ঢাকা ০৪:১৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিদ্যালয় পরিদর্শনে ইউএনও, শিক্ষকের স্বজনের হামলায় আহত ৩ শিক্ষার্থী

লাতিফুল আজম, কিশোরগঞ্জ(নীলফামারী)প্রতিনিধি
  • Update Time : ১০:২৯:১৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৮ নভেম্বর ২০২৪
  • / ৬ Time View

নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে গাড়াগ্রাম দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের সাময়িক বরখাস্ত হওয়া প্রধান শিক্ষক আব্দুর সাত্তারের স্বজনদের হামলার তিনজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।

এঘটনায় আহত শিক্ষার্থীরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চিকিৎসাধীন আছেন।

বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মৌসুমি হক গাড়াগ্রাম দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয় পরিদর্শনকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটে।

আহত শিক্ষার্থীরা হলেন- মাগুড়া উত্তর পাড়া গ্রামের বাবু মিয়ার ছেলে ও গাড়াগ্রাম দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যায়ের ৮ম শ্রেণির ছাত্র বুলবুল আহমেদ (১৫),গাড়াগ্রাম বাসস্ট্যান্ড এলাকার নাজমুল ইসলামের ছেলে ও ৭ম শ্রেনির শিক্ষার্থী রাকিবুজ্জামান (১৩) ও গাড়াগ্রাম জুম্মারপাড় এলাকার প্রাক্তন শিক্ষার্থী গোলাম আজম (২৭)।

স্থানীয় ও শিক্ষার্থী সূত্রে জানা যায়,শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর সাত্তারের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ এনে পদত্যাগের দাবিতে মানববন্ধন করে ইউএনও বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।পরে তিনি সেটি আমলে নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করে অনিয়মের সত্যতা পাওয়ায় সেই প্রধান শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করেন।পরে ওই বিদ্যালয়ে আব্দুর সালাম আজাদ নামে এক শিক্ষক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন।

এতে গতকাল বৃহস্পতিবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)মৌসুমি হক ওই বিদ্যালয়ে পরিদর্শনে যান। সেখানে গিয়ে বিদ্যালয়ের ক্লাসে ঘুরে শিক্ষার্থীদের খোঁজ খবর নিয়ে ফেরার পথে বিদ্যালয়ের কমিটির অভিভাবক সদস্যকে বিদ্যালয়ের উন্নয়নের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি সে সময়ে বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়কে নষ্ট করেছে বলে জানান। এসময়ে শিক্ষার্থীরা ও সাময়িক বরখাস্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুস সাত্তারের স্বজনদের মধ্যে বাকবিতন্ডা শুরু হয়।তৎক্ষণাৎ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।

আরও জানা যায়, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঘটনাস্থল ত্যাগ করার পরে বরখাস্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুর সাত্তারের স্বজনরা দলবদ্ধ হয়ে বিদ্যালয়ে এসে শিক্ষার্থীদের মারধর শুরু করেন।পরে বিষয়টি পুলিশকে জানালে তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনে আহত শিক্ষার্থীদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন।পরে আবার শিক্ষকের স্বজনেরা হাসপাতালে এতে হট্টগোল শুরু করলে পুলিশ সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে একজনকে আটক করেন।

