অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপ ফাইনালে আর্জেন্টিনা ও মরক্কো

- Update Time : ১১:২৩:৩১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫
- / ৩০৪ Time View
তারুণ্যের ফুটবলে জমে উঠছে এক স্বপ্নময় পরিসমাপ্তির অপেক্ষা। একপাশে বিশ্ব ফুটবলের ইতিহাস-ঐতিহ্যের প্রতীক আর্জেন্টিনা, অন্যপাশে প্রথমবারের মতো অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপ ফাইনালে উঠে ইতিহাস লিখে ফেলা মরক্কো। একদিকে শিরোপা জয়ের অভিজ্ঞতা, অন্যদিকে অদম্য উদ্দীপনা ও আত্মবিশ্বাস সব মিলিয়ে আসছে এক রোমাঞ্চকর মহারণ।
আর্জেন্টিনা কঠিন লড়াই শেষে জায়গা করে নিয়েছে ফাইনালে। কলম্বিয়ার বিপক্ষে ১-০ গোলের জয়ে তারা নিশ্চিত করেছে টুর্নামেন্টের শিরোপা লড়াই, যেখানে জয়ের নায়ক মাতেও সিলভেত্তি।
বিরতির পর বদলি হিসেবে নামা ইন্টার মায়ামির এই তরুণ ফরোয়ার্ড ৭২তম মিনিটে জিয়ানলুকা প্রেস্তিয়ানির বুদ্ধিদীপ্ত পাস থেকে গোল করে আর্জেন্টিনাকে ফাইনালে তুলেছেন। এই জয়ে ২০০৭ সালের পর প্রথমবারের মতো ফাইনালে উঠল তরুণ আলবিসেলেস্তেরা।
প্রথমার্ধে ছিল টানটান লড়াই। ৪২তম মিনিটে কলম্বিয়ার হুয়ান আরিজালার শট অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। বিরতির পর দুই দলই গোলের খোঁজে একের পর এক আক্রমণ চালায়। আর্জেন্টিনার গোলরক্ষক সানতিনো বারবি ছিলেন দুর্দান্ত, আঙুলের ডগায় বাঁচান এক নিশ্চিত হেড। পরে ডিফেন্ডার তোবিয়াস রামিরেজের দারুণ ট্যাকলে রক্ষা পায় দল।
কলম্বিয়ার আশা ভেঙে যায় জন রেনতেরিয়া দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়লে। এরপর দৃঢ় রক্ষণে ভর করে আর্জেন্টিনা ধরে রাখে লিড, নিশ্চিত করে তাদের অষ্টম ফাইনাল। রেকর্ড ছয়বারের চ্যাম্পিয়ন এই দলটি আবারও শিরোপার দৌড়ে।
ম্যাচজয়ী সিলভেত্তির কথায় ফুটে ওঠে আত্মবিশ্বাস, ‘এই দলটা লড়েছে, এবং আমরা প্রাপ্য ফল পেয়েছি। সহজ প্রতিপক্ষ বলে কিছু নেই, কিন্তু আমরা দেখিয়েছি আর্জেন্টিনার আসল শক্তি তার দলগত গভীরতায়।’
অন্য সেমিফাইনালে ইতিহাস রচনা করেছে মরক্কো। রোমাঞ্চকর টাইব্রেকারে ৫-৪ গোলে ফ্রান্সকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠেছে আফ্রিকার এই দলটি। বদলি গোলরক্ষক আবদেলহাকিম মেসবাহি হয়েছেন নায়ক। সাডেন ডেথে ফ্রান্সের দজিলিয়ান এনগেসাঁর পেনাল্টি ঠেকিয়ে দেন তিনি। নির্ধারিত সময়ের খেলা ১-১ গোলে সমতায় ছিল।
৩১তম মিনিটে মরক্কো এগিয়ে যায় ইয়াসির যাবিরির নেওয়া পেনাল্টি থেকে, যা ফ্রান্স গোলরক্ষক লিসান্দ্রু অলমেতার গায়ে লেগে জালে প্রবেশ করে। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই লুকাস মিশাল সমতা ফেরান ফ্রান্সের হয়ে। তবে অতিরিক্ত সময়ে রাবি এনজিঙ্গুলা লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়লে ফ্রান্সের আক্রমণ ভোঁতা হয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত টাইব্রেকারেই নির্ধারিত হয় ভাগ্য।
মরক্কোর মিডফিল্ডার ওথমান মা’ম্মা বলেন, ‘আমরা কখনও হাল ছাড়িনি। আবারও দেখিয়েছি মরক্কোর ফুটবলের সৌন্দর্য। এখন আর এক ধাপ বাকি বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়ার।’
সবকিছু মিলিয়ে ফাইনালে মুখোমুখি হচ্ছে ঐতিহ্যের আর্জেন্টিনা ও ইতিহাস গড়া মরক্কো। একদিকে অভিজ্ঞতার প্রতীক, অন্যদিকে স্বপ্নবাজ নবাগত। যেখানে অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ গৌরব নির্ধারিত হবে আবেগ, দক্ষতা আর তরুণ হৃদয়ের লড়াইয়ে।
Please Share This Post in Your Social Media
-
সর্বশেষ
-
জনপ্রিয়