ঢাকা ০৯:৪২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ মে ২০২৪, ২৯ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজঃ

ব্রিকসে যোগ দিতে চায় ৪০টিরও বেশি দেশ

নওরোজ আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • Update Time : ০৫:৩৪:১২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৩
  • / ৩৭ Time View

ছবিঃ সংগৃহীত

দক্ষিণ আফ্রিকায় শুরু হয়েছে ব্রিকসের ১৫তম শীর্ষ সম্মেলন। সারাবিশ্বেই ব্রিকস সম্মেলন নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে। আর এর মধ্যেই ব্রিকসের সদস্য বাড়ানো কথাও উঠেছে।

দক্ষিণ আফ্রিকা জানিয়েছে, বর্তমানে ৪০টিরও বেশি দেশ ব্রিকসে যোগ দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে। এছাড়া ২০টিরও বেশি দেশ ইতোমধ্যেই আনুষ্ঠানিক আবেদন জানিয়েছে।

দক্ষিণ আফ্রিকার ব্রিকস বিষয়ক বিশেষ দূত আনিল সোকলাল চায়না মিডিয়া গ্রুপ সিএমজিকে দেওয়া বিশেষ সাক্ষাত্কারে বলেছেন, অনেক দেশ ব্রিকস পরিবারের সদস্য হতে চায়।

তার মতে, এটা প্রমাণ করেছে যে, আন্তর্জাতিক সমস্যার সমাধানে ব্রিকসের নেতৃত্বের সামর্থ্য সম্বন্ধে সারাবিশ্ব খুব আস্থাবান।

ব্রিকস সহযোগিতার ইতিহাস পর্যালোচনা করে বোঝা যায়, উন্নয়ন সবচেয়ে মৌলিক বিষয়। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০০২ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ব্রিকস দেশগুলোর জিডিপি আগের ৮.৪ শতাংশ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৫.৮ শতাংশে। সেই সঙ্গে এ বিষয়ে জি-৭য়ের অবদান ৬৪ দশমিক ৬ থেকে কমে দাঁড়ায় ৪২ দশমিক ৯ শতাংশে।

ব্রিটেনের অ্যাকর্ন ম্যাক্রো কনসাল্টিংয়ের মার্চ মাসের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২২ সালে বিশ্বে ব্রিকসের অর্থনৈতিক অবদান জি-৭কেও ছাড়িয়ে গেছে।

উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, ২০২২ সাল তথা ব্রিকসের ‘চীনা বর্ষ’ থেকে ব্রিকস দেশগুলোর সহযোগিতা অনেক ফলপ্রসূ হয়েছে। যা এবার জোহানেসবার্গ শীর্ষ সম্মেলনের দৃঢ় ভিত্তি স্থাপন করেছে।

গত বছরের জুন মাসে বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত ব্রিকসের ১৪তম শীর্ষ সম্মেলনে ‘ব্রিকস বাণিজ্য ও পুঁজি বিনিয়োগ এবং টেকসই উন্নয়ন উদ্যোগ’ এবং ‘ব্রিকস দেশের সরবরাহ চেইন সহযোগিতা জোরদার উদ্যোগ’সহ বিভিন্ন দলিল অনুমোদিত হয়। এর সঙ্গে ‘বেইজিং ঘোষণাও’ প্রকাশিত হয়েছে যা নতুন যুগে ব্রিকস সহযোগিতার দিক নির্দেশনা দিয়েছে।

২০২২ সালে চীন ১৭০টিরও বেশি সংশ্লিষ্ট অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে যার প্রায় ৪০টিতে গুরুত্বপূর্ণ সুফল পাওয়া গেছে।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২২ সালে ব্রিকসের পাঁচ সদস্য দেশের বাণিজ্যিক মূল্য প্রায় ৯ দশমিক ২ ট্রিলিয়ন ইউয়ান, যা আগের বছরের তুলনায় ৭ দশমিক ৮ শতাংশ বেশি।

দক্ষিণ আফ্রিকান কর্মকর্তা জানান, এবার শীর্ষ সম্মেলনে সদস্য দেশগুলো নিজ দেশের মুদ্রায় লেনদেন করার বিষয় নিয়ে আলোচনা করবে। যদি তা সম্ভব হয়, তাহলে ব্রিকস দেশগুলোর আর্থিক সহযোগিতা আরো দ্রুততর হবে।

যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত ফ্রান্সের সাবেক রাষ্ট্রদূত জেরার্ড আরাউড সম্প্রতি বলেছেন, ব্রিকস দেশগুলোর অর্থনৈতিক প্রাণশক্তি বিশ্ব অর্থনীতিতে প্রভাব বিস্তার করবে।

