ঢাকা ০৫:০১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

এনসিপি ছাড়লেন মওলানা ভাসানীর নাতি

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : ১১:৪৫:৫৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫
  • / ২৬ Time View

আজাদ খান ভাসানী।

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সঙ্গে ‘আনুষ্ঠানিক সম্পর্কচ্ছেদের’ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন দলটির কেন্দ্রীয় নেতা ও মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর নাতি আজাদ খান ভাসানী।

গতকাল রোববার দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে এই সিদ্ধান্তের কথা জানান তিনি। আজাদ খান ভাসানী এনসিপির কেন্দ্রীয় সংগঠকের (উত্তরাঞ্চল) পাশাপাশি দলের কৃষক উইং প্রস্তুতি কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।

এনসিপির সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদের কারণ হিসেবে তিনি বলেছেন, নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের ঐতিহাসিক দায়বদ্ধতা, গণমানুষের প্রতি দরদ ও ত্যাগের যে গভীরতা প্রয়োজন, এনসিপিতে তার স্পষ্ট ঘাটতি রয়েছে।

ফেসবুক পোস্টে আজাদ খান লিখেছেন, ‘অনেক আশা ও স্বপ্ন নিয়ে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্বদানকারী তরুণদের হাত ধরে গঠিত জাতীয় নাগরিক পার্টিতে (এনসিপি) আমি যুক্ত হয়েছিলাম। শুরু থেকেই জুলাই গণ-অভ্যুত্থানকে মহান মুক্তিযুদ্ধের অসমাপ্ত লড়াইয়ের এক ধারাবাহিক অধ্যায় হিসেবে আত্মস্থ করেছি। ৫৩ বছরের পুঞ্জীভূত বৈষম্য, শোষণ ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের সংগ্রামে নিজেকে সম্পৃক্ত রাখাই ছিল আমার সেই পথচলার প্রেরণা।’

মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর কথা উল্লেখ করে আজাদ খান বলেন, ‘তার দেখানো গণমানুষনির্ভর, আধিপত্যবাদ-সাম্রাজ্যবাদ ও বৈষম্যবিরোধী পালনবাদী রাজনীতির স্বপ্ন থেকেই প্রথমে জাতীয় নাগরিক কমিটি এবং পরবর্তীতে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর সঙ্গে যুক্ত হই। সেই রাজনৈতিক ধারাবাহিকতায় দলের কৃষক উইংয়ের প্রধান সমন্বয়কারীর দায়িত্বও গ্রহণ করি। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে বলতে হচ্ছে, বাস্তব অভিজ্ঞতায় নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের ঐতিহাসিক দায়বদ্ধতা, গণমানুষের প্রতি দরদ ও ত্যাগের যে গভীরতা প্রয়োজন এখানে তার স্পষ্ট ঘাটতি আমি অনুভব করেছি। নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত ও স্বতন্ত্র পরিচয় গড়ে তোলার ক্ষেত্রেও প্রত্যাশিত সাফল্য দেখা যায়নি। এই বাস্তবতায় বেশ কিছুদিন ধরে সরাসরি সক্রিয় না থেকেও দলটির সঠিক রাজনীতি ও সাফল্য কামনা করে গেছি। তবে বর্তমান প্রেক্ষাপটে মহান মুক্তিযুদ্ধ ও জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ঐতিহাসিক দায়বদ্ধতা ও মওলানা ভাসানীর রাজনৈতিক আদর্শের পক্ষাবলম্বনই আমার কাছে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। সেই দায় ও আদর্শের প্রতি অবিচল থাকতেই আজ জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর সঙ্গে আমার আনুষ্ঠানিক সম্পর্কচ্ছেদের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছি।’

এনসিপির প্রতি শুভ কামনা জানিয়ে আজাদ খান বলেন, ‘এনসিপির সঙ্গে আমার এই স্বল্পকালীন পথচলায় কারও মনে কষ্ট দিয়ে থাকলে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রইল। তারুণ্যের অভিযাত্রী দলটির প্রতি রইল আন্তরিক শুভকামনা। গণমানুষের রাষ্ট্র বিনির্মাণের সংগ্রামে তারা যেন সঠিক পথ খুঁজে পায়—এই প্রত্যাশাই থাকল।’

