ঢাকা ০৯:৩৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫, ২০ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজঃ
৭ বছরে ও সুবর্ণা হত্যার বিচার হয়নি, হুমকির মুখে পরিবার ও আত্মীয়-স্বজন অপচিকিৎসায় রোগীর মৃত্যু; রংপুরে দুই ক্লিনিককে জরিমানা,ওটি সিলগালা পিআর পদ্ধতি দেশকে আরও বেশি স্বৈরতন্ত্রের দিকে ঠেলে দেবে – রিজভী তিন দফা দাবিতে উপাচার্যের কাছে স্মারকলিপি দিল শেকৃবি শিক্ষার্থীরা কুবিতে র‍্যাগিংয়ের অভিযোগ অভিযুক্ত ব্যাচের ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ; তদন্ত কমিটি গঠন ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আকাশমনি ও ইউক্যালিপটাস গাছের চারা ধ্বংস নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আয়োজনে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি ১-১১’র প্রেক্ষাপট তৈরি করে আ.লীগ কর্তৃত্বশীল শাসকরূপে চিহ্নিত হয় : মাওলানা আবদুল হালিম মাদক বিষাক্ত সাপের মতো ব্যক্তি ও সমাজকে নিঃশেষ করে দেয় জুলাই আন্দোলনের অগ্নিস্ফুলিঙ্গ শুরু হয়েছিল রংপুর থেকেই: নাহিদ ইসলাম

অন্তর্বর্তী সরকার উন্নত সুশাসিত দেশ গঠনে অঙ্গীকারবদ্ধ : প্রধান উপদেষ্টা

জাতীয় ডেস্ক
  • Update Time : ১২:৫৩:৫১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪
  • / ১০৮ Time View

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার একটি উন্নত, সমৃদ্ধ ও সুশাসিত বাংলাদেশ গঠনে অঙ্গীকারবদ্ধ।

শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষ্যে দেওয়া এক বাণীতে তিনি এ কথা বলেন।

বাণীতে মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের শেষের দিনগুলোতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসররা পরাজয় নিশ্চিত জেনে বাংলাদেশকে মেধাশূন্য করতে বাঙালি বুদ্ধিজীবীদের নির্মমভাবে হত্যা করে।

তিনি বলেন, বাঙালি জাতির বিজয়ের প্রাক্কালে স্বাধীনতাবিরোধীরা দেশের শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক, সাহিত্যিক, চিকিৎসক, বিজ্ঞানী, আইনজীবী, শিল্পী, প্রকৌশলী, দার্শনিক ও রাজনৈতিক চিন্তাবিদসহ দেশের মেধাবী সন্তানদের নির্মমভাবে হত্যা ও গুম করে।

বাঙালি জাতিকে মেধাশূন্য করাই ছিল তাদের মূল উদ্দেশ্য উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, স্বাধীনতাবিরোধীরা এই পরিকল্পিত নৃশংস হত্যাযজ্ঞের মধ্য দিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধে পরাজয়ের জঘন্যতম প্রতিশোধ নেয়।

প্রসঙ্গত, নয় মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিসংগ্রামের শেষলগ্নে পুরো দেশের মানুষ যখন চূড়ান্ত বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে, ঠিক তখনই রাজাকার, আলবদর, আলশামস ও শান্তি কমিটির সদস্যরা মেতে ওঠে বুদ্ধিজীবী হত্যাযজ্ঞে। বিজয়ের চূড়ান্ত মুহূর্তে বাঙালিকে মেধাশূন্য করার এ নৃশংস নিধনযজ্ঞ সেদিন গোটা জাতিসহ পুরো বিশ্বকেই হতবিহ্বল করে দিয়েছিল। এর দুই দিনের মাথায় ১৬ ডিসেম্বর আত্মসমর্পণ করে জেনারেল নিয়াজির নেতৃত্বাধীন পাকিস্তানি বাহিনী। এর মধ্যদিয়ে স্বাধীন দেশ হিসেবে অভ্যুদয় ঘটে বাংলাদেশের।

১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর রাতের অন্ধকারে ঘাতক চক্র কেবল ঢাকা শহরেই প্রায় দেড়শ বুদ্ধিজীবী ও বিভিন্ন পেশার কৃতী মানুষকে চোখ বেঁধে নিয়ে যায় অজ্ঞাত স্থানে। সান্ধ্য আইনের মধ্যে সেই রাতে তালিকা ধরে ধরে শিক্ষক, সাংবাদিক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, আইনজীবী, শিল্পী-সাহিত্যিক, সংস্কৃতিসেবী ও পদস্থ সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তাদের ঘর থেকে টেনেহিঁচড়ে বের করে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে হত্যা করে ফেলে রাখা হয় নিস্তব্ধ ভূতুড়ে অন্ধকারে।

পরদিন সকালে ঢাকার মিরপুরের ডোবা-নালা ও রায়েরবাজার ইটখোলাতে বিক্ষিপ্তভাবে পড়ে থাকতে দেখা যায় অনেক নিথর দেহ। কারও শরীর বুলেটবিদ্ধ, কারও অমানুষিক নির্যাতনে ক্ষতবিক্ষত। হাত পেছনে বেঁধে বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে নাড়িভুঁড়িও বের করে ফেলা হয়েছে অনেকের। স্বাধীনতার ঊষালগ্নে উন্মুখ মানুষ স্বজন হারানোর সেই কালরাত্রির কথা জানতে পেরে শিউরে উঠেছিল। স্থবির হয়ে গিয়েছিল সবকিছু।

