ঢাকা ০৩:৪৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ইতিহাসের দ্বিতীয় বা তৃতীয় উষ্ণ বছর হতে যাচ্ছে ২০২৫ সাল

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • Update Time : ০৬:২৪:৩৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৫
  • / ২৪ Time View

প্রতীকী ছবি।

চলতি বছর (২০২৫ সাল) বিশ্ব ইতিহাসে দ্বিতীয় বা তৃতীয় সর্বোচ্চ উষ্ণ বছর হতে যাচ্ছে। সম্ভবত ২০২৪ সাল উষ্ণতার রেকর্ডটি এযাবৎকালে সর্বোচ্চ হওয়ার স্থান ধরে রাখবে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের কোপার্নিকাস ক্লাইমেট চেঞ্জ সার্ভিসের (সিথ্রিএস) বিজ্ঞানীরা গতকাল মঙ্গলবার এমন আভাস দিয়েছেন। গত মাসে অনুষ্ঠিত কপ৩০ জলবায়ু সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী দেশগুলো গ্রিনহাউস গ্যাসের নিঃসরণ কমানোর বিষয়ে উল্লেখজনক কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেনি। এর মধ্য দিয়ে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার ক্ষেত্রে ভূরাজনৈতিক টানাপোড়েন আরও স্পষ্ট হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র জলবায়ুবিষয়ক উদ্যোগ কমিয়ে আনতে চাইছে এবং কয়েকটি দেশ কার্বন ডাই–অক্সাইডের নিঃসরণ কমানোর বিধিমালা দুর্বল করার চেষ্টায় আছে।

সিথ্রিএস মাসিক বুলেটিনে বলেছে, সম্ভবত চলতি বছরও বৈশ্বিক গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধির হার শিল্পপূর্ব যুগের (১৮৫০–১৯০০) তুলনায় ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি হতে পারে। এর মধ্য দিয়ে প্রথমবারের মতো টানা তিন বছর এমন প্রবণতা দেখা যাবে।

সিথ্রিএসের জলবায়ু কৌশলবিষয়ক প্রধান সামান্থা বার্জেস বলেন, এ মাইলফলকগুলো বিমূর্ত কিছু নয়। এগুলোর মধ্য দিয়ে বোঝা যাচ্ছে যে কত দ্রুত জলবায়ুর পরিবর্তন হচ্ছে।

চলতি বছরও বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে আবহাওয়া চরমভাবাপন্ন থাকতে দেখা গেছে। গত মাসে ফিলিপাইনে ঘূর্ণিঝড় কালমায়েগির কারণে ২০০–এর বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। স্পেনে গত ৩০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ দাবানলের ঘটনা ঘটেছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণেই এমন আবহাওয়ার ঝুঁকি আরও বেড়েছে।

গত বছর, অর্থাৎ ২০২৪ সাল ছিল পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে উষ্ণ বছর। প্রাকৃতিক কারণে বছর বছর তাপমাত্রা কিছুটা ওঠানামা করলেও বিজ্ঞানীরা দীর্ঘদিন ধরে উষ্ণতা বৃদ্ধির প্রবণতা দেখছেন। তাঁরা নিশ্চিত করেছেন যে এ উষ্ণতার প্রধান কারণ জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ানো থেকে তৈরি হওয়া গ্রিনহাউস গ্যাস।

বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা বলেছে, বৈশ্বিক তাপমাত্রার নথিভুক্তি শুরু করার পর থেকে করা হিসাব অনুসারে, বিশ্বে গত ১০টি বছরই ছিল সবচেয়ে উষ্ণ।

২০১৫ সালের প্যারিস চুক্তিতে অংশগ্রহণকারী দেশগুলো বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির হার ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস সীমার মধ্যে রাখার ব্যাপারে সম্মত হয়েছিল। এতে উষ্ণতা বৃদ্ধির সবচেয়ে ভয়াবহ প্রভাবগুলো এড়ানো যায়।

জাতিসংঘ চলতি বছর বলেছে, তাপমাত্রা বৃদ্ধির হার ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে সীমিত রাখার লক্ষ্যটি আর বাস্তবে পূরণ করা সম্ভব নয়। দেশগুলোকে দ্রুত কার্বন নিঃসরণ কমানোর আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ, যেন এ লক্ষ্য কিছুটা অতিক্রম করলেও ক্ষতি সীমিত রাখা যায়।

