ঢাকা ০৪:৩৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ভিসা কড়াকড়ি

বাংলাদেশিদের অভাবে কলকাতার ব্যবসায়ীদের হাহাকার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • Update Time : ০৪:৪০:০২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ নভেম্বর ২০২৪
  • / ১৮ Time View

চলতি বছরের জুলাই থেকে বাংলাদেশি পর্যটকদের অভাবে বড় ধরনের লোকসান গুনছে কলকাতার বিভিন্ন হোটেল ও খুচরা দোকানের ব্যবসায়ীরা। অনেকে বলছেন, করোনা মহামারির পর এমন দশায় আর কখনো পড়তে হয়নি তাদের।

কলকাতা হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট মালিক সমিতির নির্বাহী কমিটির সদস্য মনোতোষ সরকার জানান, মারকুইস স্ট্রিটে অবস্থিত তার হোটেলের ৩০টি রুমের মধ্যে মাত্র চার-পাঁচটিতে বাংলাদেশ থেকে আসা অতিথি আছেন। গত জুলাই থেকে হোটেলের এই অবস্থা। কিন্তু শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ও শেখ হাসিনার ভারতে পালিয়ে যাওয়ার আগে যেকোনো সময় ২৬ থেকে ২৮ জন বাংলাদেশি অতিথি হোটেলে থাকতেন।

টাইমস অব ইন্ডিয়া এক প্রতিবেদনে বলেছে, বাংলাদেশি পর্যটক না যাওয়ায় ডজনখানেক রুম আছে, এমন অনেক ছোট হোটেল সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এসব হোটেলের মালিকেরা বলছেন, একজন বা দুজন অতিথি নিয়ে তারা এসব হোটেল আর চালাতে পারছে না। মনোতোষ সরকার বলেন, ২০২১ সালে কোভিডের কারণে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার পর যেমনটা হয়েছিল, ঠিক তখনকার মতো পরিস্থিতি এখন।

প্রায় খালি একটি হোটেলে আছেন চট্টগ্রামের রাজেন বিশ্বাস। হোটেলটি আগে তার দেশি মানুষের হাঁকডাকে গমগম করত। তিনি জানান, বাংলাদেশের ঘটনাবলির পর ভারত সরকার নতুন ভিসা দেয়ার ক্ষেত্রে যে কড়াকড়ি করেছে, সে কারণেই বাংলাদেশিদের কলকাতায় আসা ব্যাপকভাবে কমে গেছে। তার কথায়, আমার আগেই ভিসা ছিল, তাই কলকাতায় আসতে পেরেছি। এখন যারা আবেদন করছেন, তাদের যদি জরুরি চিকিৎসার কোনো বিষয় না থাকে, তাহলে ভিসা দেয়া হচ্ছে না। সম্ভবত বাংলাদেশের অস্থির পরিস্থিতির বিষয়ে উদ্বেগ থেকে ভারত কর্তৃপক্ষ ভিসা দেওয়ার ক্ষেত্রে কঠোর অবস্থান নিয়েছে।

স্থানীয়রা বলছেন, তিন–চার মাস আগেও ভোর বেলা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে চিকিৎসা নিতে ও ঘুরতে আসা লোকেদের পদচারণায় সরগরম থাকত এই এলাকা। ভারত সরকার ভিসা প্রদান কমিয়ে দেয়ায় বাংলাদেশিদের আসা কমে গেছে। নিউমার্কেটের দোকানগুলোর বেশিরভাগ ক্রেতাই বাংলাদেশ থেকে আসা মানুষ। কলকাতার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা ক্রেতা এখানে সাধারণত কমই আসেন। এসব দোকান এখন খাঁ খাঁ করছে। দোকানদারদের আশঙ্কা, বাংলাদেশে যদি এমন অস্থিরতা চলতে থাকে এবং ভারতীয় কর্তৃপক্ষ যদি ভিসা দেয়ায় কড়াকড়ি অব্যাহত রাখে, তাহলে এই এলাকার ব্যবসা-বাণিজ্যে ধস নামবে।

নিউমার্কেটের দোকান চকোনাট শুধু বাংলাদেশিদের কাছে চকলেট, বাদাম, মসলা, কসমেটিকস বিক্রি করে। ওই দোকানে আগে প্রতিদিন সাড়ে তিন লাখ রুপির পণ্য বিক্রি হতো। এখন বিক্রি নেমেছে ৩৫ হাজার রুপিতে।

দোকানের মালিক মো. শাহাবুদ্দিন বলেন, মেডিকেল ভিসায় যারা আসছেন, তাদের কেউ কেউ দোকানে আসেন। কিন্তু যারা এখান থেকে পণ্য কিনে ঢাকায় নিয়ে বিক্রি করতেন, তাদের একেবারেই দেখতে পাচ্ছি না।

