জনমনে চরম উদ্বিগ্ন, প্রভাবশালী রাজনৈতিক দলীয় নেতারা পৃষ্ঠপোষক
কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে বেড়েই চলেছে মাদক ও অস্ত্র ব্যাবসায়ীদের দৌরাত্ম্য

- Update Time : ০৪:৩৯:২৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ জুলাই ২০২৫
- / ১০৭ Time View
বাংলাদেশের অন্যতম সীমান্তবর্তী উপজেলা কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলা।১৪ টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত দৌলতপুর উপজেলার ৮টি ইউনিয়নই সীমান্তবর্তী এলাকাজুড়ে অবস্থিত।
এই সীমান্তবর্তী এলাকায় দেদারছে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে শীর্ষ মাদক ও অস্ত্র ব্যবসায়ীদের একাংশ।অনুসন্ধানে তথ্য পাওয়া যায় বিকেল ৪ টার পর হতেই ঠিক সন্ধ্যা হতে রাত পর্যন্ত পার্শ্ববর্তী সীমান্ত ভারতের তারকাটা হতে অবৈধভাবে অস্ত্র,মাদক গাঁজা,ফেনসিডিল,টাপেন্টাডল ট্যাবলেট আমদানি সিন্ডিকেটের একাংশ দাপাদাপি করে নিষিদ্ধ মাদক আমদানির জন্য।
আর আমদানিকারকদেরই একাংশ সিন্ডিকেট জমজমাট করে ওপেন সিক্রেট ভাবে প্রস্তুত থাকে খুচরা বিক্রির জন্য।দুপুর ৩ টা হতে মাঝরাত পর্যন্ত চলে অবৈধভাবে অস্ত্র, মাদক ফেনসিডিল,গাঁজা বিক্রির রমরমা ওপেন সিক্রেট বাজার আর মাঝ রাত হতে ভোর পর্যন্ত চলে মাদক আমাদানি করে সংরক্ষণ। আদাবাড়ীয়া ইউনিয়নের ধর্মদহ পশ্চিমপাড়া নামক গ্রামে রয়েছে মাদক আমদানিকারকদের বেশ গ্রুভ ভিত্তিক বড় সিন্ডিকেট।
এছাড়া দৌলতপুর উপজেলার আদাবাড়ীয়া,প্রাগপুর,রামকৃষ্ণপুর,চিলমারী,ফিলিপনগর,মরিচা ইউনিয়নের স্থানীয় রাজনৈতিক কালোবাজারি প্রভাবশালীদের পৃষ্ঠপোষকেই ক্ষমতার অপব্যবহারে করেই এই অস্ত্র,মাদক, চাঁদাবাজি সহ নানান অপকর্ম চলমান রয়েছেন।এই কালোবাজারি সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণকারিরা স্থানীয় দৌলতপুর থানা পুলিশকে কোনঠাসা করে রেখেছে।তবে অনুসন্ধানে তথ্য রয়েছে দৌলতপুর থানা পুলিশের কিছু অসাধু কর্মকর্তারা এই সিন্ডিকেট পরিচালনাকারীদের সাথে আতাত করে ঘুষ বানিজ্যে লিপ্ত।
তবে বর্ডার হতে অবৈধভাবে আমদানি করা অস্ত্র,মাদক ব্যাবসায়ী
সিন্ডিকেটে রয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা শাখার তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ীদের নাম।দৌলতপুর থানা হতে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দুরুত্ব হওয়ার কারনে আদাবাড়ীয়া ইউনিয়নের ধর্মদহ গ্রামের পাশেই রয়েছে তেকালা পুলিশ ফাঁড়ী,তবে নেই কোনো পূর্বেরমত মাদক উদ্ধার,নেই কোনো মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান,নেই কোনো মাদক মামলা।
তবে ধর্মদহ(আদাবাড়ীয়া),রামকৃষ্ণপুর,প্রাগপুর,ফিলিপনগর,
চিলমারী ইউনিয়ন গুলোতে অভিযান অব্যাহত রেখেছে কুষ্টিয়া ৪৭ বিজিবি ব্যাটেলিয়নের অন্তর্ভুক্ত ক্যাম্প গুলো।
অভিযান অব্যাহত রেখেছেন র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন কুষ্টিয়া সিপিসি-১,ক্যাম্প।
৫-ই-আগষ্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তন পর প্রশাসনের কিছুটা নিষ্ক্রিয় ভূমিকার কারনে এই পৃষ্ঠপোষকতাকারী প্রভাবশালী সিন্ডিকেট বেশ বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।
