ঢাকা ০১:১০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

প্রতিদিনের যেসব ভুলে কারণে চুল পড়া বেড়ে যায়

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : ০৯:৪৯:০৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫
  • / ২২ Time View

চুল পড়া।

চুল পড়ার সমস্যায় নারী-পুরুষ সবাই ভোগেন। বিশেষ করে ঋতু পরিবর্তনের সময় চুল বেশি পড়ে। আবার অনেকের বংশগত বা হরমোনজনিত কারণে সারা বছরই চুল পড়ে।

পুষ্টিবিদরা বলছেন, দৈনন্দিন কিছু অভ্যাস ও জীবনযাপনের ধরনও চুল ঝরে পড়ার কারণ হতে পারে। জীবনযাপনের এ ছোট ছোট বিষয়গুলো সহজেই চোখ এড়িয়ে যায়। কিন্তু ধীরে ধীরে এগুলোই বড় সমস্যায় রূপ নেয়।

প্রতিদিনের যেসব অভ্যাসের কারণে চুল পড়া বেড়ে যায়

কোনো এক বেলার খাবার না খাওয়া

আজকাল কোনো এক বা দুই বেলা খাবার না খাওয়াকে অনেকে ফ্যাশনের অংশ মনে করেন। নিয়মিত খাবার না খেলে শরীর প্রয়োজনীয় পুষ্টি পায় না। এতে চুল দুর্বল হয়ে যায়। সুস্থ ও ঝলমলে চুলের জন্য স্বাস্থ্যকর ফ্যাট, প্রোটিন, আয়রন ও ভিটামিন জরুরি। শরীর পর্যাপ্ত পুষ্টি না পেলে চুল শুষ্ক ও ভঙ্গুর হয়ে যায়। এতে চুল পড়তে শুরু করে।

অপুষ্টিকর খাবার খাওয়া

অনেকেই ক্ষুধা লাগলে চিপস, মিষ্টি বা ভাজাপোড়া জাতীয় খাবার খান। এসব খাবার চুলের জন্য ভালো নয়। আবার অনেকেই পর্যাপ্ত পানি পান করেন না, ভাবেন এতে তেমন কিছু হবে না। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এর প্রভাব চুলের ওপর খুব বাজেভাবে পড়ে।

অতিরিক্ত মানসিক চাপ

যাদের জীবনে চাপ বেশি, বিশেষ করে যারা মানসিক চাপে থাকেন, তাদের চুল বেশি পড়ে। মানসিক চাপ ধীরে ধীরে শরীরে প্রভাব ফেলে এবং অনেক সময় হঠাৎ করেই চুল পড়া শুরু হয়। কেননা অতিরিক্ত মানসিক চাপের সময় শরীরে এমন হরমোন নিঃসৃত হয়, যা চুলের স্বাভাবিক বৃদ্ধিতে বাধা দেয়। আর একারণেই কোনো কঠিন সময় পার করার পর হঠাৎ চুল পড়া বেড়ে যায়।

আবার দীর্ঘদিনের মানসিক চাপ শরীরে প্রদাহ বাড়ায়। হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করে, যা সরাসরি চুলের ওপর প্রভাব ফেলে। প্রতিদিন কিছু সময় নিজের জন্য রাখা, গভীর শ্বাস নেওয়া, একটু হাঁটাহাঁটি করা বা কারও সঙ্গে কথা বলাও মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে।

অতিরিক্ত স্টাইলিং পণ্য ও রাসায়নিক ব্যবহার

অনেকেই হেয়ার ড্রায়ার দিয়ে চুল শুকান। আবার অনেকে প্রায় প্রতিদিন চুলে কার্লার ব্যবহার করেন। স্টাইলিং পণ্যের অতিরিক্ত ব্যবহার চুলকে শুষ্ক ও ক্ষতিগ্রস্ত করে। একইভাবে ব্লিচ, কালার বা পার্মের মতো রাসায়নিক ট্রিটমেন্ট চুলের স্বাভাবিক গঠন বদলে দেয়, ফলে চুল সহজেই ভেঙে যায় বা পড়ে যায়।

