় থাকে। বিষয়টি বিভাগের অন্য একজন শিক্ষকের নজরে আসলে ঘটনাটি প্রকাশ হয়। এ ঘটনার পর ওই নারী শিক্ষার্থী শিক্ষককে বিয়ে করতে বললে তিনি আপত্তি জানায়।

পরবর্তীতে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বিভাগীয় চেয়ারম্যান বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গনিত বিভাগের একজন শিক্ষক বলেন, ‘তিনি ওই শিক্ষার্থীর সাথে কিভাবে এমন একটি জঘন্য কাজ করতে পেরেছে আমরা সবাই হতবাক। যদি না বিষয়টি হাতেনাতে ধরা না পড়তো তাহলে হয়তো আড়ালেই থাকতো। তিনি ওই শিক্ষার্থীকে মধু এবং পানি পড়া পর্যন্ত খাইয়েছেন, কারণ ওই শিক্ষার্থীর আচরণ নাকি অস্বাভাবিক- আমাদের বলেছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী প্রথমে ঐ শিক্ষকের কাছে কাউন্সিলিং এবং বিভিন্ন পরামর্শের জন্য আসেন। এই সুযোগে ওই শিক্ষক ছাত্রীর সাঙ্গে সখ্যতা গড়ে তোলেন এবং একপর্যায়ে শিক্ষার্থীকে বিয়ে করবে বলে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন।’

এ বিষয়ে গনিত বিভাগের অভিযুক্ত শিক্ষক সহকারী অধ্যাপক এ. বি. এস. মাণিক মুনসী বলেন, ‘আমি এ বিষয় নিয়ে আপনাকে কিছু বলতে চাচ্ছি না। যা বলার আমার বিভাগে চেয়ারম্যানকে বলব।’

অভিযোগের বিষয়ে গণিত বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. শরিফুল আলম বলেন, আমাদের বিভাগের একজন মেয়ে শিক্ষার্থী লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন শিক্ষকের বিরুদ্ধে। আমরা বিষয়টি বিভাগের একাডেমিক সভায় তুলেছি এবং প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় ওই শিক্ষককে বিভাগের সকল একাডেমিক কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে। আমরা বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্ত এবং অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বিভাগের পক্ষ থেকে উপাচার্য বরাবর লিখিত আবেদন দিয়েছি।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদ বলেন, ‘আমরা গণিত বিভাগের পক্ষ থেকে উপাচার্য বরাবর একটি লিখিত আবেদন পেয়েছি। উপাচার্য অসুস্থ হওয়ায় তাঁরা আবেদনটি আমাকে দিয়েছে। বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় আগামীকাল সকালে উপাচার্য মহোদয়ের সাথে বসে সিদ্ধান্ত নিব।’

তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন মোতাবেক তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে এবং অভিযুক্তের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ হলে কঠোর শাস্তি প্রদান করা হবে। এ বিষয়ে কোন ছাড় দেয়া হবে না।