ঢাকা ০৪:১৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজঃ
সন্তানদের নতুন জামা পরিয়ে রাতে ঘর থেকে বের হয়ে আর ফিরলেন না বাবা প্রধানমন্ত্রীর জিরো টলারেন্স নীতির ফলে দেশে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ নির্মুল হয়েছেঃ সিলেটে আইজিপি বড় পরিসরে আর. কে. মিশন রোডে ব্র্যাক ব্যাংকের শাখা উদ্বোধন সৌদিতে প্রথমবারের মতো সুইমস্যুট পরে র‌্যাম্পে হাঁটলেন মডেলরা ‘আয়রনম্যান’ চরিত্রে ফিরতে ‘আপত্তি নেই’ রবার্ট ডাউনি জুনিয়রের বাংলাদেশের গণতন্ত্র ধ্বংসের জন্য ভারত সরকার দায়ী : কর্নেল অলি বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সিরিজ নিয়ে শঙ্কা কাঠালিয়ায় ডাকাতের গুলিতে আহত ২ বিএনপি একটা জালিয়ত রাজনৈতিক দল : পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেয়র তাপস মনগড়া ও অসত্য বক্তব্য দিচ্ছেন : সাঈদ খোকন

সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচির উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার
  • Update Time : ১২:৪৬:১৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ অগাস্ট ২০২৩
  • / ৭৬ Time View

অবশেষে চালু হলো বহুল প্রতীক্ষিত সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচি।

বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা ১০ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবনে এ কর্মসূচির উদ্বোধন করেছেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন অর্থবিভাগের সিনিয়র সচিব ফাতেমা ইয়াসমিন।

জাতীয় সংসদের গত অধিবেশনে ‘সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা আইন, ২০২৩’ পাস হয়। ৩১ জানুয়ারি আইনটিতে সম্মতি দেন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। পরে ১৩ আগস্ট প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

আইন অনুযায়ী, সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচির প্রবাসী স্কিমে প্রবাসী বাংলাদেশি, প্রগতি স্কিমে বেসরকারি চাকরিজীবী, সুরক্ষা স্কিমে স্বকর্মে নিয়োজিত ব্যক্তি এবং সমতা স্কিমে স্বল্প আয়ের নাগরিকরা অংশ নেবেন। আপাতত সীমিত আকারে পেনশন কর্মসূচি চালু করা হবে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের জারি করা সর্বজনীন পেনশন স্কিম বিধিমালা অনুযায়ী, এ কর্মসূচিতে যুক্ত হলে ৬০ বছর বয়সের পর থেকে আজীবন পেনশন সুবিধা পাবেন গ্রাহক। চাঁদা পরিশোধের পর তিনি মারা গেলে তার নমিনি বা উত্তরাধিকারী পেনশন পাবেন ১৫ বছর।

শুরুতে চার শ্রেণির ব্যক্তি পেনশন কর্মসূচির আওতায় আসছেন। তারা হচ্ছেন- প্রবাসী বাংলাদেশি, বেসরকারি চাকরিজীবী, অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের কর্মী এবং অসচ্ছল ব্যক্তি। মাসিক চাঁদা ধরা হয়েছে সর্বনিম্ন ৫০০ টাকা আর সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত। তবে কর্মসূচি পরিবর্তন এবং চাঁদার পরিমাণ বাড়ানোর সুযোগ থাকছে।

পেনশন কর্তৃপক্ষের ওয়েবসাইট চালু হয়েছে গতকাল বুধবার। ওয়েবসাইটের ঠিকানা www.upension.gov.bd এতে বলা হয়েছে, ‘সর্বজনীন পেনশন স্কিমে অংশগ্রহণ করে আপনার ভবিষ্যৎ আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন।’ ওয়েবসাইটের ঠিকানায় পেনশন স্কিমগুলো সম্পর্কে প্রাথমিক তথ্য উল্লেখ করা আছে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা যা অঙ্গীকার করি সেটা রাখি। আজকে তার প্রমাণ। শুধু দলের জন্য না, আজকে বাংলাদেশের মানুষের জন্য করতে যাচ্ছি। সেটাই আমাদের জন্য আত্মতুষ্টির বিষয়।

শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের সরকারি চাকরিজীবীরা পেনশন পান। যারা চাকরি করে না তারা তো পান না। কাজেই এটা সরকারি চাকরিজীবীর জন্য নয়। যারা সরকারি চাকরি করেন, বেতন পান, তাদের জন্য এটা প্রযোজ্য হবে না। সরকারি চাকরির বাইরে যে জনগোষ্ঠী, শুধুমাত্র তাদের জন্য এই ব্যবস্থাটা আমরা করেছি। এটা করে তারা সম্মানজনকভাবে বাঁচতে পারে। যার ফলে মানুষের মধ্যে যে বৈষম্য আছে সেটাও দূর হবে।

