ঢাকা ১১:১৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৩ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজঃ

কক্সবাজারে পুলিশ কনস্টেবলের বাবাকে গুলি করে হত্যা, গ্রেফতার ১  

কক্সবাজার প্রতিনিধি
  • Update Time : ১১:২০:০৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • / ৪৭৪৮ Time View

কক্সবাজারে পুলিশ কনস্টেবলের বাবাকে গুলি করে হত্যা, গ্রেফতার ১ 

কক্সবাজারের মহেশখালীর শাপলাপুরে পুলিশ কনস্টেবলের বাবা মনির আহমদ হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটনসহ ঘটনার সাথে জড়িত আসামী আক্কাস (৩৭) কে গ্রেফতার করেছে পিবিআই কক্সবাজার জেলা। গত ২১ সেপ্টেম্বর তাকে গ্রেফতার করে আদালতে সোর্পদ করা হলে সে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে।
গত ০৩ নভেম্বর ২০২৪ খ্রি. তারিখ রাত অনুমান ০৩:৪৫ ঘটিকায় কক্সবাজার জেলার মহেশখালীর পাট্টাছড়ি ঘোনা এলাকায় পুলিশ কনস্টেবলের বাবা মনির আহমদকে গুলি করা হয়। ৩ ঘন্টা পরে হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় ভিকটিমের স্ত্রী বাদী হয়ে ১৪ জনকে আসামি করে মহেশখালী থানায় মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ ৯ মাস তদন্তের পর থানা পুলিশ ৫ জন আসামিকে গ্রেফতার করে এবং ৬ জন আসামি আদালতে আত্মসর্মপণ করে। পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের নির্দেশে মামলাটির তদন্তভার পিবিআই কক্সবাজার জেলায় ন্যস্ত হলে পুলিশ পরিদর্শক মোঃ রিয়াজ উদ্দীন চৌধুরী মামলার তদন্তভার গ্রহণ করেন।
পিবিআই প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি জনাব মোস্তফা কামাল এর দিক নির্দেশনায় পিবিআই কক্সবাজার জেলার ইউনিট ইনচার্জ পুলিশ সুপার জনাব মোহাম্মদ মতিয়ার রহমান এর তত্ত্বাবধানে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক মোহাম্মদ রিয়াজ উদ্দীন চৌধুরী এজাহারনামীয় ১নং হাজতী আসামী জয়নাল আবেদীন (৪১) কে ২ দিনের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি ঘটনার সাথে জড়িত থাকার বিষয়ে স্বীকার এবং দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। তার দেয়া তথ্য মতে গত ২১/০৯/২০২৫ তারিখ ঘটনার সাথে জড়িত তদন্তে প্রাপ্ত আসামি মো: আক্কাস (৩৭) কে গ্রেফতার করা হয় এবং সে দোষ-স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।
পিবিআই এর তদন্তে প্রাপ্ত সাক্ষ্য-প্রমাণে, আসামীদের ফৌঃ কাঃ বিঃ এর ১৬৪ ধারায় প্রদত্ত জবানবন্দি পর্যালোচনায় জানা যায় যে, আসামী জয়নাল বহুল আলোচিত বিডিআর হত্যাকান্ড মামলায় ৪ বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামি। সাজাভোগ শেষে ২০১৬ সে মুক্তি পায়। ষাইটমারা সাকিনের পাট্টাছড়ি ঘোনায় তার পূর্ব-পুরুষের জমি জনৈক আনোয়ার আলী চৌধুরীর সাথে বিরোধ সহ দেওয়ানী মামলা চলছিল। উক্ত আনোয়ার আলী চৌধুরীর ওয়ারিশদের থেকে নালিশী জমি লিজ নিয়ে নিহত মনির আহমদ মাছের প্রজেক্ট করতো। আসামি জয়নাল আবেদীন তার দেওয়ানী মামলা সম্পর্কিত নানা কথাবার্তা পার্টনারদের সাথে শেয়ার করলে মনির আহমেদ আনোয়ার আলী চৌধুরীর ওয়ারিশদের বলে দিত। তাই তাকে শায়েস্তা করার জন্য সে ও তার দুইজন ব্যবসায়িক পার্টনার ভিকটিমকে মারধরের পরিকল্পনা করে।
পরিকল্পনা মোতাবেক গত ০৩/১১/২০২৪ খ্রি. আসামী জয়নালের নির্দেশে ১০/১১ জনকে রাত অনুমান ০৩.৪৫ ঘটিকায় মনির আহমেদের মাছের প্রজেক্টে গিয়ে আসামী আফছার তাকে (মনির কে) গুলি করে পালিয়ে যায়। ঘটনা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত এবং তার জড়িত থাকার সন্দেহকে মিথ্যা প্রমাণের অপ-কৌশল অবলম্বন করে আসামী জয়নাল নিজেই তার কয়েকজন সঙ্গী-সাথী সহযোগিতায় মনির আহমেদকে প্রথমে বদরখালী হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে তাকে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করায়। সকাল আনুমানিক ৬ টায় সে মৃত্যুবরণ করেন। আসামী আক্কাসের প্রদত্ত জবানবন্দি পর্যালোচনায় জানা যায়, ঘটনার ৩/৪ দিন আগে জয়নাল তাকে ডেকে নিয়ে যায় এবং পরিকল্পনার বিষয়ে বলে। ঘটনার দিন আসামী আক্কাস, নুরল আফসার, খোকনসহ ১০/১১ জন ঘটনার তারিখ ও সময়ে মনির আহমেদের মাছের প্রজেক্টে যায় এবং আসামী আফছার তাকে (মনির কে) গুলি করে পালিয়ে যায়।
মামলার তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত পলাতক অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

