ঢাকা ০৯:০০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজঃ
আমরা ধর্ম চর্চা করবো, কারো প্রতি বিদ্ধেষ করবোনা: ধর্ম উপদেষ্টা টঙ্গীতে ফ্ল্যাটে ঢুকে দুই শিশুকে কুপিয়ে হত্যা আগামী ঈদের আগেই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের প্রত্যাশা: ড. খলিলুর রহমান ৫ মাসেও সন্ধান মিলেনি উখিয়ায় অপহ্নত ৪ জেলের : পরিবারে চলছে শোকের মাতম আগামীকালের ভর্তি পরীক্ষা নিতে প্রস্তুত কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়  চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় যুবলীগ নেতা ইউছুফ আটক গাছ কাটাকে কেন্দ্র করে মাকে হত্যা; ছেলে গ্রেফতার প্রেমিকের প্রলোভনে স্বামীকে তালাক, বিয়ের দাবিতে প্রেমিকার অনশন পুলিশের মদদে ব্যবসায়ীর বাড়িতে হামলা ও হয়রানির অভিযোগ বকেয়া বেতনের দাবিতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ

আট দিন পর উদ্ধার হলো পদ্মায় ডুবে যাওয়া রজনীগন্ধা

স্টাফ রিপোর্টার
  • Update Time : ০৮:১৪:৩৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২৪
  • / ১০৯ Time View

আট দিনের অভিযান শেষে মানিকগঞ্জের পাটুরিয়ায় ডুবে যাওয়া ফেরি রজনীগন্ধাকে উদ্ধার করে নদীর তীরে আনা হয়েছে। পদ্মা থেকে তুলে আনা হয়েছে ফেরির সঙ্গে ডুবে যাওয়া নয়টি যানবাহনও।

বুধবার (২৪ জানুয়ারি) রাত ১০টার দিকে ডুবে যাওয়া উক্ত ফেরিটিকে সম্পূর্ণরূপে পানির উপর ভাসিয়ে পাটুরিয়া ঘাটের ভাটিতে নয়াকান্দি এলাকার নদীর তীরে নিয়ে রাখা হয়েছে।

বিআইডব্লিউটিএ, ফায়ার সার্ভিস ও বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ডুবুরি দল ও উদ্ধার কর্মীদের যৌথ প্রচেষ্টায় নানা
প্রতিকুলতার মধ্যে পদ্মা নদীর তলদেশ থেকে এই ফেরি উদ্ধারের মতো চ্যালেঞ্জিং কাজটি করা সম্ভব হয়েছে বলে জানিয়েছেন এ উদ্ধার কার্যাক্রমের ইউনিট প্রধান বিআইডব্লিউটিএর অতিরিক্ত পরিচালক আব্দুস সালাম ।

বিআইডব্লিউটিএর অতিরিক্ত পরিচালক আব্দুস সালাম বলেন, ‘পদ্মায় ফেরিটি ডুবে যাওয়ার সময় তীব্র স্রোতের কারণে পানির নীচে গিয়ে ফেরিটি উল্টে যায়। এ অবস্থায় গত এক সপ্তাহে পলি পড়ে ফেরিটির ওজন আরও বেড়ে যায়। ২৪০ টন ওজনের ফেরিটি ৩০০ টন ছাড়িয়ে যায়। ফলে উদ্ধার জাহাজ হামজা ও রুস্তম ফেরিটি তুলতে ব্যর্থ হলে ঘটনার দুদিন পর উদ্ধারকাজে যুক্ত করা হয় বিআইডব্লিবউটিএরর শক্তিশালী উদ্ধার জাহাজ প্রত্যয়। প্রত্যয়ের সক্ষমতা রয়েছে ২৫০ টন, যে কারণে উদ্ধার কাজে একটু সময় বেশী লেগেছে। এই ফেরিটি উদ্ধার করতে গিয়ে পলি অপসারণ, উল্টো ফেরিটিকে সোজা করাসহ নানাবিধ কৌশল অবলম্বন করতে হয়েছে।
বিআইডব্লিউটিএ, ফায়ার সার্ভিস বাংলাদেশ নৌবাহিনী যৌথভাবে উদ্ধার কাজে অংশ নিয়ে বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে ফেরিটি সোজা অবস্থায় উদ্ধার করতে সম্ভব হয়েছে। ফেরিকে এখন নদীর পারে এনে রাখা হয়েছে।’

