ঢাকা ০২:০১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজঃ
জনগণের মাঝে পাটের ব্যাগ সরবরাহ করা হবে- পরিবেশ উপদেষ্টা টঙ্গীতে দুই শিশুকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার মা আমরা ধর্ম চর্চা করবো, কারো প্রতি বিদ্ধেষ করবোনা: ধর্ম উপদেষ্টা টঙ্গীতে ফ্ল্যাটে ঢুকে দুই শিশুকে কুপিয়ে হত্যা আগামী ঈদের আগেই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের প্রত্যাশা: ড. খলিলুর রহমান ৫ মাসেও সন্ধান মিলেনি উখিয়ায় অপহ্নত ৪ জেলের : পরিবারে চলছে শোকের মাতম আগামীকালের ভর্তি পরীক্ষা নিতে প্রস্তুত কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়  চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় যুবলীগ নেতা ইউছুফ আটক গাছ কাটাকে কেন্দ্র করে মাকে হত্যা; ছেলে গ্রেফতার প্রেমিকের প্রলোভনে স্বামীকে তালাক, বিয়ের দাবিতে প্রেমিকার অনশন

‘দৈনিক ভোরের কাগজ’ বন্ধের ঘোষণা

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : ০৭:৫৭:১০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ জানুয়ারী ২০২৫
  • / ৬৬ Time View

এক সময়ের জনপ্রিয় বাংলা পত্রিকা ‘দৈনিক ভোরের কাগজ’ বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটির কর্তৃপক্ষ। সোমবার রাজধানীর মালিবাগে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান কার্যালয়ে এ সংক্রান্ত একটি নোটিশ ঝোলানো হয়েছে।

ভোরের কাগজের নির্বাহী সম্পাদকের সই করা এ নোটিশে বলা হয়েছে, ভোরের কাগজ কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ শ্রম আইন-২০০৬ এর ১২ ধারা অনুযায়ী মালিকের নিয়ন্ত্রণ বহির্ভূত কারণে প্রতিষ্ঠানের প্রধান কার্যালয় বন্ধ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন যা ২০ জানুয়ারি, ২০২৫ তারিখ থেকে কার্যকর হবে।

প্রতিষ্ঠানটির কর্মীরা জানিয়েছেন, পত্রিকা বন্ধের কথা তারা সোমবার সকালেই জানতে পেরেছেন।

ভোরের কাগজের প্রধান প্রতিবেদক খোন্দকার কাওসার হোসেন বলেন, ‘আমরা রিপোর্টাররা অন্যান্য দিনের মতো যার যার অ্যাসাইন্টমেন্টে ছিলাম। সকালে অফিস থেকে জানানো হয়েছে, আমাদের বের করে দিয়ে নোটিশ দিয়েছে।’

খোন্দকার কাওসার হোসেনের ধারণা, পুরানো কর্মীদের ছাঁটাই করে মালিকপক্ষ নিজেদের মতো করে নিয়োগ দিতেই এ ধরনের নোটিশ দিয়েছে। তিনি জানান, ছাঁটাইয়ে আপত্তি নেই তবে এর জন্য ৮ম ওয়েজবোর্ড অনুযায়ী কর্মীদের সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে।

খোন্দকার কাওসার হোসেন বলেন, গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর ১৬ সেপ্টেম্বর আমাদের সম্পাদক শ্যামল দত্ত গ্রেপ্তার হন। এ পরিস্থিতিতে প্রতিষ্ঠানে যে অচলাবস্থা তৈরি হয় তা দূর করতে মালিক সাবের হোসেন চৌধুরী একটি টিমকে ডাকেন এবং পত্রিকার অবস্থান জানাতে চান। সে সময় তাকে প্রতিষ্ঠানের আর্থিক দুরাবস্থার কথা জানানো হয় এবং এর থেকে উত্তরণে সহযোগিতা চাওয়া হয়। এ সময় তিনি ফিন্যান্স বিভাগের কাছে জানতে চান, গত ১৫ বছর প্রতিষ্ঠান যে আয় করেছে সে টাকা কোথায়? তারা এর কোনো এটার জবাব দিতে পারে নি। পরে আমরা চলে আসি।’

