ঢাকা ০১:১৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দুর্নীতি পরায়ণ কর্মকর্তাদের সহায়তায় সারাদেশে বন উজাড় হচ্ছে

নওরোজ রিপোর্ট
  • Update Time : ০৬:৩৫:০১ অপরাহ্ন, সোমবার, ৪ নভেম্বর ২০২৪
  • / ১৭ Time View

এক শ্রেণীর দুর্নীতি পরায়ণ কর্মকর্তা-কর্মচারী যোগসাজশে সারাদেশে গাছ কেটে সাবাড় করা হচ্ছে। উজাড় হচ্ছে বন। সাবেক স্বৈরাচারের দোসর সাবেক মন্ত্রী হাসান মাহমুদ ও শাহবুদ্দিনের সিন্ডিকেট এখনো সক্রিয়। খবর নির্ভরযোগ্য সূত্রের।

এর মধ্যে আরো রয়েছে সবেক প্রধান বন সংরক্ষক ইউনুস আলী। তিনি সুফল প্রকল্পের পরামশর্ক। ৫ আগস্ট সরকারের পতন হয়েছে। শেখ হাসিনা দেশ থেকে পালিয়ে গিয়েছে। আট আগস্ট ডক্টর ইউনূসের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এখন রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায়। অনেক দপ্তরে অধিদপ্তরে ছোঁয়া লেগেছে পরিবর্তনের স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে মানুষ। এখনো ছোঁয়া লাগেনি বনঅধিদপ্তরে। এখানে রহস্য লুকিয়ে আছে। বন উজাড় হচ্ছে কোটি কোটি টাকার। কেউ দেখে কেউ দেখেনা। এদের শক্তির উৎস কোথায়। ঢাকা কেন্দ্রীয় অঞ্চলের বনসংরক্ষক হোসাইন মোহাম্মদ নিশাত সব সময় বলেন, আমরা ডঃ হাসান মাহমুদের লোক। এদিকে সারাদেশের ন্যায় গাজীপুরের শ্রীপুরে বন উজাড় করা হচ্ছে। এক শ্রেণীর দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীর যোগসাজশে এসব হচ্ছে।

ঢাকা বন বিভাগের আওতাধীন শ্রীপুর রেঞ্জের শ্রীপুর সদর বিট কর্মকর্তা আলাল খানের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগের প্রেক্ষিতে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শ্রীপুর রেঞ্জের শ্রীপুর সদর বিটের আওতাধীন কাদিম গাজিয়া রন মৌজার এস এ ৬৯ নং দাগে এবং আর এস ৩২২ এবং ৩৪১ নং দাগের শত শত গজারি গাছ কেটে বন উজাড় করে ফেলেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একজন সচেতন ব্যক্তি বিশ্ব জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবেলা করার জন্য বন এবং বনভূমি রক্ষা করার প্রয়োজনে শ্রীপুর রেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকর্তা বিট কর্মকর্তাদের কাছে একের পর এক লিখিত অভিযোগ করার পরও বন বিভাগের লোকজন বন এবং বনভূমি রক্ষায় কোন ভূমিকা রাখেনি। দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কোন প্রকার আইনি পদক্ষেপ নেয়নি।

গত ৬-২-২০২৪ ইং তারিখে শ্রীপুর সদর বিটির বিট অফিসার আলাল খানের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ করেন বনদসু মোশারফ জিল্লুর রহমান পিতা আব্দুল আজিজ খান আজিজুল লিফাজউদ্দিন তাইজু পিতা-মৃত সদর উদ্দিন মোশারফ পিতা মোমিন ফকিরদের বিরুদ্ধে। কাটা গাছ এবং গাছের গুড়ার ছবিসহ অবগত করান বিট কর্মকর্তা আলাল খানকে। অভিযোগ পাওয়ার পর বিট কর্মকর্তা আলাল খান এবং তার সহযোগীরা বন এবং বনভূমি রক্ষায় কোন ভূমিকা না রেখে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের কাছ থেকে মামলার ভয় দেখিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়।

