আলোচিত গরুর মাংস ব্যবসায়ী খলিলকে হত্যার হুমকিদাতা ও নির্দেশদাতা গ্রেফতার

- Update Time : ০৭:৩৭:৩১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৮ জানুয়ারী ২০২৪
- / ২০৮ Time View
অন্যায়ভাবে গরুর মাংসের মূল্যবৃদ্ধি করে মাংসের বাজারে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করেছিলো কিছু অসাধু ব্যাবসায়ী। এতে করে সীমিত আয়ের মানুষের পক্ষে গরুর মাংস ক্রয় ক্ষমতার বাহিরে চলে যায়।
গত ১৯ নভেম্বর ২০২৩ তারিখ হতে রাজধানীর শাজাহানপুরের মাংস ব্যবসায়ী খলিল তার ‘খলিল গোস্ত বিতান’ এ ৫৯৫ টাকায় প্রতি কেজি মাংস বিক্রি শুরু করে। যা সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় ব্যাপক সাড়া ফেলে। মাংস ব্যবসায়ী খলিল এর দেখাদেখি আরো কিছু মাংস ব্যবসায়ীরা প্রতি কেজি গরুর মাংস ৬০০ টাকায় বিক্রি করে।
পরবর্তীতে গত ২২ ডিসেম্বর ২০২৩ তারিখে ভোক্তা অধিদপ্তর, মাংস ব্যবসায়ী সমিতি ও বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মার্স অ্যাসোসিয়েশন সম্মিলিত বৈঠক করে ৬৫০ টাকায় গরুর মাংস বিক্রির সিদ্ধান্ত নেয়। এমন সিদ্ধান্তে বাজারে ফিরে আসে স্বস্তি। এসময় যে সকল মাংস ব্যবসায়ীরা ন্যয্য মূল্যে মাংস বিক্রি করে তখন অসাধু ব্যবসায়ীরা তাদেরকে বিভিন্নভাবে হুমকি দেয়া শুরু করে। এছাড়াও কিছুদিন আগে রাজশাহীর বাঘার আড়ানী হাটে ন্যয্য মূল্যে গরুর মাংস বিক্রি করায় একজন মাংস ব্যবসায়ীকে খুন করা হয়।
গত ১৮ জানুয়ারি রাজধানীর শাহাজাহানপুরের আলোচিত মাংস ব্যবাসয়ী খলিলুর রহমান এর মোবাইলে ফোন করে ২৫ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে এবং কম দামে মাংস বিক্রি করলে তাকে ও তার ছেলেকে দুই দিনের মধ্যে গুলি করে হত্যার হুমকিসহ অকথ্য ভাষায় গালি-গালাজ করে। এছাড়াও খলিল এবং তার ছেলেকে হত্যা করার জন্য গুলি ও পিস্তল রেডি করা হয়েছে জানিয়ে তার মোবাইল ফোনে পিস্তল, গুলি, রামদা এবং মাথা ছাড়া লাশের ছবি পাঠিয়ে ভয়ভীতি দেখানো হয়।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে মাংস ব্যবসায়ী খলিল রাজধানীর শাহাজাহানপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। এরপর থেকেই ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারের জন্য র্যাব গোয়েন্দা নজরদারী শুরু করে।
রবিবার সকালে কারওয়ান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক খন্দকার আল মঈন।
খন্দকার মইন বলেন, গত রাতে র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা, র্যাব-৩ ও র্যাব-৪ এর আভিযানিক দল ঢাকার আশুলিয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে মাংস বিক্রেতা খলিলের কাছে চাঁদা দাবী এবং খলিলকে হত্যার হুমকিদাতা মোঃ নুরুল হক (৬৭), মোহাম্মদ ইমন (২২)কে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গ্রেফতারকৃত নুরুল হক দীর্ঘদিন ধরে আশুলিয়া থানার পাথালিয়া ইউনিয়নের চারিগ্রাম এলাকায় ডিস ও ইন্টারনেট লাইনের ব্যবসার করে। স্থানীয় এলাকায় তার প্রায় ৫শ ডিস এবং ইন্টারনেট লাইনের সংযোগ রয়েছে। এ ব্যবসাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের সাথে দীর্ঘদিন যাবত বিরোধ ছিলো। বিরোধের জের ধরে কিছুদিন আগে তার প্রতিপক্ষের সাথে মারামারির ঘটনা ঘটায়। পরবর্তীতে একজন তাকে আলোচিত মাংস ব্যবসায়ী খলিলের ব্যক্তিগত মোবাইল নাম্বার দিয়ে তাকে মোবাইল ফোনে হত্যার হুমকি দিতে বলে। যার বিনিময়ে সে তার স্থানীয় এলাকায় ডিস ও ইন্টারনেট ব্যবসায় কোন প্রতিবন্ধকতা বা কোন বাধার সম্মুখিন হবে না। ব্যবসায়ীক সুবিধার লক্ষ্যে গ্রেফতারকৃত নুরুল হক গত ১৮ জানুয়ারি মাংস ব্যবসায়ী খলিলকে ফোন করে ২৫ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে এবং কম দামে মাংস বিক্রি করলে তাকে হত্যার হুমকি দেয়।
গ্রেফতারকৃত নুরুল হক মাংস ব্যবসায়ী খলিলকে হত্যার হুমকি দেয়ার সময় তার ব্যাবসায়িক প্রতিপক্ষ সেলিমের নাম উল্লেখ করে। গ্রেফতারকৃত ইমন নুরুলের কথামতো খলিলকে ফোন দিয়ে অকথ্য ভাষায় গালি-গালাজ করতে থাকে এবং তাকে দুই দিনের মধ্যে হত্যা করবে বলে গুলি ও পিস্তল রেডি করে রেখেছে বলে জানায়। পরবর্তীতে হুমকি প্রদানকৃত মোবাইল ও সিম কার্ডটি পানিতে ফেলে দেয়।
নুরুল হক এলাকায় বিভিন্ন জনকে হুমকি দিয়ে চাঁদাবাজি, জমি দখল সহ বিভিন্ন ধরণের অপকর্মের সাথে জড়িত রয়েছে বলে জানা যায়। গ্রেফতারকৃত নুরুলের নামে আশুলিয়া থানায় হত্যার হুমকি, চাঁদাবাজি এবং মারামারিসহ বিভিন্ন অপরাধে ৪টির অধিক মামলা রয়েছে। ইমন দীর্ঘদিন যাবত নুরুলের ডিসের ব্যবসায় কাজ করতো। এছাড়াও সে গ্রেফতারকৃত নুরুলের সাথে বিভিন্ন ধরণের অপকর্মের সাথে জড়িত ছিলো।
Please Share This Post in Your Social Media
-
সর্বশেষ
-
জনপ্রিয়