ব্রাজিলের গণমাধ্যম জানিয়েছে, ব্রিকস সহযোগিতা ব্যবস্থা স্থাপনের পর থেকে যে সুফল পাওয়া গেছে। অনেক দেশের উন্নয়নের আস্থা বৃদ্ধি করায় বিশ্বে তা ব্যাপকভাবে স্বীকৃতি পেয়েছে। একটি নতুন সহযোগিতা ব্যবস্থা হিসেবে, ব্রিকস ইতোমধ্যেই দক্ষিণ-দক্ষিণ সহযোগিতা এবং বিশ্ব পরিচালনাকে নেতৃত্ব দেওয়ার এক গুরুত্বপূর্ণ শক্তিতে পরিণত হয়েছে।

রাজনীতির ক্ষেত্রে, ব্রিকস দেশগুলো পরস্পরের সার্বভৌমত্ব, নিরাপত্তা ও উন্নয়নের স্বার্থকে সম্মান করে, স্নায়ুযুদ্ধের চিন্তাধারার বিরোধিতা করে।

অর্থনীতির ক্ষেত্রে ব্রিকস দেশগুলোর অর্থনীতির পরিমাণ আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলে ১৪ দশমিক ১৫ শতাংশ। গণস্বাস্থ্যখাতে ব্রিকস দেশগুলোর টিকা গবেষণা কেন্দ্র স্থাপিত হয়েছে।

ব্রিকসভুক্ত দেশগুলো বহুপক্ষবাদ এবং বিশ্বের পরিচালনা ব্যবস্থাকে সংস্কার করার অভিন্ন কথা জানিয়েছে। তাই আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম মনে করে, পশ্চিমা দেশের নেতৃত্বের শৃঙ্খলার বাইরে ব্রিকস দেশগুলো নতুন এক চিন্তাধারা উত্থাপন করেছে।

ব্রিকস কোনো রুদ্ধদ্বার ক্লাব নয়। ২০১৭ সালের ব্রিকস শীর্ষসম্মেলন থেকে ২০২২ সালের বেইজিং ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলন পর্যন্ত সবসময় সদস্য দেশ বাড়ানোকে সমর্থন করে আসছে তারা। ব্রিকস আরো বেশি অংশীদারদের এতে যোগদানে স্বাগত জানায়।

Please Share This Post in Your Social Media

ব্রিকসে যোগ দিতে চায় ৪০টিরও বেশি দেশ

Update Time : ০৫:৩৪:১২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৩

দক্ষিণ আফ্রিকায় শুরু হয়েছে ব্রিকসের ১৫তম শীর্ষ সম্মেলন। সারাবিশ্বেই ব্রিকস সম্মেলন নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে। আর এর মধ্যেই ব্রিকসের সদস্য বাড়ানো কথাও উঠেছে।

দক্ষিণ আফ্রিকা জানিয়েছে, বর্তমানে ৪০টিরও বেশি দেশ ব্রিকসে যোগ দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে। এছাড়া ২০টিরও বেশি দেশ ইতোমধ্যেই আনুষ্ঠানিক আবেদন জানিয়েছে।

দক্ষিণ আফ্রিকার ব্রিকস বিষয়ক বিশেষ দূত আনিল সোকলাল চায়না মিডিয়া গ্রুপ সিএমজিকে দেওয়া বিশেষ সাক্ষাত্কারে বলেছেন, অনেক দেশ ব্রিকস পরিবারের সদস্য হতে চায়।

তার মতে, এটা প্রমাণ করেছে যে, আন্তর্জাতিক সমস্যার সমাধানে ব্রিকসের নেতৃত্বের সামর্থ্য সম্বন্ধে সারাবিশ্ব খুব আস্থাবান।

ব্রিকস সহযোগিতার ইতিহাস পর্যালোচনা করে বোঝা যায়, উন্নয়ন সবচেয়ে মৌলিক বিষয়। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০০২ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ব্রিকস দেশগুলোর জিডিপি আগের ৮.৪ শতাংশ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৫.৮ শতাংশে। সেই সঙ্গে এ বিষয়ে জি-৭য়ের অবদান ৬৪ দশমিক ৬ থেকে কমে দাঁড়ায় ৪২ দশমিক ৯ শতাংশে।

ব্রিটেনের অ্যাকর্ন ম্যাক্রো কনসাল্টিংয়ের মার্চ মাসের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২২ সালে বিশ্বে ব্রিকসের অর্থনৈতিক অবদান জি-৭কেও ছাড়িয়ে গেছে।

উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, ২০২২ সাল তথা ব্রিকসের ‘চীনা বর্ষ’ থেকে ব্রিকস দেশগুলোর সহযোগিতা অনেক ফলপ্রসূ হয়েছে। যা এবার জোহানেসবার্গ শীর্ষ সম্মেলনের দৃঢ় ভিত্তি স্থাপন করেছে।

গত বছরের জুন মাসে বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত ব্রিকসের ১৪তম শীর্ষ সম্মেলনে ‘ব্রিকস বাণিজ্য ও পুঁজি বিনিয়োগ এবং টেকসই উন্নয়ন উদ্যোগ’ এবং ‘ব্রিকস দেশের সরবরাহ চেইন সহযোগিতা জোরদার উদ্যোগ’সহ বিভিন্ন দলিল অনুমোদিত হয়। এর সঙ্গে ‘বেইজিং ঘোষণাও’ প্রকাশিত হয়েছে যা নতুন যুগে ব্রিকস সহযোগিতার দিক নির্দেশনা দিয়েছে।

২০২২ সালে চীন ১৭০টিরও বেশি সংশ্লিষ্ট অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে যার প্রায় ৪০টিতে গুরুত্বপূর্ণ সুফল পাওয়া গেছে।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২২ সালে ব্রিকসের পাঁচ সদস্য দেশের বাণিজ্যিক মূল্য প্রায় ৯ দশমিক ২ ট্রিলিয়ন ইউয়ান, যা আগের বছরের তুলনায় ৭ দশমিক ৮ শতাংশ বেশি।

দক্ষিণ আফ্রিকান কর্মকর্তা জানান, এবার শীর্ষ সম্মেলনে সদস্য দেশগুলো নিজ দেশের মুদ্রায় লেনদেন করার বিষয় নিয়ে আলোচনা করবে। যদি তা সম্ভব হয়, তাহলে ব্রিকস দেশগুলোর আর্থিক সহযোগিতা আরো দ্রুততর হবে।

যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত ফ্রান্সের সাবেক রাষ্ট্রদূত জেরার্ড আরাউড সম্প্রতি বলেছেন, ব্রিকস দেশগুলোর অর্থনৈতিক প্রাণশক্তি বিশ্ব অর্থনীতিতে প্রভাব বিস্তার করবে।

ব্রাজিলের গণমাধ্যম জানিয়েছে, ব্রিকস সহযোগিতা ব্যবস্থা স্থাপনের পর থেকে যে সুফল পাওয়া গেছে। অনেক দেশের উন্নয়নের আস্থা বৃদ্ধি করায় বিশ্বে তা ব্যাপকভাবে স্বীকৃতি পেয়েছে। একটি নতুন সহযোগিতা ব্যবস্থা হিসেবে, ব্রিকস ইতোমধ্যেই দক্ষিণ-দক্ষিণ সহযোগিতা এবং বিশ্ব পরিচালনাকে নেতৃত্ব দেওয়ার এক গুরুত্বপূর্ণ শক্তিতে পরিণত হয়েছে।

রাজনীতির ক্ষেত্রে, ব্রিকস দেশগুলো পরস্পরের সার্বভৌমত্ব, নিরাপত্তা ও উন্নয়নের স্বার্থকে সম্মান করে, স্নায়ুযুদ্ধের চিন্তাধারার বিরোধিতা করে।

অর্থনীতির ক্ষেত্রে ব্রিকস দেশগুলোর অর্থনীতির পরিমাণ আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলে ১৪ দশমিক ১৫ শতাংশ। গণস্বাস্থ্যখাতে ব্রিকস দেশগুলোর টিকা গবেষণা কেন্দ্র স্থাপিত হয়েছে।

ব্রিকসভুক্ত দেশগুলো বহুপক্ষবাদ এবং বিশ্বের পরিচালনা ব্যবস্থাকে সংস্কার করার অভিন্ন কথা জানিয়েছে। তাই আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম মনে করে, পশ্চিমা দেশের নেতৃত্বের শৃঙ্খলার বাইরে ব্রিকস দেশগুলো নতুন এক চিন্তাধারা উত্থাপন করেছে।

ব্রিকস কোনো রুদ্ধদ্বার ক্লাব নয়। ২০১৭ সালের ব্রিকস শীর্ষসম্মেলন থেকে ২০২২ সালের বেইজিং ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলন পর্যন্ত সবসময় সদস্য দেশ বাড়ানোকে সমর্থন করে আসছে তারা। ব্রিকস আরো বেশি অংশীদারদের এতে যোগদানে স্বাগত জানায়।