উল্লেখিত মৌজার আর এস ৩১২ এবং ৪১৬ দাগ জবরদখল মুক্ত করে ২০১৩ সনে সদর বিটের তৎকালীন বিট কর্মকর্তা মনজুরুল আলম বিভিন্ন ঔষধি গাছের বাগান সৃজন করেছিলেন। এই সমস্ত বাগান উজাড় করে বর্তমানে ওই বনভূমিতে চাষাবাদ হচ্ছে । বিট কর্মকর্তা আলাল খানকে লিখিতভাবে জানানো হলে তিনি বন ভূমি উদ্ধার না করে টাকার বিনিময়ে চাষাবাদ করার সুযোগ করে দেন। কাদিম গাজীয়ারন মৌজার উল্লেখিত দাগ সমূহ থেকে প্রতিদিন গজারি গাছ কেটে নিয়ে যাচ্ছে। কোন কোন সময় গাছ কেটে বনের ভিতরে চিড়াই করে ভ্যান গাড়ি করে নিয়ে যায়। এ সমস্ত বিষয়ে বন বিভাগের কোন কর্ণপাত নেই।

অপরদিকে পটকা মৌজার আর এস দাগ ১৬৬৭, ১৬৫৫, ২০১৯, ১৭৩৩, ১৭২৫ সহ সৃজিত উডলট বাগানের অংশীদারিত্বমূলক মালিকানা প্রদান করা হয়। যাদেরকে বাগানের অংশীদারিত্ব প্রদান করা হয় তাদের কাছ থেকে বাগানে রোপন করা চারারদাম লেবার ও সারের মূল্য বিট কর্মকর্তা আলাল খান স্থানীয় দালালের মাধ্যমে আদায় করে নেন। অথচ এই টাকা নেওয়ার কোন নিয়ম নেই সুবিধাভোগী ব্যক্তিগণ টাকা দিতে বাধ্য হন। বিশ্ব জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবেলায় বন বিভাগের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ ।

Please Share This Post in Your Social Media

দুর্নীতি পরায়ণ কর্মকর্তাদের সহায়তায় সারাদেশে বন উজাড় হচ্ছে

নওরোজ রিপোর্ট
Update Time : ০৬:৩৫:০১ অপরাহ্ন, সোমবার, ৪ নভেম্বর ২০২৪

এক শ্রেণীর দুর্নীতি পরায়ণ কর্মকর্তা-কর্মচারী যোগসাজশে সারাদেশে গাছ কেটে সাবাড় করা হচ্ছে। উজাড় হচ্ছে বন। সাবেক স্বৈরাচারের দোসর সাবেক মন্ত্রী হাসান মাহমুদ ও শাহবুদ্দিনের সিন্ডিকেট এখনো সক্রিয়। খবর নির্ভরযোগ্য সূত্রের।

এর মধ্যে আরো রয়েছে সবেক প্রধান বন সংরক্ষক ইউনুস আলী। তিনি সুফল প্রকল্পের পরামশর্ক। ৫ আগস্ট সরকারের পতন হয়েছে। শেখ হাসিনা দেশ থেকে পালিয়ে গিয়েছে। আট আগস্ট ডক্টর ইউনূসের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এখন রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায়। অনেক দপ্তরে অধিদপ্তরে ছোঁয়া লেগেছে পরিবর্তনের স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে মানুষ। এখনো ছোঁয়া লাগেনি বনঅধিদপ্তরে। এখানে রহস্য লুকিয়ে আছে। বন উজাড় হচ্ছে কোটি কোটি টাকার। কেউ দেখে কেউ দেখেনা। এদের শক্তির উৎস কোথায়। ঢাকা কেন্দ্রীয় অঞ্চলের বনসংরক্ষক হোসাইন মোহাম্মদ নিশাত সব সময় বলেন, আমরা ডঃ হাসান মাহমুদের লোক। এদিকে সারাদেশের ন্যায় গাজীপুরের শ্রীপুরে বন উজাড় করা হচ্ছে। এক শ্রেণীর দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীর যোগসাজশে এসব হচ্ছে।

