টঙ্গী পাইলট স্কুল অ্যান্ড কলেজে ১৫ কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযুক্ত অধ্যক্ষের ‘জাল যোগদান’ নাটক

- Update Time : ০৯:০৮:৪৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫
- / ৩১৩ Time View
গাজীপুরের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান টঙ্গী পাইলট স্কুল অ্যান্ড গার্লস কলেজে ফের উত্তেজনা ছড়িয়েছে। দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত অধ্যক্ষ মো. আলাউদ্দিন মিয়া ‘জাল যোগদান’ নাটক ঘিরে টঙ্গীজুড়ে চলছে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা। প্রতিষ্ঠানটিতে ১৪ কোটি ৮২ লাখ টাকা আর্থিক অনিয়ম ও ১৩ লাখ টাকার আত্মসাতের অভিযোগে অভিযুক্ত এই অধ্যক্ষ সম্প্রতি জামিনে মুক্তি পান। মুক্তির পর গত মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) তার ছোট ভাই ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা হেলাল উদ্দিন নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে পোস্ট দেন—অধ্যক্ষ আলাউদ্দিন মিয়া নাকি স্কুলে পুনরায় যোগদান করেছেন। পোস্টের সঙ্গে যুক্ত ছিল হাজিরা খাতার একটি পৃষ্ঠা ও অধ্যক্ষের অফিসে বসা একটি ছবি। পোস্টটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তেই টঙ্গীতে শুরু হয় তোলপাড়। শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবক ও স্থানীয়দের মধ্যে দেখা দেয় ক্ষোভ ও প্রতিক্রিয়া।
তবে পরে নিশ্চিত হওয়া যায় অধ্যক্ষ আলাউদ্দিন মিয়া সেদিন স্কুলে যাননি। হাজিরা খাতার স্বাক্ষর ছিল জাল, আর ব্যবহৃত ছবিটিও ছিল পুরোনো। প্রতিষ্ঠানটির সহকারী প্রধান শিক্ষক মোস্তফা কামাল বলেন, মঙ্গলবার অধ্যক্ষ স্কুলে আসেননি। হাজিরা খাতা আমার অফিসেই থাকে। আমরা কোনো যোগদানপত্র পাইনি। পরে দেখি, খাতায় জাল স্বাক্ষর করা হয়েছে।
এর আগে শিক্ষক-কর্মচারীদের পক্ষ থেকে গভর্নিং বডির সভাপতির কাছে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগপত্র দাখিল করা হলেও সভাপতি কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে বরং ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে শোকজ নোটিশ পাঠান। এতে শিক্ষক-কর্মচারীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ দেখা দেয়। পরে জানা যায়, গভর্নিং বডির সভাপতি শাহ নেওয়াজ দিলরুবা খান কারাবন্দি অধ্যক্ষের জন্য অস্বাভাবিক ছুটি অনুমোদন দিয়ে তাকে পুনরায় দায়িত্ব গ্রহণের অনুমতি দেন। সামাজিক মাধ্যমে এ সংক্রান্ত চিঠি ছড়িয়ে পড়লে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। ফেসবুকে আরও অভিযোগ ওঠে সভাপতি শাহ নেওয়াজ দিলরুবা খান নাকি দুই কোটি টাকার বিনিময়ে অভিযুক্ত অধ্যক্ষকে পুনর্বহাল করার চেষ্টা করছেন। এতে ক্ষোভে ফেটে পড়ে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী। প্রবীণ রাজনীতিক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব হাসান উদ্দিন সরকার বলেন, এই প্রতিষ্ঠানের সুনাম নষ্ট করেছে দুর্নীতিবাজ অধ্যক্ষ ও তার সহযোগীরা। প্রশাসনের উচিত দ্রুত তাদের অপসারণ করা, নইলে এর দায় গভর্নিং বডিকেই নিতে হবে।
এদিকে প্রতিষ্ঠানটির সাবেক শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী বৃহস্পতিবার বিক্ষোভের ঘোষণা দিয়েছেন। তারা অভিযুক্ত অধ্যক্ষ ও বিতর্কিত সভাপতির অবিলম্বে অপসারণের দাবি জানিয়েছেন। এ বিষয়ে গভর্নিং বডির সভাপতি শাহ নেওয়াজ দিলরুবা খান এর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তবে অভিযুক্ত অধ্যক্ষ আলাউদ্দিন মিয়া বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও বানোয়াট। একটি কুচক্রী মহল আমাকে ফাঁসানোর জন্য উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এই ধরনের অপপ্রচার চালাচ্ছে।
Please Share This Post in Your Social Media
-
সর্বশেষ
-
জনপ্রিয়