ঢাকা ০৫:৩৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
‘২০ লাখ মানুষ ক্ষুধায়’

পুরো গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণে নেবে ইসরায়েল : নেতানিয়াহু

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • Update Time : ১১:১৫:৫৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৯ মে ২০২৫
  • / ৩৫ Time View

১৯ মে গাজা উপত্যকার জাবালিয়ায় একটি দাতব্য খাদ্য বিতরণ কেন্দ্রে খাবার সংগ্রহ করতে ফিলিস্তিনিরা জমায়েত হয়। ছবি : এএফপি

ইসরায়েল পুরো গাজা উপত্যকার ‘নিয়ন্ত্রণে নেবে’ বলে দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সোমবার মন্তব্য করেন। অন্যদিকে সামরিক বাহিনী যুদ্ধবিধ্বস্ত ওই অঞ্চলে সম্প্রতি কঠোর অভিযান আরো তীব্র করেছে।

গাজা থেকে অবরোধ তুলে নিতে ইসরায়েলের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ জোরদার হওয়ার মধ্যে নেতানিয়াহু এমন কথা বললেন।

দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসে উদ্বাস্তু ফিলিস্তিনিদের একটি তাঁবু শিবিরে ইসরায়েলের হামলা পর উড়ছে কালো ধোঁয়া। ছবি: রয়টার্স।

ইসরায়েলি সেনারা গাজার দক্ষিণাঞ্চলের খান ইউনিস শহর ও আশপাশের এলাকায় ‘অভূতপূর্ব হামলার’ আশঙ্কায় স্থানীয়দের নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।

সেনারা সম্প্রতি হামাসের বিরুদ্ধে বিস্তৃত স্থল অভিযান শুরুর ঘোষণা দিয়েছে এবং সোমবার বিমান হামলায় কমপক্ষে ৫২ জন নিহত হয়েছে বলে উদ্ধারকারীরা জানিয়েছেন।

ইসরায়েলের সেনাবাহিনী শুক্রবার নতুন অভিযান শুরুর ঘোষণা দিয়েছে। তারা খান ইউনিসের অধিবাসীদেরকে সোমবার অবিলম্বে এলাকা খালি করে দিতে বলেছে।

সেখানে নজিরবিহীন হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী।

নেতানিয়াহু টেলিগ্রামে দেওয়া একটি ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘লড়াই চলছে তীব্রভাবে এবং আমরা অগ্রগতি করছি। আমরা পুরো গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণে নেব।’

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা হাল ছাড়ব না। কিন্তু সফল হতে হলে এমনভাবে কাজ করতে হবে, যা থামানো যাবে না।’

ইসরায়েল এই মাসের শুরুতে বিস্তৃত অভিযানের পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে, যা গাজা দখল ও এর জনগণকে স্থানান্তর করার লক্ষ্যে পরিচালিত হচ্ছে। পাশাপাশি ইসরায়েল দুই মাস আগে গাজার ওপর আরোপিত সম্পূর্ণ অবরোধ তুলে নিতে যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক চাপের মুখে পড়েছে।

নেতানিয়াহু আরো বলেন, ‘আমরা গাজার জনগণকে ক্ষুধায় মারা যেতে দিতে পারি না, সেটি বাস্তবিক ও কূটনৈতিক কারণে জরুরি। এমনকি ইসরায়েলের বন্ধু রাষ্ট্ররাও গণহারে ক্ষুধার ছবি সহ্য করবে না।’

এক ভিডিও বার্তায় নেতানিয়াহু বলেছেন, “তুমুল যুদ্ধ হচ্ছে। আমরা গাজার সব অংশ নিয়ন্ত্রণে নেব।”

তিনি গাজায় হামাসের হাতে থাকা ৫৮ জিম্মিকে মুক্ত করাসহ হামাসকে বিনাশ করে ‘পুরোপুরি জয়’ অর্জনের অঙ্গীকার করেছেন।

একই সময়ে গাজায় সম্ভাব্য দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি এড়াতে খাদ্য সহায়তা পুনরায় শুরু করার সিদ্ধান্তও নিয়েছে ইসরায়েল। আন্তর্জাতিক উদ্বেগের মুখে নেতানিয়াহু সেখানে কিছু পরিমাণে ত্রাণ ঢুকতে দিতে বাধ্য হয়েছেন।

দুই মাসের বেশি সময় ধরে গাজায় জারি থাকা ইসরায়েলি অবরোধ তুলে নেওয়ার জন্য আন্তর্জাতিক মহল, এমনকি যুক্তরাষ্ট্র কাছ থেকেও ব্যাপক চাপ সৃষ্টি হয়েছে।

