ঢাকা ০২:৩৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ মার্চ ২০২৫, ২৮ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজঃ
কুবির সাংবাদিকতা বিভাগের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে উত্তরসহ প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে শর্টকোড চালুর সিদ্ধান্ত কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে চালু হচ্ছে বাস ট্র্যাকিং সিস্টেম ধর্ষণকারীর মৃত্যুদণ্ডের দাবিতে গাজীপুরে ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ মিছিল নোয়াখালীতে নামাজ পড়তে গেলে মসজিদের শৌচাগারে শিশুকে বলৎকার বান্দরবানে দলবদ্ধ ধর্ষণের মামলায় ৪ আসামীর যাবজ্জীবন, ১ লাখ টাকা জরিমানা ধর্ষণ বিরোধী স্লোগানে মুখরিত কুবি ক্যাম্পাস বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়কসহ ৭ জন কারাগারে মেয়েকে ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় বাবাকে কুপিয়ে জখম কিশোরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বহির্বিভাগের টিকিট বাণিজ্য

স্বাস্থ্য ক্যাডার নিয়ে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সুপারিশ হঠকারী

বিপুল বাশার
  • Update Time : ০৩:৩৯:০৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪
  • / ৪৯ Time View

বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডারকে ক্যাডার বহির্ভূত করার জন্য জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সুপারিশ প্রত্যাখ্যান করেছে বিসিএস হেলথ ক্যাডার এসোসিয়েশন।

জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের এমন সুপারিশকে হঠকারী বলছে বিসিএস হেলথ ক্যাডার এসোসিয়েশন। তাই এমন একতরফা সংস্কার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে দুই প্রস্তাবনা জানিয়েছে সংগঠনটি।

২৩ডিসেম্বর রাজধানীর প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে বিসিএস হেলথ ক্যাডার এসোসিয়েশন আয়োজিত ‘জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন কর্তৃক প্রস্তাবিত স্বাস্থ্য ক্যাডার বিলুপ্তি সংক্রান্ত সুপারিশ প্রত্যাখান ও উপসচিব পদে সকল ধরনের কোটা বাতিলের দাবিতে’ সংবাদ সম্মেলনে এসব জানানো হয়।

লিখিত বক্তব্যে বিসিএস হেলথ ক্যাডার এসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব ডা. উম্মে তানিয়া নাসরিন বলেন, ‘জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার ও বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডারকে, ক্যাডার কাঠামোর বাইরে রাখার সুপারিশ করতে যাচ্ছে।

বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডারের ৩৫ হাজার সদস্যের মুখপাত্র বিসিএস হেলথ ক্যাডার এসোসিয়েশন— এ ধরনের একতরফা সংস্কার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা দেশবাসীর সামনে প্রশ্ন রাখতে চাই, স্বাস্থ্যের নীতিনির্ধারনী পদসমূহে একজন সরকারি চিকিৎসক সচিব হিসেবে বেশি যৌক্তিক, নাকি যে কোনোদিন স্বাস্থ্যখাত নিয়ে পড়াশোনা করেনি তার সচিব হওয়া বেশি যৌক্তিক?’ নিশ্চয়ই একজন সরকারি চিকিৎসক স্বাস্থ্য খাত সম্পর্কে অনেক বেশি জানবেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, স্বাস্থ্যের নীতিনির্ধারনী পদসমূহে কোনো সরকারি ডাক্তার নেই। কিভাবে একজন অচিকিৎসক আপনাদের চিকিৎসার দায়িত্ব নিতে পারেন? কিভাবে সচিবালয়ের নীতিনির্ধারনী পদসমূহে চিকিৎসক না রেখে স্বাস্থ্য সংস্কারের প্রস্তাব দেওয়া হতে পারে? এটা কি যৌক্তিক?

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘বিগত সময়কালে সচিবালয়ে অচিকিৎসক কর্মকর্তারা স্বাস্থ্যকে বিজ্ঞানভিত্তিক ও যুগপোযোগী না করে বরং উল্টো পথে হেঁটে আমলাতান্ত্রিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা কায়েম করেছে। যার ফলে স্বাস্থ্য খাত আজও কাঙ্খিত লক্ষ্য অর্জন করতে পারেনি এবং জনস্বার্থমুখী স্বাস্থ্য খাত না হয়ে মন্ত্রী ও আমলামুখী পুঁজিবাদী ও স্বার্থবাদী স্বাস্থ্য খাত সৃষ্টি হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি, স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের দায়িত্বশীল ও নীতিনির্ধারনী পদসমূহে মাঠ পর্যায়ের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন স্বাস্থ্য ক্যাডারের দক্ষ কর্মকর্তাদের পদায়ন করে প্রকৃত বিজ্ঞানভিত্তিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা সম্ভব।’