Please Share This Post in Your Social Media

ইতিহাসের দ্বিতীয় বা তৃতীয় উষ্ণ বছর হতে যাচ্ছে ২০২৫ সাল

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
Update Time : ০৬:২৪:৩৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৫

চলতি বছর (২০২৫ সাল) বিশ্ব ইতিহাসে দ্বিতীয় বা তৃতীয় সর্বোচ্চ উষ্ণ বছর হতে যাচ্ছে। সম্ভবত ২০২৪ সাল উষ্ণতার রেকর্ডটি এযাবৎকালে সর্বোচ্চ হওয়ার স্থান ধরে রাখবে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের কোপার্নিকাস ক্লাইমেট চেঞ্জ সার্ভিসের (সিথ্রিএস) বিজ্ঞানীরা গতকাল মঙ্গলবার এমন আভাস দিয়েছেন। গত মাসে অনুষ্ঠিত কপ৩০ জলবায়ু সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী দেশগুলো গ্রিনহাউস গ্যাসের নিঃসরণ কমানোর বিষয়ে উল্লেখজনক কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেনি। এর মধ্য দিয়ে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার ক্ষেত্রে ভূরাজনৈতিক টানাপোড়েন আরও স্পষ্ট হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র জলবায়ুবিষয়ক উদ্যোগ কমিয়ে আনতে চাইছে এবং কয়েকটি দেশ কার্বন ডাই–অক্সাইডের নিঃসরণ কমানোর বিধিমালা দুর্বল করার চেষ্টায় আছে।

সিথ্রিএস মাসিক বুলেটিনে বলেছে, সম্ভবত চলতি বছরও বৈশ্বিক গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধির হার শিল্পপূর্ব যুগের (১৮৫০–১৯০০) তুলনায় ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি হতে পারে। এর মধ্য দিয়ে প্রথমবারের মতো টানা তিন বছর এমন প্রবণতা দেখা যাবে।

সিথ্রিএসের জলবায়ু কৌশলবিষয়ক প্রধান সামান্থা বার্জেস বলেন, এ মাইলফলকগুলো বিমূর্ত কিছু নয়। এগুলোর মধ্য দিয়ে বোঝা যাচ্ছে যে কত দ্রুত জলবায়ুর পরিবর্তন হচ্ছে।

চলতি বছরও বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে আবহাওয়া চরমভাবাপন্ন থাকতে দেখা গেছে। গত মাসে ফিলিপাইনে ঘূর্ণিঝড় কালমায়েগির কারণে ২০০–এর বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। স্পেনে গত ৩০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ দাবানলের ঘটনা ঘটেছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণেই এমন আবহাওয়ার ঝুঁকি আরও বেড়েছে।

গত বছর, অর্থাৎ ২০২৪ সাল ছিল পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে উষ্ণ বছর। প্রাকৃতিক কারণে বছর বছর তাপমাত্রা কিছুটা ওঠানামা করলেও বিজ্ঞানীরা দীর্ঘদিন ধরে উষ্ণতা বৃদ্ধির প্রবণতা দেখছেন। তাঁরা নিশ্চিত করেছেন যে এ উষ্ণতার প্রধান কারণ জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ানো থেকে তৈরি হওয়া গ্রিনহাউস গ্যাস।

বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা বলেছে, বৈশ্বিক তাপমাত্রার নথিভুক্তি শুরু করার পর থেকে করা হিসাব অনুসারে, বিশ্বে গত ১০টি বছরই ছিল সবচেয়ে উষ্ণ।

২০১৫ সালের প্যারিস চুক্তিতে অংশগ্রহণকারী দেশগুলো বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির হার ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস সীমার মধ্যে রাখার ব্যাপারে সম্মত হয়েছিল। এতে উষ্ণতা বৃদ্ধির সবচেয়ে ভয়াবহ প্রভাবগুলো এড়ানো যায়।

জাতিসংঘ চলতি বছর বলেছে, তাপমাত্রা বৃদ্ধির হার ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে সীমিত রাখার লক্ষ্যটি আর বাস্তবে পূরণ করা সম্ভব নয়। দেশগুলোকে দ্রুত কার্বন নিঃসরণ কমানোর আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ, যেন এ লক্ষ্য কিছুটা অতিক্রম করলেও ক্ষতি সীমিত রাখা যায়।