ঢাকা ১১:১৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৯ মে ২০২৫, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সুইসাইড নোট লিখে শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা

‘আমার মৃত্যুর জন্য দায়ী বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা’

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
  • Update Time : ০৩:৪১:১৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৯ মে ২০২৫
  • / ১২ Time View

‘সরি মা, বাবা। আমি ধ্রুবজিৎ, সবার কাছে ক্ষমাপ্রার্থী। কার্ডের পিন (…….) টাকাগুলো মাকে দিয়ে দিও। আমার মৃত্যুর জন্য দায়ী বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা। পরের বার ফার্মেসি নিয়ে পড়বো। এত চাপ আমার পক্ষে নেওয়া কোনোভাবেই সম্ভব ছিল না। বিদায়। হরে কৃঞ্চ।’

নিজের ব্যক্তিগত ডায়েরিতে এমন সুইসাইড নোট লিখে আত্মহত্যা করেছেন ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের শিক্ষার্থী ধ্রুবজিৎ কর্মকার (২২)।

রোববার (১৮ মে) দুপুরে ১টার দিকে ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের অমর একুশে হলের ৩০৭ নম্বর কক্ষ এই ঘটনা ঘটে।

শিক্ষার্থী ধ্রুবজিৎ কর্মকার ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের কম্পিউটার সাইন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগের তৃতীয় বর্ষের দ্বিতীয় সেমিস্টারের শিক্ষার্থী। তিনি ফেনীর ফুলগাজী উপজেলার বিজয়পুর গ্রামের মনোতোষ কর্মকার এবং সুপ্তা কর্মকার দম্পতির ছেলে।

পুলিশ ও কলেজ সূত্রে জানা গেছে, সিএসই বিভাগের তৃতীয় বর্ষের দ্বিতীয় সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা চলছে। রবিবার সকালে পরীক্ষা শুরুর কিছু সময়ের মধ্যে ধ্রুবজিতকে নকলের দায়ে পরীক্ষার খাতা ও এডমিট জমা নিয়ে কক্ষ থেকে বের করে দেয় শিক্ষক। এই অভিমানে কলেজের অমর একুশে আবাসিক হলের ৩০৭ নম্বর কক্ষে গিয়ে মৃত্যুর কারণ লিখে ফ্যানের সাথে গলায় গামছা প্যাঁচিয়ে আত্মহত্যা করা করেন। বেলা ১ টায় পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর ধ্রুবজিতের রুমমেট গিয়ে দরজা বন্ধ দেখে জানালা দিয়ে দেখে ঝুলছেন ধ্রুবজিত। পরে, দরজা ভেঙে তাকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

শিক্ষার্থীর আত্মহত্যার বিষয়টি নিশ্চিত করে ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের অধ্যক্ষ প্রকৌশলী প্রফেসর ড. মিজানুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ধ্রুবজিৎ কিছুদিন ধরেই হতাশাগ্রস্ত ছিল। আজ ওই শিক্ষার্থীর পরীক্ষা ছিল। পরীক্ষার হলে সে নকলসহ ধরা পড়ে। এ সময় দায়িত্বরত শিক্ষকরা তার খাতা নিয়ে তাকে হল থেকে বের করে দেন। হয়ত পরীক্ষায় নকল নিয়ে ধরা পড়ে সে মানসিকভাবে আরও ভেঙে পড়েছিল। এ ঘটনার পর সে তার রুমে গিয়ে আত্মহত্যা করে। বিষয়টি টের পেয়ে তাৎক্ষণিক তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, লাশ উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

Please Share This Post in Your Social Media

সুইসাইড নোট লিখে শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা

‘আমার মৃত্যুর জন্য দায়ী বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা’

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
Update Time : ০৩:৪১:১৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৯ মে ২০২৫

‘সরি মা, বাবা। আমি ধ্রুবজিৎ, সবার কাছে ক্ষমাপ্রার্থী। কার্ডের পিন (…….) টাকাগুলো মাকে দিয়ে দিও। আমার মৃত্যুর জন্য দায়ী বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা। পরের বার ফার্মেসি নিয়ে পড়বো। এত চাপ আমার পক্ষে নেওয়া কোনোভাবেই সম্ভব ছিল না। বিদায়। হরে কৃঞ্চ।’

নিজের ব্যক্তিগত ডায়েরিতে এমন সুইসাইড নোট লিখে আত্মহত্যা করেছেন ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের শিক্ষার্থী ধ্রুবজিৎ কর্মকার (২২)।

রোববার (১৮ মে) দুপুরে ১টার দিকে ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের অমর একুশে হলের ৩০৭ নম্বর কক্ষ এই ঘটনা ঘটে।

শিক্ষার্থী ধ্রুবজিৎ কর্মকার ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের কম্পিউটার সাইন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগের তৃতীয় বর্ষের দ্বিতীয় সেমিস্টারের শিক্ষার্থী। তিনি ফেনীর ফুলগাজী উপজেলার বিজয়পুর গ্রামের মনোতোষ কর্মকার এবং সুপ্তা কর্মকার দম্পতির ছেলে।

পুলিশ ও কলেজ সূত্রে জানা গেছে, সিএসই বিভাগের তৃতীয় বর্ষের দ্বিতীয় সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা চলছে। রবিবার সকালে পরীক্ষা শুরুর কিছু সময়ের মধ্যে ধ্রুবজিতকে নকলের দায়ে পরীক্ষার খাতা ও এডমিট জমা নিয়ে কক্ষ থেকে বের করে দেয় শিক্ষক। এই অভিমানে কলেজের অমর একুশে আবাসিক হলের ৩০৭ নম্বর কক্ষে গিয়ে মৃত্যুর কারণ লিখে ফ্যানের সাথে গলায় গামছা প্যাঁচিয়ে আত্মহত্যা করা করেন। বেলা ১ টায় পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর ধ্রুবজিতের রুমমেট গিয়ে দরজা বন্ধ দেখে জানালা দিয়ে দেখে ঝুলছেন ধ্রুবজিত। পরে, দরজা ভেঙে তাকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

শিক্ষার্থীর আত্মহত্যার বিষয়টি নিশ্চিত করে ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের অধ্যক্ষ প্রকৌশলী প্রফেসর ড. মিজানুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ধ্রুবজিৎ কিছুদিন ধরেই হতাশাগ্রস্ত ছিল। আজ ওই শিক্ষার্থীর পরীক্ষা ছিল। পরীক্ষার হলে সে নকলসহ ধরা পড়ে। এ সময় দায়িত্বরত শিক্ষকরা তার খাতা নিয়ে তাকে হল থেকে বের করে দেন। হয়ত পরীক্ষায় নকল নিয়ে ধরা পড়ে সে মানসিকভাবে আরও ভেঙে পড়েছিল। এ ঘটনার পর সে তার রুমে গিয়ে আত্মহত্যা করে। বিষয়টি টের পেয়ে তাৎক্ষণিক তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, লাশ উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।