জাতিসংঘে গাজায় ক্ষুধার্তদের ছবি প্রদর্শন করলেন এরদোয়ান
- Update Time : ১২:৪০:৫০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
- / ৮০৯৫ Time View
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগান জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনের মঞ্চে গাজার নির্মম ছবি তুলে ধরেন। সেখানে দেখা যায়, ক্ষুধার্ত নারীরা হাতে বালতি ও হাঁড়ি নিয়ে খাবারের জন্য অপেক্ষা করছেন। তিনি প্রশ্ন ছুড়ে দেন, অন্তরে হাত দিয়ে বলুন—২০২৫ সালে এই নিষ্ঠুরতার কোনো যৌক্তিক কারণ থাকতে পারে?
তিনি আরও বলেন, এই লজ্জাজনক চিত্র ২৩ মাস ধরে গাজায় বারবার ঘটছে।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে সোমবার তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান ‘ফিলিস্তিন প্রশ্নের শান্তিপূর্ণ সমাধান ও দুই-রাষ্ট্র সমাধান বাস্তবায়ন’ বিষয়ক উচ্চপর্যায়ের আন্তর্জাতিক সম্মেলনে ভাষণ দেন। ভাষণ দেওয়ার সময় গাজায় ক্ষুধার্তদের একটি ছবি প্রদর্শন করেন তিনি।
তিনি বলেন, গাজায় যে গণহত্যা চলছে, যেখানে ৬৫ হাজারের বেশি মানুষের প্রাণ গেছে। তা নির্মমভাবে অব্যাহত আছে। যার সামান্য বিবেকও আছে, সে কখনোই এ হত্যাযজ্ঞকে মেনে নিতে পারে না, আর চুপ করে থাকতে পারে না এমন গণহত্যার মুখে।
তিনি আশা প্রকাশ করেন, এসব পদক্ষেপ দুই-রাষ্ট্র সমাধানের বাস্তবায়ন দ্রুত করবে।
তিনি পুনরায় জোর দিয়ে বলেন, এখন গাজায় যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা প্রয়োজন, মানবিক সহায়তা নির্বিঘ্ন প্রবেশ নিশ্চিত করতে হবে এবং ইসরায়েলকে তাদের সেনা প্রত্যাহার করতে হবে।
তিনি গাজা যুদ্ধকে মানব ইতিহাসের সবচেয়ে ‘অন্ধকার যুগ’ এবং ক্ষুধার্ত ও অপুষ্ট এক শিশুর ছবি দেখিয়ে প্রশ্ন তোলেন, কোন মানবিক বিবেক এই দৃশ্য সহ্য করতে পারে? কে বা নীরব থাকতে পারে? যখন শিশুরা খাদ্য ও ওষুধের অভাবে মারা যাচ্ছে, তখন কি এই পৃথিবীতে শান্তি সম্ভব?
এরদোগান গাজায় চলমান যুদ্ধ বন্ধে আহ্বান জানিয়েছেন। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে ভাষণে তিনি বলেন, আমরা আর এই উন্মাদনা চালিয়ে যেতে পারি না। গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি হতে হবে। হামলা বন্ধ করতে হবে এবং কোনো বাধা ছাড়াই মানবিক সহায়তা প্রবেশ করতে দিতে হবে। যারা গণহত্যা করছে তাদের জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে।
তিনি বলেন, যারা নীরব থাকছে, তারা এই বর্বরতার সহযোগী।
বিশ্বনেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, অত্যাচারিত ফিলিস্তিনিদের পাশে দাঁড়ান, মানবতার পাশে দাঁড়ান। গাজার বর্বরতার ঘটনায় আপনার জনগণ ঘরে বসে কেন প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে? সাহস দেখান, এখানে ব্যবস্থা নিন। গাজায় যেখানে শিশুরা শিশুদের বড় করছে—সেখানে মানবিক দায়িত্ব পালন করুন।
এই সম্মেলনে ফ্রান্সসহ কয়েকটি দেশ ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণা দেয়। ভাষণে নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য রাষ্ট্রসহ একদল দেশের ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্তকে ‘অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও ঐতিহাসিক পদক্ষেপ’ হিসেবে অভিহিত করেন এরদোয়ান।
মঙ্গলবার তিনি জাতিসংঘের উচ্চপর্যায়ের সাধারণ সভায় ভাষণ দেবেন। ভাষণে প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান বৈশ্বিক শাসন কাঠামো, বিশেষত জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার দিকেও দৃষ্টি আকর্ষণ করবেন।
ভাষণে সদস্য রাষ্ট্রগুলোর রাষ্ট্রপ্রধান ও সরকারপ্রধানদের সামনে দাঁড়িয়ে বৈশ্বিক শ্রোতাদের উদ্দেশে নিজেদের অগ্রাধিকারের বিষয়গুলো তুলে ধরবেন।
১৯৫৫ সালে সাধারণ পরিষদের ১০ম অধিবেশন থেকে ব্রাজিল সবসময় প্রথম বক্তা হিসেবে সাধারণ বিতর্কে বক্তব্য দিয়ে আসছে, শুধু ১৯৮৩ ও ১৯৮৪ সাল ব্যতীত। ব্রাজিলের পর স্বাগতিক দেশ যুক্তরাষ্ট্র বক্তব্য রাখবে। প্রথম দিনের চতুর্থ বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখবেন এরদোয়ান।
রোববার নিউইয়র্কের উদ্দেশে রওনা হওয়ার আগে তিনি বলেছিলেন, এ বছরের সাধারণ পরিষদকে আগের অধিবেশনগুলো থেকে যে দিক দিয়ে আলাদা করে তা হলো—অনেক দেশ এবার ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণা দেবে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আশা করি ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার এসব সিদ্ধান্ত দুই-রাষ্ট্র সমাধান বাস্তবায়নে নতুন গতি আনবে।’
Please Share This Post in Your Social Media
-
সর্বশেষ
-
জনপ্রিয়







































































































































































































