নোবেল ও তরুণীকে নিয়ে নতুন তথ্য দিলেন আইনজীবী

- Update Time : ০৫:১২:৪২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫
- / ২২ Time View
ইডেন কলেজের এক ছাত্রীকে ছয় মাস ধরে আটকে রেখে বিভিন্ন সময় ধর্ষণ করার অভিযোগ উঠেছে সংগীতশিল্পী মাইনুল আহসান নোবেলের বিরুদ্ধে। এতে ওই তরুণী চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা বলেও জানা গেছে। তবে তরুণী নোবেলের স্ত্রী বলে দাবি করেছেন তার আইনজীবী।
মঙ্গলবার (২০ মে) দুপুর ২টা ৪৫ মিনিটের দিকে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিয়া উদ্দিন আহমদের আদালতে নোবেলকে হাজির করা হয়। এরপর অপহরণের পর ধর্ষণের অভিযোগে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের মামলায় তাকে কারাগারে রাখার আবেদন করেছে ডেমরা থানা পুলিশের পরিদর্শক মো. মুরাদ হোসেন।
আবেদনে তিনি বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভুক্তভোগী ইডেন কলেজের ছাত্রীর সঙ্গে নোবেলের পরিচয় হয়। এরপর তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গত বছরের ১২ নভেম্বর গায়ক নোবেল তার স্টুডিও দেখানোর কথা বলে ভুক্তভোগীকে ডেমরা থানাধীন তার বাসায় নিয়ে যায় আসামি নোবেল। এরপর কয়েকজন আসামির সহায়তায় ওই ছাত্রীকে আটকে রাখে।
এরপর ১২ নভেম্বর রাত অনুমান ৮টার সময় ভুক্তভোগীকে আটক করে রাখে এবং তার মোবাইল নিয়ে নেয়। বাদী তার পরিবারের সঙ্গে কথা বলার জন্য আসামিকে মোবাইল ফোন ফেরত দেওয়ার জন্য বললে নোবেল ওই ছাত্রীর ফোন ভেঙে ফেলে।
এরপর আসামি নোবেল তার ঘরে আটক রেখে ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করে এবং ধর্ষণের ভিডিও তার মোবাইল ফোনে ধারণ করে রাখে। নোবেলের কথামতো বাসায় না থাকলে তার মোবাইল ফোনে ধারণকৃত ধর্ষণের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিবে বলে হুমকি দেয়। তাই বাদী আসামির ভয়ে কাউকে কোনো কিছু বলার সাহস পাননি।
এরপর আসামি নেশাগ্রস্ত অবস্থায় বিভিন্ন তারিখ ও সময়ে বাদীকে মারপিট করত। আসামি তার সহযোগী অজ্ঞাতনামা আরও ২/৩ জনের সহায়তায় বাদীকে সিঁড়ি দিয়ে চুলের মুটি ধরে টানাহেঁচড়া করে অপর একটি কক্ষে আটক করে রাখে। ওই ঘটনার একটি ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর বাদীর পিতা-মাতা বাদীকে চিনতে পারে। এরপর বাদীর পিতা-মাতা বাদীকে খোঁজা-খুঁজি করা অবস্থায় জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এ কল দিলে গত ১৯ মে রাত সাড়ে ৯টায় নোবেলকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং ভুক্তভোগীকে ছাত্রীকে উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় ডেমরা থানায় অপহরণের পর ধর্ষণের অভিযোগে নোবেলের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়।
এদিকে নোবেলের আইনজীবী জসিম উদ্দীন আদালতকে বলেন, বাদী নোবেলের স্ত্রী। তারা একই সঙ্গে বসবাস করতেন। বাদী চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা। নোবেল তার স্ত্রীর সঙ্গে সংসার করতে চান। দুজনের মাঝে ভুল বুঝাবুঝি হয়েছে। তাই মামলা করেছেন। আমরা কাবিননামাটা এখন আনতে পারিনি। তবে সময় দিলে আদালতে উপস্থাপন করতে পারব। শুনানি শেষে আদালত নোবেলকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এর আগে মঙ্গলবার (২০ মে) নারী নির্যাতন মামলায় নোবেলকে গ্রেপ্তার করা হয়। দুই বছর আগেও নোবেলকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। সেবার প্রতারণার মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। একটা অনুষ্ঠানে যাওয়ার কথা বলে টাকা নিয়েছিলেন নোবেল। কিন্তু পরে আর তিনি সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত হননি। এ ঘটনায় ২০২৩ সালে নোবেলের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের জি বাংলার গানের অনুষ্ঠান ‘সা রে গা মা পা’-তে অংশ নিয়ে সবার নজরে আসেন নোবেল। তার গান দর্শকের মনে স্থান করে নেয়। পরে তার বেশ কিছু গান জনপ্রিয়তা পায়। তবে নোবেল ব্যক্তিগত নানা আচরণের কারণে বিভিন্ন সময়ে আলোচিত হন। একাধিক বিয়ে করেও আলোচনায় এসেছিলেন এই গায়ক। কিন্তু কোনো সংসারই স্থায়ী হয়নি। ২০১৯ সালে সালসাবিল মাহমুদকে বিয়ে করে আলোচনার সৃষ্টি করেন নোবেল। কিন্তু মাদক ত্যাগ না করায় সে সংসার টেকেনি। এরপর ২০২৩ সালের শেষে ফের নোবেলের বিয়ের খবর সামনে আসে।