অতিরিক্ত বা অনিয়মিত চুল শ্যাম্পু করা

প্রতিদিন শ্যাম্পু করলে চুলের প্রাকৃতিক তেল উঠে যায়। আবার খুব কম ধুলে স্কাল্পে ময়লা, তেল ও ঘাম জমে চুলের গোড়া বন্ধ হয়ে যায়, ফলে চুল পড়ে। তাই ২–৩ দিন পরপর হালকা শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধোয়া সবচেয়ে ভালো।

ভেজা চুলে ঘুমানো

অনেকেই রাতে চুল ধুয়ে ভেজা অবস্থায় ঘুমিয়ে পড়েন। ভেজা চুল খুব দুর্বল থাকে এবং ঘুমের সময় সহজেই ভেঙে যায়। তাই এ অভ্যাস বাদ দিন। এছাড়া প্রতিদিন শক্ত করে চুল বাঁধলে চুলের গোড়ায় টান পড়ে, যাকে বলা হয় ট্র্যাকশন অ্যালোপেশিয়া। এ কারণেও চুল পড়ে।

পর্যাপ্ত পানি পান না করা

চুলের আর্দ্রতা বজায় রাখতে পানি অত্যন্ত জরুরি। শরীর পানিশূন্য হলে চুল রুক্ষ, প্রাণহীন ও ভঙ্গুর হয়ে যায়। তাই পর্যাপ্ত পানি পান করুন। শসা, পানিফল ও পানিযুক্ত যেকোনো ফল খাওয়ার চেষ্টা করুন।

পর্যাপ্ত না ঘুমানো

কম ঘুমানো বা অনিয়মিত ঘুম হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করে। এতে চুলের বৃদ্ধি ধীর হয়ে যায় এবং চুল পড়া বাড়ে। প্রতিদিন অন্তত ৭–৮ ঘণ্টা ঘুমানোর চেষ্টা করলে শরীর ভালো থাকে, আবার চুলও ভালো থাকে।

 

Please Share This Post in Your Social Media

প্রতিদিনের যেসব ভুলে কারণে চুল পড়া বেড়ে যায়

নিজস্ব প্রতিবেদক
Update Time : ০৯:৪৯:০৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫

চুল পড়ার সমস্যায় নারী-পুরুষ সবাই ভোগেন। বিশেষ করে ঋতু পরিবর্তনের সময় চুল বেশি পড়ে। আবার অনেকের বংশগত বা হরমোনজনিত কারণে সারা বছরই চুল পড়ে।

পুষ্টিবিদরা বলছেন, দৈনন্দিন কিছু অভ্যাস ও জীবনযাপনের ধরনও চুল ঝরে পড়ার কারণ হতে পারে। জীবনযাপনের এ ছোট ছোট বিষয়গুলো সহজেই চোখ এড়িয়ে যায়। কিন্তু ধীরে ধীরে এগুলোই বড় সমস্যায় রূপ নেয়।

প্রতিদিনের যেসব অভ্যাসের কারণে চুল পড়া বেড়ে যায়

কোনো এক বেলার খাবার না খাওয়া

আজকাল কোনো এক বা দুই বেলা খাবার না খাওয়াকে অনেকে ফ্যাশনের অংশ মনে করেন। নিয়মিত খাবার না খেলে শরীর প্রয়োজনীয় পুষ্টি পায় না। এতে চুল দুর্বল হয়ে যায়। সুস্থ ও ঝলমলে চুলের জন্য স্বাস্থ্যকর ফ্যাট, প্রোটিন, আয়রন ও ভিটামিন জরুরি। শরীর পর্যাপ্ত পুষ্টি না পেলে চুল শুষ্ক ও ভঙ্গুর হয়ে যায়। এতে চুল পড়তে শুরু করে।