ঢাকা বন বিভাগের আওতাধীন শ্রীপুর রেঞ্জের শ্রীপুর সদর বিট কর্মকর্তা আলাল খানের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগের প্রেক্ষিতে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শ্রীপুর রেঞ্জের শ্রীপুর সদর বিটের আওতাধীন কাদিম গাজিয়া রন মৌজার এস এ ৬৯ নং দাগে এবং আর এস ৩২২ এবং ৩৪১ নং দাগের শত শত গজারি গাছ কেটে বন উজাড় করে ফেলেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একজন সচেতন ব্যক্তি বিশ্ব জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবেলা করার জন্য বন এবং বনভূমি রক্ষা করার প্রয়োজনে শ্রীপুর রেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকর্তা বিট কর্মকর্তাদের কাছে একের পর এক লিখিত অভিযোগ করার পরও বন বিভাগের লোকজন বন এবং বনভূমি রক্ষায় কোন ভূমিকা রাখেনি। দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কোন প্রকার আইনি পদক্ষেপ নেয়নি।

গত ৬-২-২০২৪ ইং তারিখে শ্রীপুর সদর বিটির বিট অফিসার আলাল খানের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ করেন বনদসু মোশারফ জিল্লুর রহমান পিতা আব্দুল আজিজ খান আজিজুল লিফাজউদ্দিন তাইজু পিতা-মৃত সদর উদ্দিন মোশারফ পিতা মোমিন ফকিরদের বিরুদ্ধে। কাটা গাছ এবং গাছের গুড়ার ছবিসহ অবগত করান বিট কর্মকর্তা আলাল খানকে। অভিযোগ পাওয়ার পর বিট কর্মকর্তা আলাল খান এবং তার সহযোগীরা বন এবং বনভূমি রক্ষায় কোন ভূমিকা না রেখে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের কাছ থেকে মামলার ভয় দেখিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়।

উল্লেখিত মৌজার আর এস ৩১২ এবং ৪১৬ দাগ জবরদখল মুক্ত করে ২০১৩ সনে সদর বিটের তৎকালীন বিট কর্মকর্তা মনজুরুল আলম বিভিন্ন ঔষধি গাছের বাগান সৃজন করেছিলেন। এই সমস্ত বাগান উজাড় করে বর্তমানে ওই বনভূমিতে চাষাবাদ হচ্ছে । বিট কর্মকর্তা আলাল খানকে লিখিতভাবে জানানো হলে তিনি বন ভূমি উদ্ধার না করে টাকার বিনিময়ে চাষাবাদ করার সুযোগ করে দেন। কাদিম গাজীয়ারন মৌজার উল্লেখিত দাগ সমূহ থেকে প্রতিদিন গজারি গাছ কেটে নিয়ে যাচ্ছে। কোন কোন সময় গাছ কেটে বনের ভিতরে চিড়াই করে ভ্যান গাড়ি করে নিয়ে যায়। এ সমস্ত বিষয়ে বন বিভাগের কোন কর্ণপাত নেই।

অপরদিকে পটকা মৌজার আর এস দাগ ১৬৬৭, ১৬৫৫, ২০১৯, ১৭৩৩, ১৭২৫ সহ সৃজিত উডলট বাগানের অংশীদারিত্বমূলক মালিকানা প্রদান করা হয়। যাদেরকে বাগানের অংশীদারিত্ব প্রদান করা হয় তাদের কাছ থেকে বাগানে রোপন করা চারারদাম লেবার ও সারের মূল্য বিট কর্মকর্তা আলাল খান স্থানীয় দালালের মাধ্যমে আদায় করে নেন। অথচ এই টাকা নেওয়ার কোন নিয়ম নেই সুবিধাভোগী ব্যক্তিগণ টাকা দিতে বাধ্য হন। বিশ্ব জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবেলায় বন বিভাগের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ ।