ঢাকা ০৫:১২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
এমএলএস কাপ শিরোপা জয়

মেসি জাদুতে রাতারাতি বদলে গেল মায়ামি

স্পো্টর্স ডেস্ক
  • Update Time : ০১:৪৮:৫৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ৭ ডিসেম্বর ২০২৫
  • / ৪৪ Time View

লিওনেল মেসি

লিওনেল মেসি যখন মেজর লিগ সকারে (এমএলএস) যোগ দেন, তখন ঠিক তলানিতে ছিল ইন্টার মায়ামি। তার আবির্ভাবে রাতারাতি বদলে যেতে থাকে দলটি। প্রথম মৌসুমেই জিতে নেয় লিগস কাপ। এরপর সাপোর্টার্স শিল্ড জয়ের পর এবার জিতে নেয় ইস্টার্ন কনফারেন্সের শিরোপা। কিন্তু তাতেও যেন পূর্ণতা পাচ্ছিল না ঠিকঠাক। এবার দলটি জিতে নিল এমএলএস কাপও। শনিবার চেজ স্টেডিয়ামে ফাইনালে ভ্যানকুভার হোয়াইটক্যাপসকে ৩–১ ব্যবধানে হারিয়ে নিজেদের ক্লাব ইতিহাসে প্রথমবারের মতো মায়ামি জিতল এমএলএস কাপ।

গোল না করেও ফাইনালের সবচেয়ে বড় নায়ক ছিলেন লিওনেল মেসি। মায়ামির তিনটি গোলের জন্মই এসেছে তার সৃষ্ট মুহূর্ত থেকে। ম্যাচের শুরুতে মাত্র আট মিনিটেই মধ্যমাঠে বল পেয়ে দুই ডিফেন্ডারকে পাশ কাটিয়ে মেসি একটি নিখুঁত চিপ পাস বাড়ান তাদেও আলেন্দের দিকে। ডান দিক দিয়ে ঢুকে আলেন্দে ক্রস করেন, যা ভুলবশত নিজেদের জালেই পাঠিয়ে বসেন এডিয়ার ওকাম্পো।

সেই অদ্ভুত আত্মঘাতী গোলেই ম্যাচে এগিয়ে যায় মায়ামি। এগিয়ে যাওয়ার পর অবশ্য আধিপত্য ধরে রাখতে পারেনি মায়ামি। সমতায় ফিরতে দারুণ চেপে ধরে ভ্যানকুভার। দ্বিতীয়ার্ধে সমতাও ফেরায়। ব্রায়ান হোয়াইটের দারুণ সহায়তায় আলি আহমেদের গোল ভ্যানকুভারকে ম্যাচে ফিরিয়ে আনে। এরপর আরও চেপে ধরে দলটি। ৬২ মিনিটে এম্যানুয়েল সাব্বি অবিশ্বাস্য এক সুযোগ পান। তার শট এক পোস্টে লেগে গোললাইনের অল্প দূরত্বে গড়িয়ে অন্য পোস্টে লাগে, ফিরে এসে শট নিলে আবারও পোস্টে ঠেকে বেরিয়ে যায়। তিনবার পোস্টে লেগে গোল না হওয়া সেই মুহূর্তই যেন ভ্যানকুভারের ভাগ্যরেখা আঁকছিল।

ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট এরপরই আসে। ভ্যানকুভারের আন্দ্রেস কুবাস এক মুহূর্ত দেরি করায় তার কাছ থেকে বল ছিনিয়ে নেন মেসি, যা আসলে তার প্রেসিং দক্ষতার দারুণ উদাহরণ। বলটি কাড়ার পরই মেসি নিখুঁতভাবে পাস বাড়ান রদ্রিগো ডি পলের দিকে। ডি পল শান্ত মাথায় ইয়োইহে তাকাওকাকে পরাস্ত করে বল জালে জড়ান, আর সেই গোলেই তৈরি হয় মায়ামির ইতিহাস।

শেষভাগে যোগ করা সময়ে মেসি আবারও আলেন্দেকে এক অনবদ্য পাস বাড়িয়ে দেন, যেটি থেকে আসে আলেন্দের রেকর্ড নবম গোল। এই প্লে-অফে ছয় ম্যাচে মেসির অবদান দাঁড়ায় ১৫ গোল, যার মধ্যে ৬টি গোল, ৯টি অ্যাসিস্ট। শিরোপা জয়ের এ ম্যাচটি ছিল আরেক বিশেষ উপলক্ষ। বার্সেলোনার দুই কিংবদন্তি জর্দি আলবা ও সের্জিও বুসকেতসের ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ। আলবা, যিনি বার্সায় ১১ মৌসুমে ছয় লা লিগা, একটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ এবং স্পেনের হয়ে ইউরো ২০১২ জিতেছেন, বিদায় নিলেন ফুটবল ইতিহাসের অন্যতম সেরা লেফট-ব্যাক হিসেবে।

বুসকেতস বার্সার হয়ে ৭২২ ম্যাচ, ৩২টি ট্রফি আর স্পেনের হয়ে বিশ্বকাপ ও ইউরো জয়ী এক মহীরুহ, শেষ করলেন তার বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারও। দুজনেই নিজেদের পজিশনে ফুটবল বদলে দেওয়ার মতো প্রভাব রেখেছেন।