এই প্রেক্ষাপটে মার্কিন সিনেটরদের উদ্দেশে নেতানিয়াহু বলেছেন, তারা বিশ্বে আমাদের সবচেয়ে ভাল বন্ধু। এই বন্ধুরা তাকে বলেছে যে, গাজায় মানুষের অনাহারের চিত্র ইসরায়েলের সমর্থন ক্ষুন্ন করছে এবং ইসরায়েল এমন এক চরম সীমায় পৌঁছে যাচ্ছে যেখানে তারা সমর্থন হারাতে পারে।

সেই কারণে গাজার যুদ্ধে জয় পাওয়ার জন্য কোনওভাবে ইসরায়েলকে এই সমস্যা সমাধান করতে হচ্ছে বলে নেতানিয়াহু তার সরকারের কট্টর-ডানপন্থিদের ব্যাখ্যা দিয়েছেন, যারা চাইছে গাজায় ত্রাণ বন্ধ রাখা হোক যাতে তা হামাসের কাছে পৌঁছতে না পারে।

ইসরায়েলের সেনাবাহিনী বলেছে, তারা হামাসকে নির্মূল করতে এবং জিম্মিদের ঘরে ফেরাতে গাজাজুড়ে নতুন একটি অভিযান ‘অপারেশন গিডিওন চ্যারিওটস’ শুরু করেছে।

গাজার স্থানীয় চিকিৎসা কর্মীরা জানিয়েছে, রোববার রাতভর অভিযানে অন্তত ২০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। ইসরায়েলের সেনাবাহিনী গত ২৪ ঘন্টায় গাজার ১৬০ টি নিশানায় হামলা চালানোর কথা জানিয়েছে।

আলাদাভাবে গাজায় ইসরায়েলের চোরাগোপ্তা অভিযানও চলছে। এসব অভিযানে হামাস নেতাদের হত্যা করছে ইসরায়েল। গাজার দক্ষিণে এমনই এক অভিযানে এক হামাস নেতা নিহত হয়েছেন। পাশাপাশি সেনাবাহিনী নতুন স্থল অভিযানেও অগ্রসর হয়েছে।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে ঢুকে ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের হামলায় ১,২০০ জন নিহত এবং ২৫১ জন জিম্মি হওয়ার পর থেকে গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েল। ইসরায়েলের হামলায় গাজা ধ্বংস হয়ে গেছে। সেখানকার প্রায় পুরো জনগোষ্ঠীই বাস্তুচ্যুত হয়েছে।

হামাস-পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলের হামলায় এ পর্যন্ত গাজায় অন্তত ৫৩ হাজার মানুষ নিহত হয়েছে, যাদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু।

অন্যদিকে ইসরায়েল গাজায় সীমিত পরিমাণ সাহায্য পাঠানোর ঘোষণা দেওয়ার পর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান মানবিক সংকট নিয়ে কড়া সতর্কবার্তা দিয়ে বলেন, ‘২০ লাখ মানুষ খাদ্যের অভাবে কষ্ট পাচ্ছে।’

ইসরায়েল ২ মার্চ থেকে গাজায় অবরোধ আরোপ করেছে, যার উদ্দেশ্য হামাসকে আত্মসমর্পণে বাধ্য করা। তবে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন সংস্থা খাবার, পানি, জ্বালানি ও ওষুধের সংকটের বিষয় নিয়ে সতর্ক করেছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান টেড্রোস আধানম গেব্রিয়েসাস বলেন, ‘২০ লাখ মানুষ ক্ষুধায় কষ্ট পাচ্ছে, অথচ সীমান্তে কয়েক মিনিটের দূরত্বে টন টন খাবার আটকে আছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘মানবিক সাহায্য ইচ্ছাকৃতভাবে আটকে রাখায় গাজায় ক্ষুধার ঝুঁকি বাড়ছে।’
গত সপ্তাহে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প স্বীকার করেন, ‘অনেক মানুষ ক্ষুধার্ত’ এবং বলেন, ‘আমরা এটা ঠিক করব।’

২০২৩ সালের অক্টোবরে ইসরায়েলে হামাসের হামলায় এক হাজার ২১৮ জন নিহত হয়, যার বেশির ভাগই সাধারণ নাগরিক। হামাস একই সময়ে ২৫১ জনকে জিম্মি করে নিয়ে যায়, যার মধ্যে ৫৭ জন এখনো গাজায় রয়েছে। তবে ৩৪ জনকে সেনাবাহিনী মৃত বলে ঘোষণা করেছে। অন্যদিকে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, যুদ্ধে মোট প্রাণহানির সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৫৩ হাজার।

