তিনি কী একাই জাতীয়তাবাদী সাংবাদিক ফোরামের একচ্ছত্র নেতা!

- Update Time : ০৮:৪০:৩১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ অগাস্ট ২০২৪
- / ২১৪ Time View
ছাত্র-জনতার রক্তক্ষয়ী আন্দোলনের বিরুদ্ধে অবস্থানকারী গণবিরোধী ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের দোসর সাংবাদিক নেতাদের আবারো জাতীয় প্রেসক্লাবে প্রবেশ করানোর উদ্যোগ নিয়েছে মোনাফেক হিসেবে পরিচিত (সংবাদপত্রের সাথে বর্তমানে আদৌ সম্পর্ক নেই) এই জাতীয়তাবাদী তরুণ সাংবাদিক নেতা।
আওয়ামী ঘরানার সাংবাদিকরা ৫ আগস্ট জাতীয় প্রেস ক্লাব থেকে পালিয়ে যাবার পর এই নেতা এখন তাদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে আবারো তাদেরকে জাতীয় প্রেস ক্লাবে প্রবেশ করানোর দায়িত্ব নিয়েছে। এমন অভিযোগ সবার মুখে মুখে।
ইতোমধ্যে আওয়ামীপন্থি বিএফইউজে ও ডিইউজে’র সাংবাদিক নেতা ওমর ফারুক, দীপ আজাদ, সোহেল হায়দার চৌধুরী, মধু সুদন মন্ডল, রফিকসহ অন্যান্য সকলকে জাতীয় প্রেসক্লাবে আসার সুযোগ করে দিয়েছে।
ইতোমধ্যে (১৩.০৮.২৪ পর্যন্ত) শতাধিক আওয়ামীপন্থি বিতর্কিত সাংবাদিক নেতা তার প্রশ্রয় ও তত্ত্বাবধানে প্রেস ক্লাবে আসা-যাওয়া শুরু করে দিয়েছে।
আর এদেরকে সব রকমের প্রটেকশন দিচ্ছেন এই নেতা! এছাড়া প্রেস ক্লাবের নতুন মেম্বারশীপ দেওয়ার ক্ষেত্রেও বড় রকমের বাণিজ্য শুরু করে দিয়েছেন তিনি। যা এখন সামাজিক গণমাধ্যমসহ সদস্যদের মুখে মুখে চাউর হয়ে গেছে।
দুই বছর আগে জাতীয় প্রেস ক্লাবের নির্বাচনে জাতীয়তাবাদী ফোরামের মনোনীত সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ইলিয়াস খানের প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের শ্যামল দত্তের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা খেয়ে মাত্র ১১ ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে প্রকাশ্যে সবার সামনে উল্লাস করেছিল এই নেতা। শ্যামল দত্ত আর ওই নেতার বাড়ী একই জেলায়।
জাতীয় প্রেসক্লাবের একজন প্রবীণ সাংবাদিক নেতা আক্ষেপ করে বলেন, একথা সর্বজন বিদিত এই নেতার জন্য আজ আমরা জাতীয়তাবাদী ফোরামের সদস্যরা চরম নিগৃহীত। যখনই আমরা একটু আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা করি তখনই তিনি ওদের (আওয়ামী) সাথে লিয়াজোঁ করে সব কিছু ওলটপালট করে দেন। এভাবে আর চলছে না। যে করেই হোক এই লোককে থামানোর চেষ্টা করা উচিত।
এই নেতা একাধারে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সদস্য সচিব, বিএফইউজের মহাসচিব, বিএনপি মিডিয়া সেলের সদস্য, জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের (জেডআরএফ) নির্বাহী সদস্য, অতি সম্প্রতি জাতীয় প্রেস ক্লাবের ব্যবস্থাপনা কমিটির নির্বাহী সদস্য হিসেবে জোরপূর্বক নিজেকে কো-অপ্ট করিয়ে নিয়েছে।
তার বিরুদ্ধে সময় টেলিভিশন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে সম্প্রতি বন্ধ করার হুমকি দিয়ে এক কোটি টাকা নিয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এটিএনবাংলা টিভির জ.ই, মামুনকে কর্তৃপক্ষ বহিষ্কার করার পর তার কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা নিয়ে আবারো জ.ই, মামুনকে সেখানে পুনর্বহাল করার সুযোগ করে দিয়েছে। এভাবে আরো অনেক মিডিয়ার কাছ থেকে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
এখন তিনি বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে নিজে বসতে চাচ্ছেন। যেখানে বর্তমানে আমাদের অনেক বেকার সাংবাদিকদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার কথা, সেখানে আওয়ামী লীগের লোকদের প্রটেক্ট করার নিশ্চয়তা দিয়ে তাদের কাছ থেকে মোটা অংকের আর্থিক সুবিধা নিচ্ছে এই নেতা। অর্থাৎ এক কথায় মিডিয়া সেক্টরটা একেবারে ধ্বংস করে দিচ্ছে। তার সাথে আরো হাতেগোনা দুই/তিনজন সুবিধাবাদী সাংবাদিক নেতার জন্য এখন জাতীয়তাবাদী সাংবাদিক ফোরামের সদস্যরা চরম বিপাকে পড়েছে।
একে যেভাবেই হোক এবার সামলানো উচিত’- এটা জাতীয়তাবাদী সাংবাদিকদের সবার দাবী।
অনেকের মন্তব্য, তিনি একাই একশ’। জাতীয়তাবাদী সাংবাদিকদের মধ্যে কি আর কেউ নেই নেতৃত্ব দেয়ার। যদি থেকেই থাকে তাহলে তিনি কেন একাই এতগুলো পদে অধিষ্ঠিত হয়েছেন। কি এমন কারিশমা তার-এই প্রশ্ন অনেকের।
৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে পালিয়ে যাবার পর তার দোসর সাংবাদিক নেতারাও দিশেহারা হয়ে পড়েন। এদিকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতিরও কোন হদিস নেই। তিনি ক্লাবে আসেননি অদ্যাবধি। সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত সপরিবারে ভারতে পালানোর পথে আখাউড়া ইমিগ্রেশন থেকে ফিরে আসতে বাধ্য হন।
এখন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নামে মিডিয়ায় বিবৃতি প্রকাশিত হচ্ছে। তারা অভিযোগ তুলেছেন প্রেসক্লাব দখলের। অথচ প্রেসক্লাব পরিচালিত হচ্ছে সম্পূর্ণরূপে তার গঠনতন্ত্র মেনে।
অনেকের প্রশ্ন, ইতিমধ্যে কী এমন ঘটে গেছে যে, যারা ছাত্র-জনতার রক্তঝরা গণ-আন্দোলনের বিপক্ষে প্রকাশ্যে বক্তৃতা-বিবৃতি দিয়েছে, ১০ দিন যেতে না যেতেই বুক ফুলিয়ে প্রেসক্লাবে আসছে। সহাস্যে আড্ডা দিচ্ছে। আর সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক যারা ক্লাবে আসার সাহসই পাচ্ছে না, তারা বিবৃতি দিচ্ছে। অথচ বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানিয়ে তালিকা দিয়ে গেছে।
Please Share This Post in Your Social Media
-
সর্বশেষ
-
জনপ্রিয়