জামায়াত নেতার বিরুদ্ধে মামলা বাণিজ্যের অভিযোগ করলেন কাদের মির্জা
- Update Time : ১২:১৫:৪০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫
- / ২৮ Time View
নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাট পৌর জামায়াতের আমীর মাওলানা মোশাররফ হোসাইনের বিরুদ্ধে সাত শিবির নেতাকর্মী হত্যায় দায়ের হওয়া মামলা নিয়ে বাণিজ্যের অভিযোগ তুলেছেন সাবেক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বসুরহাট পৌরসভার সাবেক মেয়র পলাতক আবদুল কাদের মির্জা।
শনিবার (২০ ডিসেম্বর) দুপুরে বিষয়টি জানাজানি হলে টক ‘অব দ্য কোম্পানীগঞ্জে’ পরিণত হয়। এসময় অভিযোগ অস্বীকার করে বিবৃতি দিয়েছেন জামায়াত নেতা মাওলানা মোশাররফ হোসাইন। এর আগে কাদের মির্জা তার ভেরিফায়েড ফেসবুক থেকে ওই অভিযোগ করে স্ট্যাটাস দেন।
কাদের মির্জা তার ফেসবুকে লেখেন, ২০১৩ সালের ১৪ ডিসেম্বর বসুরহাটে পুলিশের গুলিতে সাত শিবিরকর্মী নিহত হওয়ার ঘটনায় আমাকে জড়িয়ে বক্তব্য দিয়েছেন জামায়াত নেতা মাওলানা মোশাররফ হোসাইন। আমি ওই ঘটনার দিনে অসুস্থ হয়ে বাড়িতে ছিলাম। এ ঘটনায় মামলা হলে পুলিশের লোক ও আমাদের নেতা-কর্মীদের থেকে মামলায় দিবে না বলে এবং মামলা থেকে অব্যহতি দেয়ার কথা বলে মাওলানা মোশাররফ হোসাইন কত টাকা নিয়েছে তার হিসাব আমাদের দলের কাছে আছে।
কাদের মির্জা জামায়াতের ওই নেতাকে উদ্দেশ্য করে আরও লেখেন, ‘তোরা তো ইসলামের রাজনীতি করিস, আয় আমি আর তুই মসজিদে ঢুকি। মসজিতে কুরআন মাথায় নিয়ে আমি বলতে পারব আমাদের দলের কোন নেতা-কর্মী এই ঘটনার সাথে জড়িত ছিল না। তুই মিথ্যুক সেজন্য তুই কুরআন মাথায় নিয়ে সত্য কথা বলতে পারবি না, তোর সেই ঈমানি শক্তি নাই কারণ তুই মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছিস। তোর প্ররোচনায় আমাকে ১নং আসামী করে ১১২ জনকে মূল আসামী করে ও অজ্ঞাত আরও ১০০/১৫০ জনকে আসামী করে মিথ্যা মামলা করেছিস। তুইও রেডি থাক মামলার জন্য।’
জবাবে মাওলানা মোশাররফ হোসাইন নিজের ফেসবুকে লেখেন, আপনি আপনার বক্তব্যে প্রমাণ করলেন ৭ শহীদের ঘটনা আপনারা জড়িত। আপনার অনুমতি ছাড়া পুলিশ গুলি করে নাই। পুলিশ নিজেই আপনার কথা বলেছেন। আপনি অনেকগুলো মিথ্যা মামলা দিয়েছেন। আপনি প্রমাণ দিন কাদের থেকে টাকা নিয়েছি। অযথা, অহেতুক মিথ্যা বক্তব্য দিয়ে নিজের ইজ্জত আর নষ্ট করবেন না। আপনার জন্য আপনি দায়ী। আত্মসমালোচনা করুন। আপনি অনেক ভালো কাজ করেছেন, আমরা অস্বীকার করি না। আপনাকে ধন্যবাদ। কিন্তু আপনি আপনার দলের সাথে ও বিরোধী দলের নেতা কর্মীদের সাথে কি আচরণ করেছেন একটু চিন্তা করুন। আমরা প্রতিহিংসার রাজনীতি করি না, প্রতিযোগিতার রাজনীতি করি। প্রতিহিংসা থেকে বেরিয়ে আসুন।’
এদিকে সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে ‘টক অব দ্য কোম্পানীগঞ্জ’ হয়ে উঠেছে আওয়ামী লীগ ও জামায়াত নেতাদের এমন বাকযুদ্ধ। জামায়াত নেতা মাওলানা মোশাররফ হোসাইন এলাকায় থাকলেও আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল কাদের মির্জা বিগত ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট অভ্যুত্থানের দিন থেকে পলাতক। তিনি আওয়ামী লীগের পলাতক সাধারণ সম্পাদক এবং সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোটভাই।
জানতে চাইলে বসুরহাট পৌর জামায়াতের আমীর মাওলানা মোশাররফ হোসাইন বলেন, ‘আবদুল কাদের মির্জাকে সামনে এসে প্রমাণ দিতে বলুন কার থেকে টাকা নিয়েছি। প্রয়োজনে মসজিদে ঢুকে প্রমাণ হবে টাকা নিয়েছি কি না। তার ফেসবুক অবান্তর স্ট্যাটাসে জনগণ বিভ্রান্ত হতে পারে তাই আমিও ফেসবুকে এর প্রতিবাদ করে স্ট্যাটাস দিয়েছি।’
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা জামায়াতের আমীর অধ্যক্ষ বেলায়েত হোসেনকে বারবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা জামায়াতের এক নেতা বলেন, এসব বিষয় দলের জেলা নেতারা অবগত আছেন। সময় হলে সব বিষয়ে খোলাসা বক্তব্য দেওয়া হবে।
২০১৩ সালের ১৪ ডিসেম্বর নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বসুরহাট পৌরসভায় আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ সদস্য এবং পুলিশের গুলিতে সাত শিবিরকর্মী নিহত হন। তারা হলেন আব্দুস সাত্তার, সাইফুল ইসলাম, মতিউর রহমান সজিব, আব্দুর নুর রাসেল, আব্দুল আজিজ রায়হান, সাইফুল ইসলাম ও মো. মিশু।


























































































































































































