একটি বাদে ইসরায়েলের দখলে সুমুদ ফ্লোটিলার সব নৌযান

- Update Time : ১০:১৬:৪৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ অক্টোবর ২০২৫
- / ১৩৬ Time View
গাজা অভিমুখে ত্রাণ নিয়ে যাত্রা করা গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার বহরে থাকা একটি বাদে সব জাহাজ আটকে দেওয়ার দাবি করেছে ইসরায়েল। ইসরায়েলি অবরোধ ভাঙার বহু আশা নিয়ে ফিলিস্তিনের গাজার উদ্দেশে রওনা করে গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার বিশাল বহর। সেই যাত্রায় টিকে আছে আর মাত্র একটি নৌযান। সেটি গাজার খুব কাছে জলসীমায় ভাসছে। বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) লাইভ প্রতিবেদনে আল জাজিরা এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদন অনুসারে, এক্স-পোস্টে ইসরায়েলি প্রররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, কোনো জাহাজ ‘সক্রিয় যুদ্ধক্ষেত্রে প্রবেশ বা আইনি নৌ-অবরোধ ভাঙার চেষ্টায় সফল হয়নি। সব যাত্রী নিরাপদ এবং সুস্থ আছেন।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘তারা নিরাপদে ইসরায়েলের দিকে যাচ্ছেন, যেখান থেকে তাদের ইউরোপে নির্বাসিত করা হবে।’
এতে বলা হয়, একটি জাহাজ রয়ে গেছে। যদি এটি কাছে আসে, তবে এটিকেও প্রতিরোধ করা হবে।
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদন অনুসারে, গত মধ্যরাতে ইসরায়েলি নৌ-কমান্ডোরা গ্লোবাল ফ্লোটিলার ৪৪টি জাহাজের মধ্যে প্রায় ৪০টিতে উঠে পড়ে। তারা জিপিএস সিগন্যাল বন্ধ করে দিয়ে জাহাজে থাকা শত শত কর্মীকে আটক করে।
রয়টার্সের যাচাই করা ইসরায়েলি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি ভিডিওতে গ্রেটাকে সৈন্য-বেষ্টিত একটি ডেকের ওপর বসে থাকতে দেখা গেছে। আটক যাত্রীদের মধ্যে নেলসন ম্যান্ডেলার নাতি মান্ডলা ম্যান্ডেলাও রয়েছেন।
দ্য টাইমস অব ইসরায়েল জানায়, গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি সামুদ্রিক অবরোধ ভাঙার প্রচেষ্টা কোনো বড় ঘটনা ছাড়াই শেষ হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে ইসরায়েলি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার ‘উস্কানি’ শেষ হয়েছে। হামাস-সুমুদের কোনো উস্কানিমূলক নৌকা সক্রিয় যুদ্ধক্ষেত্রে প্রবেশ বা ‘বৈধ নৌ অবরোধ’ ভাঙার প্রচেষ্টায় সফল হয়নি।
মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সব যাত্রী নিরাপদ এবং সুস্থ আছেন। তারা নিরাপদে ইসরায়েলে যাচ্ছেন। সেখান থেকে তাদের ইউরোপে পাঠানো হবে। সম্ভাব্য যান্ত্রিক সমস্যাযুক্ত একটি জাহাজ গাজা থেকে কিছু দূরে সমুদ্রে রয়ে গেছে। যদি এটি কাছে আসে, সক্রিয় যুদ্ধক্ষেত্রে প্রবেশ এবং অবরোধ ভাঙার প্রচেষ্টা করে তবে সেটি প্রতিরোধ করা হবে।
ইসরায়েলি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতির ঘণ্টাখানেক আগে আলজাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা ট্র্যাকার ৪৪টি নৌকার বহরের প্রায় সব জাহাজের অবস্থা পরিবর্তন করে ইসরায়েলি নৌবাহিনী কর্তৃক ‘নিশ্চিত বাধাপ্রাপ্ত’ অথবা ‘সম্ভাব্য বাধাপ্রাপ্ত’ বলে ধরে নেওয়া হয়েছে হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
তখন বলা হয়, সামারটাইম-জং এবং শিরিনসহ চারটি জাহাজ এখনো চলাচল করছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। দুটি জাহাজই আইনজীবীদের বহনকারী আইনি সহায়তাকারী নৌকা। ফিলিস্তিনের জলসীমায় প্রবেশকারী প্রথম ফ্লোটিলা জাহাজ মাইকেনো এবং ম্যারিনেটও এখনো এগোচ্ছে বলে দাবি করা হয়।
তবে ইসরায়েলি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতির পর ট্র্যাকারটি বন্ধ হয়ে যায়। বিকেল সাড়ে ৫টা নাগাদ তাদের ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে নৌযানের কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। সংশ্লিষ্ট পেজে কেবল মানচিত্র প্রদর্শন হচ্ছে। কোনো জাহাজ ট্র্যাক বা বর্তমান অবস্থা দেখানো হচ্ছে না। অবশ্য কিছু সময় পর সেটি আবারও সক্রিয় হয়।
এদিকে ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, নৌবহর থেকে আটক গাজার কর্মীরা নিরাপদ ও সুস্থ আছেন। নৌবাহিনীর কমান্ডোরা সমুদ্রে তাদের আটক করার পর কোনো সমস্যা সৃষ্টি হয়নি। আটক গাজা কর্মীদের আশোদ বন্দরে আনা হচ্ছে। তাদের সবাইকে নিরাপদে ইউরোপে পাঠানো হবে।
গাজামুখী নৌবহরটিতে ইসরায়েলি এমন হামলায় বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড় উঠেছে। এটিকে ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড’ আখ্যা দিয়েছে তুরস্ক। একই সঙ্গে এ ঘটনায় স্পেন, ইতালি, জার্মানি, তুরস্ক ও গ্রিসসহ বহু দেশে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়েছে।
Please Share This Post in Your Social Media
-
সর্বশেষ
-
জনপ্রিয়