কাওসার হোসেন আরও বলেন, ‘পরে অফিসে একটি মিটিংয়ে একটি রেজ্যুলেশন তৈরি করা হয়, এতে ৩৫–৪০ জনকে রেখে বাকিদের ছাঁটাই করার কথা জানানো হয়। পরে আমাদের আপত্তির মুখে এটা বাদ দেওয়া হয়। যদিও তারা পরে ছাঁটাইয়ের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে। আমরা বিষয়টি মালিককে জানিয়েছি। আমরা বলেছি, যদি প্রতিষ্ঠান বন্ধ করা হয় এতে আপত্তি নেই কিন্তু ভোরের কাগজ ৮ম ওয়েজবোর্ড বাস্তবায়ন করেছে, সে অনুযায়ী সরকারের কাছ থেকে বিজ্ঞাপন নিয়েছে, কিন্তু আমাদের লামছাম বেতন দেওয়া হয়েছে। যাদের ছাঁটাই করা হবে তাদের ৮ম ওয়েজবোর্ডে সুবিধা দেওয়া হোক। আর যদি রাখা হলে তাহলে ৮ম ওয়েজবোর্ড বাস্তবায়ন করতে হবে।’

কাওসার হোসেনের দাবি পরপর ৩ দিন নোটিশ দিয়েও মালিকপক্ষের সারা পাননি তারা। পত্রিকা খোলার দাবিতে সোমবার প্রতিষ্ঠানটির সামনেই কর্মসূচির ডাক দিয়েছেন কর্মীরা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রতিষ্ঠানটিতে কর্মরত এক সাংবাদিক বলেন, ‘আমাদের জানানো হয়েছে পত্রিকা ছাপানো আপাতত বন্ধ থাকবে। তবে অনলাইনে সব কার্যক্রম চলবে।’

১৯৯২ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি যাত্রা শুরু করে ভোরের কাগজ। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর গত ১৬ সেপ্টেম্বর পত্রিকাটির সম্পাদক শ্যামল দত্ত ময়মনসিংহের ধোবাউড়া সীমান্ত থেকে আটক হন। তিনি বর্তমানে কারাগারে আছেন। শ্যামল দত্ত জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।

Please Share This Post in Your Social Media

‘দৈনিক ভোরের কাগজ’ বন্ধের ঘোষণা

নিজস্ব প্রতিবেদক
Update Time : ০৭:৫৭:১০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ জানুয়ারী ২০২৫

এক সময়ের জনপ্রিয় বাংলা পত্রিকা ‘দৈনিক ভোরের কাগজ’ বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটির কর্তৃপক্ষ। সোমবার রাজধানীর মালিবাগে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান কার্যালয়ে এ সংক্রান্ত একটি নোটিশ ঝোলানো হয়েছে।

ভোরের কাগজের নির্বাহী সম্পাদকের সই করা এ নোটিশে বলা হয়েছে, ভোরের কাগজ কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ শ্রম আইন-২০০৬ এর ১২ ধারা অনুযায়ী মালিকের নিয়ন্ত্রণ বহির্ভূত কারণে প্রতিষ্ঠানের প্রধান কার্যালয় বন্ধ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন যা ২০ জানুয়ারি, ২০২৫ তারিখ থেকে কার্যকর হবে।

প্রতিষ্ঠানটির কর্মীরা জানিয়েছেন, পত্রিকা বন্ধের কথা তারা সোমবার সকালেই জানতে পেরেছেন।

