ঢাকা ১০:২৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

এনসিপির নেতৃত্ব ভুল পথে: চট্টগ্রামের প্রধান সমন্বয়কারী

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি
  • Update Time : ০৬:৪৬:৪৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫
  • / ২১ Time View

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বের প্রতি সমর্থন জানিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সঙ্গে সব ধরনের রাজনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার ঘোষণা দিয়েছেন দলটির কেন্দ্রীয় নেতা মীর আরশাদুল হক। একই সঙ্গে তিনি এনসিপির সব পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন এবং দলটির মনোনয়ন প্রত্যাখ্যান করে নির্বাচন থেকেও সরে দাঁড়িয়েছেন। বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা ৫২ মিনিটে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে পদত্যাগের ঘোষণা দেন তিনি। দীর্ঘ দেড় যুগ পর প্রবাস থেকে দেশে ফেরার দিনেই এ ঘোষণা আসায় চট্টগ্রামের রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে।

মীর আরশাদুল হক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী। এনসিপিতে তিনি কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্যসচিব, চট্টগ্রাম মহানগরের প্রধান সমন্বয়কারী, নির্বাহী কাউন্সিলের সদস্য, মিডিয়া সেল ও শৃঙ্খলা কমিটির সদস্য এবং পরিবেশ সেলের প্রধানের দায়িত্ব পালন করছিলেন। তাঁর বাড়ি চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলায়। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এনসিপি তাঁকে চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসনে মনোনয়ন দিয়েছিল।

ফেসবুক পোস্টে মীর আরশাদুল হক বলেন, ‘আমি এনসিপির সব দায়িত্ব ও পদ থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নিচ্ছি। এই মুহূর্ত থেকে এনসিপির সঙ্গে আমার কোনো রাজনৈতিক সম্পর্ক নেই। চট্টগ্রাম-১৬ আসনে এনসিপির প্রার্থী হিসেবেও আমি নির্বাচন করছি না।’ তারেক রহমানের দেশে ফেরার দিনটিকে ‘বিশেষ দিন’ উল্লেখ করে মীর আরশাদুল হক বলেন, দীর্ঘ ১৭ বছরের নির্বাসন শেষে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দেশে ফেরাকে তিনি স্বাগত জানান।

এনসিপি নিয়ে ‘মোহভঙ্গের’ কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের প্রতিশ্রুতি নিয়ে দলটির যাত্রা শুরু হলেও গত ১০ মাসের অভিজ্ঞতায় সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা হয়নি। তিনি বলেন, ‘যে স্বপ্ন ও সম্ভাবনা দেখে এনসিপিতে যোগ দিয়েছিলাম, তার কিছুই আর অবশিষ্ট নেই। দল ও নেতৃত্ব ভুল পথে রয়েছে বলেই আমার কাছে প্রতীয়মান হয়েছে।’ জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পরও দেশে ন্যায্যতা ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ প্রতিষ্ঠা হয়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, এত আত্মত্যাগের পরও কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ গড়ে ওঠেনি এবং এক্ষেত্রে এনসিপিও ব্যর্থ হয়েছে।

বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি প্রসঙ্গে মীর আরশাদুল হক বলেন, দেশে অস্থিরতা তৈরি, ধর্মকে ব্যবহার করে বিভাজন সৃষ্টি এবং মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বিতর্ক উসকে দেওয়ার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। তাঁর মতে, এই মুহূর্তে সবচেয়ে জরুরি প্রয়োজন হচ্ছে গণতান্ত্রিক উত্তরণ ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা।

তারেক রহমানের নেতৃত্বে আস্থা রেখে দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে বিএনপি ও জোটের সরকার গঠন ছাড়া বিকল্প নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘তারেক রহমান স্বাস্থ্য, শিক্ষা, পরিবেশসহ মানুষের দৈনন্দিন জীবনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোতে সুস্পষ্ট ও বাস্তবসম্মত ভিশন তুলে ধরছেন, যা তাঁকে আকৃষ্ট করেছে।’ এ বিষয়ে মীর আরশাদুল হকের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

তবে চট্টগ্রাম মহানগর এনসিপির যুগ্ম সমন্বয়কারী আরিফ মঈনুদ্দিন বলেন, ‘মীর আরশাদুল হক চট্টগ্রামে দলের প্রধান সমন্বয়কারীর দায়িত্বে ছিলেন এবং তিনি এনসিপির জামায়াতের সঙ্গে জোট করার সিদ্ধান্ত মেনে নিতে না পারায় পদত্যাগ করেছেন।’