তিনি আরও বলেন, ‘জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন প্রকৃত সংস্কার প্রস্তাবনা বাদ দিয়ে স্বাস্থ্যকে ক্যাডার বহির্ভূত করার যে হঠকারী সুপারিশ করেছেন, তা বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মেধাবৃত্তিক জনপ্রশাসন তৈরি ও বৈষম্য বিরোধী মূল চেতনার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এই সুপারিশ প্রত্যাহার করা না হলে প্রশাসনিক সংস্কার ব্যর্থ হবে।’

লিখিত বক্তব্যে জানানো হয়, সংস্কার কমিশন কর্তৃক বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কোনরূপ আলোচনা ব্যতীত এমন প্রস্তাবনা তৈরি এবং গণমাধ্যমে এক তরফা ভাবে প্রচার করা সুবিবেচনা প্রসূত নয়। এতে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত দক্ষতার সুস্পষ্ট ঘাটতি পরিলক্ষিত হয়েছে। এরূপ সিদ্ধান্তের ফলে দেশের সামগ্রিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা ও জনগণের প্রান্তিক পর্যায়ের স্বাস্থ্য সেবা প্রাপ্তির কার্যক্রমে স্থবিরতা দেখা দিতে পারে।

লিখিত বক্তব্যে বিসিএস হেলথ ক্যাডার এসোসিয়েশন জানায়, উদ্ভূত যেকোনো ধরনের নেতিবাচক পরিস্থিতির কোনোরূপ দায়ভার বিসিএস হেলথ ক্যাডার এসোসিয়েশন বহন করবে না। আমরা সংস্কার কার্যক্রমকে সাধুবাদ জানাই, তবে দূরভিসন্ধিমূলক সুপারিশকে সংস্কার প্রস্তাব হিসেবে মানা হবে না। হেলথ ক্যাডারের সঙ্গে আলোচনা ব্যতিত কোনোরূপ সংস্কার প্রস্তাব মেনে নেওয়া হবে না বলেও হুঁশিয়ারি দেন তারা।

প্রস্তাবনায় তারা জানান- ১. স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের সকল পর্যায়ের নীতি নির্ধারনী পদে স্বাস্থ্য ক্যাডার কর্মকর্তা পদায়িত হতে হবে। ২. উপসচিব পদে উন্মুক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগ প্রদান করতে হবে। সংবাদ সন্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, বিসিএস হেলথ ক্যাডার এসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক ডা মোহাম্মদ নেয়ামত হোসেন, আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদের প্রধান সমন্বায়ক ডা. মফিজুর রহমান, ডা. তৌফিক আহমেদ, ডা. খালেদ রহমান প্রমুখ।

Please Share This Post in Your Social Media

স্বাস্থ্য ক্যাডার নিয়ে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সুপারিশ হঠকারী

বিপুল বাশার
Update Time : ০৩:৩৯:০৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪

বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডারকে ক্যাডার বহির্ভূত করার জন্য জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সুপারিশ প্রত্যাখ্যান করেছে বিসিএস হেলথ ক্যাডার এসোসিয়েশন।

জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের এমন সুপারিশকে হঠকারী বলছে বিসিএস হেলথ ক্যাডার এসোসিয়েশন। তাই এমন একতরফা সংস্কার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে দুই প্রস্তাবনা জানিয়েছে সংগঠনটি।

২৩ডিসেম্বর রাজধানীর প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে বিসিএস হেলথ ক্যাডার এসোসিয়েশন আয়োজিত ‘জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন কর্তৃক প্রস্তাবিত স্বাস্থ্য ক্যাডার বিলুপ্তি সংক্রান্ত সুপারিশ প্রত্যাখান ও উপসচিব পদে সকল ধরনের কোটা বাতিলের দাবিতে’ সংবাদ সম্মেলনে এসব জানানো হয়।

লিখিত বক্তব্যে বিসিএস হেলথ ক্যাডার এসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব ডা. উম্মে তানিয়া নাসরিন বলেন, ‘জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার ও বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডারকে, ক্যাডার কাঠামোর বাইরে রাখার সুপারিশ করতে যাচ্ছে।

বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডারের ৩৫ হাজার সদস্যের মুখপাত্র বিসিএস হেলথ ক্যাডার এসোসিয়েশন— এ ধরনের একতরফা সংস্কার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা দেশবাসীর সামনে প্রশ্ন রাখতে চাই, স্বাস্থ্যের নীতিনির্ধারনী পদসমূহে একজন সরকারি চিকিৎসক সচিব হিসেবে বেশি যৌক্তিক, নাকি যে কোনোদিন স্বাস্থ্যখাত নিয়ে পড়াশোনা করেনি তার সচিব হওয়া বেশি যৌক্তিক?’ নিশ্চয়ই একজন সরকারি চিকিৎসক স্বাস্থ্য খাত সম্পর্কে অনেক বেশি জানবেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, স্বাস্থ্যের নীতিনির্ধারনী পদসমূহে কোনো সরকারি ডাক্তার নেই। কিভাবে একজন অচিকিৎসক আপনাদের চিকিৎসার দায়িত্ব নিতে পারেন? কিভাবে সচিবালয়ের নীতিনির্ধারনী পদসমূহে চিকিৎসক না রেখে স্বাস্থ্য সংস্কারের প্রস্তাব দেওয়া হতে পারে? এটা কি যৌক্তিক?

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘বিগত সময়কালে সচিবালয়ে অচিকিৎসক কর্মকর্তারা স্বাস্থ্যকে বিজ্ঞানভিত্তিক ও যুগপোযোগী না করে বরং উল্টো পথে হেঁটে আমলাতান্ত্রিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা কায়েম করেছে। যার ফলে স্বাস্থ্য খাত আজও কাঙ্খিত লক্ষ্য অর্জন করতে পারেনি এবং জনস্বার্থমুখী স্বাস্থ্য খাত না হয়ে মন্ত্রী ও আমলামুখী পুঁজিবাদী ও স্বার্থবাদী স্বাস্থ্য খাত সৃষ্টি হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি, স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের দায়িত্বশীল ও নীতিনির্ধারনী পদসমূহে মাঠ পর্যায়ের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন স্বাস্থ্য ক্যাডারের দক্ষ কর্মকর্তাদের পদায়ন করে প্রকৃত বিজ্ঞানভিত্তিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা সম্ভব।’

তিনি আরও বলেন, ‘জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন প্রকৃত সংস্কার প্রস্তাবনা বাদ দিয়ে স্বাস্থ্যকে ক্যাডার বহির্ভূত করার যে হঠকারী সুপারিশ করেছেন, তা বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মেধাবৃত্তিক জনপ্রশাসন তৈরি ও বৈষম্য বিরোধী মূল চেতনার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এই সুপারিশ প্রত্যাহার করা না হলে প্রশাসনিক সংস্কার ব্যর্থ হবে।’

লিখিত বক্তব্যে জানানো হয়, সংস্কার কমিশন কর্তৃক বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কোনরূপ আলোচনা ব্যতীত এমন প্রস্তাবনা তৈরি এবং গণমাধ্যমে এক তরফা ভাবে প্রচার করা সুবিবেচনা প্রসূত নয়। এতে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত দক্ষতার সুস্পষ্ট ঘাটতি পরিলক্ষিত হয়েছে। এরূপ সিদ্ধান্তের ফলে দেশের সামগ্রিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা ও জনগণের প্রান্তিক পর্যায়ের স্বাস্থ্য সেবা প্রাপ্তির কার্যক্রমে স্থবিরতা দেখা দিতে পারে।

লিখিত বক্তব্যে বিসিএস হেলথ ক্যাডার এসোসিয়েশন জানায়, উদ্ভূত যেকোনো ধরনের নেতিবাচক পরিস্থিতির কোনোরূপ দায়ভার বিসিএস হেলথ ক্যাডার এসোসিয়েশন বহন করবে না। আমরা সংস্কার কার্যক্রমকে সাধুবাদ জানাই, তবে দূরভিসন্ধিমূলক সুপারিশকে সংস্কার প্রস্তাব হিসেবে মানা হবে না। হেলথ ক্যাডারের সঙ্গে আলোচনা ব্যতিত কোনোরূপ সংস্কার প্রস্তাব মেনে নেওয়া হবে না বলেও হুঁশিয়ারি দেন তারা।

প্রস্তাবনায় তারা জানান- ১. স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের সকল পর্যায়ের নীতি নির্ধারনী পদে স্বাস্থ্য ক্যাডার কর্মকর্তা পদায়িত হতে হবে। ২. উপসচিব পদে উন্মুক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগ প্রদান করতে হবে। সংবাদ সন্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, বিসিএস হেলথ ক্যাডার এসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক ডা মোহাম্মদ নেয়ামত হোসেন, আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদের প্রধান সমন্বায়ক ডা. মফিজুর রহমান, ডা. তৌফিক আহমেদ, ডা. খালেদ রহমান প্রমুখ।