টঙ্গীতে চাঁদাবাজিতে বাঁধা দেওয়ায় বিএনপির ৬ কর্মীকে কুপিয়ে জখম, অভিযোগ আওয়ামীপন্থী শ্রমিক নেতাদের বিরুদ্ধে

- Update Time : ০৭:২১:২৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩ মে ২০২৫
- / ৭৫ Time View
গাজীপুরের টঙ্গীতে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ায় বিএনপির ছয় নেতাকর্মীকে কুপিয়ে জখম করার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় শ্রমিক-মালিক সমিতির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে।
শনিবার টঙ্গীর মা টাওয়ারের সামনে এ হামলার ঘটনা ঘটে। আহতদের মধ্যে রয়েছেন ৫৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক ও গাজীপুর জেলা ট্রান্সপোর্ট ঠিকাদার মালিক সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন (৪৪), সহ-সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন সোহাগ (৪৫), সাংগঠনিক সম্পাদক ইউসুফ হোসেন (৪৪), ও বিএনপি কর্মী আবু সাইদ, মহর আলী এবং হেলাল।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, টঙ্গীর সোনালী টোব্যাকো রোড, তালতলা রোড, ন্যাশনাল টিউব রোড ও তমিজি হক রোডে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে পার্কিং করা ট্রাক-লরি থেকে চাঁদা আদায় করে আসছিল গাজীপুর জেলা ট্রাক কাভার্ডভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের একটি প্রভাবশালী অংশ। এর একটি অংশ মালিক সমিতির কয়েকজন নেতার কাছেও পৌঁছাতো। এ নিয়ে স্থানীয় বিএনপি নেতারা এবং গাজীপুর ট্রান্সপোর্ট ঠিকাদার মালিক সমিতির সদস্যরা প্রতিবাদ জানিয়ে আসছিলেন।
বিএনপি নেতাদের দাবি, এই বিরোধের সূত্র ধরে বৃহস্পতিবার মালিক সমিতির অফিসে গিয়ে হুমকি দিয়ে যান ইউনিয়নের সভাপতি আব্দুর রশিদ ভুঁইয়া। এর পরদিন শনিবার শ্রমিক নেতা সেলিম ওরফে হাতি সেলিমের নেতৃত্বে তিনটি ট্রাকে করে শতাধিক সশস্ত্র হামলাকারী অতর্কিতে তাদের ওপর হামলা চালায়।
প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্যমতে, হামলাকারীরা রামদা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বিএনপি নেতাদের এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। পরে স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে শহীদ আহসান উল্লাহ মাষ্টার জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে গুরুতর আহত জাকির হোসেন সোহাগকে ঢাকায় পঙ্গু হাসপাতালে পাঠানো হয়। শাহাদাত হোসেন ও হেলালকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আহতদের অভিযোগ, মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আজাদ হোসেন, শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আব্দুর রশিদ ভুঁইয়া এবং সাধারণ সম্পাদক শামসুল হক রানার নির্দেশেই এ হামলা হয়েছে। এই তিনজন আওয়ামী লীগ নেতা জাহাঙ্গীর আলম ও আজমত উল্লা খানের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত বলে স্থানীয়রা জানায়। এদিকে আহতদের দেখতে হাসপাতালে ছুটে যান টঙ্গী পশ্চিম থানা বিএনপির আহ্বায়ক প্রভাষক বশির আহমেদ।
তিনি বলেন,নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপিকে কোণঠাসা করতেই পরিকল্পিতভাবে এ হামলা চালানো হয়েছে। আমি এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবি করছি। তবে গাজীপুর জেলা ট্রাক কভার্ডভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আব্দুর রশিদ ভুঁইয়া হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন,চাঁদা আদায়ের সময় চালকদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা হয়। পরে ঠিকাদার সমিতির লোকজন চালকদের মারধর করলে উত্তেজিত চালকরাই তাদের উপর হামলা চালায়।
ঘটনার বিষয়ে টঙ্গী পূর্ব থানার ওসি ফরিদুল ইসলাম বলেন,বিষয়টি আমরা জেনেছি। এখনও লিখিত অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এই ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
স্থানীয়রা বলছেন, শ্রমিক ও মালিক সমিতির দ্বন্দ্ব এখন আর শুধু সংগঠনভিত্তিক নয়, রাজনৈতিক প্রভাব খাটানোর হাতিয়ার হয়ে উঠেছে।