এই পেনশন ব্যবস্থার মাধ্যমে আগামী দিনে বেসরকারি চাকরি থেকে অবসরে গিয়েও পেনশন সুবিধা ভোগ করা যাবে। তবে এ স্কিম থেকে বাদ পড়ছেন সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির সুবিধাপ্রাপ্ত ১ কোটি ৩৮ লাখ মানুষ। তাদের সবাই নগদ ভাতার সুবিধা পাচ্ছেন।

পেনশন স্কিমে অংশ নিতে হলে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির সুবিধা সমর্পণ করতে হবে। অন্যথায় এ স্কিমে যুক্ত হতে পারবে না। একই সঙ্গে কর্মরত সরকারি চাকরিজীবীরাও আপাতত এই কর্মসূচিতে অংশ নিতে পারছেন না। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, স্বকর্মে নিয়োজিত ও স্বল্প-আয়ের নাগরিক ও প্রবাসী বাংলাদেশিরা এতে অংশ নিতে পারবেন।

জানা যায়, বিভিন্ন ধরনের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি রয়েছে। এর মধ্যে সরকার থেকে নগদ আর্থিক সহায়তা পাচ্ছেন ১ কোটি ৩৮ লাখ মানুষ। এছাড়া খাদ্য সহায়তা পাচ্ছেন ৩ কোটি ৬৭ লাখ জন। এর বাইরে আরও বিভিন্ন ধরনের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি রয়েছে। চলতি অর্থবছরে শুধু নগদ আর্থিক সহায়তা কর্মসূচিতে বরাদ্দ আছে ৪৩ হাজার কোটি এবং খাদ্য সহায়তা কর্মসূচিতে আছে প্রায় ১৭ হাজার কোটি টাকা। এছাড়া অন্যান্য কর্মসূচিতেও বড় ধরনের বরাদ্দ আছে।

সম্প্রতি জারি হওয়া সর্বজনীন পেনশন স্কিম বিধিমালায় ধারা (৪)-এর উপধারা (৩)-এ বলা হয়েছে, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতাভুক্ত ব্যক্তিরা এই কর্মসূচিতে অংশ নিতে পারবেন। তবে শর্ত হচ্ছে-এ স্কিমে অংশ নেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির সুবিধা সমর্পণ করতে হবে।

এ প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত অর্থ বিভাগের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানান, সরকার আগামী দিনে পর্যায়ক্রমে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি থেকে বেরিয়ে আসবে। সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির চাপ তুলে দিয়ে সর্বজনীন পেনশন স্কিমে নিয়ে আসা হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচির উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

Update Time : ১২:৪৬:১৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ অগাস্ট ২০২৩

অবশেষে চালু হলো বহুল প্রতীক্ষিত সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচি।

বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা ১০ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবনে এ কর্মসূচির উদ্বোধন করেছেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন অর্থবিভাগের সিনিয়র সচিব ফাতেমা ইয়াসমিন।

জাতীয় সংসদের গত অধিবেশনে ‘সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা আইন, ২০২৩’ পাস হয়। ৩১ জানুয়ারি আইনটিতে সম্মতি দেন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। পরে ১৩ আগস্ট প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

আইন অনুযায়ী, সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচির প্রবাসী স্কিমে প্রবাসী বাংলাদেশি, প্রগতি স্কিমে বেসরকারি চাকরিজীবী, সুরক্ষা স্কিমে স্বকর্মে নিয়োজিত ব্যক্তি এবং সমতা স্কিমে স্বল্প আয়ের নাগরিকরা অংশ নেবেন। আপাতত সীমিত আকারে পেনশন কর্মসূচি চালু করা হবে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের জারি করা সর্বজনীন পেনশন স্কিম বিধিমালা অনুযায়ী, এ কর্মসূচিতে যুক্ত হলে ৬০ বছর বয়সের পর থেকে আজীবন পেনশন সুবিধা পাবেন গ্রাহক। চাঁদা পরিশোধের পর তিনি মারা গেলে তার নমিনি বা উত্তরাধিকারী পেনশন পাবেন ১৫ বছর।

