৬ জুলাই তিস্তাপাড়ে মহাসমাবেশ
প্রধানমন্ত্রীর ভারত-চীন সফরেই তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের পথ সুগম করার দাবি

- Update Time : ০৭:৩৮:৩৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২১ জুন ২০২৪
- / ১৩৪ Time View
এবারের ভারত-চীন সফরেই প্রধানমন্ত্রীকে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের পথ সুগম করার দাবি জানিয়েছে তিস্তা বাঁচাও নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদ। যদি তাতে জট থাকে তাহলে নিজস্ব অর্থায়নেই এই প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে উত্তরের ২ কোটি মানুষের জীবন জীবিকা বাঁচানোর দাবি তাদের। দাবি আদায়ে আগামী ৬ জুলাই তিস্তা নদীর কাউনিয়া পয়েন্টে মহাসমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে পরিষদ নেতারা।
শুক্রবার ( ২১ জুন) দুপুরে রংপুর সিটি করপোরেশনের হল রুমে সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানান সংগঠনটির নেতারা। সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন পরিষদের প্রধান উপদেষ্টা ও রংপুর সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, সভাপতি অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম হক্কানী, সাধারণ সম্পাদক শফিয়ার রহমানসহ স্থায়ী কমিটির সদস্যবৃন্দ।
সংবাদ সম্মেলনে তিস্তা বাঁচাও নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শাফিয়ার রহমান বলেন, ‘তিস্তা মহাপরিকল্পনায় মাত্র ১০/১২ হাজার কোটি টাকা লাগবে। দেশের অন্যান্য অঞ্চলে লাখ লাখ কোটি টাকার মেগাপ্রকল্প হচ্ছে। কিন্তু উত্তরাঞ্চলে নেই। চীন-ভারত সহযোগিতা না করলেও নিজস্ব অর্থায়নে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা না হলে উত্তরের লাইফ লাইন তিস্তা অববাহিকার ২ কোটি মানুষের জীবন জীবিকা হুমকির মুখে পড়বে। প্রধানমন্ত্রীর ভারত-চীন সফরেই আমরা এর সুরাহা চাই। নইলে নিজস্ব অর্থায়নে করতে হবে। তা না হলে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবে তিস্তা পাড়ের মানুষ।’
তিস্তা বাঁচাও নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদের সভপতি অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম হক্কানী বলেন, ‘আমরা আশাবাদি প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের মধ্য দিয়ে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের সব জট খুলবে। তবে ধরে নিতে হবে শত প্রতিকূলতার পাহাড় ডিঙ্গিয়েই সৃষ্ট হবে উত্তরজনপদের মানুষের স্বপ্ন যাত্রা। শত বছরের উন্নয়ন বঞ্চণার শিকার একটি জনপদকে উন্নয়নের মূল ধারায় সম্পৃক্ত করতে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করাই যথেষ্ঠ বলে আমরা মনে করি। ’
হক্কানী আরও বলেন, ‘আমরা আর আশাহত হতে চাই না। আমরা আশা করেছিলাম চলতি বাজেটে তিস্তা মহাপরিকল্পনার বরাদ্দ থাকবে। কিন্তু করা হয় নি। এতে আমরা হতাশ। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর সংসদে দেয়া ভাষনে আমরা উজ্জীবিত। আমরা মনে করি তার ভারত ও চীন সফরের মধ্য দিয়েই এই মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের সকল জট খুলবে এবং দ্রুত কাজ শুরু হবে। যদি এটা না হয় তাহলে ধারাবাহিক আন্দোলনে যাওয়া ছাড়া আমাদের কোন উপায় থাকবে না। ‘
সংবাদ সম্মেলনে পরিষদের প্রধান উপদেষ্টা ও রংপুর সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেন, ‘আমরা আশা করি ইনশাআল্লাহ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যখন ভারত এবং চীন যাচ্ছেন। আমাদের রংপুরের এই তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের ব্যাপারে অবশ্যই উনি ওনার ভূমিকা রাখবেন।’
মেয়র বলেন, ‘আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবি জানাবো। রংপুরের ২ কোটি মানুষের প্রাণের যে দাবি তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন সেটা কে করবে সেটা আমাদের দেখার বিষয় নয়। চীন নাকি ভারত সহযোগিতা করবে, কি করবে না, এটা আমাদের দেখার বিষয় নয়। এটা মাত্র ১০/১২ হাজার কোটি টাকার একটা প্রজেক্ট। এটা বড় প্রজেক্ট না। আপনারা যমুনা সেতুর ওপরে দ্বিতীয় রেলসেতু করতেছেন,সেটাও ২৬ হাজার কোটি টাকা ব্যায়ে। আর এটা কয় টাকার প্রজেক্ট। কেন এটা বাস্তবায়ন হচ্ছে না। সেটা আমাদের বোধগম্য নয়।’
মোস্তফা বলেন, ‘আমরা চাই চীন যদি ফান্ডিং করে ওয়েল, যদি ভারত ফান্ডিং করে ওয়েল। তা না হলে আমাদের নিজস্ব অর্থায়নে আমাদের এই প্রকল্প বাস্তবায়ন চাই।এটাই আমাদের মূল টার্গেট। এরপর ধারাবাহিকভাবে এই চলমান আন্দোলন চলতে থাকবে। যতদিন পর্যন্ত এটা বাস্তবায়ন হয় নাই। ততদিন পর্যন্ত আমাদের তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য যে সংগ্রাম কমিটি আছে তাদের প্রত্যেকটা কর্মসূচিতে আমাদের সম্পৃক্ততা বাড়াতে হবে ‘
পরে বর্ধিত সভায় সর্বসম্মতিক্রমে আগামী ৬ জুলাই তিস্তার কাউনিয়া পয়েন্টে মহাসমাবেশ করার সিদ্ধান্ত হয় বলে জানিয়েছেন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শাফিয়ার রহমান।
Please Share This Post in Your Social Media
-
সর্বশেষ
-
জনপ্রিয়