ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যা ৩ আসামির জবানবন্দি
আখাউড়ায় মর্জিনা বেগম হত্যাকান্ডের রহস্য উন্মোচন
- Update Time : ১০:০৩:৩৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৫
- / ৩০ Time View
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় আলোচিত মর্জিনা বেগম-(৪৫) হত্যাকান্ডের রহস্য উন্মোচন করেছে পিবিআই। তথ্যপ্রযুক্তি ও সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণের মাধ্যমে মঙ্গলবার রাতে ও বুধবার ভোরে এই হত্যাকান্ডে জড়িত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
নিহত মর্জিনা বেগম আখাউড়া পৌর শহরের দেবগ্রামের বাসিন্দা দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ইসমাইল মিয়ার স্ত্রী। তিনি সড়ক বাজারে শ্রমিক ও পরিচ্ছন্নতার কাজ করতেন এবং সন্ধ্যায় পিঠা বিক্রি করতেন। তবে মর্জিনা বেগম তার স্বামীকে নিয়ে নয়াবাজার এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, মুন্সিগঞ্জ জেলার শ্রীনগর উপজেলার কারিয়া গ্রামের মোঃ শহিদুল ইসলাম (৪৩), হবিগঞ্জের জেলার রানীগঞ্জের শফিক (৪০) ও হবিগঞ্জ জেলার গয়েরপুরের মোঃ রুমান মিয়া (২৪)। তারা তিনজনই আখাউড়া পৌর এলাকার মসজিদপাড়ার লাল মিয়া হাজীর বাড়িতে ভাড়া থাকতেন।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত ২৫ নভেম্বর রাত আনুমানিক ৩টার দিকে একটি অজ্ঞাত নম্বর থেকে ফোন করে মিথ্যা তথ্য দিয়ে মর্জিনা বেগমকে বাড়ি থেকে ডেকে নেয়া হয়। পরদিন সকাল থেকে তার খোঁজ না পেয়ে পরিবারের সদস্যরা খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। পরে বিকেল ৫টার দিকে আখাউড়া পৌরসভা কার্যালয়ের পরিত্যক্ত টিনশেড ভবনের পাশে তার মরদেহ পাওয়া যায়। নিহতের গলায় দাগ ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়। লাশের পাশেই পড়ে ছিল একজোড়া জুতা, যা তদন্তে গুরুত্বপূর্ন আলামত হিসেবে বিবেচিত হয়।
পিবিআই জানায়, কাঁচা বাজার এলাকার দারোয়ান শহিদুল ইসলাম কৌশলে ‘মালের গাড়ি এসেছে’ এমন তথ্য দিয়ে ভিকটিমকে ফোন করে ঘটনাস্থলে নিয়ে যান। সিসিটিভির ফুটেজে দেখা যায়, ফোন করার মাত্র ১৪ মিনিট পর ভিকটিম বাজার এলাকা অতিক্রম করে ঘটনাস্থলের দিকে যান।
তদন্তে উঠে আসে, প্রথমে শহিদুল ইসলাম ভিকটিমকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন। এরপর তার সহযোগী হোসেন ও রুমান মিয়া ধর্ষণের চেষ্টা করলে ভিকটিম বাঁধা দেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে তারা তাকে হত্যা করার সিদ্ধান্ত নেয়। এক পর্যায়ে একজন গলা চেপে ধরে এবং অন্য দু’জন তার হাত ও পা চেপে ধরে শ্বাসরোধে হত্যা নিশ্চিত করে পালিয়ে যায়।
ঘটনার পর শহিদুল ইসলাম মোবাইল হারানোর নাটক সাজালেও পিবিআইয়ের প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণে ধরা পড়ে, তিনি একই হ্যান্ডসেটে সিম পরিবর্তন করে ব্যবহার করছিলেন। মঙ্গলবার রাতে আখাউড়া সড়ক বাজার এলাকা থেকে শহিদুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে একইদিন বুধবার ভোরে আখাউড়া পৌরসভার মসজিদপাড়া থেকে হোসেন ও রুমান মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত তিনজনই প্রা থমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন এবং স্বেচ্ছায় ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় আদালতে জবানবন্দি দিতে সম্মত হন। তাদেরকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে পিবিআই, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার পুলিশ সুপার শচীন চাকমা বলেন, এটি একটি নৃশংস ও পরিকল্পিত হত্যাকান্ড। প্রযুক্তিগত প্রমাণ ও সিসিটিভি ফুটেজের ভিত্তিতে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। ঘটনায় অন্য কেউ জড়িত থাকলে তাকেও আইনের আওতায় আনা হবে।
Please Share This Post in Your Social Media
-
সর্বশেষ
-
জনপ্রিয়



































































































































































































