ঢাকা ০৩:৩৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ৭ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পাঁচ মাসে রাজস্ব ঘাটতি ২৪ হাজার কোটি টাকা

বানিজ্য ডেস্ক
  • Update Time : ১২:৩২:০৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৫
  • / ১৬ Time View

রাজস্ব ভবন। ছবি : সংগৃহীত

দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) রাজস্ব ঘাটতি প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে। রাজস্ব আহরণে ধ্বস নেমে এসেছে আয়কর ও শুল্ক-কর আদায়েও। আর্ন্তজাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) রাজস্ব বাড়ানোর চাপের মধ্যে চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে রাজস্ব ঘাটতির পরিমাণ দাড়িয়েছে ২৪ হাজার ৪৭ কোটি টাকা।

আর এই রাজস্ব ঘাটতির অর্ধেক আয়কর খাতে। এছাড়া শুল্ক-করেও রাজস্ব ঘাটতি আট হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। যদিও গত অর্থবছরের রাজস্ব আহরণের তুলনায় রাজস্ব আহরণ কিছুটা বেড়েছে।

এনবিআরের রাজস্ব আহরণের সর্বশেষ প্রকাশিত তথ্য পর্যালোচনায় দেখা গেছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম ৫ মাসে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লাখ ৭৩ হাজার ২৩ কোটি টাকা। আলোচ্য সময়ে রাজস্ব আদায় হয়েছে ১ লাখ ৪৮ হাজার ৯৭৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ অর্থবছরের প্রথম ৫ মাসে রাজস্ব ঘাটতির পরিমাণ দাড়িয়েছে ২৪ হাজার ৪৭ কোটি টাকা। রাজস্ব আহরণে এনবিআরের তিনটি অনুবিভাগের মধ্যে সবচেয়ে পিছিয়ে রয়েছে আয়কর ও ভ্রমণ কর খাত। এই খাতে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫৯ হাজার ৯৯৫ কোটি টাকা।

আলোচ্য সময়ে এনবিআরের আয়কর বিভাগ আদায় করেছে ৪৭ হাজা ৮৮১ কোটি টাকা। অর্থাৎ আয়কর খাতে রাজস্ব ঘাটতির পরিমাণ দাড়িয়েছে খাতে ১২ হাজার ১১৪ কোটি টাকা। যদিও এনবিআরের হিসেবে অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে আয়কর খাতে প্রবৃদ্ধি ১৫ দশমিক ১৫ শতাংশ।

এছাড়া বেশি পরিমাণে ঘাটতির মুখে দাড়িয়েছে শুল্ক খাত। এই খাতে অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫০ হাজার ৯৭৯ কোটি টাকা। আলোচ্য সময়ে শুল্ক-কর আদায় হয়েছে ৪২ হাজার ৮৬৪ কোটি টাকা। অর্থাৎ চলতি অর্থবছরের ৫ মাসে রাজস্ব ঘাটতি দাড়িয়েছে কাস্টমস ৮ হাজার ১১৫ কোটি টাকা। আর শুল্ক খাতের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫ দশমিক ২৮ শতাংশ।

এনবিআর কর্মকর্তারা বলছেন, নিত্যপণ্যের দাম বাড়তি থাকার কারণে ভ্যাট আদায় সন্তোষজনক হলেও আয়কর এবং শুল্ক খাতে রাজস্ব আহরণ পরিস্থিতি খুবই নাজুক। দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় বিদেশি বিনিয়োগ এবং শিল্পায়নে ধীরগতি চলছে। এছাড়া অভ্যন্তরীণ সমস্যা তো আছেই। সব মিলে রাজস্ব আহরণ বাড়াতে ভ্যাটের মতো নতুন নতুন উদ্যোগ নিতে হবে বলেও জানান কর্মকর্তারা।

এনবিআর সূত্র জানায়, ভ্যাটের সিংহভাগ আসে সাধারণত আসে ভোক্তা থেকে। পণ্যে বাড়তি দাম থাকলে ভ্যাট আদায় একটু বাড়বে এটা স্বাভাবিক। তবুও চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে ভ্যাট আদায়ে রাজস্ব ঘাটতি আগের মাসের তুলনায় বেড়েছে। আলোচ্য সময়ে ভ্যাট আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬২ হাজার ৪৮ কোটি টাকা।

এই সময়ে ভ্যাট আদায় হয়েছে ৫৮ হাজার ২৩১ কোটি টাকা। অর্থাৎ চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে ভ্যাট আদায়ে ঘাটতির পরিমাণ দাড়িয়েছে ৩ হাজার ৮১৭ কোটি টাকা। যদিও আলোচ্য সময়ে ভ্যাট আদায়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২১ দশমিক ৯৭ শতাংশ।