Please Share This Post in Your Social Media

এমএলএস কাপ শিরোপা জয়

মেসি জাদুতে রাতারাতি বদলে গেল মায়ামি

স্পো্টর্স ডেস্ক
Update Time : ০১:৪৮:৫৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ৭ ডিসেম্বর ২০২৫

লিওনেল মেসি যখন মেজর লিগ সকারে (এমএলএস) যোগ দেন, তখন ঠিক তলানিতে ছিল ইন্টার মায়ামি। তার আবির্ভাবে রাতারাতি বদলে যেতে থাকে দলটি। প্রথম মৌসুমেই জিতে নেয় লিগস কাপ। এরপর সাপোর্টার্স শিল্ড জয়ের পর এবার জিতে নেয় ইস্টার্ন কনফারেন্সের শিরোপা। কিন্তু তাতেও যেন পূর্ণতা পাচ্ছিল না ঠিকঠাক। এবার দলটি জিতে নিল এমএলএস কাপও। শনিবার চেজ স্টেডিয়ামে ফাইনালে ভ্যানকুভার হোয়াইটক্যাপসকে ৩–১ ব্যবধানে হারিয়ে নিজেদের ক্লাব ইতিহাসে প্রথমবারের মতো মায়ামি জিতল এমএলএস কাপ।

গোল না করেও ফাইনালের সবচেয়ে বড় নায়ক ছিলেন লিওনেল মেসি। মায়ামির তিনটি গোলের জন্মই এসেছে তার সৃষ্ট মুহূর্ত থেকে। ম্যাচের শুরুতে মাত্র আট মিনিটেই মধ্যমাঠে বল পেয়ে দুই ডিফেন্ডারকে পাশ কাটিয়ে মেসি একটি নিখুঁত চিপ পাস বাড়ান তাদেও আলেন্দের দিকে। ডান দিক দিয়ে ঢুকে আলেন্দে ক্রস করেন, যা ভুলবশত নিজেদের জালেই পাঠিয়ে বসেন এডিয়ার ওকাম্পো।

সেই অদ্ভুত আত্মঘাতী গোলেই ম্যাচে এগিয়ে যায় মায়ামি। এগিয়ে যাওয়ার পর অবশ্য আধিপত্য ধরে রাখতে পারেনি মায়ামি। সমতায় ফিরতে দারুণ চেপে ধরে ভ্যানকুভার। দ্বিতীয়ার্ধে সমতাও ফেরায়। ব্রায়ান হোয়াইটের দারুণ সহায়তায় আলি আহমেদের গোল ভ্যানকুভারকে ম্যাচে ফিরিয়ে আনে। এরপর আরও চেপে ধরে দলটি। ৬২ মিনিটে এম্যানুয়েল সাব্বি অবিশ্বাস্য এক সুযোগ পান। তার শট এক পোস্টে লেগে গোললাইনের অল্প দূরত্বে গড়িয়ে অন্য পোস্টে লাগে, ফিরে এসে শট নিলে আবারও পোস্টে ঠেকে বেরিয়ে যায়। তিনবার পোস্টে লেগে গোল না হওয়া সেই মুহূর্তই যেন ভ্যানকুভারের ভাগ্যরেখা আঁকছিল।

ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট এরপরই আসে। ভ্যানকুভারের আন্দ্রেস কুবাস এক মুহূর্ত দেরি করায় তার কাছ থেকে বল ছিনিয়ে নেন মেসি, যা আসলে তার প্রেসিং দক্ষতার দারুণ উদাহরণ। বলটি কাড়ার পরই মেসি নিখুঁতভাবে পাস বাড়ান রদ্রিগো ডি পলের দিকে। ডি পল শান্ত মাথায় ইয়োইহে তাকাওকাকে পরাস্ত করে বল জালে জড়ান, আর সেই গোলেই তৈরি হয় মায়ামির ইতিহাস।

শেষভাগে যোগ করা সময়ে মেসি আবারও আলেন্দেকে এক অনবদ্য পাস বাড়িয়ে দেন, যেটি থেকে আসে আলেন্দের রেকর্ড নবম গোল। এই প্লে-অফে ছয় ম্যাচে মেসির অবদান দাঁড়ায় ১৫ গোল, যার মধ্যে ৬টি গোল, ৯টি অ্যাসিস্ট। শিরোপা জয়ের এ ম্যাচটি ছিল আরেক বিশেষ উপলক্ষ। বার্সেলোনার দুই কিংবদন্তি জর্দি আলবা ও সের্জিও বুসকেতসের ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ। আলবা, যিনি বার্সায় ১১ মৌসুমে ছয় লা লিগা, একটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ এবং স্পেনের হয়ে ইউরো ২০১২ জিতেছেন, বিদায় নিলেন ফুটবল ইতিহাসের অন্যতম সেরা লেফট-ব্যাক হিসেবে।

বুসকেতস বার্সার হয়ে ৭২২ ম্যাচ, ৩২টি ট্রফি আর স্পেনের হয়ে বিশ্বকাপ ও ইউরো জয়ী এক মহীরুহ, শেষ করলেন তার বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারও। দুজনেই নিজেদের পজিশনে ফুটবল বদলে দেওয়ার মতো প্রভাব রেখেছেন।