হত্যার পূর্বে যে তাদের নির্যাতন করা হয়েছিল, সে তথ্যও বের হয়ে আসে। ১৯৭২ সালে বাংলাদেশে জাতীয়ভাবে প্রকাশিত বুদ্ধিজীবী দিবসের সংকলন, পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ ও আন্তর্জাতিক সংবাদ সাময়িকী নিউজ উইকের সাংবাদিক নিকোলাস টমালিনের রচিত নিবন্ধ থেকে জানা যায় যে, নিহত শহীদ বুদ্ধিজীবীর সংখ্যা মোট ১ হাজার ৭০ জন।

দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনে সরকারিভাবে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ছাড়াও সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনও নানা কর্মসূচি পালন করবে।

Please Share This Post in Your Social Media

অন্তর্বর্তী সরকার উন্নত সুশাসিত দেশ গঠনে অঙ্গীকারবদ্ধ : প্রধান উপদেষ্টা

জাতীয় ডেস্ক
Update Time : ১২:৫৩:৫১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার একটি উন্নত, সমৃদ্ধ ও সুশাসিত বাংলাদেশ গঠনে অঙ্গীকারবদ্ধ।

শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষ্যে দেওয়া এক বাণীতে তিনি এ কথা বলেন।

বাণীতে মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের শেষের দিনগুলোতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসররা পরাজয় নিশ্চিত জেনে বাংলাদেশকে মেধাশূন্য করতে বাঙালি বুদ্ধিজীবীদের নির্মমভাবে হত্যা করে।

তিনি বলেন, বাঙালি জাতির বিজয়ের প্রাক্কালে স্বাধীনতাবিরোধীরা দেশের শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক, সাহিত্যিক, চিকিৎসক, বিজ্ঞানী, আইনজীবী, শিল্পী, প্রকৌশলী, দার্শনিক ও রাজনৈতিক চিন্তাবিদসহ দেশের মেধাবী সন্তানদের নির্মমভাবে হত্যা ও গুম করে।

বাঙালি জাতিকে মেধাশূন্য করাই ছিল তাদের মূল উদ্দেশ্য উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, স্বাধীনতাবিরোধীরা এই পরিকল্পিত নৃশংস হত্যাযজ্ঞের মধ্য দিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধে পরাজয়ের জঘন্যতম প্রতিশোধ নেয়।

প্রসঙ্গত, নয় মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিসংগ্রামের শেষলগ্নে পুরো দেশের মানুষ যখন চূড়ান্ত বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে, ঠিক তখনই রাজাকার, আলবদর, আলশামস ও শান্তি কমিটির সদস্যরা মেতে ওঠে বুদ্ধিজীবী হত্যাযজ্ঞে। বিজয়ের চূড়ান্ত মুহূর্তে বাঙালিকে মেধাশূন্য করার এ নৃশংস নিধনযজ্ঞ সেদিন গোটা জাতিসহ পুরো বিশ্বকেই হতবিহ্বল করে দিয়েছিল। এর দুই দিনের মাথায় ১৬ ডিসেম্বর আত্মসমর্পণ করে জেনারেল নিয়াজির নেতৃত্বাধীন পাকিস্তানি বাহিনী। এর মধ্যদিয়ে স্বাধীন দেশ হিসেবে অভ্যুদয় ঘটে বাংলাদেশের।

১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর রাতের অন্ধকারে ঘাতক চক্র কেবল ঢাকা শহরেই প্রায় দেড়শ বুদ্ধিজীবী ও বিভিন্ন পেশার কৃতী মানুষকে চোখ বেঁধে নিয়ে যায় অজ্ঞাত স্থানে। সান্ধ্য আইনের মধ্যে সেই রাতে তালিকা ধরে ধরে শিক্ষক, সাংবাদিক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, আইনজীবী, শিল্পী-সাহিত্যিক, সংস্কৃতিসেবী ও পদস্থ সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তাদের ঘর থেকে টেনেহিঁচড়ে বের করে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে হত্যা করে ফেলে রাখা হয় নিস্তব্ধ ভূতুড়ে অন্ধকারে।

পরদিন সকালে ঢাকার মিরপুরের ডোবা-নালা ও রায়েরবাজার ইটখোলাতে বিক্ষিপ্তভাবে পড়ে থাকতে দেখা যায় অনেক নিথর দেহ। কারও শরীর বুলেটবিদ্ধ, কারও অমানুষিক নির্যাতনে ক্ষতবিক্ষত। হাত পেছনে বেঁধে বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে নাড়িভুঁড়িও বের করে ফেলা হয়েছে অনেকের। স্বাধীনতার ঊষালগ্নে উন্মুখ মানুষ স্বজন হারানোর সেই কালরাত্রির কথা জানতে পেরে শিউরে উঠেছিল। স্থবির হয়ে গিয়েছিল সবকিছু।

হত্যার পূর্বে যে তাদের নির্যাতন করা হয়েছিল, সে তথ্যও বের হয়ে আসে। ১৯৭২ সালে বাংলাদেশে জাতীয়ভাবে প্রকাশিত বুদ্ধিজীবী দিবসের সংকলন, পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ ও আন্তর্জাতিক সংবাদ সাময়িকী নিউজ উইকের সাংবাদিক নিকোলাস টমালিনের রচিত নিবন্ধ থেকে জানা যায় যে, নিহত শহীদ বুদ্ধিজীবীর সংখ্যা মোট ১ হাজার ৭০ জন।

দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনে সরকারিভাবে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ছাড়াও সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনও নানা কর্মসূচি পালন করবে।