Please Share This Post in Your Social Media

এনসিপির নেতৃত্ব ভুল পথে: চট্টগ্রামের প্রধান সমন্বয়কারী

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি
Update Time : ০৬:৪৬:৪৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বের প্রতি সমর্থন জানিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সঙ্গে সব ধরনের রাজনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার ঘোষণা দিয়েছেন দলটির কেন্দ্রীয় নেতা মীর আরশাদুল হক। একই সঙ্গে তিনি এনসিপির সব পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন এবং দলটির মনোনয়ন প্রত্যাখ্যান করে নির্বাচন থেকেও সরে দাঁড়িয়েছেন। বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা ৫২ মিনিটে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে পদত্যাগের ঘোষণা দেন তিনি। দীর্ঘ দেড় যুগ পর প্রবাস থেকে দেশে ফেরার দিনেই এ ঘোষণা আসায় চট্টগ্রামের রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে।

মীর আরশাদুল হক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী। এনসিপিতে তিনি কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্যসচিব, চট্টগ্রাম মহানগরের প্রধান সমন্বয়কারী, নির্বাহী কাউন্সিলের সদস্য, মিডিয়া সেল ও শৃঙ্খলা কমিটির সদস্য এবং পরিবেশ সেলের প্রধানের দায়িত্ব পালন করছিলেন। তাঁর বাড়ি চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলায়। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এনসিপি তাঁকে চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসনে মনোনয়ন দিয়েছিল।

ফেসবুক পোস্টে মীর আরশাদুল হক বলেন, ‘আমি এনসিপির সব দায়িত্ব ও পদ থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নিচ্ছি। এই মুহূর্ত থেকে এনসিপির সঙ্গে আমার কোনো রাজনৈতিক সম্পর্ক নেই। চট্টগ্রাম-১৬ আসনে এনসিপির প্রার্থী হিসেবেও আমি নির্বাচন করছি না।’ তারেক রহমানের দেশে ফেরার দিনটিকে ‘বিশেষ দিন’ উল্লেখ করে মীর আরশাদুল হক বলেন, দীর্ঘ ১৭ বছরের নির্বাসন শেষে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দেশে ফেরাকে তিনি স্বাগত জানান।

এনসিপি নিয়ে ‘মোহভঙ্গের’ কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের প্রতিশ্রুতি নিয়ে দলটির যাত্রা শুরু হলেও গত ১০ মাসের অভিজ্ঞতায় সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা হয়নি। তিনি বলেন, ‘যে স্বপ্ন ও সম্ভাবনা দেখে এনসিপিতে যোগ দিয়েছিলাম, তার কিছুই আর অবশিষ্ট নেই। দল ও নেতৃত্ব ভুল পথে রয়েছে বলেই আমার কাছে প্রতীয়মান হয়েছে।’ জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পরও দেশে ন্যায্যতা ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ প্রতিষ্ঠা হয়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, এত আত্মত্যাগের পরও কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ গড়ে ওঠেনি এবং এক্ষেত্রে এনসিপিও ব্যর্থ হয়েছে।

বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি প্রসঙ্গে মীর আরশাদুল হক বলেন, দেশে অস্থিরতা তৈরি, ধর্মকে ব্যবহার করে বিভাজন সৃষ্টি এবং মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বিতর্ক উসকে দেওয়ার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। তাঁর মতে, এই মুহূর্তে সবচেয়ে জরুরি প্রয়োজন হচ্ছে গণতান্ত্রিক উত্তরণ ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা।

তারেক রহমানের নেতৃত্বে আস্থা রেখে দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে বিএনপি ও জোটের সরকার গঠন ছাড়া বিকল্প নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘তারেক রহমান স্বাস্থ্য, শিক্ষা, পরিবেশসহ মানুষের দৈনন্দিন জীবনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোতে সুস্পষ্ট ও বাস্তবসম্মত ভিশন তুলে ধরছেন, যা তাঁকে আকৃষ্ট করেছে।’ এ বিষয়ে মীর আরশাদুল হকের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

তবে চট্টগ্রাম মহানগর এনসিপির যুগ্ম সমন্বয়কারী আরিফ মঈনুদ্দিন বলেন, ‘মীর আরশাদুল হক চট্টগ্রামে দলের প্রধান সমন্বয়কারীর দায়িত্বে ছিলেন এবং তিনি এনসিপির জামায়াতের সঙ্গে জোট করার সিদ্ধান্ত মেনে নিতে না পারায় পদত্যাগ করেছেন।’