ঢাকা ১২:০৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৫, ১২ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজঃ
ড্যাফোডিল ও সিটি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের মধ্যে রাতভর সংঘর্ষ,আগুন সরকারি অফিসে এখনও ফ্যাসিবাদীদের চাটুকার বসে আছে: সারজিস আলম ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় লাশ দাফনে বাধা; ফের সংঘর্ষ ও অগ্নিসংযোগ ন্যায়বিচার প্রক্রিয়ায় পুলিশের ভূমিকা আদালতের সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করে : প্রধান বিচারপতি রায় ছিড়ে ফেলার ঘটনায় নিজেকে বাঁচাতে উল্টো ম্যাজিস্ট্রেটকে পুলিশে সোপর্দের হুমকি জজের নির্বাচনের দিনক্ষণ ঠিক না হওয়ায় জনমনে প্রশ্ন উঁকি দিচ্ছে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে শিক্ষাখাতে সর্বোচ্চ বরাদ্দ দেবে: তারেক রহমান ন্যায় প্রতিষ্ঠিত হলে রাষ্ট্র দৃঢ় হয়, ব্যর্থ হলে ভেঙে পড়ে: প্রধান বিচারপতি মৌসুমের সেরা ফুটবলারের তালিকায় মেসি চীনের সঙ্গে কাজে কী ঝুঁকি- বাংলাদেশকে বোঝাবে যুক্তরাষ্ট্র

ঢাকায় ‘ভুয়া সাংবাদিক’ চক্র: প্রেসকার্ড-ভেস্ট নিয়ে প্রতারণা, সাংবাদিকতা পেশা আজ প্রশ্নবিদ্ধ!

সাজিদ মাহমুদ ইফতি, ঢাকা
  • Update Time : ০৮:৪৬:০৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ জুলাই ২০২৫
  • / ৪১৫ Time View

ঢাকার অলিগলি থেকে শুরু করে থানার গেট, আদালতের বারান্দা কিংবা ভিআইপি অনুষ্ঠান—সব জায়গাতেই দেখা মেলে একদল “সাংবাদিক” সেজে ঘোরাফেরা করা লোকের। কারও গলায় আইডি কার্ড, কারও গায়ে সাংবাদিক লেখা ভেস্ট, হাতে একটা পুরনো মাইক্রোফোন বা ক্যামেরা! কিন্তু আশ্চর্য হলেও সত্য, এদের অধিকাংশেরই কোনো গণমাধ্যমে চাকরি নেই, কেউ কেউ নিজেরাই ফেসবুক পেজ খুলে সাংবাদিক পরিচয় দিচ্ছে।

তাদের কাজ কী?

ভুয়া সাংবাদিকদের একটি বড় অংশ থানায় গিয়ে ‘কাভারেজ’ করার নামে পুলিশকে ভয় দেখায়। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে অনিয়মের কথা বলে চাঁদা তোলে। আবার কেউ কেউ ভুয়া নিউজ বানিয়ে কাউকে ব্ল্যাকমেইল করে টাকা আদায় করে।

ঢাকার মিরপুর, পল্টন, যাত্রাবাড়ী ও সদরঘাট এলাকায় এসব কর্মকাণ্ড বেশি দেখা যায়।

ভুয়া প্রেসকার্ড ও মাইক্রোফোন বানানো হয় কোথায়?

সূত্র জানায়, পুরান ঢাকার কিছু গলিতে মাত্র ৩০০-৫০০ টাকায় বানানো যায় ‘সাংবাদিক’ আইডি কার্ড। কেউ চাইলে তার নাম, ছবি ও ‘চিফ রিপোর্টার’ লিখেও বানিয়ে নিতে পারে। এমনকি অনেক রাজনৈতিক দলের কর্মীও নিজেদের ‘মিডিয়া পারসন’ পরিচয় দিয়ে সুবিধা নেয়।

পুলিশ কী বলছে?

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানান:

“আমরা প্রায়ই দেখি কেউ একজন সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে থানায় আসে, কিন্তু যাচাই করলে দেখা যায় ওই নামের কেউই কোনো মিডিয়ায় নেই। এসব প্রতারকদের ধরতে সম্প্রতি তালিকা তৈরি শুরু করেছি।”

সত্যিকারের সাংবাদিকরা ক্ষুব্ধ

একজন জাতীয় দৈনিকের রিপোর্টার বলেন:

“ভুয়া সাংবাদিকদের কারণে পুলিশ, সাধারণ মানুষ এমনকি ভিআইপিরাও এখন আসল সাংবাদিকদের সন্দেহের চোখে দেখে। এটা আমাদের জন্য অপমানজনক।”

সমাধান কী?

