ঢাকা ০১:২৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বাবা মায়ের যেসব ভুলে সন্তান একগুঁয়ে ও জেদি হয়ে ওঠে

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : ০৯:৫৮:৩১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫
  • / ২১ Time View

ছবি: সংগৃহীত

বাবা-মা সবসময় সন্তানের ভালো চান। সন্তানকে জীবনদর্শন, ভালো-মন্দ শেখানোর যথাসাধ্য চেষ্টা করেন। নিজেদেরও যথেষ্ট সংযত রাখার চেষ্টা করেন। তারপরেও বাবা-মা সন্তানের সামনে এমন কিছু আচরণ করে ফেলেন, যা সন্তানের মনের ওপর চাপ ফেলে।

অর্থাৎ বাবা-মায়ের কিছু অভ্যাস শিশুদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। আর এ কারণে অনেকের সন্তান একগুঁয়ে ও জেদি হয়। তারা অভিভাবকের কথা শোনে না, বরং বাবা-মাকে ভোগান্তিতে ফেলে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ৩ থেকে ৭ বছরের বাচ্চাদের মধ্যে জেদ সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। এই সময়ে যদি সঠিকভাবে শিশুদের লালন পালন করা না যায়, তাহলে অনেক সমস্যার সন্মুখীন হতে হয়।

দেখা যায়, সন্তান এতটাই জেদি হয় যে, কোনোভাবেই বাবা-মায়ের কথা শুনতে চায় না। কিছু না পেলেই হাত-পা ছুড়ে কান্নাকাটি করে। তাই সন্তানের সামনে বাবা মাকে এমন কোনো আচরণ করা যাবে না, যা সন্তানের মধ্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। চলুন জেনে নেওয়া যাক আপনার কোন কোন ভুলে শিশু আরও জেদি হয়ে ওঠে ও কীভাবে তার সমাধান করবেন-

অকারণে রাগারাগি

কোনো কারণ ছাড়াই রেগে যাওয়া সন্তানের জন্য খুব ক্ষতিকর হতে পারে। এতে সন্তানের তার বাবা-মায়ের প্রতি টান কমতে শুরু করে। সন্তানের ওপর ঘন ঘন রাগ দেখালে কিংবা নিজেদের মধ্যে অকারণে রাগারাগি হলে সন্তান তার চিন্তাভাবনা আপনার কাছে প্রকাশ করতে পারে না। তাই অযথা রাগারাগি করবেন না।

প্রতিটি ইচ্ছা পূরণ

অনেকে করেন, সন্তানের সব ইচ্ছা পূরণ করলেই ভালো বাবা-মা হওয়া যায়। এটা ভুল। সব ইচ্ছা সহজেই পূরণ হয়ে গেলে তারা ভাবে যা চাইবে এবং যখনই চাইবে তখনই পাবে। এতে ধীরে ধীরে সে একগুঁয়ে হয়ে ওঠে। এই ধরনের শিশুরা অন্যদের সমস্যা বুঝতে পারে না এবং তাদের বক্তব্য তুলে ধরার জন্য যেকোনো কিছু করতে পারে।

সবার সামনে সমালোচনা করা

প্রত্যেক শিশুরই আত্মসম্মান জ্ঞান থাকে। তাই সবার সামনে সন্তানের নিন্দা করা, অন্যের সঙ্গে তুলনা করার মত কাজ করা যাবে না। যদি করেন তাহলে সন্তানের মনে প্রভাব পড়বে এবং সে ধীরে ধীরে জেদি হয়ে ওঠবে।

ভুল উপেক্ষা করা

যখন শিশুরা ভুল করে এবং বাবা-মা তা উপেক্ষা করে, তখন শিশুটি মনে করে যে তাদের ভুলের কোনো পরিণতি বা শাস্তি হবে না। এটি শিশুর আচরণের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। তাই বাবা-মায়ের উচিত সন্তানের ভুল সংশোধন করার চেষ্টা করা।