শুরুতে চার শ্রেণির ব্যক্তি পেনশন কর্মসূচির আওতায় আসছেন। তারা হচ্ছেন- প্রবাসী বাংলাদেশি, বেসরকারি চাকরিজীবী, অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের কর্মী এবং অসচ্ছল ব্যক্তি। মাসিক চাঁদা ধরা হয়েছে সর্বনিম্ন ৫০০ টাকা আর সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত। তবে কর্মসূচি পরিবর্তন এবং চাঁদার পরিমাণ বাড়ানোর সুযোগ থাকছে।

পেনশন কর্তৃপক্ষের ওয়েবসাইট চালু হয়েছে গতকাল বুধবার। ওয়েবসাইটের ঠিকানা www.upension.gov.bd এতে বলা হয়েছে, ‘সর্বজনীন পেনশন স্কিমে অংশগ্রহণ করে আপনার ভবিষ্যৎ আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন।’ ওয়েবসাইটের ঠিকানায় পেনশন স্কিমগুলো সম্পর্কে প্রাথমিক তথ্য উল্লেখ করা আছে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা যা অঙ্গীকার করি সেটা রাখি। আজকে তার প্রমাণ। শুধু দলের জন্য না, আজকে বাংলাদেশের মানুষের জন্য করতে যাচ্ছি। সেটাই আমাদের জন্য আত্মতুষ্টির বিষয়।

শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের সরকারি চাকরিজীবীরা পেনশন পান। যারা চাকরি করে না তারা তো পান না। কাজেই এটা সরকারি চাকরিজীবীর জন্য নয়। যারা সরকারি চাকরি করেন, বেতন পান, তাদের জন্য এটা প্রযোজ্য হবে না। সরকারি চাকরির বাইরে যে জনগোষ্ঠী, শুধুমাত্র তাদের জন্য এই ব্যবস্থাটা আমরা করেছি। এটা করে তারা সম্মানজনকভাবে বাঁচতে পারে। যার ফলে মানুষের মধ্যে যে বৈষম্য আছে সেটাও দূর হবে।

এই পেনশন ব্যবস্থার মাধ্যমে আগামী দিনে বেসরকারি চাকরি থেকে অবসরে গিয়েও পেনশন সুবিধা ভোগ করা যাবে। তবে এ স্কিম থেকে বাদ পড়ছেন সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির সুবিধাপ্রাপ্ত ১ কোটি ৩৮ লাখ মানুষ। তাদের সবাই নগদ ভাতার সুবিধা পাচ্ছেন।

পেনশন স্কিমে অংশ নিতে হলে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির সুবিধা সমর্পণ করতে হবে। অন্যথায় এ স্কিমে যুক্ত হতে পারবে না। একই সঙ্গে কর্মরত সরকারি চাকরিজীবীরাও আপাতত এই কর্মসূচিতে অংশ নিতে পারছেন না। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, স্বকর্মে নিয়োজিত ও স্বল্প-আয়ের নাগরিক ও প্রবাসী বাংলাদেশিরা এতে অংশ নিতে পারবেন।

জানা যায়, বিভিন্ন ধরনের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি রয়েছে। এর মধ্যে সরকার থেকে নগদ আর্থিক সহায়তা পাচ্ছেন ১ কোটি ৩৮ লাখ মানুষ। এছাড়া খাদ্য সহায়তা পাচ্ছেন ৩ কোটি ৬৭ লাখ জন। এর বাইরে আরও বিভিন্ন ধরনের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি রয়েছে। চলতি অর্থবছরে শুধু নগদ আর্থিক সহায়তা কর্মসূচিতে বরাদ্দ আছে ৪৩ হাজার কোটি এবং খাদ্য সহায়তা কর্মসূচিতে আছে প্রায় ১৭ হাজার কোটি টাকা। এছাড়া অন্যান্য কর্মসূচিতেও বড় ধরনের বরাদ্দ আছে।

সম্প্রতি জারি হওয়া সর্বজনীন পেনশন স্কিম বিধিমালায় ধারা (৪)-এর উপধারা (৩)-এ বলা হয়েছে, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতাভুক্ত ব্যক্তিরা এই কর্মসূচিতে অংশ নিতে পারবেন। তবে শর্ত হচ্ছে-এ স্কিমে অংশ নেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির সুবিধা সমর্পণ করতে হবে।

এ প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত অর্থ বিভাগের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানান, সরকার আগামী দিনে পর্যায়ক্রমে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি থেকে বেরিয়ে আসবে। সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির চাপ তুলে দিয়ে সর্বজনীন পেনশন স্কিমে নিয়ে আসা হবে।