Please Share This Post in Your Social Media

‘২০ লাখ মানুষ ক্ষুধায়’

পুরো গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণে নেবে ইসরায়েল : নেতানিয়াহু

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
Update Time : ১১:১৫:৫৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৯ মে ২০২৫

ইসরায়েল পুরো গাজা উপত্যকার ‘নিয়ন্ত্রণে নেবে’ বলে দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সোমবার মন্তব্য করেন। অন্যদিকে সামরিক বাহিনী যুদ্ধবিধ্বস্ত ওই অঞ্চলে সম্প্রতি কঠোর অভিযান আরো তীব্র করেছে।

গাজা থেকে অবরোধ তুলে নিতে ইসরায়েলের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ জোরদার হওয়ার মধ্যে নেতানিয়াহু এমন কথা বললেন।

দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসে উদ্বাস্তু ফিলিস্তিনিদের একটি তাঁবু শিবিরে ইসরায়েলের হামলা পর উড়ছে কালো ধোঁয়া। ছবি: রয়টার্স।

ইসরায়েলি সেনারা গাজার দক্ষিণাঞ্চলের খান ইউনিস শহর ও আশপাশের এলাকায় ‘অভূতপূর্ব হামলার’ আশঙ্কায় স্থানীয়দের নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।

সেনারা সম্প্রতি হামাসের বিরুদ্ধে বিস্তৃত স্থল অভিযান শুরুর ঘোষণা দিয়েছে এবং সোমবার বিমান হামলায় কমপক্ষে ৫২ জন নিহত হয়েছে বলে উদ্ধারকারীরা জানিয়েছেন।

ইসরায়েলের সেনাবাহিনী শুক্রবার নতুন অভিযান শুরুর ঘোষণা দিয়েছে। তারা খান ইউনিসের অধিবাসীদেরকে সোমবার অবিলম্বে এলাকা খালি করে দিতে বলেছে।

সেখানে নজিরবিহীন হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী।

নেতানিয়াহু টেলিগ্রামে দেওয়া একটি ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘লড়াই চলছে তীব্রভাবে এবং আমরা অগ্রগতি করছি। আমরা পুরো গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণে নেব।’

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা হাল ছাড়ব না। কিন্তু সফল হতে হলে এমনভাবে কাজ করতে হবে, যা থামানো যাবে না।’

ইসরায়েল এই মাসের শুরুতে বিস্তৃত অভিযানের পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে, যা গাজা দখল ও এর জনগণকে স্থানান্তর করার লক্ষ্যে পরিচালিত হচ্ছে। পাশাপাশি ইসরায়েল দুই মাস আগে গাজার ওপর আরোপিত সম্পূর্ণ অবরোধ তুলে নিতে যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক চাপের মুখে পড়েছে।

নেতানিয়াহু আরো বলেন, ‘আমরা গাজার জনগণকে ক্ষুধায় মারা যেতে দিতে পারি না, সেটি বাস্তবিক ও কূটনৈতিক কারণে জরুরি। এমনকি ইসরায়েলের বন্ধু রাষ্ট্ররাও গণহারে ক্ষুধার ছবি সহ্য করবে না।’

এক ভিডিও বার্তায় নেতানিয়াহু বলেছেন, “তুমুল যুদ্ধ হচ্ছে। আমরা গাজার সব অংশ নিয়ন্ত্রণে নেব।”

তিনি গাজায় হামাসের হাতে থাকা ৫৮ জিম্মিকে মুক্ত করাসহ হামাসকে বিনাশ করে ‘পুরোপুরি জয়’ অর্জনের অঙ্গীকার করেছেন।

একই সময়ে গাজায় সম্ভাব্য দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি এড়াতে খাদ্য সহায়তা পুনরায় শুরু করার সিদ্ধান্তও নিয়েছে ইসরায়েল। আন্তর্জাতিক উদ্বেগের মুখে নেতানিয়াহু সেখানে কিছু পরিমাণে ত্রাণ ঢুকতে দিতে বাধ্য হয়েছেন।

দুই মাসের বেশি সময় ধরে গাজায় জারি থাকা ইসরায়েলি অবরোধ তুলে নেওয়ার জন্য আন্তর্জাতিক মহল, এমনকি যুক্তরাষ্ট্র কাছ থেকেও ব্যাপক চাপ সৃষ্টি হয়েছে।