Please Share This Post in Your Social Media

এনসিপি ছাড়লেন মওলানা ভাসানীর নাতি

নিজস্ব প্রতিবেদক
Update Time : ১১:৪৫:৫৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সঙ্গে ‘আনুষ্ঠানিক সম্পর্কচ্ছেদের’ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন দলটির কেন্দ্রীয় নেতা ও মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর নাতি আজাদ খান ভাসানী।

গতকাল রোববার দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে এই সিদ্ধান্তের কথা জানান তিনি। আজাদ খান ভাসানী এনসিপির কেন্দ্রীয় সংগঠকের (উত্তরাঞ্চল) পাশাপাশি দলের কৃষক উইং প্রস্তুতি কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।

এনসিপির সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদের কারণ হিসেবে তিনি বলেছেন, নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের ঐতিহাসিক দায়বদ্ধতা, গণমানুষের প্রতি দরদ ও ত্যাগের যে গভীরতা প্রয়োজন, এনসিপিতে তার স্পষ্ট ঘাটতি রয়েছে।

ফেসবুক পোস্টে আজাদ খান লিখেছেন, ‘অনেক আশা ও স্বপ্ন নিয়ে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্বদানকারী তরুণদের হাত ধরে গঠিত জাতীয় নাগরিক পার্টিতে (এনসিপি) আমি যুক্ত হয়েছিলাম। শুরু থেকেই জুলাই গণ-অভ্যুত্থানকে মহান মুক্তিযুদ্ধের অসমাপ্ত লড়াইয়ের এক ধারাবাহিক অধ্যায় হিসেবে আত্মস্থ করেছি। ৫৩ বছরের পুঞ্জীভূত বৈষম্য, শোষণ ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের সংগ্রামে নিজেকে সম্পৃক্ত রাখাই ছিল আমার সেই পথচলার প্রেরণা।’

মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর কথা উল্লেখ করে আজাদ খান বলেন, ‘তার দেখানো গণমানুষনির্ভর, আধিপত্যবাদ-সাম্রাজ্যবাদ ও বৈষম্যবিরোধী পালনবাদী রাজনীতির স্বপ্ন থেকেই প্রথমে জাতীয় নাগরিক কমিটি এবং পরবর্তীতে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর সঙ্গে যুক্ত হই। সেই রাজনৈতিক ধারাবাহিকতায় দলের কৃষক উইংয়ের প্রধান সমন্বয়কারীর দায়িত্বও গ্রহণ করি। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে বলতে হচ্ছে, বাস্তব অভিজ্ঞতায় নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের ঐতিহাসিক দায়বদ্ধতা, গণমানুষের প্রতি দরদ ও ত্যাগের যে গভীরতা প্রয়োজন এখানে তার স্পষ্ট ঘাটতি আমি অনুভব করেছি। নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত ও স্বতন্ত্র পরিচয় গড়ে তোলার ক্ষেত্রেও প্রত্যাশিত সাফল্য দেখা যায়নি। এই বাস্তবতায় বেশ কিছুদিন ধরে সরাসরি সক্রিয় না থেকেও দলটির সঠিক রাজনীতি ও সাফল্য কামনা করে গেছি। তবে বর্তমান প্রেক্ষাপটে মহান মুক্তিযুদ্ধ ও জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ঐতিহাসিক দায়বদ্ধতা ও মওলানা ভাসানীর রাজনৈতিক আদর্শের পক্ষাবলম্বনই আমার কাছে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। সেই দায় ও আদর্শের প্রতি অবিচল থাকতেই আজ জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর সঙ্গে আমার আনুষ্ঠানিক সম্পর্কচ্ছেদের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছি।’

এনসিপির প্রতি শুভ কামনা জানিয়ে আজাদ খান বলেন, ‘এনসিপির সঙ্গে আমার এই স্বল্পকালীন পথচলায় কারও মনে কষ্ট দিয়ে থাকলে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রইল। তারুণ্যের অভিযাত্রী দলটির প্রতি রইল আন্তরিক শুভকামনা। গণমানুষের রাষ্ট্র বিনির্মাণের সংগ্রামে তারা যেন সঠিক পথ খুঁজে পায়—এই প্রত্যাশাই থাকল।’