শহীদ জায়া অধ্যাপক পান্না কায়সার আর নেই
- Update Time : ১০:০৫:২১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৪ অগাস্ট ২০২৩
- / ৪৯৫ Time View
শহীদ বুদ্ধিজীবী শহীদুল্লাহ কায়সারে স্ত্রী অধ্যাপক পান্না কায়সার আর নেই। তিনি অভিনেত্রী শমী কায়সারের মা। এছাড়া পান্না কায়সার বাংলাদেশের একজন ঔপন্যাসিক, গবেষক, সাবেক সংসদ সদস্য ও বরেণ্য লেখক এবং গবেষক । তার মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শোক জানিয়েছেন।
রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় শুক্রবার ৪ আগস্ট সকাল ৮টায় মারা যান তিনি। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৩ বছর।
শহীদজায়া অধ্যাপক পান্না কায়সারের প্রথম জানাজা শুক্রবার ৪ আগস্ট বাদ জুমা রাজধানীর গুলশানের আজাদ মসজিদে অনুষ্ঠিত হয়েছে। জানাজা শেষে বেলা পৌনে ৩টার দিকে পান্না কায়সারের মরদেহ রাজধানীর নিউ ইস্কাটনের গাউস নগর আবাসিক এলাকার বাসায় নেওয়া হয়। সেখানে জাতীয় শিশু-কিশোর সংগঠন খেলাঘর আসরের পক্ষ থেকে তার প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়। এছাড়া সাহিত্যিক, শিল্পী, প্রকাশকসহ সামাজিক-সাংস্কৃতিক অঙ্গনের ব্যক্তিরা তার প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
এরপর বাদ আসর নিউ ইস্কাটনের বাসার সামনে পান্না কায়সারের দ্বিতীয় জানাজা শেষে তার মরদেহ বারডেম হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হবে।
পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য রবিবার ৬ আগস্ট বেলা ১১টায় পান্না কায়সারের মরদেহ রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেওয়া হবে। দুপুর একটা পর্যন্ত তার প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হবে। বাদ জোহর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে তার তৃতীয় জানাজা হবে। পরে তাকে রাজধানীর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করা হবে।
মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিকাশ, অসাম্প্রদায়িক সমাজ বিনির্মাণে শহীদ জায়া অধ্যাপক পান্না কায়সারের অবদান অপরিসীম। তিনি ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় নতুন প্রজন্ম গড়ে তোলা’ খেলাঘরের মাধ্যমে এই শ্লোগান সারাদেশের শিশু কিশোর থেকে শুরু করে সকলের মধ্যে ছড়িয়ে দিয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় লালিত দেশের বৃহত্তম শিশু-কিশোর সংগঠন ‘খেলাঘর’ এর সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য হন ১৯৭৩ সালে। ১৯৯০ সালে তিনি এ সংগঠনের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারেও সাহসী ভূমিকা পালন করেছেন তিনি।
পান্না কায়সার ১৯৫০ সালের ২৫ মে কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার পয়ালগাছা চৌধুরী বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তার আরেক নাম সাইফুন্নাহার চৌধুরী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের স্নাতকোত্তর করা এই শহীদ জায়া শিক্ষকতা করেছেন বেগম বদরুন্নেসা কলেজে। ১৯৬৯ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি শহীদুল্লা কায়সারের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। সেদিন ঢাকা শহরে কারফিউ ছিল। পুরো দেশ তখন গণআন্দোলনে উত্তাল।
১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় আলবদর বাহিনীর সদস্যরা শহীদুল্লা কায়সারকে তার বাসা থেকে ধরে নিয়ে যায়। তারপর তিনি আর ফেরেননি। এরপর পান্না কায়সার একা হাতে বড় করে তোলেন তার দুই সন্তান শমী কায়সার ও অমিতাভ কায়সারকে।
পান্না কায়সার ১৯৯৬-২০০১ সালের জাতীয় সংসদে আওয়ামী লীগের সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন।
তিনি মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক গবেষণায় ২০২১ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেন।



















































































































































































