ঢাকা ০৩:৫৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৫, ৯ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বাগছাস থেকে ‘জাতীয় ছাত্রশক্তি’, নাম পরিবর্তনের কারণ কী

রাজনীতি ডেস্ক
  • Update Time : ০১:১০:০১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৫
  • / ৩৩ Time View

শাহবাগে আবু সাঈদ কনভেনশন সেন্টারে বাগছাস এর জাতীয় সম্মেলনে সংগঠনের নাম পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত হয়

৮ মাস আগে আত্মপ্রকাশ করা বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ-বাগছাস তাদের নাম পরিবর্তন করে ‘জাতীয় ছাত্রশক্তি’ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। পাশাপাশি দলের স্লোগানেও এনেছে পরিবর্তন।

‘শিক্ষা, ঐক্য, মুক্তি-মুক্তি’ পরিবর্তন করে এখন ‘স্টুডেন্ট ফাস্ট, বাংলাদেশ ফাস্ট’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে সংগঠনটি তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করবে বলে জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড়ে আবু সাঈদ কনভেনশন হলে ‘বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ পুনর্গঠন ও ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক কৌশল নির্ধারণের লক্ষ্যে জাতীয় সমন্বয় সভায়’ নতুন সংস্কারের ঘোষণা দিয়েছে দলটি। তবে এদিন তাদের কমিটি ঘোষণার কথা থাকলেও তা হয়নি।

চলতি বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি আত্মপ্রকাশ করে বাগছাস। প্রতিষ্ঠার দিনে মারামারি, ডাকসুতে ভরাডুবি ও সংগঠনে বিশৃঙ্গলা এড়াতে এ সংস্কারের দিকে গিয়েছেন বলে জানিয়েছেন সংগঠনটির নেতাকর্মীরা।

জুলাই আন্দোলনের সম্মুখসারির নেতাদের নিয়ে গঠিত দল জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপির অনুপ্রেরণায় চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে আত্মপ্রকাশ করা বাগছাসের নেতাকর্মীরা বলছেন, এখন তারা এনসিপির পুরনো প্ল্যাটফর্ম ‘ছাত্রশক্তি’ নামে ফিরছেন।

জুলাই অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া প্ল্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সম্মুখসারির সমন্বয়কদের অনেকেই গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তির নেতা ছিলেন। অভ্যুত্থানের পর তাঁরাই এই সংগঠনের কার্যক্রম স্থগিত করে দেন। পরে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে সমন্বয়কদের (ছাত্রশক্তির সাবেক) একটি অংশের উদ্যোগে গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের যাত্রা শুরু হয়। এটি কার্যত এনসিপির ছাত্রসংগঠন হলেও এই পরিচয় দিতে তারা অস্বস্তি বোধ করত।

তবে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ ছাত্রসংগঠন হিসেবে সেভাবে সাড়া ফেলতে পারেনি। সর্বশেষ গত ৯ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে এই সংগঠনের ভরাডুবির পর সংগঠনটিকে পুনর্গঠনের আলোচনা শুরু হয়। এনসিপির পক্ষ থেকে সম্মেলন করে তাদের নাম পরিবর্তনের প্রস্তাব দেওয়া হয়। পাশাপাশি সংগঠনটিকে সরাসরি এনসিপির ছাত্রসংগঠন হিসেবে পরিচিত করানোর পরামর্শ দেওয়া হয়। এনসিপির সেই পরামর্শেরই বাস্তবায়ন দেখা গেল বৃহস্পতিবার।

গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের পুনর্গঠন ও ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক কৌশল নির্ধারণবিষয়ক জাতীয় সম্মেলনে অংশ নিয়েছিলেন এনসিপির অনেক নেতা। আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলামকেও।

অনুষ্ঠানে এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, ‘এনসিপি যদি ভুল পথে যায়, ছাত্ররাই সঠিক পথ দেখাবে। কোনো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যেন রাজনৈতিক দলের তাঁবেদারি না করে, তা নিশ্চিত করতে হবে।’

মানুষের আশা–আকাঙ্ক্ষা পূরণে ছাত্রদেরই এগিয়ে আসতে হবে উল্লেখ করে এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, নতুন প্রজন্মই রাজনীতিতে পরিবর্তনের সূচনা করবে। দলটির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন, যারা লোভ সামলাতে পারে না, তাদের এনসিপির কোনো সংগঠনে প্রয়োজন নেই। গণতন্ত্রের যাত্রা দীর্ঘ। এই পথচলায় ছাত্ররাই দেশের মানুষের আশা–আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের শক্তি।

