ঢাকা ০৪:১২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০১ জানুয়ারী ২০২৬, ১৭ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আমরা সবাই মিলে সরকার চালাবো: জামায়াত আমির

রাজনীতি ডেস্ক
  • Update Time : ১১:০৬:৪৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫
  • / ২৩ Time View

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।

যদি দলগুলো একসঙ্গে আসে, তাহলে আমরা সবাই মিলে সরকার চালাবো বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ভোটের পর একটি জাতীয় সরকারে যোগ দিতে আগ্রহী বলেও জানিয়েছেন দলটির প্রধান।

ঢাকার একটি আবাসিক এলাকায় নিজের কার্যালয়ে রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জামায়াতের আমির শফিকুর রহমান বলেন, আমরা অন্তত পাঁচ বছরের জন্য একটি স্থিতিশীল দেশ চাই। যদি দলগুলো একসঙ্গে আসে, তাহলে আমরা সবাই মিলে সরকার চালাবো।

শফিকুর রহমান বলেন, দুর্নীতিবিরোধী কর্মসূচি জাতীয় সরকারের জন্য একটি যৌথ লক্ষ্য হওয়া উচিত।

তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী হবেন সেই দলের নেতা, যে দল সবচেয়ে বেশি আসন পাবে। জামায়াত যদি সর্বোচ্চ আসন পায়, তবে তিনি নিজে প্রধানমন্ত্রী হবেন কি না, সে সিদ্ধান্ত দল নেবে।

শফিকুর রহমান বলেন, ক্ষমতা হারানোর পর শেখ হাসিনার ভারতে অবস্থান করাকে তিনি উদ্বেগজনক মনে করেন। তার পতনের পর বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্ক কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় পৌঁছেছে। ভারত দীর্ঘদিন শেখ হাসিনার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রেখেছিল এবং দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বাড়িয়েছিল।

নয়াদিল্লি যখন সম্ভাব্য নতুন সরকার গঠনকারী দলগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াচ্ছে তখন শফিকুর রহমান জানান, তিনি চলতি বছর একজন ভারতীয় কূটনীতিকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। তিনি বলেন, অন্য দেশের কূটনীতিকরা প্রকাশ্যে তার সঙ্গে দেখা করলেও ভারতীয় ওই কর্মকর্তা বৈঠকটি গোপন রাখতে অনুরোধ করেছিলেন।

শফিকুর রহমান আরও বলেন, আমাদের সবাইকে সবার প্রতি খোলা মনোভাব রাখতে হবে। সম্পর্ক উন্নয়নের কোনো বিকল্প নেই।

রয়টার্সের প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জেন-জিদের দল এনসিপির সঙ্গে জোট গঠনের পর জামায়াতের আমির তার অফিসে বসে সাক্ষাৎকার দেন। তিনি জানান, জামায়াত আগামী নির্বাচনের পর দেশে একটি ঐক্য সরকার গঠনে আগ্রহী।

জামায়াত আমির বলেন, “আমরা অন্তত পাঁচ বছরের জন্য একটি স্থিতিশীল রাষ্ট্র দেখতে চাই। যদি সব দল এগিয়ে আসে, আমরা একসঙ্গে সরকার চালাব।”

প্রধানমন্ত্রীর পদ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “যে দল নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি আসন জয় করবে সেই দল থেকে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হবে। যদি জামাত সর্বোচ্চ আসনে জয় পায়, তাহলে দলই সিদ্ধান্ত নেবে আমি প্রধানমন্ত্রী হব কি না।”

তিনি আরও উল্লেখ করেন, যে ঐক্য সরকার গঠনের কথা বলা হচ্ছে, সেখানে থাকা সব দলের মূল এজেন্ডা অবশ্যই দুর্নীতি বিরোধী হতে হবে।

এ বিষয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি। তবে ভারত সরকারের একটি সূত্র জানিয়েছে, তারা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে।

পাকিস্তানের সঙ্গে জামায়াতের অতীত সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন করা হলে শফিকুর রহমান বলেন, আমরা সব দেশের সঙ্গে ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক চাই। কোনো একটি দেশের দিকে ঝুঁকে পড়তে চাই না। সবাইকে সম্মান করি এবং ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে চাই।

তিনি আরও বলেন, কোনো সরকার বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনকে নিয়ে স্বস্তিতে থাকবে না। ২০২৩ সালে আওয়ামী লীগের সমর্থনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রাষ্ট্রপতি হন সাহাবুদ্দিন। তিনি নিজেও সম্প্রতি রয়টার্সকে বলেন, প্রয়োজনে মেয়াদের মাঝপথে পদ ছাড়তে তিনি প্রস্তুত।

তবে বুধবার রয়টার্সের সঙ্গে ফোনে কথা বলার সময় রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন এ বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান। তিনি বলেন, আমি বিষয়টি আরও জটিল করতে চাই না।

