দক্ষিণ কুমিল্লার ইতিহাসের রাখাল রাজা মুজিবুল হক
![](https://nawroj.com.bd/wp-content/uploads/2023/04/LOGO-NAWROJ-2022-icon.png)
- Update Time : ০৮:৩৮:৫৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১ জুন ২০২৪
- / ২৭ Time View
ইংরেজীতে একটি প্রবাদ বাক্য আছে “ স্মল মাইন্ডস ডিসকাস এবাউট পিপল, এভারেজ মাইন্ডস ডিসকাস ইভেন্ট, গ্রেট মাইন্ডস ডিসকাস আইডিয়াস এন্ড গ্রেটেস্ট মাইন্ডস ওয়ার্কস ইন সাইলেন্ট।” অর্থাৎ “ছোট মনের মানুষেরা মানুষের সমালোচনা করে, গড়পড়তা বা মধ্যমপন্থী মনের মানুষেরা কাজের সমালোচনা করে, বড় মনের মানুষেরা নিজ ধারণা ব্যক্ত করেন, কিন্তু শ্রেষ্ঠ মনের মানুষেরা কাজ করেন নীরবে।” বাস্তবিকই সত্য যে, সবচেয়ে বড় বা শ্রেষ্ঠ মনের মানুষেরা অন্যের সমালোচনা করার সময় নেই। তারা কথায় নয় কাজে বিশ্বাসী। তেমনি একজন বড় মনের মানুষ বীর মুক্তিযোদ্ধা, বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক,একজন আলোাকিত রাজনীতিক, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অত্যন্ত বিশ্বস্ত,সাবেক সফল রেলপথমন্ত্রী এবং কুমিল্লা -১১ (চৌদ্দগ্রাম ) আসনে ৫ বার নির্বাচিত সংসদ সদস্য মোঃ মুজিবুল হক ।
প্রাগৈতিহাসিক যুুগ থেকে সামাজিক সমস্যা সমূহের সমাধান ও কল্যাণকর কর্মকান্ডে নেতৃত্বদানের জন্য মানবহিতৈষী এবং সংকীর্ণতামুক্ত মানুষের আবির্ভাব হয়েছে পৃথিবীকে বাসযোগ্য করার মহান এক নান্দনিক ব্রত নিয়ে। তারা স্বীয় স্বার্থত্যাগের মহড়ার মাধ্যমে জগতকে পরিপূর্ণ করেছেন আপন মহিমায়। কিংবদন্তীতুল্য মহামানবের অপূর্ব কায়া ও কর্মক‚শলতা অমর করে রেখেছে এই ধরনীর ইতিহাসের পৃষ্ঠা ও লোক কাহিনীর অনবদ্য গাঁথা। সামাজিক সমস্যা সমাধানে কর্তব্যপরায়ণতার পরকাষ্ঠা তারা প্রদর্শন করেন। তারা অনিত রবির ন্যায় অলোকবর্তিকা হাতে নিয়ে বসুধাকে আলোকিত করেন। যুগের সীমাকে অতিক্রম করেন অনায়াসে এবং কান্ডারী দূর্গম ঝান্ডাাকে প্রদর্শিত করেন সীমাহীন ঔদার্য্যতার। তেমনি বহুমূখী প্রতিভার অধিকারী একজন সুদক্ষ রাজনীতিক, অত্যন্ত সাদা মনের মানুষ, গরীবের বন্ধু, দানবীর, সমাজসেবক, আয়কর উপদেষ্টা, সমাজ সংগঠক, শিক্ষানুরাগী, বীর মুক্তিেেযাদ্ধা, সততা ও ন্যায়ের প্রতীক এবং দক্ষিণ কুমিল্লার ইতিহাসের রাখাল রাজা মো: মুজিবুল হক।
মোঃ মুজিবুল হক চৌদ্দগ্রাম এলাকায়ু অত্যন্ত জনপ্রিয়। আর কৃষক পরিবারের সন্তান পরিচয়েই তিনি আজীবন থাকতে চান। তিনি এলাকার আপামর জনসাধারনের নেতা। তিনি গত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও কুমিল্লা -১১ ( চৌদ্দগ্রাম) আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছেন। তার জনপ্রিয়তা ঈর্ষান্বিত।
তিনি কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ থেকে কৃতিত্বের সাথে বিকম পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। বিকম পাসের পর তিনি উচ্চ শিক্ষার জন্য ঢাকায় আসেন এবং ঢাকায় সিএ(চার্টার্ড এ্যাকউন্ট্যাান্ট) ফার্মে ভতি হয়ে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত সিএ’ কোর্সে লেখাপড়া করেন। হাইস্কুল জীবনেই তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হন। ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হওয়ার পর তিনি ছাত্রলীগের বিভিন্ন পর্যায়ে নেতৃত্ব দেন। ছাত্র রাজনীতি শেষে তিনি যুবলীগে যোগদান করেন। কুমিল্লা জেলা যুবলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন ছাড়াও তিনি কেন্দ্রীয় যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য, যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদকের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি তিনি মূল সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে বিভিন্ন পর্যায়ে বিভিন্ন সময়ে নেতৃত্ব দেন। তিনি কুমিল্লা জেলা আওয়ামী লীগের যুব সম্পাদক, প্রচার সম্পাদক, সাংগঠনিক সম্পাদক ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে বিভিন্ন সময় দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বর্তমানে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়ে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।
১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে তিনি সক্রিয়ভাবে অংশ গ্রহণ করেন। দেশ মাতৃকার স্বাধীনতার জন্য তিনি জীবনবাজি রেখে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী ও তাদের এ দেশীয় দোসর রাজাকার-আলবদর ও আল শামস বাহিনীর বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধে লিপ্ত হন। তিনি “বিএলএ” অর্থাৎ মুজিব বাহিনীর সদস্য হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করেন। তিনি ১৯৬৬ সালের ছয় দফা, ১৯৬৯ সালে গণ-অভ্যুত্থান, ১৯৯০-এর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনসহ সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলন ও সংগ্রামে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু এবং তাঁর সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ গ্রহণ করেন। একজন প্রগতিশীল নেতা হিসেবে তিনি বর্তমান সরকারের ঘোষিত ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়াশেষে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার ও বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে সাহসী ভূমিকা পালন করে যাচ্ছেন।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধুর নির্মম হত্যাকান্ডের পর তিনি স্বৈরাচারী খুনী সরকারের বিরুদ্ধে পুর্নবার গণআন্দোলন গড়ে তোলেন। তিনি ১৯৮৬ ও ১৯৯১ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। কিন্তু ভোট কারচুপির মাধ্যমে তাকে হারিয়ে দেয়া হয়। ১৯৯৬ সালে তিনি একই আসনে বিপুল ভোটের ব্যবধানে প্রথমবারে মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯৫-২০০১ সালে তিনি মহান জাতীয় সংসদের হুইপ (প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদা সম্পন্ন) নিযুক্ত হন। ২০০১ সালের নির্বাচনে ষড়যন্ত্রকারীরা আবার তাঁকে ভোট ডাকাতি, কেন্দ্র দখল ভোট কারচুপির নির্বাচনের মাধ্যমে হারিয়ে দেয়। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নির্বাচনে তিনি ২৫৯ কুমিল্লা-১১ (চৌদ্দগ্রাম) আসনে পুনরায় বিপুল ভোটের ব্যবধানে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। আবারও তিনি মহান জাতীয় সংসদের হুইপ নিযুক্ত হন। । তিনি ২০১২ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর মন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন এবং ১৫ সেপ্টেম্বর রেলপথ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান।