মারধর করা

অনেক সময় সন্তান ভুল করলে বাবা-মা মারধর করেন। এটি শিশুর আত্মবিশ্বাসের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। মারধরের কারণে শিশুরা একগুঁয়ে হয়ে উঠতে শুরু করে। তাই সন্তান ভুল করলে শান্ত ও সচেতন থাকুন। শিশু বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, শিশুদের শেখানো উচিত কীভাবে সৌজন্য প্রকাশ করতে হয়। তাকে কেউ কিছু দিলে ধন্যবাদ জানাতে শেখাতে হবে। এতে আপনার সন্তান অনেকটাই শোধরাবে।

একঘেয়েমি

আপনি যদি সারাদিন শিশুর সামনে একই বিষয় নিয়ে কথা বলেন তাহলে সে বিরক্ত হয়ে যাবে ও আরও জেদি হয়ে উঠবে। তাই একই বিষয় নিয়ে শিশুকে বারবার জেরা করবেন না, তাহলে তাদের মেজাজ নষ্ট হতে পারে।

বাড়ির পরিবেশ

যদি আপনার বাড়িতে নেতিবাচক পরিবেশ থাকে ও সারাক্ষণ মারামারি, ঝগড়া বা উত্তেজনা দেখা দেয়, তাহলে তার প্রত্যক্ষ প্রভাব শিশুর ওপরও পড়ে।এ ধরনের শিশুরা ঘরের বাইরেও রাগ করে থাকে এমনকি মানুষের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করতে পারে।

বাবা-মায়ের আচরণ

যদি বাবা-মায়েরা একে অপরের সঙ্গে সম্মান দিয়ে কথা বলে ও শিশুদের সামনে একে অপরের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার না করে তাহলে শিশুর ব্যক্তিত্বেও ভালো প্রভাব পড়ে।যখন কোনো অভিভাবক তাদের সন্তানদের একে অপরের সঙ্গে তুলনা করে, তখন সন্তানের মনে রাগ-ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।

নেতিবাচক কথা বলা

আপনি যদি সব সময় সবার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন তাহলে শিশুর মনে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। ফলে শিশুও সবার বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে অভ্যস্ত হয়ে পড়ে।

Please Share This Post in Your Social Media

বাবা মায়ের যেসব ভুলে সন্তান একগুঁয়ে ও জেদি হয়ে ওঠে

নিজস্ব প্রতিবেদক
Update Time : ০৯:৫৮:৩১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫

বাবা-মা সবসময় সন্তানের ভালো চান। সন্তানকে জীবনদর্শন, ভালো-মন্দ শেখানোর যথাসাধ্য চেষ্টা করেন। নিজেদেরও যথেষ্ট সংযত রাখার চেষ্টা করেন। তারপরেও বাবা-মা সন্তানের সামনে এমন কিছু আচরণ করে ফেলেন, যা সন্তানের মনের ওপর চাপ ফেলে।

অর্থাৎ বাবা-মায়ের কিছু অভ্যাস শিশুদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। আর এ কারণে অনেকের সন্তান একগুঁয়ে ও জেদি হয়। তারা অভিভাবকের কথা শোনে না, বরং বাবা-মাকে ভোগান্তিতে ফেলে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ৩ থেকে ৭ বছরের বাচ্চাদের মধ্যে জেদ সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। এই সময়ে যদি সঠিকভাবে শিশুদের লালন পালন করা না যায়, তাহলে অনেক সমস্যার সন্মুখীন হতে হয়।

দেখা যায়, সন্তান এতটাই জেদি হয় যে, কোনোভাবেই বাবা-মায়ের কথা শুনতে চায় না। কিছু না পেলেই হাত-পা ছুড়ে কান্নাকাটি করে। তাই সন্তানের সামনে বাবা মাকে এমন কোনো আচরণ করা যাবে না, যা সন্তানের মধ্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। চলুন জেনে নেওয়া যাক আপনার কোন কোন ভুলে শিশু আরও জেদি হয়ে ওঠে ও কীভাবে তার সমাধান করবেন-