এবিষয়ে গাড়াগ্রাম দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী  ছোটন বলেন, বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করার পরে তদন্ত করে ইউএনও সাহেব প্রধান শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করেন।পরে আমরা প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা মিলে বিদ্যালয়ের বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক কাজ করেছি।আমরা কয়েকদিন আগে ইউএনও স্যারকে স্কুল পরিদর্শনে আসার জন্য অনুরোধ করেছিলাম।পরে তিনি গতকাল আমাদের স্কুল পরিদর্শনে এসেছিলো। তখন তিনি স্কুলের বিভিন্ন ক্লাস ঘুরে শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলেন।পরে তিনি চলে যাওয়ার সময়ে কমিটির একজন অভিভাবক সদস্যকে স্কুলের বিভিন্ন উন্নয়নের বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীরা স্কুলকে শেষ করে দিল।এ কথা বলার সাথেসাথে শিক্ষার্থীদের সাথে ওই অভিভাবক সদস্য ও বরখাস্ত শিক্ষকদের স্বজনদের তর্ক শুরু হয়।এসময়ে ইউএনও স্যার সেখান থেকে চলে যান।তিনি চলে যাওয়ার পরে বরখাস্ত হওয়া প্রধান শিক্ষকের আত্মীয় ও কয়েকজন এসে শিক্ষার্থীদের মারধর শুরু করেন। পরে আমি থানায় এবং সেনাবাহিনীকে বিষয়টি জানালে তারা এখানে এসে মারামারি থামান। মারামারিতে তিনজন শিক্ষার্থী আহত হলে পুলিশ তাদের নিয়ে গিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করান। পরে আবার প্রধান শিক্ষকের স্বজনেরা হাসপাতালের এসে চিল্লাচিল্লি শুরু করেন।এসময়ে আমি থানায় জানালে পুলিশ এসে একজনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। এঘটনায় শিক্ষার্থীদের পক্ষে একজন থানায় অভিযোগ দিয়েছে।

 

 

থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশরাফুল ইসলাম জানায়, গাড়াগ্রাম দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে ইউএনও সাহেব পরিদর্শনে গেয়েছিলো।

তিনি আসার পরে বরখাস্ত হওয়া শিক্ষকের স্বজনদের সাথে শিক্ষার্থীদের মারামারির ঘটনা ঘটে। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।এসময়ে আহত তিনজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

পরে বরখাস্ত প্রধান শিক্ষকের ভাতিজা হাসপাতালে গিয়ে শিক্ষার্থীদের সাথে বিশৃঙ্খলা করলে আমরা তাকে সেভ করে থানায় নিয়ে আসি। বিষয়টি এখনো মিমাংসা হয়নি এক পক্ষ লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)মৌসুমি হক  বলেন, আমি পরিদর্শন শেষ করে চলে এসেছি তারপর মারপিট হয়েছে বিশৃঙ্খলা হয়েছে।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

বিদ্যালয় পরিদর্শনে ইউএনও, শিক্ষকের স্বজনের হামলায় আহত ৩ শিক্ষার্থী

লাতিফুল আজম, কিশোরগঞ্জ(নীলফামারী)প্রতিনিধি
Update Time : ১০:২৯:১৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৮ নভেম্বর ২০২৪

নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে গাড়াগ্রাম দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের সাময়িক বরখাস্ত হওয়া প্রধান শিক্ষক আব্দুর সাত্তারের স্বজনদের হামলার তিনজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।

এঘটনায় আহত শিক্ষার্থীরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চিকিৎসাধীন আছেন।

বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মৌসুমি হক গাড়াগ্রাম দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয় পরিদর্শনকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটে।

আহত শিক্ষার্থীরা হলেন- মাগুড়া উত্তর পাড়া গ্রামের বাবু মিয়ার ছেলে ও গাড়াগ্রাম দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যায়ের ৮ম শ্রেণির ছাত্র বুলবুল আহমেদ (১৫),গাড়াগ্রাম বাসস্ট্যান্ড এলাকার নাজমুল ইসলামের ছেলে ও ৭ম শ্রেনির শিক্ষার্থী রাকিবুজ্জামান (১৩) ও গাড়াগ্রাম জুম্মারপাড় এলাকার প্রাক্তন শিক্ষার্থী গোলাম আজম (২৭)।

স্থানীয় ও শিক্ষার্থী সূত্রে জানা যায়,শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর সাত্তারের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ এনে পদত্যাগের দাবিতে মানববন্ধন করে ইউএনও বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।পরে তিনি সেটি আমলে নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করে অনিয়মের সত্যতা পাওয়ায় সেই প্রধান শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করেন।পরে ওই বিদ্যালয়ে আব্দুর সালাম আজাদ নামে এক শিক্ষক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন।

