নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে দখল নাব্যতা সংকটে বাফলার বিল
- Update Time : ০৫:৫৯:০২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১ ডিসেম্বর ২০২৫
- / ২৭ Time View
এক সময়ে পানিতে টইটুম্বুর মৎস সম্পদের অভয়ারন্য নীলফামারীর কিশোরগঞ্জের জেলেদের অবলম্বন সরকারি বাফলার বিলটি চরম অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে। দখল নাব্যতা সংকটে পূর্বের এতিহ্য হারাতে বসেছে বিলটি। ভূমিদস্যুদের উৎপীড়নে বেদখল হচ্ছে বিলের মূল্যবান জমি। অপরিকল্পিত বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কারনে পানি দূষন আর তলদেশ উচু হওয়ায় মাছের আবাসস্থল হ্রাস পাচ্ছে। বিলের এই নিদারুন অবস্থার ফলে পরিবেশের বিরুপপ্রভাব,আঞ্চলিক অর্থনীতি ও জীববৈচিত্র বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে।
জানা গেছে, ১৯৪৭ সালে জমিদার প্রথা বিলুপ্ত হওয়ার পর জমিদার দক্ষঝা মোহন রায় চৌধুরীর ১০৫ একরের এই জলাশয়টি সরকারী খাস খতিয়ানে অন্তর্ভুক্ত হয়।
কিশোরগঞ্জ শহর থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে রণচন্ডি ইউনিয়নে বাফলা এলাকার উত্তর বাফলা ও দক্ষিণ বাফলা জুড়ে প্রায় ৩ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য নিয়ে এ বিলটির অবস্থান। উত্তর—দক্ষিণ ও পূর্ব পশ্চিমে সরকারী খাস ১০৫ একর ভূমি নিয়ে ত্রিভুজ বিলটিতে প্রায় ৬০০ জেলে পরিবার মাছ আহরন করে জীবন জীবিকা চালাত। কিন্তু ওই এলাকার এক প্রভাবশালী ভুমিদস্যু সাবেক সেটেলমেন্ট কর্মচারী জলমহলের ২১ একর ১০ শতাংশ জমি দখল করে বাধ দিয়ে মাছ চাষ করছে। এ ঘটনায় জেলে পরিবারগুলোর সাথে ভূমিদস্যুর কয়েক দফায় সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে।

নানা হয়রানিমূলক মামলায় জেলে পরিবারগুলোর এখন নাস্তানাবুদ অবস্থা। অনেক জেলে পরিবার এখন বাধ্য হয়ে অন্য পেশায় চলে গেছেন। বিলে বাঁধ দেয়ার ফলে কচুরিপানা বের হতে না পারায় অবশিষ্ট জলাশয়টি সংস্কারের অভাবে তলদেশ উচু হয়ে নাব্যতা হারিয়েছে। পতিত সরকারের আমলে বিলের সামান্য কিছু অংশের সংস্কারের জন্য বরাদ্দ এলেও লোক দেখানো কাজ করে সমুদয় বরাদ্দ লুটেপুটে খায় সংশ্লিষ্ঠরা । ফলে বছরের পর বছর কচুরিপানা পচে গিয়ে বিলের তলদেশ ভরাট হয়ে পানি দূষিত হয়ে পড়েছে।
কার্যত বিলটি এখন বিষাক্ত নর্দমায় পরিনত হয়ে জীববৈচিত্র হুমকীর মুখে পড়েছে। এছাড়া ভূমিদস্যুরা অপরিকল্পিত বাঁধ দিয়ে দেশি মাছের অভয়াশ্রম ধ্বংস করছে। বাফলা বিল মৎসজীবি সমিতির সভাপতি চাঁন কিশোর রায় বলেন, বিলটিতে একসময় শোল,গজার,বোয়াল,শিং টেংরা সহ নানা প্রজাতির দেশি মাছের অভয়াশ্রম ছিল এখানে। মাছ ধরে আমরা প্রায় ৬০০ পরিবার জীবিকা নির্বাহ করতাম। বিল দখল দূষনে দেশি মাছের এখন দেখা মেলা ভাব। ১০৫ একরের বিলটির অবৈধ দখলের মানচিত্র কমে গিয়ে ৫৭ একরে এসে ঠেকেছে। অবশিষ্ঠ ৪৮ একর জলাশয় ভ’মিদস্যুদের দখলে রয়েছে। ভূমিদস্যুরা জাল কাগজ তৈরি করে নিজেদের বলে দাবি করছে। দখলে বাধা দিতে গেলে ভূমিদস্যুরা কয়েক দফায় আমাদের উপর হামলা করে। বাধ্য হয়ে অনেক জেলে পরিবার জীবিকার তাগিদে এ পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় চলে যাচ্ছে।
দখল দূষনে মৎস সম্পদ ও জীব বৈচিত্রের মারাত্নক ক্ষতি হচ্ছে। এমন দাবি করে রনচন্ডি ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান মোকলেছুর রহমান বিমান বলেন, বিলের জমি উদ্ধার ও সংস্কার করে বিলের পূর্বের ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে হবে। দখলবাজদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে।
এ ব্যাপারে জলাশয়ের অবৈধ দখলদার আমজাদ হোসেন বিলের ২১ একর জমি একাই দখল করে দীর্ঘদিন থেকে ভোগ করে আসছেন। তার সাথে কথা হলে তিনি এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন ২১ একর জমির মধ্যে কিছু উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছি আর কিছু আমার কেনা আছে।
এ বিষয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার(ভূমি)তানিয়া জাহান তন্নির সাথে কথা হলে তিনি বলেন, দখলের বিষয়টি শুনেছি আমার আসার কিছুদিন হলো এ বিষয়ে ইউএনও স্যারের সাথে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Please Share This Post in Your Social Media
-
সর্বশেষ
-
জনপ্রিয়


































































