মোঃ মুজিবুল হক ১৯৯৬ সালে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে তাঁর নির্বাচনী এলাকা চৌদ্দগ্রামের অবকাঠামো উন্য়ন বিশেষ করে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, মক্তব, মসজিদ মন্দিরহস শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান এবং রাস্তাঘাট, ব্রিজ-কালভার্ট প্রভৃতির প্রভ‚ত উন্নয়ন সাধন করেন। কাঁচা রাস্তা মেরামত এবং পাকা রাস্তা নির্মান ও মেরামত করেন। তিনি তাঁর নির্বাচনী এলাকায় ব্যাপকভাবে বিদ্যূতায়ন করেন এবং স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, মসজিদ, মক্তব, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, ইউনিয়ন পরিষদ ভবন, পুল-কালভার্ট ও হাট-বাজারসহ যাবতীয় অবকাঠামোগত উন্নয়ন সাধন করেন। তাঁর অনন্য ও অসামান্য অবদানের কারণে চৌদ্দগ্রাম আজ একটি উন্নয়নের মডেল উপজেলায় পরিণত হয়েছে।
জাতীয় সংসদের ২৫৯ কুমিল্লা-১১ (চৌদ্দগ্রাম) আসনে বারবার নির্বাচিত এমপি মোঃ মুজিবুল হক গত নির্বাচনে ও পুনরায় নির্বাচিত হয়েছেন। কারণ এলাকায় তার জনপ্রিয়তা খুবই ঈর্ষণীয়। এলাকায় ধর্ম, বর্ণ, দল, মত নির্বিশেষে সকলের প্রিয় নেতা হিসেবে খ্যাতি লাভ করেছেন। তিনি এলাকায় গেলে তাঁকে দেখার জন্য সর্বস্তরের মানুষের ঢল নামে। তিনি ধৈর্য্য সহকারে সকলের কথা শুনে তা সমাধানের চেষ্টা করে থাকেন। তবে তিনি কখনো অন্যায়ের সাথে আপোষ করেন না। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অত্যন্ত আস্থাভাজন হিসেবে তাঁকে অতীতে নির্বাচনকালীন বহুদলীয় অন্তর্বতীকালীন সরকারের রেলপথ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বের পাশাপাশি ধর্ম মন্ত্রণালয়েরও পূর্ণ মন্ত্রীর দায়িত্ব দিয়েছেন। তিনি তাঁর উপর অর্পিত দায়িত্বভার সূচারুরূপে পালন করেছেন। জননেত্রী শেখ হাসিনা প্রকৃতভাবে তাকে মুল্যায়ন করেছেন। তাঁর শখ বই পড়া ও ভ্রমণ করা। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি সদালাপী, সহজ সরল জীবনযাপনে অভ্যস্ত। তিনি বাংলা, ইংরেজী ও আরবী ভাষায় সমান পারদর্শী। বিবাহিত জীবনে তিনি ৩ সন্তানের জনক।
উল্লেখ্য যে, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারী দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার পুনরায় ক্ষমতাসীন হলে মোঃ মুজিবুল হক এমপি দ্বিতীয়বারের মতো রেলপথ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান। একাদশও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি পুনরায় একই আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। চৌদ্দগ্রাম থেকে ৫ বার নির্বাচিত সফল এমপি হিসেবে রেলপথ মন্ত্রণালয়েরও সফল মন্ত্রী মুজিবুল হক নিরহংকার একজন অমায়িক ও সাদা মনের মানুষ। মহান সৃষ্টিকর্তা মানুষের কল্যাণের জন্য যুগে যুগে মুজিবুল হকের মতো ক্ষণজন্মা মানুষের সৃষ্টি করেছেন। দক্ষিণ কুমিল্লার ইতিহাসের রাখাল রাজা মো: মুজিবুল হক কল্যাণকামী মানুষের ব্রত নিয়ে সম্মুখে এগিয়ে যাচ্ছেন। অত্যন্ত সততা ও লোভ লালসার উর্দ্ধে থেকে তিনি সর্বদা কর্মমূখর জীবন যাপন করছেন।