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ডুবে যাওয়ার পর ফেরিটি উল্টে যায়। স্রোতের কারণে নদীর তলদেশে পলিমাটি জমে ফেরিটি আটকে যায়। তাই ২৪০ টন ওজনের ফেরিটি ৩০০ টন ছাড়িয়ে যায়। উদ্ধারকারী জাহাজ “হামজা” ও “রুস্তম” দিয়ে ওঠানো সম্ভব হয়নি। কারণ, এ দুটি উদ্ধারকারী জাহাজের ৮০ থেকে ৯০ টন ভরের বস্তুকে ওঠানোর সক্ষমতা আছে।

শুক্রবার দুপুরে বিআইডব্লিউটির সবচেয়ে শক্তিশালী উদ্ধারকারী জাহাজ “প্রত্যয়”কে দুর্ঘটনাস্থলে আনা হয়। তবে এর সক্ষমতা ২৫০ টন হওয়ায় ফেরিটিকে উদ্ধারে এই শক্তিশালী জাহাজটিও ব্যর্থ হয়। পরবর্তীতে নারায়ণগঞ্জ থেকে অনুসন্ধানী জাহাজ “ঝিনাই-১” আনা হয়। এর মাধ্যমে নদীর তলদেশে ফেরিটির সঠিক অবস্থান জানা যায়। এরপর ডুবুরিরা ফেরিতে এয়ার লিফটিং ব্যাগ স্থাপন করে পাম্প যন্ত্রের মাধ্যমে বাতাস দিতে থাকেন। এ উদ্ধার অভিযানে নৌবাহিনী ও বিআইডব্লিউটিএর উদ্ধারকারী দল অংশ নেয়।

এ বিষয়ে নৌবাহিনীর ডুবুরি দলের প্রধান লেফটেন্যান্ট শাহ পরান বলেন, “নদীতে প্রচণ্ড স্রোত, কুয়াশা ও শীতের কারণে উদ্ধার অভিযান কিছুটা ব্যাহত হয়। বিভিন্ন উদ্ধার প্রচেষ্টার মধ্য দিয়ে ফেরিটিকে নদীর তলদেশ থেকে ওপরে ওঠানো সম্ভব হয়েছে।”

গত ১৭ জানুয়ারি সকাল ৮টায় পাটুরিয়া ৫ নম্বর ফেরিঘাটের অদূরে নয়টি মালবাহী যানবাহন নিয়ে ডুবে যায় ফেরি “রজনীগন্ধা-৭”। এ সময় নিখোঁজ হন ফেরির সহকারী ইঞ্জিন মাস্টার হুমায়ূন কবির। ঘটনার পাঁচ দিন পর ২২ জানুয়ারি দুর্ঘটনাস্থল থেকে ১৩ কিলোমিটার দূরে মানিকগঞ্জের হরিরামপুরের বাহাদুরপুর এলাকার পদ্মা নদী থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

Please Share This Post in Your Social Media

আট দিন পর উদ্ধার হলো পদ্মায় ডুবে যাওয়া রজনীগন্ধা

স্টাফ রিপোর্টার
Update Time : ০৮:১৪:৩৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২৪

আট দিনের অভিযান শেষে মানিকগঞ্জের পাটুরিয়ায় ডুবে যাওয়া ফেরি রজনীগন্ধাকে উদ্ধার করে নদীর তীরে আনা হয়েছে। পদ্মা থেকে তুলে আনা হয়েছে ফেরির সঙ্গে ডুবে যাওয়া নয়টি যানবাহনও।

বুধবার (২৪ জানুয়ারি) রাত ১০টার দিকে ডুবে যাওয়া উক্ত ফেরিটিকে সম্পূর্ণরূপে পানির উপর ভাসিয়ে পাটুরিয়া ঘাটের ভাটিতে নয়াকান্দি এলাকার নদীর তীরে নিয়ে রাখা হয়েছে।

বিআইডব্লিউটিএ, ফায়ার সার্ভিস ও বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ডুবুরি দল ও উদ্ধার কর্মীদের যৌথ প্রচেষ্টায় নানা
প্রতিকুলতার মধ্যে পদ্মা নদীর তলদেশ থেকে এই ফেরি উদ্ধারের মতো চ্যালেঞ্জিং কাজটি করা সম্ভব হয়েছে বলে জানিয়েছেন এ উদ্ধার কার্যাক্রমের ইউনিট প্রধান বিআইডব্লিউটিএর অতিরিক্ত পরিচালক আব্দুস সালাম ।