নওরোজ/এসএইচ

Please Share This Post in Your Social Media

ভিসা কড়াকড়ি

বাংলাদেশিদের অভাবে কলকাতার ব্যবসায়ীদের হাহাকার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
Update Time : ০৪:৪০:০২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ নভেম্বর ২০২৪

চলতি বছরের জুলাই থেকে বাংলাদেশি পর্যটকদের অভাবে বড় ধরনের লোকসান গুনছে কলকাতার বিভিন্ন হোটেল ও খুচরা দোকানের ব্যবসায়ীরা। অনেকে বলছেন, করোনা মহামারির পর এমন দশায় আর কখনো পড়তে হয়নি তাদের।

কলকাতা হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট মালিক সমিতির নির্বাহী কমিটির সদস্য মনোতোষ সরকার জানান, মারকুইস স্ট্রিটে অবস্থিত তার হোটেলের ৩০টি রুমের মধ্যে মাত্র চার-পাঁচটিতে বাংলাদেশ থেকে আসা অতিথি আছেন। গত জুলাই থেকে হোটেলের এই অবস্থা। কিন্তু শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ও শেখ হাসিনার ভারতে পালিয়ে যাওয়ার আগে যেকোনো সময় ২৬ থেকে ২৮ জন বাংলাদেশি অতিথি হোটেলে থাকতেন।

টাইমস অব ইন্ডিয়া এক প্রতিবেদনে বলেছে, বাংলাদেশি পর্যটক না যাওয়ায় ডজনখানেক রুম আছে, এমন অনেক ছোট হোটেল সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এসব হোটেলের মালিকেরা বলছেন, একজন বা দুজন অতিথি নিয়ে তারা এসব হোটেল আর চালাতে পারছে না। মনোতোষ সরকার বলেন, ২০২১ সালে কোভিডের কারণে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার পর যেমনটা হয়েছিল, ঠিক তখনকার মতো পরিস্থিতি এখন।

প্রায় খালি একটি হোটেলে আছেন চট্টগ্রামের রাজেন বিশ্বাস। হোটেলটি আগে তার দেশি মানুষের হাঁকডাকে গমগম করত। তিনি জানান, বাংলাদেশের ঘটনাবলির পর ভারত সরকার নতুন ভিসা দেয়ার ক্ষেত্রে যে কড়াকড়ি করেছে, সে কারণেই বাংলাদেশিদের কলকাতায় আসা ব্যাপকভাবে কমে গেছে। তার কথায়, আমার আগেই ভিসা ছিল, তাই কলকাতায় আসতে পেরেছি। এখন যারা আবেদন করছেন, তাদের যদি জরুরি চিকিৎসার কোনো বিষয় না থাকে, তাহলে ভিসা দেয়া হচ্ছে না। সম্ভবত বাংলাদেশের অস্থির পরিস্থিতির বিষয়ে উদ্বেগ থেকে ভারত কর্তৃপক্ষ ভিসা দেওয়ার ক্ষেত্রে কঠোর অবস্থান নিয়েছে।

স্থানীয়রা বলছেন, তিন–চার মাস আগেও ভোর বেলা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে চিকিৎসা নিতে ও ঘুরতে আসা লোকেদের পদচারণায় সরগরম থাকত এই এলাকা। ভারত সরকার ভিসা প্রদান কমিয়ে দেয়ায় বাংলাদেশিদের আসা কমে গেছে। নিউমার্কেটের দোকানগুলোর বেশিরভাগ ক্রেতাই বাংলাদেশ থেকে আসা মানুষ। কলকাতার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা ক্রেতা এখানে সাধারণত কমই আসেন। এসব দোকান এখন খাঁ খাঁ করছে। দোকানদারদের আশঙ্কা, বাংলাদেশে যদি এমন অস্থিরতা চলতে থাকে এবং ভারতীয় কর্তৃপক্ষ যদি ভিসা দেয়ায় কড়াকড়ি অব্যাহত রাখে, তাহলে এই এলাকার ব্যবসা-বাণিজ্যে ধস নামবে।

নিউমার্কেটের দোকান চকোনাট শুধু বাংলাদেশিদের কাছে চকলেট, বাদাম, মসলা, কসমেটিকস বিক্রি করে। ওই দোকানে আগে প্রতিদিন সাড়ে তিন লাখ রুপির পণ্য বিক্রি হতো। এখন বিক্রি নেমেছে ৩৫ হাজার রুপিতে।

দোকানের মালিক মো. শাহাবুদ্দিন বলেন, মেডিকেল ভিসায় যারা আসছেন, তাদের কেউ কেউ দোকানে আসেন। কিন্তু যারা এখান থেকে পণ্য কিনে ঢাকায় নিয়ে বিক্রি করতেন, তাদের একেবারেই দেখতে পাচ্ছি না।

নওরোজ/এসএইচ