এতে গতকাল বৃহস্পতিবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)মৌসুমি হক ওই বিদ্যালয়ে পরিদর্শনে যান। সেখানে গিয়ে বিদ্যালয়ের ক্লাসে ঘুরে শিক্ষার্থীদের খোঁজ খবর নিয়ে ফেরার পথে বিদ্যালয়ের কমিটির অভিভাবক সদস্যকে বিদ্যালয়ের উন্নয়নের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি সে সময়ে বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়কে নষ্ট করেছে বলে জানান। এসময়ে শিক্ষার্থীরা ও সাময়িক বরখাস্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুস সাত্তারের স্বজনদের মধ্যে বাকবিতন্ডা শুরু হয়।তৎক্ষণাৎ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।

আরও জানা যায়, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঘটনাস্থল ত্যাগ করার পরে বরখাস্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুর সাত্তারের স্বজনরা দলবদ্ধ হয়ে বিদ্যালয়ে এসে শিক্ষার্থীদের মারধর শুরু করেন।পরে বিষয়টি পুলিশকে জানালে তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনে আহত শিক্ষার্থীদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন।পরে আবার শিক্ষকের স্বজনেরা হাসপাতালে এতে হট্টগোল শুরু করলে পুলিশ সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে একজনকে আটক করেন।

এবিষয়ে গাড়াগ্রাম দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী  ছোটন বলেন, বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করার পরে তদন্ত করে ইউএনও সাহেব প্রধান শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করেন।পরে আমরা প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা মিলে বিদ্যালয়ের বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক কাজ করেছি।আমরা কয়েকদিন আগে ইউএনও স্যারকে স্কুল পরিদর্শনে আসার জন্য অনুরোধ করেছিলাম।পরে তিনি গতকাল আমাদের স্কুল পরিদর্শনে এসেছিলো। তখন তিনি স্কুলের বিভিন্ন ক্লাস ঘুরে শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলেন।পরে তিনি চলে যাওয়ার সময়ে কমিটির একজন অভিভাবক সদস্যকে স্কুলের বিভিন্ন উন্নয়নের বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীরা স্কুলকে শেষ করে দিল।এ কথা বলার সাথেসাথে শিক্ষার্থীদের সাথে ওই অভিভাবক সদস্য ও বরখাস্ত শিক্ষকদের স্বজনদের তর্ক শুরু হয়।এসময়ে ইউএনও স্যার সেখান থেকে চলে যান।তিনি চলে যাওয়ার পরে বরখাস্ত হওয়া প্রধান শিক্ষকের আত্মীয় ও কয়েকজন এসে শিক্ষার্থীদের মারধর শুরু করেন। পরে আমি থানায় এবং সেনাবাহিনীকে বিষয়টি জানালে তারা এখানে এসে মারামারি থামান। মারামারিতে তিনজন শিক্ষার্থী আহত হলে পুলিশ তাদের নিয়ে গিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করান। পরে আবার প্রধান শিক্ষকের স্বজনেরা হাসপাতালের এসে চিল্লাচিল্লি শুরু করেন।এসময়ে আমি থানায় জানালে পুলিশ এসে একজনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। এঘটনায় শিক্ষার্থীদের পক্ষে একজন থানায় অভিযোগ দিয়েছে।

 

 

থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশরাফুল ইসলাম জানায়, গাড়াগ্রাম দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে ইউএনও সাহেব পরিদর্শনে গেয়েছিলো।

তিনি আসার পরে বরখাস্ত হওয়া শিক্ষকের স্বজনদের সাথে শিক্ষার্থীদের মারামারির ঘটনা ঘটে। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।এসময়ে আহত তিনজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

পরে বরখাস্ত প্রধান শিক্ষকের ভাতিজা হাসপাতালে গিয়ে শিক্ষার্থীদের সাথে বিশৃঙ্খলা করলে আমরা তাকে সেভ করে থানায় নিয়ে আসি। বিষয়টি এখনো মিমাংসা হয়নি এক পক্ষ লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)মৌসুমি হক  বলেন, আমি পরিদর্শন শেষ করে চলে এসেছি তারপর মারপিট হয়েছে বিশৃঙ্খলা হয়েছে।