ঢাকা ১১:২০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

উখিয়াবাসীর স্বাস্থ্যসেবার আস্থার ঠিকানা স্পেশালাইজড হসপিটাল বন্ধ ঘোষণা!

ইকবাল হোসাইন, উখিয়া (কক্সবাজার)
  • Update Time : ০২:০৯:২৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫
  • / ৭৭ Time View

কক্সবাজারের উখিয়ায় এনজিও সংস্থা পরিচালিত স্পেশালাইজড হসপিটাল অর্থ সংকটের কারণে বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। এতে চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত শত-শত সেবাপ্রার্থী। তাতে স্বাস্থ্যসেবার আস্থার ঠিকানা হারিয়েছে স্থানীয়রা।

জানা গেছে, ২০২২ সালের জুলাই মাসে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের তত্ত্বাবধানে শুরু হওয়া উখিয়া স্পেশালাইজড হসপিটাল সম্প্রতি দাতা সংস্থা ফ্রেন্ডশিপের ব্যবস্থাপনায় আরও আধুনিক ও উন্নত স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করে আসছিল। স্থানীয় ও রোহিঙ্গা জনগণের জন্য হাসপাতালটি বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করায় প্রতিদিন শত-শত সেবাপ্রার্থী চিকিৎসা নিতেন। এখানে অভিজ্ঞ ডাক্তার ও তরুণ স্বাস্থ্যকর্মীরাও কাজ করেন।

আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থা ইউএনএইচসিআর’র অর্থায়নে নির্মিত হয় হাসপাতালটি। প্রতিদিন বহির্বিভাগে মাতৃস্বাস্থ্য, দন্তরোগ, চক্ষুরোগ, ফিজিওথেরাপি ও ল্যাবরেটরি টেস্টসহ বিভিন্ন সেবা প্রদান করা হতো। জরুরি বিভাগে ২৪ ঘণ্টা বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হতো। কিন্তু এখন অর্থ সংকটের কারণ দেখিয়ে হাসপাতালটির কার্যক্রম আপাতত বন্ধ করেছে কর্তৃপক্ষ।

এনজিও সংস্থা ফ্রেন্ডশিপ ও উখিয়া স্পেশালাইজড হাসপাতালের চিকিৎসক মো. শাহিনুর বলেন, আপাতত অর্থ সংকটের কারণে স্পেশালাইজড হাসপাতালের কার্যক্রম সোমবার থেকে বন্ধ রাখা হয়েছে। এখন হসপিটালের কাজকর্ম গুছিয়ে নিচ্ছি।আগামী ১৪ মে মধ্যে কর্তৃপক্ষের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হবে। যদি পরবর্তীতে সরকার বা দাতা সংস্থা ইউএনএইচসিআর বা অন্য কোনো সংস্থা অর্থায়ন করেন, তাহলে হসপিটালের কার্যক্রম আবারও শুরু করবো।

বালুখালীর মোহাম্মদ শফি ও আবদুল করিম বলেন, উখিয়া স্পেশালাইজড হাসপাতালে বিনামূল্যে ভালো চিকিৎসা সেবা পেতাম। এখন হাসপাতালটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ভোগান্তিতে পড়তে হবে।

উখিয়া রাজাপালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) মীর শাহেদুল ইসলাম রোমান বলেন, স্পেশালাইজড হাসপাতালটি আমার ইউনিয়নের মধ্যে পড়েছে। এই হাসপাতালে নিম্ন থেকে মধ্যবিত্ত পরিবারের সদস্যসহ অনেক ধনী লোকও চিকিৎসা নিতে যেতেন। কারণ ওখানে ভালো চিকিৎসাসেবা পাওয়া যেতো। টেকনাফ ও উখিয়ার বিভিন্ন এলাকার শত-শত লোকজনও এই হসপিটালে চিকিৎসার জন্য আসতো। এখন এটি অর্থ সংকটের কারণে বন্ধ হয়ে গেছে। এটি বন্ধ হওয়ায় প্রতিদিন শত-শত লোকজন চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হবে।

তিনি বলেন,একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে এই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, শরণার্থী কমিশনার, কক্সবাজার জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দাতা সংস্থার প্রতি উখিয়া স্পেশালাইজড হাসপাতালটি পুনরায় চালুর ব্যবস্থা করার আহ্বান জানাই।তিনি আরও বলেন, ওই হাসপাতালে অনেক দামি দামি জিনিসপত্র রয়েছে। সেগুলো রক্ষার জন্য নিরাপত্তা জোরদার করা দরকার। তা না হলে দামি জিনিসপত্র চুরি হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা আছে।

উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ কামরুল হোসেন চৌধুরী বলেন, অর্থ সংকটের কারণে স্পেশালাইজড হাসপাতাল বন্ধ। এটি আপাতত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে চলে যাবে। পরবর্তীতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে যাদেরকে দায়িত্ব দেওয়া হবে তারাই হসপিটালের কার্যক্রম পুনরায় চালু করবেন।
তিনি আরও বলেন, যতটুকু জেনেছি এই হসপিটালটি চালানো অনেক ব্যয়বহুল।

Please Share This Post in Your Social Media

উখিয়াবাসীর স্বাস্থ্যসেবার আস্থার ঠিকানা স্পেশালাইজড হসপিটাল বন্ধ ঘোষণা!