Please Share This Post in Your Social Media

আমরা সবাই মিলে সরকার চালাবো: জামায়াত আমির

রাজনীতি ডেস্ক
Update Time : ১১:০৬:৪৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫

যদি দলগুলো একসঙ্গে আসে, তাহলে আমরা সবাই মিলে সরকার চালাবো বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ভোটের পর একটি জাতীয় সরকারে যোগ দিতে আগ্রহী বলেও জানিয়েছেন দলটির প্রধান।

ঢাকার একটি আবাসিক এলাকায় নিজের কার্যালয়ে রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জামায়াতের আমির শফিকুর রহমান বলেন, আমরা অন্তত পাঁচ বছরের জন্য একটি স্থিতিশীল দেশ চাই। যদি দলগুলো একসঙ্গে আসে, তাহলে আমরা সবাই মিলে সরকার চালাবো।

শফিকুর রহমান বলেন, দুর্নীতিবিরোধী কর্মসূচি জাতীয় সরকারের জন্য একটি যৌথ লক্ষ্য হওয়া উচিত।

তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী হবেন সেই দলের নেতা, যে দল সবচেয়ে বেশি আসন পাবে। জামায়াত যদি সর্বোচ্চ আসন পায়, তবে তিনি নিজে প্রধানমন্ত্রী হবেন কি না, সে সিদ্ধান্ত দল নেবে।

শফিকুর রহমান বলেন, ক্ষমতা হারানোর পর শেখ হাসিনার ভারতে অবস্থান করাকে তিনি উদ্বেগজনক মনে করেন। তার পতনের পর বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্ক কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় পৌঁছেছে। ভারত দীর্ঘদিন শেখ হাসিনার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রেখেছিল এবং দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বাড়িয়েছিল।

নয়াদিল্লি যখন সম্ভাব্য নতুন সরকার গঠনকারী দলগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াচ্ছে তখন শফিকুর রহমান জানান, তিনি চলতি বছর একজন ভারতীয় কূটনীতিকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। তিনি বলেন, অন্য দেশের কূটনীতিকরা প্রকাশ্যে তার সঙ্গে দেখা করলেও ভারতীয় ওই কর্মকর্তা বৈঠকটি গোপন রাখতে অনুরোধ করেছিলেন।

শফিকুর রহমান আরও বলেন, আমাদের সবাইকে সবার প্রতি খোলা মনোভাব রাখতে হবে। সম্পর্ক উন্নয়নের কোনো বিকল্প নেই।

রয়টার্সের প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জেন-জিদের দল এনসিপির সঙ্গে জোট গঠনের পর জামায়াতের আমির তার অফিসে বসে সাক্ষাৎকার দেন। তিনি জানান, জামায়াত আগামী নির্বাচনের পর দেশে একটি ঐক্য সরকার গঠনে আগ্রহী।

জামায়াত আমির বলেন, “আমরা অন্তত পাঁচ বছরের জন্য একটি স্থিতিশীল রাষ্ট্র দেখতে চাই। যদি সব দল এগিয়ে আসে, আমরা একসঙ্গে সরকার চালাব।”

প্রধানমন্ত্রীর পদ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “যে দল নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি আসন জয় করবে সেই দল থেকে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হবে। যদি জামাত সর্বোচ্চ আসনে জয় পায়, তাহলে দলই সিদ্ধান্ত নেবে আমি প্রধানমন্ত্রী হব কি না।”

তিনি আরও উল্লেখ করেন, যে ঐক্য সরকার গঠনের কথা বলা হচ্ছে, সেখানে থাকা সব দলের মূল এজেন্ডা অবশ্যই দুর্নীতি বিরোধী হতে হবে।

এ বিষয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি। তবে ভারত সরকারের একটি সূত্র জানিয়েছে, তারা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে।

পাকিস্তানের সঙ্গে জামায়াতের অতীত সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন করা হলে শফিকুর রহমান বলেন, আমরা সব দেশের সঙ্গে ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক চাই। কোনো একটি দেশের দিকে ঝুঁকে পড়তে চাই না। সবাইকে সম্মান করি এবং ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে চাই।

তিনি আরও বলেন, কোনো সরকার বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনকে নিয়ে স্বস্তিতে থাকবে না। ২০২৩ সালে আওয়ামী লীগের সমর্থনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রাষ্ট্রপতি হন সাহাবুদ্দিন। তিনি নিজেও সম্প্রতি রয়টার্সকে বলেন, প্রয়োজনে মেয়াদের মাঝপথে পদ ছাড়তে তিনি প্রস্তুত।

তবে বুধবার রয়টার্সের সঙ্গে ফোনে কথা বলার সময় রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন এ বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান। তিনি বলেন, আমি বিষয়টি আরও জটিল করতে চাই না।