১. প্রেস কাউন্সিল বা তথ্য মন্ত্রণালয়ের রেজিস্ট্রেশন ছাড়া সাংবাদিকতা না করার নিয়ম চালু করা ২. থানা ও অফিসে সাংবাদিক পরিচয়ে আসলে আইডি যাচাই বাধ্যতামূলক করা 3. ফেসবুক/ইউটিউব ভিত্তিক ‘মিডিয়া’ পেজগুলোর নিবন্ধন প্রক্রিয়া বাধ্যতামূলক করা

শেষ কথা-

সাংবাদিকতা একটি গর্বের পেশা। কিছু অসাধু লোকের কারণে এ পেশার মর্যাদা হারাচ্ছে। এখনই সময়, এই ভুয়া সাংবাদিক চক্রের বিরুদ্ধে সামাজিক ও প্রশাসনিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়ার।

সাংবাদিক ও সাংঘাতিকের গল্প

Please Share This Post in Your Social Media

ঢাকায় ‘ভুয়া সাংবাদিক’ চক্র: প্রেসকার্ড-ভেস্ট নিয়ে প্রতারণা, সাংবাদিকতা পেশা আজ প্রশ্নবিদ্ধ!

সাজিদ মাহমুদ ইফতি, ঢাকা
Update Time : ০৮:৪৬:০৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ জুলাই ২০২৫

ঢাকার অলিগলি থেকে শুরু করে থানার গেট, আদালতের বারান্দা কিংবা ভিআইপি অনুষ্ঠান—সব জায়গাতেই দেখা মেলে একদল “সাংবাদিক” সেজে ঘোরাফেরা করা লোকের। কারও গলায় আইডি কার্ড, কারও গায়ে সাংবাদিক লেখা ভেস্ট, হাতে একটা পুরনো মাইক্রোফোন বা ক্যামেরা! কিন্তু আশ্চর্য হলেও সত্য, এদের অধিকাংশেরই কোনো গণমাধ্যমে চাকরি নেই, কেউ কেউ নিজেরাই ফেসবুক পেজ খুলে সাংবাদিক পরিচয় দিচ্ছে।

তাদের কাজ কী?

ভুয়া সাংবাদিকদের একটি বড় অংশ থানায় গিয়ে ‘কাভারেজ’ করার নামে পুলিশকে ভয় দেখায়। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে অনিয়মের কথা বলে চাঁদা তোলে। আবার কেউ কেউ ভুয়া নিউজ বানিয়ে কাউকে ব্ল্যাকমেইল করে টাকা আদায় করে।

ঢাকার মিরপুর, পল্টন, যাত্রাবাড়ী ও সদরঘাট এলাকায় এসব কর্মকাণ্ড বেশি দেখা যায়।

ভুয়া প্রেসকার্ড ও মাইক্রোফোন বানানো হয় কোথায়?

সূত্র জানায়, পুরান ঢাকার কিছু গলিতে মাত্র ৩০০-৫০০ টাকায় বানানো যায় ‘সাংবাদিক’ আইডি কার্ড। কেউ চাইলে তার নাম, ছবি ও ‘চিফ রিপোর্টার’ লিখেও বানিয়ে নিতে পারে। এমনকি অনেক রাজনৈতিক দলের কর্মীও নিজেদের ‘মিডিয়া পারসন’ পরিচয় দিয়ে সুবিধা নেয়।

পুলিশ কী বলছে?

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানান:

“আমরা প্রায়ই দেখি কেউ একজন সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে থানায় আসে, কিন্তু যাচাই করলে দেখা যায় ওই নামের কেউই কোনো মিডিয়ায় নেই। এসব প্রতারকদের ধরতে সম্প্রতি তালিকা তৈরি শুরু করেছি।”

সত্যিকারের সাংবাদিকরা ক্ষুব্ধ

একজন জাতীয় দৈনিকের রিপোর্টার বলেন:

“ভুয়া সাংবাদিকদের কারণে পুলিশ, সাধারণ মানুষ এমনকি ভিআইপিরাও এখন আসল সাংবাদিকদের সন্দেহের চোখে দেখে। এটা আমাদের জন্য অপমানজনক।”

সমাধান কী?

১. প্রেস কাউন্সিল বা তথ্য মন্ত্রণালয়ের রেজিস্ট্রেশন ছাড়া সাংবাদিকতা না করার নিয়ম চালু করা ২. থানা ও অফিসে সাংবাদিক পরিচয়ে আসলে আইডি যাচাই বাধ্যতামূলক করা 3. ফেসবুক/ইউটিউব ভিত্তিক ‘মিডিয়া’ পেজগুলোর নিবন্ধন প্রক্রিয়া বাধ্যতামূলক করা

শেষ কথা-

সাংবাদিকতা একটি গর্বের পেশা। কিছু অসাধু লোকের কারণে এ পেশার মর্যাদা হারাচ্ছে। এখনই সময়, এই ভুয়া সাংবাদিক চক্রের বিরুদ্ধে সামাজিক ও প্রশাসনিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়ার।

সাংবাদিক ও সাংঘাতিকের গল্প