Please Share This Post in Your Social Media

কক্সবাজারে পুলিশ কনস্টেবলের বাবাকে গুলি করে হত্যা, গ্রেফতার ১  

কক্সবাজার প্রতিনিধি
Update Time : ১১:২০:০৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
কক্সবাজারের মহেশখালীর শাপলাপুরে পুলিশ কনস্টেবলের বাবা মনির আহমদ হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটনসহ ঘটনার সাথে জড়িত আসামী আক্কাস (৩৭) কে গ্রেফতার করেছে পিবিআই কক্সবাজার জেলা। গত ২১ সেপ্টেম্বর তাকে গ্রেফতার করে আদালতে সোর্পদ করা হলে সে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে।
গত ০৩ নভেম্বর ২০২৪ খ্রি. তারিখ রাত অনুমান ০৩:৪৫ ঘটিকায় কক্সবাজার জেলার মহেশখালীর পাট্টাছড়ি ঘোনা এলাকায় পুলিশ কনস্টেবলের বাবা মনির আহমদকে গুলি করা হয়। ৩ ঘন্টা পরে হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় ভিকটিমের স্ত্রী বাদী হয়ে ১৪ জনকে আসামি করে মহেশখালী থানায় মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ ৯ মাস তদন্তের পর থানা পুলিশ ৫ জন আসামিকে গ্রেফতার করে এবং ৬ জন আসামি আদালতে আত্মসর্মপণ করে। পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের নির্দেশে মামলাটির তদন্তভার পিবিআই কক্সবাজার জেলায় ন্যস্ত হলে পুলিশ পরিদর্শক মোঃ রিয়াজ উদ্দীন চৌধুরী মামলার তদন্তভার গ্রহণ করেন।
পিবিআই প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি জনাব মোস্তফা কামাল এর দিক নির্দেশনায় পিবিআই কক্সবাজার জেলার ইউনিট ইনচার্জ পুলিশ সুপার জনাব মোহাম্মদ মতিয়ার রহমান এর তত্ত্বাবধানে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক মোহাম্মদ রিয়াজ উদ্দীন চৌধুরী এজাহারনামীয় ১নং হাজতী আসামী জয়নাল আবেদীন (৪১) কে ২ দিনের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি ঘটনার সাথে জড়িত থাকার বিষয়ে স্বীকার এবং দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। তার দেয়া তথ্য মতে গত ২১/০৯/২০২৫ তারিখ ঘটনার সাথে জড়িত তদন্তে প্রাপ্ত আসামি মো: আক্কাস (৩৭) কে গ্রেফতার করা হয় এবং সে দোষ-স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।
পিবিআই এর তদন্তে প্রাপ্ত সাক্ষ্য-প্রমাণে, আসামীদের ফৌঃ কাঃ বিঃ এর ১৬৪ ধারায় প্রদত্ত জবানবন্দি পর্যালোচনায় জানা যায় যে, আসামী জয়নাল বহুল আলোচিত বিডিআর হত্যাকান্ড মামলায় ৪ বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামি। সাজাভোগ শেষে ২০১৬ সে মুক্তি পায়। ষাইটমারা সাকিনের পাট্টাছড়ি ঘোনায় তার পূর্ব-পুরুষের জমি জনৈক আনোয়ার আলী চৌধুরীর সাথে বিরোধ সহ দেওয়ানী মামলা চলছিল। উক্ত আনোয়ার আলী চৌধুরীর ওয়ারিশদের থেকে নালিশী জমি লিজ নিয়ে নিহত মনির আহমদ মাছের প্রজেক্ট করতো। আসামি জয়নাল আবেদীন তার দেওয়ানী মামলা সম্পর্কিত নানা কথাবার্তা পার্টনারদের সাথে শেয়ার করলে মনির আহমেদ আনোয়ার আলী চৌধুরীর ওয়ারিশদের বলে দিত। তাই তাকে শায়েস্তা করার জন্য সে ও তার দুইজন ব্যবসায়িক পার্টনার ভিকটিমকে মারধরের পরিকল্পনা করে।
পরিকল্পনা মোতাবেক গত ০৩/১১/২০২৪ খ্রি. আসামী জয়নালের নির্দেশে ১০/১১ জনকে রাত অনুমান ০৩.৪৫ ঘটিকায় মনির আহমেদের মাছের প্রজেক্টে গিয়ে আসামী আফছার তাকে (মনির কে) গুলি করে পালিয়ে যায়। ঘটনা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত এবং তার জড়িত থাকার সন্দেহকে মিথ্যা প্রমাণের অপ-কৌশল অবলম্বন করে আসামী জয়নাল নিজেই তার কয়েকজন সঙ্গী-সাথী সহযোগিতায় মনির আহমেদকে প্রথমে বদরখালী হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে তাকে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করায়। সকাল আনুমানিক ৬ টায় সে মৃত্যুবরণ করেন। আসামী আক্কাসের প্রদত্ত জবানবন্দি পর্যালোচনায় জানা যায়, ঘটনার ৩/৪ দিন আগে জয়নাল তাকে ডেকে নিয়ে যায় এবং পরিকল্পনার বিষয়ে বলে। ঘটনার দিন আসামী আক্কাস, নুরল আফসার, খোকনসহ ১০/১১ জন ঘটনার তারিখ ও সময়ে মনির আহমেদের মাছের প্রজেক্টে যায় এবং আসামী আফছার তাকে (মনির কে) গুলি করে পালিয়ে যায়।
মামলার তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত পলাতক অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।