Please Share This Post in Your Social Media

বাগছাস থেকে ‘জাতীয় ছাত্রশক্তি’, নাম পরিবর্তনের কারণ কী

রাজনীতি ডেস্ক
Update Time : ০১:১০:০১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৫

৮ মাস আগে আত্মপ্রকাশ করা বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ-বাগছাস তাদের নাম পরিবর্তন করে ‘জাতীয় ছাত্রশক্তি’ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। পাশাপাশি দলের স্লোগানেও এনেছে পরিবর্তন।

‘শিক্ষা, ঐক্য, মুক্তি-মুক্তি’ পরিবর্তন করে এখন ‘স্টুডেন্ট ফাস্ট, বাংলাদেশ ফাস্ট’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে সংগঠনটি তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করবে বলে জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড়ে আবু সাঈদ কনভেনশন হলে ‘বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ পুনর্গঠন ও ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক কৌশল নির্ধারণের লক্ষ্যে জাতীয় সমন্বয় সভায়’ নতুন সংস্কারের ঘোষণা দিয়েছে দলটি। তবে এদিন তাদের কমিটি ঘোষণার কথা থাকলেও তা হয়নি।

চলতি বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি আত্মপ্রকাশ করে বাগছাস। প্রতিষ্ঠার দিনে মারামারি, ডাকসুতে ভরাডুবি ও সংগঠনে বিশৃঙ্গলা এড়াতে এ সংস্কারের দিকে গিয়েছেন বলে জানিয়েছেন সংগঠনটির নেতাকর্মীরা।

জুলাই আন্দোলনের সম্মুখসারির নেতাদের নিয়ে গঠিত দল জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপির অনুপ্রেরণায় চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে আত্মপ্রকাশ করা বাগছাসের নেতাকর্মীরা বলছেন, এখন তারা এনসিপির পুরনো প্ল্যাটফর্ম ‘ছাত্রশক্তি’ নামে ফিরছেন।

জুলাই অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া প্ল্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সম্মুখসারির সমন্বয়কদের অনেকেই গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তির নেতা ছিলেন। অভ্যুত্থানের পর তাঁরাই এই সংগঠনের কার্যক্রম স্থগিত করে দেন। পরে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে সমন্বয়কদের (ছাত্রশক্তির সাবেক) একটি অংশের উদ্যোগে গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের যাত্রা শুরু হয়। এটি কার্যত এনসিপির ছাত্রসংগঠন হলেও এই পরিচয় দিতে তারা অস্বস্তি বোধ করত।

তবে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ ছাত্রসংগঠন হিসেবে সেভাবে সাড়া ফেলতে পারেনি। সর্বশেষ গত ৯ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে এই সংগঠনের ভরাডুবির পর সংগঠনটিকে পুনর্গঠনের আলোচনা শুরু হয়। এনসিপির পক্ষ থেকে সম্মেলন করে তাদের নাম পরিবর্তনের প্রস্তাব দেওয়া হয়। পাশাপাশি সংগঠনটিকে সরাসরি এনসিপির ছাত্রসংগঠন হিসেবে পরিচিত করানোর পরামর্শ দেওয়া হয়। এনসিপির সেই পরামর্শেরই বাস্তবায়ন দেখা গেল বৃহস্পতিবার।

গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের পুনর্গঠন ও ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক কৌশল নির্ধারণবিষয়ক জাতীয় সম্মেলনে অংশ নিয়েছিলেন এনসিপির অনেক নেতা। আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলামকেও।

অনুষ্ঠানে এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, ‘এনসিপি যদি ভুল পথে যায়, ছাত্ররাই সঠিক পথ দেখাবে। কোনো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যেন রাজনৈতিক দলের তাঁবেদারি না করে, তা নিশ্চিত করতে হবে।’

মানুষের আশা–আকাঙ্ক্ষা পূরণে ছাত্রদেরই এগিয়ে আসতে হবে উল্লেখ করে এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, নতুন প্রজন্মই রাজনীতিতে পরিবর্তনের সূচনা করবে। দলটির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন, যারা লোভ সামলাতে পারে না, তাদের এনসিপির কোনো সংগঠনে প্রয়োজন নেই। গণতন্ত্রের যাত্রা দীর্ঘ। এই পথচলায় ছাত্ররাই দেশের মানুষের আশা–আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের শক্তি।