অপুষ্টিকর খাবার খাওয়া

অনেকেই ক্ষুধা লাগলে চিপস, মিষ্টি বা ভাজাপোড়া জাতীয় খাবার খান। এসব খাবার চুলের জন্য ভালো নয়। আবার অনেকেই পর্যাপ্ত পানি পান করেন না, ভাবেন এতে তেমন কিছু হবে না। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এর প্রভাব চুলের ওপর খুব বাজেভাবে পড়ে।

অতিরিক্ত মানসিক চাপ

যাদের জীবনে চাপ বেশি, বিশেষ করে যারা মানসিক চাপে থাকেন, তাদের চুল বেশি পড়ে। মানসিক চাপ ধীরে ধীরে শরীরে প্রভাব ফেলে এবং অনেক সময় হঠাৎ করেই চুল পড়া শুরু হয়। কেননা অতিরিক্ত মানসিক চাপের সময় শরীরে এমন হরমোন নিঃসৃত হয়, যা চুলের স্বাভাবিক বৃদ্ধিতে বাধা দেয়। আর একারণেই কোনো কঠিন সময় পার করার পর হঠাৎ চুল পড়া বেড়ে যায়।

আবার দীর্ঘদিনের মানসিক চাপ শরীরে প্রদাহ বাড়ায়। হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করে, যা সরাসরি চুলের ওপর প্রভাব ফেলে। প্রতিদিন কিছু সময় নিজের জন্য রাখা, গভীর শ্বাস নেওয়া, একটু হাঁটাহাঁটি করা বা কারও সঙ্গে কথা বলাও মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে।

অতিরিক্ত স্টাইলিং পণ্য ও রাসায়নিক ব্যবহার

অনেকেই হেয়ার ড্রায়ার দিয়ে চুল শুকান। আবার অনেকে প্রায় প্রতিদিন চুলে কার্লার ব্যবহার করেন। স্টাইলিং পণ্যের অতিরিক্ত ব্যবহার চুলকে শুষ্ক ও ক্ষতিগ্রস্ত করে। একইভাবে ব্লিচ, কালার বা পার্মের মতো রাসায়নিক ট্রিটমেন্ট চুলের স্বাভাবিক গঠন বদলে দেয়, ফলে চুল সহজেই ভেঙে যায় বা পড়ে যায়।

অতিরিক্ত বা অনিয়মিত চুল শ্যাম্পু করা

প্রতিদিন শ্যাম্পু করলে চুলের প্রাকৃতিক তেল উঠে যায়। আবার খুব কম ধুলে স্কাল্পে ময়লা, তেল ও ঘাম জমে চুলের গোড়া বন্ধ হয়ে যায়, ফলে চুল পড়ে। তাই ২–৩ দিন পরপর হালকা শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধোয়া সবচেয়ে ভালো।

ভেজা চুলে ঘুমানো

অনেকেই রাতে চুল ধুয়ে ভেজা অবস্থায় ঘুমিয়ে পড়েন। ভেজা চুল খুব দুর্বল থাকে এবং ঘুমের সময় সহজেই ভেঙে যায়। তাই এ অভ্যাস বাদ দিন। এছাড়া প্রতিদিন শক্ত করে চুল বাঁধলে চুলের গোড়ায় টান পড়ে, যাকে বলা হয় ট্র্যাকশন অ্যালোপেশিয়া। এ কারণেও চুল পড়ে।

পর্যাপ্ত পানি পান না করা

চুলের আর্দ্রতা বজায় রাখতে পানি অত্যন্ত জরুরি। শরীর পানিশূন্য হলে চুল রুক্ষ, প্রাণহীন ও ভঙ্গুর হয়ে যায়। তাই পর্যাপ্ত পানি পান করুন। শসা, পানিফল ও পানিযুক্ত যেকোনো ফল খাওয়ার চেষ্টা করুন।

পর্যাপ্ত না ঘুমানো

কম ঘুমানো বা অনিয়মিত ঘুম হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করে। এতে চুলের বৃদ্ধি ধীর হয়ে যায় এবং চুল পড়া বাড়ে। প্রতিদিন অন্তত ৭–৮ ঘণ্টা ঘুমানোর চেষ্টা করলে শরীর ভালো থাকে, আবার চুলও ভালো থাকে।