Please Share This Post in Your Social Media

পাঁচ মাসে রাজস্ব ঘাটতি ২৪ হাজার কোটি টাকা

বানিজ্য ডেস্ক
Update Time : ১২:৩২:০৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৫

দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) রাজস্ব ঘাটতি প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে। রাজস্ব আহরণে ধ্বস নেমে এসেছে আয়কর ও শুল্ক-কর আদায়েও। আর্ন্তজাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) রাজস্ব বাড়ানোর চাপের মধ্যে চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে রাজস্ব ঘাটতির পরিমাণ দাড়িয়েছে ২৪ হাজার ৪৭ কোটি টাকা।

আর এই রাজস্ব ঘাটতির অর্ধেক আয়কর খাতে। এছাড়া শুল্ক-করেও রাজস্ব ঘাটতি আট হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। যদিও গত অর্থবছরের রাজস্ব আহরণের তুলনায় রাজস্ব আহরণ কিছুটা বেড়েছে।

এনবিআরের রাজস্ব আহরণের সর্বশেষ প্রকাশিত তথ্য পর্যালোচনায় দেখা গেছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম ৫ মাসে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লাখ ৭৩ হাজার ২৩ কোটি টাকা। আলোচ্য সময়ে রাজস্ব আদায় হয়েছে ১ লাখ ৪৮ হাজার ৯৭৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ অর্থবছরের প্রথম ৫ মাসে রাজস্ব ঘাটতির পরিমাণ দাড়িয়েছে ২৪ হাজার ৪৭ কোটি টাকা। রাজস্ব আহরণে এনবিআরের তিনটি অনুবিভাগের মধ্যে সবচেয়ে পিছিয়ে রয়েছে আয়কর ও ভ্রমণ কর খাত। এই খাতে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫৯ হাজার ৯৯৫ কোটি টাকা।

আলোচ্য সময়ে এনবিআরের আয়কর বিভাগ আদায় করেছে ৪৭ হাজা ৮৮১ কোটি টাকা। অর্থাৎ আয়কর খাতে রাজস্ব ঘাটতির পরিমাণ দাড়িয়েছে খাতে ১২ হাজার ১১৪ কোটি টাকা। যদিও এনবিআরের হিসেবে অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে আয়কর খাতে প্রবৃদ্ধি ১৫ দশমিক ১৫ শতাংশ।

এছাড়া বেশি পরিমাণে ঘাটতির মুখে দাড়িয়েছে শুল্ক খাত। এই খাতে অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫০ হাজার ৯৭৯ কোটি টাকা। আলোচ্য সময়ে শুল্ক-কর আদায় হয়েছে ৪২ হাজার ৮৬৪ কোটি টাকা। অর্থাৎ চলতি অর্থবছরের ৫ মাসে রাজস্ব ঘাটতি দাড়িয়েছে কাস্টমস ৮ হাজার ১১৫ কোটি টাকা। আর শুল্ক খাতের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫ দশমিক ২৮ শতাংশ।

এনবিআর কর্মকর্তারা বলছেন, নিত্যপণ্যের দাম বাড়তি থাকার কারণে ভ্যাট আদায় সন্তোষজনক হলেও আয়কর এবং শুল্ক খাতে রাজস্ব আহরণ পরিস্থিতি খুবই নাজুক। দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় বিদেশি বিনিয়োগ এবং শিল্পায়নে ধীরগতি চলছে। এছাড়া অভ্যন্তরীণ সমস্যা তো আছেই। সব মিলে রাজস্ব আহরণ বাড়াতে ভ্যাটের মতো নতুন নতুন উদ্যোগ নিতে হবে বলেও জানান কর্মকর্তারা।

এনবিআর সূত্র জানায়, ভ্যাটের সিংহভাগ আসে সাধারণত আসে ভোক্তা থেকে। পণ্যে বাড়তি দাম থাকলে ভ্যাট আদায় একটু বাড়বে এটা স্বাভাবিক। তবুও চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে ভ্যাট আদায়ে রাজস্ব ঘাটতি আগের মাসের তুলনায় বেড়েছে। আলোচ্য সময়ে ভ্যাট আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬২ হাজার ৪৮ কোটি টাকা।

এই সময়ে ভ্যাট আদায় হয়েছে ৫৮ হাজার ২৩১ কোটি টাকা। অর্থাৎ চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে ভ্যাট আদায়ে ঘাটতির পরিমাণ দাড়িয়েছে ৩ হাজার ৮১৭ কোটি টাকা। যদিও আলোচ্য সময়ে ভ্যাট আদায়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২১ দশমিক ৯৭ শতাংশ।