ইকবাল হোসাইন, উখিয়া (কক্সবাজার)
Update Time : ০২:০৯:২৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫

কক্সবাজারের উখিয়ায় এনজিও সংস্থা পরিচালিত স্পেশালাইজড হসপিটাল অর্থ সংকটের কারণে বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। এতে চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত শত-শত সেবাপ্রার্থী। তাতে স্বাস্থ্যসেবার আস্থার ঠিকানা হারিয়েছে স্থানীয়রা।

জানা গেছে, ২০২২ সালের জুলাই মাসে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের তত্ত্বাবধানে শুরু হওয়া উখিয়া স্পেশালাইজড হসপিটাল সম্প্রতি দাতা সংস্থা ফ্রেন্ডশিপের ব্যবস্থাপনায় আরও আধুনিক ও উন্নত স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করে আসছিল। স্থানীয় ও রোহিঙ্গা জনগণের জন্য হাসপাতালটি বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করায় প্রতিদিন শত-শত সেবাপ্রার্থী চিকিৎসা নিতেন। এখানে অভিজ্ঞ ডাক্তার ও তরুণ স্বাস্থ্যকর্মীরাও কাজ করেন।

আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থা ইউএনএইচসিআর’র অর্থায়নে নির্মিত হয় হাসপাতালটি। প্রতিদিন বহির্বিভাগে মাতৃস্বাস্থ্য, দন্তরোগ, চক্ষুরোগ, ফিজিওথেরাপি ও ল্যাবরেটরি টেস্টসহ বিভিন্ন সেবা প্রদান করা হতো। জরুরি বিভাগে ২৪ ঘণ্টা বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হতো। কিন্তু এখন অর্থ সংকটের কারণ দেখিয়ে হাসপাতালটির কার্যক্রম আপাতত বন্ধ করেছে কর্তৃপক্ষ।

এনজিও সংস্থা ফ্রেন্ডশিপ ও উখিয়া স্পেশালাইজড হাসপাতালের চিকিৎসক মো. শাহিনুর বলেন, আপাতত অর্থ সংকটের কারণে স্পেশালাইজড হাসপাতালের কার্যক্রম সোমবার থেকে বন্ধ রাখা হয়েছে। এখন হসপিটালের কাজকর্ম গুছিয়ে নিচ্ছি।আগামী ১৪ মে মধ্যে কর্তৃপক্ষের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হবে। যদি পরবর্তীতে সরকার বা দাতা সংস্থা ইউএনএইচসিআর বা অন্য কোনো সংস্থা অর্থায়ন করেন, তাহলে হসপিটালের কার্যক্রম আবারও শুরু করবো।

বালুখালীর মোহাম্মদ শফি ও আবদুল করিম বলেন, উখিয়া স্পেশালাইজড হাসপাতালে বিনামূল্যে ভালো চিকিৎসা সেবা পেতাম। এখন হাসপাতালটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ভোগান্তিতে পড়তে হবে।

উখিয়া রাজাপালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) মীর শাহেদুল ইসলাম রোমান বলেন, স্পেশালাইজড হাসপাতালটি আমার ইউনিয়নের মধ্যে পড়েছে। এই হাসপাতালে নিম্ন থেকে মধ্যবিত্ত পরিবারের সদস্যসহ অনেক ধনী লোকও চিকিৎসা নিতে যেতেন। কারণ ওখানে ভালো চিকিৎসাসেবা পাওয়া যেতো। টেকনাফ ও উখিয়ার বিভিন্ন এলাকার শত-শত লোকজনও এই হসপিটালে চিকিৎসার জন্য আসতো। এখন এটি অর্থ সংকটের কারণে বন্ধ হয়ে গেছে। এটি বন্ধ হওয়ায় প্রতিদিন শত-শত লোকজন চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হবে।

তিনি বলেন,একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে এই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, শরণার্থী কমিশনার, কক্সবাজার জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দাতা সংস্থার প্রতি উখিয়া স্পেশালাইজড হাসপাতালটি পুনরায় চালুর ব্যবস্থা করার আহ্বান জানাই।তিনি আরও বলেন, ওই হাসপাতালে অনেক দামি দামি জিনিসপত্র রয়েছে। সেগুলো রক্ষার জন্য নিরাপত্তা জোরদার করা দরকার। তা না হলে দামি জিনিসপত্র চুরি হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা আছে।

উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ কামরুল হোসেন চৌধুরী বলেন, অর্থ সংকটের কারণে স্পেশালাইজড হাসপাতাল বন্ধ। এটি আপাতত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে চলে যাবে। পরবর্তীতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে যাদেরকে দায়িত্ব দেওয়া হবে তারাই হসপিটালের কার্যক্রম পুনরায় চালু করবেন।
তিনি আরও বলেন, যতটুকু জেনেছি এই হসপিটালটি চালানো অনেক ব্যয়বহুল।