ঢাকা ১২:১৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৬ মে ২০২৫, ২২ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বিদেশি সিনেমায় ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবেন ট্রাম্প

আন্তর্জাতিক
  • Update Time : ০৫:০১:০৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ৫ মে ২০২৫
  • / ২১ Time View

যুক্তরাষ্ট্রে নির্মিত নয় এমন সিনেমার ওপর ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবেন বলে জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধিকে এ ধরণের শুল্ক আরোপের প্রক্রিয়া শুরুর জন্য দায়িত্ব দিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন। আমেরিকার সিনেমা শিল্প দ্রুত মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে এমন কারণ দেখিয়েই তিনি এ ধরনের পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানিয়েছেন। খবর বিবিসির।

এজন্য তিনি অন্য দেশগুলোর ‌‘সমন্বিত প্রচেষ্টা’কে দায়ি করে বলেন, তারা সিনেমা নির্মাতা ও স্টুডিওগুলোকে নানা ধরনের প্রণোদনা অফার করছে এবং একে তিনি ‘জাতীয় নিরাপত্তা হুমকি’ বলে উল্লেখ করেন। সামাজিক মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে এক পোস্টে তিনি বলেন, আমরা আমেরিকায় বানানো সিনেমাকে আবার মহান করতে চাই।

চলতি বছরের জানুয়ারিতে দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই ট্রাম্প বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন দেশের ওপর শুল্ক আরোপ করেছেন। তার যুক্তি হলো, এই শুল্ক যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদন বাড়াবে এবং নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে। যদিও এর ফলে বৈশ্বিক অর্থনীতি এক ধরনের নৈরাজ্যের মধ্যে পড়েছে এবং বিশ্বজুড়ে পণ্যের দাম বেড়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

দ্বিতীয় বার প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার আগেই ট্রাম্প তিন চলচ্চিত্র তারকা- জন ভইট, মেল গিবসন ও সিলভেস্টার স্টালোনকে বিশেষ দূত হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। তাদের কাজ ছিল হলিউডের ব্যবসার সুযোগকে প্রমোট করা। ট্রাম্পের মতে, হলিউড মহান একটি জায়গা কিন্তু এখানে অনেক সমস্যা আছে।

তিনি বলেন, তারা আমার দূত হিসেবে কাজ করবেন যার উদ্দেশ্য হলো হলিউডকে ফিরিয়ে আনা যেটা গত চার বছরে ব্যাপক ব্যবসা হারিয়েছে। বৃহৎ, ভালো এবং আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে শক্তিশালী অবস্থায় ফিরিয়ে আনা।

সিনেমা শিল্প গবেষণা প্রতিষ্ঠান প্রডপ্রোর মতে, বৈশ্বিক নানা চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের সবচেয়ে বড় সিনেমা তৈরির কেন্দ্র। এর সাম্প্রতিক রিপোর্টে দেখা গেছে, দেশটি গত বছর সিনেমা তৈরিতে প্রায় সাড়ে ১৪ বিলিয়ন ডলার খরচ করেছে, যা ২০২২ সালের তুলনায় ২৬ শতাংশ কম।

বিপরীতে এই খাতে অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, কানাডা ও যুক্তরাজ্য ওই একই সময়ে আরও বেশি বিনিয়োগ পেয়েছে বলে ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে। গত এপ্রিলে চীন বলেছে, দেশটিতে আমেরিকান সিনেমার প্রবেশের জন্য যে কোটা ঠিক করা আছে, সেটি তারা কমিয়ে দিতে যাচ্ছে।

চীনের সিনেমা প্রশাসন বলছে, চীনের যুক্তরাষ্ট্র সরকারের শুল্কের অপব্যবহারের ভুল সিদ্ধান্ত নিশ্চিতভাবেই আমেরিকান সিনেমার দর্শক কমাতে ভূমিকা রাখবে। তারা বলছে, আমরা বাজার নীতি অনুসরণ করবো, দর্শকের পছন্দকে সম্মান করবো এবং ধীরে ধীরে আমেরিকান ফিল্ম আমদানি কমাবো।

ট্রাম্প শুল্ক ব্যবহার করে চীনের ওপর কঠিন আক্রমণ করেছেন। চীন থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর ১৪৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করেছেন। তার প্রশাসন বলছে, কিছু চীনা পণ্যে শুল্ক ২৪৫ শতাংশ পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে।

অন্য দেশগুলো এখন যুক্তরাষ্ট্রের ১০ শতাংশ শুল্ক মোকাবিলা করছে। এর চেয়ে বেশি শুল্ক জুলাই পর্যন্ত স্থগিত করা আছে। রোববার (৪ মে) এয়ারফোর্স ওয়ানে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প বলেন, তিনি চীনসহ অনেক দেশের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তির বিষয়ে কথা বলেছেন।

তবে চীনা প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কথা বলার কোনো পরিকল্পনা নেই বলেও জানিয়েছেন তিনি। চলতি সপ্তাহে কোনো বাণিজ্য চুক্তির ঘোষণা আসবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, হতে পারে। তবে এ বিষয়ে তিনি বিস্তারিত কিছু বলেননি।

এর আগে চীনের ওপর শুল্ক কমিয়ে আনারও ইঙ্গিত দিয়েছেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, এক পর্যায়ে আমি এটি কমিয়ে আনবো। কারণ এটা ছাড়া আপনি তাদের সঙ্গে ব্যবসা করতে পারবেন না। আর তারা ব্যবসা করতে চায়।