তবে বর্তমানের চিত্রটা একেবারেই আলাদা, অস্ত্র,মাদকের স্বর্গরাজ্য ও ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্যের রাজ্য হিসেবে পরিণত হয়েছে কুষ্টিয়ার সীমান্তবর্তী উপজেলা দৌলতপুর।
হাত বাড়ালেই খুব সহজেই পাওয়া যাচ্ছে বিভিন্ন রকম মাদক। এছাড়া রয়েছে দৌলতপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকা প্রাগপুর,রামকৃষ্ণপুর,মহিষকুন্ডি,চিলমারী,মথুরাপুর,সীমান্তবর্তী এলাকা হতে নদীপথের কিছু অংশ ফিলিপনগর,মরিচা সহ হোগলবাড়ীয়া ইউনিয়ন-এসকল এলাকায় মাদকের প্রায় সাতশত থেকে এক হাজার টিরও বেশি মাদক বিক্রয় ও সেবনের স্পট রয়েছে।
তবে দৌলতপুর থানা ও উপজেলা পরিষদের দুই কিলোমিটারের মধ্যেই রয়েছে প্রায় ১৭ থেকে ২১ টি মাদক সেবন ও বিক্রয় স্পট। এর মধ্যে উপজেলার হোসেনাবাদ বাজারে দুধ চায়ের দোকান,ফিলিপনগর বাহিরমাদীর পোয়ালবাড়ী,আশরাফ মোড়,সাদিপুর,ইসলামপুর।এদিকে দৌলতপুর ইউনিয়নের সাদিপুর মাঠপাড়া কল্লানপুর রোড,সাহাপুর ও বেগুনবাড়ী এলাকাটা হচ্ছে মাদকের একটি উল্লেখযোগ্য স্পট।
যেখানে দিন থেকে গভীর রাত পর্যন্ত অনেকটা প্রকাশ্যেই বিক্রি হয় বিভিন্ন রকম অস্ত্র ও মাদক। এইসব অস্ত্র ও মাদক স্পট গুলোর মধ্যে রয়েছে খোদ দৌলতপুর থানা থেকে আধা কিলোমিটার দূরে দৌলতপুর গোরস্থান পাড়া ও ফিলিপনগর ৮-১০ কিলোমিটার দুরুত্ব।
যেখানে প্রকাশ্য দিবালোকে কতিপয় ব্যক্তি বিক্রি করছে মাদক দ্রব্য।এখানে বিভিন্ন স্থান থেকে আসা মাদক সেবীরা খুব সহজেই মাদক সেবন করে চলে যাচ্ছে,সাথে নিয়ে যাচ্ছে আগ্নেয়াস্ত্র।এতে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ওই এলাকার সচেতন মানুষ।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ব্যক্তিরা ও সু-শীল সমাজের ব্যাক্তিবর্গ জানান,উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকা জুড়ে মাদকের স্বর্গরাজ্য ও অস্ত্র-মাদক ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্যের রাজ্য হিসেবে পরিণত হয়েছে।
অস্ত্র ও মাদক ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্যে জেলা জুড়ে মাদকের বিষাক্ত ছোবলে সমাজ থেকে শুরু করে বিভিন্ন বয়সীর দিকে ধাবিত হচ্ছে।হত্যাকান্ড হচ্ছে মাদক সেবন করে অবৈধ অস্রের ব্যাবহারের জন্য।
এভাবে চলতে থাকলে অস্ত্রও মাদকের ভয়াবহতায় প্রতিটি পরিবার আক্রান্ত হবে বলে ধারণা করছেন তারা।এজন্য ভয়াবহ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন তারা।
সীমান্তবর্তী প্রাগপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আশরাফুজ্জামান মুকুল সরকার মাদকের প্রবণতা বৃদ্ধির বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন,অতীতের তুলনায় বর্তমানে মাদকের প্রবণতা অনেকটা বেশি।
সে কারণে শিক্ষার্থীসহ যুব সমাজ অনেকটাই মাদকে আসক্ত হয়ে পড়েছেন। এ বিষয়ে দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাজমুল হুদা মাদকের প্রবণতা বৃদ্ধির বিষয়টি প্রসঙ্গে বলেন,বিগত দিনে চেয়ে এই সংক্রান্ত ঘটনা নিয়ন্ত্রনের সর্বোচ্চ চেষ্টাতে আছি,সাথে কুষ্টিয়া জেলা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সকল ইউনিট।অভিযান চলবে।অপরাধী যেই হোক কোনো ছাড় দেওয়া হবেনা।