‘ধুরন্ধর’ সিনেমার মাধ্যমে ফিরছেন রণবীর সিং
- Update Time : ০৪:৩৪:৪৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২৫
- / ২৪ Time View
বছর দুয়েকের বিরতির পর বড়পর্দায় ‘ধুরন্ধর’ সিনেমার মাধ্যমে ফিরছেন রণবীর সিং। আদিত্য ধর পরিচালিত এই ছবিটি আগামীকাল মুক্তি পাচ্ছে। রণবীর সিংয়ের সঙ্গে ছবিতে আরও অভিনয় করেছেন সঞ্জয় দত্ত, অক্ষয় খান্না, আর মাধবন, অর্জুন রামপাল, সারা অর্জুন ও রাকেশ বেদি। অনেক তারকাশিল্পীর অভিনয়, দুরন্ত অ্যাকশন সিকোয়েন্স এবং থ্রিলারের জন্য ‘ধুরন্ধর’ ইতোমধ্যেই বলিউডের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে।
সেন্সর বোর্ডের পর্যবেক্ষণে সিনেমার শুরুতে কয়েকটি সহিংস দৃশ্য বাদ দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয়ার্ধ থেকেও কিছু দৃশ্য বাদ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ভারতের একজন রাজনৈতিক চরিত্রের নাম পরিবর্তন করা হয়েছে এবং যেখানে মাদক সংক্রান্ত বিষয় দেখানো হয়েছে, সেখানে মাদকবিরোধী সতর্কবার্তা যোগ করা হয়েছে।
সম্প্রতি ছবিটি সেন্ট্রাল বোর্ড অব ফিল্ম সার্টিফিকেশন (সিবিএফসি) থেকে ছাড়পত্র পেয়েছে। এটি রণবীর সিংয়ের প্রথম সিনেমা যেটি ‘এ’ সার্টিফিকেট অর্জন করেছে, অর্থাৎ শুধুমাত্র প্রাপ্তবয়স্করাই এটি দেখতে পারবেন। তবে ছাড়পত্র পাওয়ার আগে ছবিটিকে একাধিক সংশোধনের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে।
এদিকে ছবির মুক্তিকে ঘিরে আইনি বিতর্কও তৈরি হয়েছিল। প্রয়াত ভারতীয় সেনাবাহিনীর মেজর মোহিত শর্মার মা-বাবা দিল্লি হাইকোর্টে অভিযোগ করেন যে ছবির গল্প তাদের ছেলের জীবনের সঙ্গে মিলে যায় এবং ছবি তৈরির আগে পরিবার বা ভারতীয় সেনাবাহিনীর কাছ থেকে কোনো অনুমতি নেওয়া হয়নি। এই অভিযোগ নাকচ করে পরিচালক আদিত্য ধর সামাজিক মাধ্যমে জানান, ‘ধুরন্ধর’ সম্পূর্ণ একটি কাল্পনিক গল্প। কোনো বাস্তব চরিত্রের ভিত্তিতে ছবি হলে অবশ্যই অনুমতি নেওয়া হতো বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
পরবর্তীকালে সিবিএফসি বিস্তারিত পর্যালোচনা করে জানায়, ছবিটি ‘সম্পূর্ণ কল্পকাহিনি’ এবং এর সঙ্গে মেজর মোহিত শর্মার জীবনের কোনো প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ মিল নেই। সেন্সর বোর্ডের নির্দেশনা মেনে কয়েকটি দৃশ্য কাটা, পরিবর্তন বা নতুনভাবে সংযোজন করা হয়েছে। ছবির দৈর্ঘ্য কিন্তু অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে, যা ২১৪ মিনিট বা ৩ ঘণ্টা ৩৪ মিনিট। গত ১৭ বছরে বলিউডে এত দীর্ঘ কোনো সিনেমা মুক্তি পায়নি। এর আগে ২০০৮ সালে ‘যোধা আকবর’ সর্বশেষ দীর্ঘ সিনেমা ছিল।
সম্প্রতি মুক্তি পাওয়া ‘ধুরন্ধর’ সিনেমার ট্রেলারে দেখা যায় রণবীর সিং এক রহস্যময় চরিত্রে, যার নাম প্রকাশ করা হয়নি। তাঁকে কখনও পাকিস্তানে একজন আন্ডারকভার এজেন্টের মতো, কখনও ভারতীয় সেনার একজন দুর্ধর্ষ অফিসার। তাঁর চেহারার পরিবর্তন, তীক্ষ্ণ চোখ ও বিপজ্জনক পরিস্থিতি সামলানোর ধরন দেখে অনলাইনে জল্পনা চলছে যে তিনি সম্ভবত অশোক চক্রপ্রাপ্ত মেজর মোহিত শর্মার আদলে চরিত্র ফুটিয়ে তুলছেন। বাস্তবে মেজর শর্মা ‘ইফতিখার ভাট’ নামে হিজবুল মুজাহিদিনের মধ্যে গুপ্তচরবৃত্তি করেছিলেন এবং কুপওয়ারায় এক জঙ্গি দমন অভিযানে শহিদ হন।
ট্রেলারের আরেক শক্তিশালী উপস্থিতি অর্জুন রামপাল। তিনি অভিনয় করেছেন মেজর ইকবালের চরিত্রে, যাকে এক ভারতীয় সেনা অফিসারের ওপর নির্যাতন চালাতে দেখা যায়। অর্জুন রামপালের চরিত্রটি যে পাকিস্তানের কুখ্যাত জঙ্গিনেতা ইলিয়াস কাশ্মীরির আদলে তৈরি, তা ট্রেলার থেকেই স্পষ্ট। এদিকে, আর. মাধবন ছবিতে অজয় সান্যাল নামে ভারতের শীর্ষ গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’-এর একজন সিনিয়র অফিসারের ভূমিকায়। ৪ মিনিটের এই ট্রেলার মুক্তির পর থেকেই দর্শকদের মধ্যে জল্পনা, উত্তেজনা এবং বাস্তব ঘটনার সঙ্গে মিল খুঁজে বের করার প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে।
অ্যাকশন, আবেগ এবং রাজনৈতিক উত্তেজনার মিশেলে ‘ধুরন্ধর’ ইতোমধ্যেই বছরের অন্যতম আলোচিত ছবিতে পরিণত হয়েছে। সব মিলিয়ে বিতর্ক, রেকর্ড, কড়া সার্টিফিকেশন এবং তারকাপুঞ্জের সম্মিলনে ‘ধুরন্ধর’ বছরের সবচেয়ে আলোচিত ছবিগুলোর মধ্যে একটি হয়ে উঠেছে। এবার দেখার বিষয়, সাড়ে তিন ঘণ্টার এই সিনেমাটিক অভিযান দর্শকদের কতটা বেঁধে রাখতে পারে।












































































































