বিআইডব্লিউটিএর অতিরিক্ত পরিচালক আব্দুস সালাম বলেন, ‘পদ্মায় ফেরিটি ডুবে যাওয়ার সময় তীব্র স্রোতের কারণে পানির নীচে গিয়ে ফেরিটি উল্টে যায়। এ অবস্থায় গত এক সপ্তাহে পলি পড়ে ফেরিটির ওজন আরও বেড়ে যায়। ২৪০ টন ওজনের ফেরিটি ৩০০ টন ছাড়িয়ে যায়। ফলে উদ্ধার জাহাজ হামজা ও রুস্তম ফেরিটি তুলতে ব্যর্থ হলে ঘটনার দুদিন পর উদ্ধারকাজে যুক্ত করা হয় বিআইডব্লিবউটিএরর শক্তিশালী উদ্ধার জাহাজ প্রত্যয়। প্রত্যয়ের সক্ষমতা রয়েছে ২৫০ টন, যে কারণে উদ্ধার কাজে একটু সময় বেশী লেগেছে। এই ফেরিটি উদ্ধার করতে গিয়ে পলি অপসারণ, উল্টো ফেরিটিকে সোজা করাসহ নানাবিধ কৌশল অবলম্বন করতে হয়েছে।
বিআইডব্লিউটিএ, ফায়ার সার্ভিস বাংলাদেশ নৌবাহিনী যৌথভাবে উদ্ধার কাজে অংশ নিয়ে বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে ফেরিটি সোজা অবস্থায় উদ্ধার করতে সম্ভব হয়েছে। ফেরিকে এখন নদীর পারে এনে রাখা হয়েছে।’

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ডুবে যাওয়ার পর ফেরিটি উল্টে যায়। স্রোতের কারণে নদীর তলদেশে পলিমাটি জমে ফেরিটি আটকে যায়। তাই ২৪০ টন ওজনের ফেরিটি ৩০০ টন ছাড়িয়ে যায়। উদ্ধারকারী জাহাজ “হামজা” ও “রুস্তম” দিয়ে ওঠানো সম্ভব হয়নি। কারণ, এ দুটি উদ্ধারকারী জাহাজের ৮০ থেকে ৯০ টন ভরের বস্তুকে ওঠানোর সক্ষমতা আছে।

শুক্রবার দুপুরে বিআইডব্লিউটির সবচেয়ে শক্তিশালী উদ্ধারকারী জাহাজ “প্রত্যয়”কে দুর্ঘটনাস্থলে আনা হয়। তবে এর সক্ষমতা ২৫০ টন হওয়ায় ফেরিটিকে উদ্ধারে এই শক্তিশালী জাহাজটিও ব্যর্থ হয়। পরবর্তীতে নারায়ণগঞ্জ থেকে অনুসন্ধানী জাহাজ “ঝিনাই-১” আনা হয়। এর মাধ্যমে নদীর তলদেশে ফেরিটির সঠিক অবস্থান জানা যায়। এরপর ডুবুরিরা ফেরিতে এয়ার লিফটিং ব্যাগ স্থাপন করে পাম্প যন্ত্রের মাধ্যমে বাতাস দিতে থাকেন। এ উদ্ধার অভিযানে নৌবাহিনী ও বিআইডব্লিউটিএর উদ্ধারকারী দল অংশ নেয়।

এ বিষয়ে নৌবাহিনীর ডুবুরি দলের প্রধান লেফটেন্যান্ট শাহ পরান বলেন, “নদীতে প্রচণ্ড স্রোত, কুয়াশা ও শীতের কারণে উদ্ধার অভিযান কিছুটা ব্যাহত হয়। বিভিন্ন উদ্ধার প্রচেষ্টার মধ্য দিয়ে ফেরিটিকে নদীর তলদেশ থেকে ওপরে ওঠানো সম্ভব হয়েছে।”

গত ১৭ জানুয়ারি সকাল ৮টায় পাটুরিয়া ৫ নম্বর ফেরিঘাটের অদূরে নয়টি মালবাহী যানবাহন নিয়ে ডুবে যায় ফেরি “রজনীগন্ধা-৭”। এ সময় নিখোঁজ হন ফেরির সহকারী ইঞ্জিন মাস্টার হুমায়ূন কবির। ঘটনার পাঁচ দিন পর ২২ জানুয়ারি দুর্ঘটনাস্থল থেকে ১৩ কিলোমিটার দূরে মানিকগঞ্জের হরিরামপুরের বাহাদুরপুর এলাকার পদ্মা নদী থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।