অকারণে রাগারাগি

কোনো কারণ ছাড়াই রেগে যাওয়া সন্তানের জন্য খুব ক্ষতিকর হতে পারে। এতে সন্তানের তার বাবা-মায়ের প্রতি টান কমতে শুরু করে। সন্তানের ওপর ঘন ঘন রাগ দেখালে কিংবা নিজেদের মধ্যে অকারণে রাগারাগি হলে সন্তান তার চিন্তাভাবনা আপনার কাছে প্রকাশ করতে পারে না। তাই অযথা রাগারাগি করবেন না।

প্রতিটি ইচ্ছা পূরণ

অনেকে করেন, সন্তানের সব ইচ্ছা পূরণ করলেই ভালো বাবা-মা হওয়া যায়। এটা ভুল। সব ইচ্ছা সহজেই পূরণ হয়ে গেলে তারা ভাবে যা চাইবে এবং যখনই চাইবে তখনই পাবে। এতে ধীরে ধীরে সে একগুঁয়ে হয়ে ওঠে। এই ধরনের শিশুরা অন্যদের সমস্যা বুঝতে পারে না এবং তাদের বক্তব্য তুলে ধরার জন্য যেকোনো কিছু করতে পারে।

সবার সামনে সমালোচনা করা

প্রত্যেক শিশুরই আত্মসম্মান জ্ঞান থাকে। তাই সবার সামনে সন্তানের নিন্দা করা, অন্যের সঙ্গে তুলনা করার মত কাজ করা যাবে না। যদি করেন তাহলে সন্তানের মনে প্রভাব পড়বে এবং সে ধীরে ধীরে জেদি হয়ে ওঠবে।

ভুল উপেক্ষা করা

যখন শিশুরা ভুল করে এবং বাবা-মা তা উপেক্ষা করে, তখন শিশুটি মনে করে যে তাদের ভুলের কোনো পরিণতি বা শাস্তি হবে না। এটি শিশুর আচরণের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। তাই বাবা-মায়ের উচিত সন্তানের ভুল সংশোধন করার চেষ্টা করা।

মারধর করা

অনেক সময় সন্তান ভুল করলে বাবা-মা মারধর করেন। এটি শিশুর আত্মবিশ্বাসের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। মারধরের কারণে শিশুরা একগুঁয়ে হয়ে উঠতে শুরু করে। তাই সন্তান ভুল করলে শান্ত ও সচেতন থাকুন। শিশু বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, শিশুদের শেখানো উচিত কীভাবে সৌজন্য প্রকাশ করতে হয়। তাকে কেউ কিছু দিলে ধন্যবাদ জানাতে শেখাতে হবে। এতে আপনার সন্তান অনেকটাই শোধরাবে।

একঘেয়েমি

আপনি যদি সারাদিন শিশুর সামনে একই বিষয় নিয়ে কথা বলেন তাহলে সে বিরক্ত হয়ে যাবে ও আরও জেদি হয়ে উঠবে। তাই একই বিষয় নিয়ে শিশুকে বারবার জেরা করবেন না, তাহলে তাদের মেজাজ নষ্ট হতে পারে।

বাড়ির পরিবেশ

যদি আপনার বাড়িতে নেতিবাচক পরিবেশ থাকে ও সারাক্ষণ মারামারি, ঝগড়া বা উত্তেজনা দেখা দেয়, তাহলে তার প্রত্যক্ষ প্রভাব শিশুর ওপরও পড়ে।এ ধরনের শিশুরা ঘরের বাইরেও রাগ করে থাকে এমনকি মানুষের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করতে পারে।

বাবা-মায়ের আচরণ

যদি বাবা-মায়েরা একে অপরের সঙ্গে সম্মান দিয়ে কথা বলে ও শিশুদের সামনে একে অপরের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার না করে তাহলে শিশুর ব্যক্তিত্বেও ভালো প্রভাব পড়ে।যখন কোনো অভিভাবক তাদের সন্তানদের একে অপরের সঙ্গে তুলনা করে, তখন সন্তানের মনে রাগ-ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।

নেতিবাচক কথা বলা

আপনি যদি সব সময় সবার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন তাহলে শিশুর মনে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। ফলে শিশুও সবার বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে অভ্যস্ত হয়ে পড়ে।