Please Share This Post in Your Social Media

বিদেশি সিনেমায় ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবেন ট্রাম্প

আন্তর্জাতিক
Update Time : ০৫:০১:০৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ৫ মে ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্রে নির্মিত নয় এমন সিনেমার ওপর ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবেন বলে জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধিকে এ ধরণের শুল্ক আরোপের প্রক্রিয়া শুরুর জন্য দায়িত্ব দিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন। আমেরিকার সিনেমা শিল্প দ্রুত মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে এমন কারণ দেখিয়েই তিনি এ ধরনের পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানিয়েছেন। খবর বিবিসির।

এজন্য তিনি অন্য দেশগুলোর ‌‘সমন্বিত প্রচেষ্টা’কে দায়ি করে বলেন, তারা সিনেমা নির্মাতা ও স্টুডিওগুলোকে নানা ধরনের প্রণোদনা অফার করছে এবং একে তিনি ‘জাতীয় নিরাপত্তা হুমকি’ বলে উল্লেখ করেন। সামাজিক মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে এক পোস্টে তিনি বলেন, আমরা আমেরিকায় বানানো সিনেমাকে আবার মহান করতে চাই।

চলতি বছরের জানুয়ারিতে দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই ট্রাম্প বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন দেশের ওপর শুল্ক আরোপ করেছেন। তার যুক্তি হলো, এই শুল্ক যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদন বাড়াবে এবং নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে। যদিও এর ফলে বৈশ্বিক অর্থনীতি এক ধরনের নৈরাজ্যের মধ্যে পড়েছে এবং বিশ্বজুড়ে পণ্যের দাম বেড়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

দ্বিতীয় বার প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার আগেই ট্রাম্প তিন চলচ্চিত্র তারকা- জন ভইট, মেল গিবসন ও সিলভেস্টার স্টালোনকে বিশেষ দূত হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। তাদের কাজ ছিল হলিউডের ব্যবসার সুযোগকে প্রমোট করা। ট্রাম্পের মতে, হলিউড মহান একটি জায়গা কিন্তু এখানে অনেক সমস্যা আছে।

তিনি বলেন, তারা আমার দূত হিসেবে কাজ করবেন যার উদ্দেশ্য হলো হলিউডকে ফিরিয়ে আনা যেটা গত চার বছরে ব্যাপক ব্যবসা হারিয়েছে। বৃহৎ, ভালো এবং আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে শক্তিশালী অবস্থায় ফিরিয়ে আনা।

সিনেমা শিল্প গবেষণা প্রতিষ্ঠান প্রডপ্রোর মতে, বৈশ্বিক নানা চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের সবচেয়ে বড় সিনেমা তৈরির কেন্দ্র। এর সাম্প্রতিক রিপোর্টে দেখা গেছে, দেশটি গত বছর সিনেমা তৈরিতে প্রায় সাড়ে ১৪ বিলিয়ন ডলার খরচ করেছে, যা ২০২২ সালের তুলনায় ২৬ শতাংশ কম।

বিপরীতে এই খাতে অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, কানাডা ও যুক্তরাজ্য ওই একই সময়ে আরও বেশি বিনিয়োগ পেয়েছে বলে ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে। গত এপ্রিলে চীন বলেছে, দেশটিতে আমেরিকান সিনেমার প্রবেশের জন্য যে কোটা ঠিক করা আছে, সেটি তারা কমিয়ে দিতে যাচ্ছে।

চীনের সিনেমা প্রশাসন বলছে, চীনের যুক্তরাষ্ট্র সরকারের শুল্কের অপব্যবহারের ভুল সিদ্ধান্ত নিশ্চিতভাবেই আমেরিকান সিনেমার দর্শক কমাতে ভূমিকা রাখবে। তারা বলছে, আমরা বাজার নীতি অনুসরণ করবো, দর্শকের পছন্দকে সম্মান করবো এবং ধীরে ধীরে আমেরিকান ফিল্ম আমদানি কমাবো।

ট্রাম্প শুল্ক ব্যবহার করে চীনের ওপর কঠিন আক্রমণ করেছেন। চীন থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর ১৪৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করেছেন। তার প্রশাসন বলছে, কিছু চীনা পণ্যে শুল্ক ২৪৫ শতাংশ পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে।

অন্য দেশগুলো এখন যুক্তরাষ্ট্রের ১০ শতাংশ শুল্ক মোকাবিলা করছে। এর চেয়ে বেশি শুল্ক জুলাই পর্যন্ত স্থগিত করা আছে। রোববার (৪ মে) এয়ারফোর্স ওয়ানে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প বলেন, তিনি চীনসহ অনেক দেশের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তির বিষয়ে কথা বলেছেন।

তবে চীনা প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কথা বলার কোনো পরিকল্পনা নেই বলেও জানিয়েছেন তিনি। চলতি সপ্তাহে কোনো বাণিজ্য চুক্তির ঘোষণা আসবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, হতে পারে। তবে এ বিষয়ে তিনি বিস্তারিত কিছু বলেননি।

এর আগে চীনের ওপর শুল্ক কমিয়ে আনারও ইঙ্গিত দিয়েছেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, এক পর্যায়ে আমি এটি কমিয়ে আনবো। কারণ এটা ছাড়া আপনি তাদের সঙ্গে ব্যবসা করতে পারবেন না। আর তারা ব্যবসা করতে চায়।