ভোরের কাগজের প্রধান প্রতিবেদক খোন্দকার কাওসার হোসেন বলেন, ‘আমরা রিপোর্টাররা অন্যান্য দিনের মতো যার যার অ্যাসাইন্টমেন্টে ছিলাম। সকালে অফিস থেকে জানানো হয়েছে, আমাদের বের করে দিয়ে নোটিশ দিয়েছে।’

খোন্দকার কাওসার হোসেনের ধারণা, পুরানো কর্মীদের ছাঁটাই করে মালিকপক্ষ নিজেদের মতো করে নিয়োগ দিতেই এ ধরনের নোটিশ দিয়েছে। তিনি জানান, ছাঁটাইয়ে আপত্তি নেই তবে এর জন্য ৮ম ওয়েজবোর্ড অনুযায়ী কর্মীদের সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে।

খোন্দকার কাওসার হোসেন বলেন, গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর ১৬ সেপ্টেম্বর আমাদের সম্পাদক শ্যামল দত্ত গ্রেপ্তার হন। এ পরিস্থিতিতে প্রতিষ্ঠানে যে অচলাবস্থা তৈরি হয় তা দূর করতে মালিক সাবের হোসেন চৌধুরী একটি টিমকে ডাকেন এবং পত্রিকার অবস্থান জানাতে চান। সে সময় তাকে প্রতিষ্ঠানের আর্থিক দুরাবস্থার কথা জানানো হয় এবং এর থেকে উত্তরণে সহযোগিতা চাওয়া হয়। এ সময় তিনি ফিন্যান্স বিভাগের কাছে জানতে চান, গত ১৫ বছর প্রতিষ্ঠান যে আয় করেছে সে টাকা কোথায়? তারা এর কোনো এটার জবাব দিতে পারে নি। পরে আমরা চলে আসি।’

কাওসার হোসেন আরও বলেন, ‘পরে অফিসে একটি মিটিংয়ে একটি রেজ্যুলেশন তৈরি করা হয়, এতে ৩৫–৪০ জনকে রেখে বাকিদের ছাঁটাই করার কথা জানানো হয়। পরে আমাদের আপত্তির মুখে এটা বাদ দেওয়া হয়। যদিও তারা পরে ছাঁটাইয়ের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে। আমরা বিষয়টি মালিককে জানিয়েছি। আমরা বলেছি, যদি প্রতিষ্ঠান বন্ধ করা হয় এতে আপত্তি নেই কিন্তু ভোরের কাগজ ৮ম ওয়েজবোর্ড বাস্তবায়ন করেছে, সে অনুযায়ী সরকারের কাছ থেকে বিজ্ঞাপন নিয়েছে, কিন্তু আমাদের লামছাম বেতন দেওয়া হয়েছে। যাদের ছাঁটাই করা হবে তাদের ৮ম ওয়েজবোর্ডে সুবিধা দেওয়া হোক। আর যদি রাখা হলে তাহলে ৮ম ওয়েজবোর্ড বাস্তবায়ন করতে হবে।’

কাওসার হোসেনের দাবি পরপর ৩ দিন নোটিশ দিয়েও মালিকপক্ষের সারা পাননি তারা। পত্রিকা খোলার দাবিতে সোমবার প্রতিষ্ঠানটির সামনেই কর্মসূচির ডাক দিয়েছেন কর্মীরা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রতিষ্ঠানটিতে কর্মরত এক সাংবাদিক বলেন, ‘আমাদের জানানো হয়েছে পত্রিকা ছাপানো আপাতত বন্ধ থাকবে। তবে অনলাইনে সব কার্যক্রম চলবে।’

১৯৯২ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি যাত্রা শুরু করে ভোরের কাগজ। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর গত ১৬ সেপ্টেম্বর পত্রিকাটির সম্পাদক শ্যামল দত্ত ময়মনসিংহের ধোবাউড়া সীমান্ত থেকে আটক হন। তিনি বর্তমানে কারাগারে আছেন। শ্যামল দত্ত জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।