এই প্রেক্ষাপটে মার্কিন সিনেটরদের উদ্দেশে নেতানিয়াহু বলেছেন, তারা বিশ্বে আমাদের সবচেয়ে ভাল বন্ধু। এই বন্ধুরা তাকে বলেছে যে, গাজায় মানুষের অনাহারের চিত্র ইসরায়েলের সমর্থন ক্ষুন্ন করছে এবং ইসরায়েল এমন এক চরম সীমায় পৌঁছে যাচ্ছে যেখানে তারা সমর্থন হারাতে পারে।

সেই কারণে গাজার যুদ্ধে জয় পাওয়ার জন্য কোনওভাবে ইসরায়েলকে এই সমস্যা সমাধান করতে হচ্ছে বলে নেতানিয়াহু তার সরকারের কট্টর-ডানপন্থিদের ব্যাখ্যা দিয়েছেন, যারা চাইছে গাজায় ত্রাণ বন্ধ রাখা হোক যাতে তা হামাসের কাছে পৌঁছতে না পারে।

ইসরায়েলের সেনাবাহিনী বলেছে, তারা হামাসকে নির্মূল করতে এবং জিম্মিদের ঘরে ফেরাতে গাজাজুড়ে নতুন একটি অভিযান ‘অপারেশন গিডিওন চ্যারিওটস’ শুরু করেছে।

গাজার স্থানীয় চিকিৎসা কর্মীরা জানিয়েছে, রোববার রাতভর অভিযানে অন্তত ২০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। ইসরায়েলের সেনাবাহিনী গত ২৪ ঘন্টায় গাজার ১৬০ টি নিশানায় হামলা চালানোর কথা জানিয়েছে।

আলাদাভাবে গাজায় ইসরায়েলের চোরাগোপ্তা অভিযানও চলছে। এসব অভিযানে হামাস নেতাদের হত্যা করছে ইসরায়েল। গাজার দক্ষিণে এমনই এক অভিযানে এক হামাস নেতা নিহত হয়েছেন। পাশাপাশি সেনাবাহিনী নতুন স্থল অভিযানেও অগ্রসর হয়েছে।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে ঢুকে ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের হামলায় ১,২০০ জন নিহত এবং ২৫১ জন জিম্মি হওয়ার পর থেকে গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েল। ইসরায়েলের হামলায় গাজা ধ্বংস হয়ে গেছে। সেখানকার প্রায় পুরো জনগোষ্ঠীই বাস্তুচ্যুত হয়েছে।

হামাস-পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলের হামলায় এ পর্যন্ত গাজায় অন্তত ৫৩ হাজার মানুষ নিহত হয়েছে, যাদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু।

অন্যদিকে ইসরায়েল গাজায় সীমিত পরিমাণ সাহায্য পাঠানোর ঘোষণা দেওয়ার পর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান মানবিক সংকট নিয়ে কড়া সতর্কবার্তা দিয়ে বলেন, ‘২০ লাখ মানুষ খাদ্যের অভাবে কষ্ট পাচ্ছে।’

ইসরায়েল ২ মার্চ থেকে গাজায় অবরোধ আরোপ করেছে, যার উদ্দেশ্য হামাসকে আত্মসমর্পণে বাধ্য করা। তবে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন সংস্থা খাবার, পানি, জ্বালানি ও ওষুধের সংকটের বিষয় নিয়ে সতর্ক করেছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান টেড্রোস আধানম গেব্রিয়েসাস বলেন, ‘২০ লাখ মানুষ ক্ষুধায় কষ্ট পাচ্ছে, অথচ সীমান্তে কয়েক মিনিটের দূরত্বে টন টন খাবার আটকে আছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘মানবিক সাহায্য ইচ্ছাকৃতভাবে আটকে রাখায় গাজায় ক্ষুধার ঝুঁকি বাড়ছে।’
গত সপ্তাহে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প স্বীকার করেন, ‘অনেক মানুষ ক্ষুধার্ত’ এবং বলেন, ‘আমরা এটা ঠিক করব।’

২০২৩ সালের অক্টোবরে ইসরায়েলে হামাসের হামলায় এক হাজার ২১৮ জন নিহত হয়, যার বেশির ভাগই সাধারণ নাগরিক। হামাস একই সময়ে ২৫১ জনকে জিম্মি করে নিয়ে যায়, যার মধ্যে ৫৭ জন এখনো গাজায় রয়েছে। তবে ৩৪ জনকে সেনাবাহিনী মৃত বলে ঘোষণা করেছে। অন্যদিকে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, যুদ্ধে মোট প্রাণহানির সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৫৩ হাজার।