ঢাকা ০৩:০১ অপরাহ্ন, সোমবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্লট দুর্নীতি মামলা

শেখ হাসিনার ৫, রেহানার ৭, টিউলিপের ২ বছরের কারাদণ্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : ০১:৩০:৩৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১ ডিসেম্বর ২০২৫
  • / ২৪ Time View

শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা এবং টিউলিপ সিদ্দিক

পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বোন শেখ রেহানা এবং ভাগ্নি ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিককে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা দুর্নীতির চারটি মামলায় হাসিনাকে কারাদণ্ড দেওয়া হলো। তিনি বর্তমানে ভারতে রয়েছেন।

আজ সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক মো. রবিউল আলম শেখ হাসিনাকে পাঁচ বছরের, রেহানাকে সাত বছরের ও টিউলিপকে দুই বছরের কারাদণ্ড দেন। এই মামলায় অন্য আসামিরা হলেন, সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ, সাবেক সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন, সাবেক অতিরিক্ত সচিব মো. অলিউল্লাহ, সাবেক প্রশাসনিক কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম সরকার এবং সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব পূরবী গোলদার, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান মো. আনিছুর রহমান মিঞা, সাবেক সদস্য মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, তন্ময় দাস, মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন, সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী ও নুরুল ইসলাম, সাবেক উপ-পরিচালক নায়েব আলী শরীফ ও সাবেক সহকারী পরিচালক মাজহারুল ইসলাম ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন। তাদের সবাইকে পাঁচ বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আসামিদের প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে জরিমানা করেছেন আদালত। জরিমানা অনাদায়ে তাদের অতিরিক্ত ছয় মাসের কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে। রায় দেওয়ার সময় আসামিদের মধ্যে কেবল খুরশীদ আলম আদালতে উপস্থিত ছিলেন। মামলার রেকর্ড অনুসারে, বিচার চলাকালীন মামলায় মোট ৩২ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন।

হাসিনা, ভাগ্নি আজমিনা সিদ্দিক ও টিউলিপ সিদ্দিক এবং ভাগ্নে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববিসহ ২১ জনের বিরুদ্ধে দায়ের করা আরও দুটি দুর্নীতি মামলার বিচার এখন একই আদালতে বিচারাধীন। মামলার রায় আগামী বছরের জানুয়ারিতে ঘোষণা করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে বলে প্রসিকিউশন জানিয়েছে।

দুদক কর্মকর্তারা বলছেন, টিউলিপ তার ক্ষমতা ব্যবহার করে রেহানা, ববি ও আজমিনার জন্য প্লট কিনেছেন। পূর্বাচল নিউ টাউন প্রকল্পের আওতায় প্লট বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগে ১২ থেকে ১৪ জানুয়ারি পর্যন্ত দুদক তাদের ঢাকা সমন্বিত জেলা অফিস-১-এ ছয়টি পৃথক মামলা দায়ের করে। দুদকের অভিযোগ, রাজউকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগসাজশে শেখ হাসিনা তার ছেলে জয়, পুতুল, বোন শেখ রেহানা, তার ছেলে ববি এবং মেয়ে আজমিনার জন্য পূর্বাচল নিউ টাউন প্রকল্পের ২৭ নম্বর সেক্টরের কূটনৈতিক অঞ্চলে অবৈধভাবে ১০ কাঠার ছয়টি প্লট অবৈধভাবে বরাদ্দ নিয়েছেন, যদিও বিদ্যমান বিধি অনুসারে তারা এর যোগ্য ছিলেন না।

২৫ মার্চ দুর্নীতি দমন কমিশন ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে ছয়টি অভিযোগপত্র দাখিল করে। ছয়টি মামলাতেই হাসিনাকে সাধারণ আসামি করা হয়েছে। পরে ৩১ জুলাই হাসিনা, রেহানা, জয়, পুতুল, ববি, টিউলিপ এবং আজমিনাসহ ২৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। গত ২৭ নভেম্বর ৭৮ বছর বয়সী হাসিনাকে তিনটি মামলায় সাত বছর করে মোট ২১ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। পৃথক দুটি মামলায় জয় ও পুতুলকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত।

ওই তিন মামলায় শরীফ, ওয়াছি, পূরবী, আনিছুর, নাসির, সামসুদ্দিন ও খুরশীদকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। আর তিনটি মামলাতেই সাইফুলকে খালাস দেওয়া হয়। সালাহউদ্দিন, তন্ময়, নুরুল ও নায়েব আলীকে দুটি মামলায় বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়, এবং মাজহারুলকে একটি দুর্নীতির মামলায় কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

Please Share This Post in Your Social Media

প্লট দুর্নীতি মামলা

শেখ হাসিনার ৫, রেহানার ৭, টিউলিপের ২ বছরের কারাদণ্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক
Update Time : ০১:৩০:৩৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১ ডিসেম্বর ২০২৫

পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বোন শেখ রেহানা এবং ভাগ্নি ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিককে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা দুর্নীতির চারটি মামলায় হাসিনাকে কারাদণ্ড দেওয়া হলো। তিনি বর্তমানে ভারতে রয়েছেন।

আজ সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক মো. রবিউল আলম শেখ হাসিনাকে পাঁচ বছরের, রেহানাকে সাত বছরের ও টিউলিপকে দুই বছরের কারাদণ্ড দেন। এই মামলায় অন্য আসামিরা হলেন, সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ, সাবেক সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন, সাবেক অতিরিক্ত সচিব মো. অলিউল্লাহ, সাবেক প্রশাসনিক কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম সরকার এবং সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব পূরবী গোলদার, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান মো. আনিছুর রহমান মিঞা, সাবেক সদস্য মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, তন্ময় দাস, মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন, সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী ও নুরুল ইসলাম, সাবেক উপ-পরিচালক নায়েব আলী শরীফ ও সাবেক সহকারী পরিচালক মাজহারুল ইসলাম ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন। তাদের সবাইকে পাঁচ বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আসামিদের প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে জরিমানা করেছেন আদালত। জরিমানা অনাদায়ে তাদের অতিরিক্ত ছয় মাসের কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে। রায় দেওয়ার সময় আসামিদের মধ্যে কেবল খুরশীদ আলম আদালতে উপস্থিত ছিলেন। মামলার রেকর্ড অনুসারে, বিচার চলাকালীন মামলায় মোট ৩২ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন।

হাসিনা, ভাগ্নি আজমিনা সিদ্দিক ও টিউলিপ সিদ্দিক এবং ভাগ্নে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববিসহ ২১ জনের বিরুদ্ধে দায়ের করা আরও দুটি দুর্নীতি মামলার বিচার এখন একই আদালতে বিচারাধীন। মামলার রায় আগামী বছরের জানুয়ারিতে ঘোষণা করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে বলে প্রসিকিউশন জানিয়েছে।

দুদক কর্মকর্তারা বলছেন, টিউলিপ তার ক্ষমতা ব্যবহার করে রেহানা, ববি ও আজমিনার জন্য প্লট কিনেছেন। পূর্বাচল নিউ টাউন প্রকল্পের আওতায় প্লট বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগে ১২ থেকে ১৪ জানুয়ারি পর্যন্ত দুদক তাদের ঢাকা সমন্বিত জেলা অফিস-১-এ ছয়টি পৃথক মামলা দায়ের করে। দুদকের অভিযোগ, রাজউকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগসাজশে শেখ হাসিনা তার ছেলে জয়, পুতুল, বোন শেখ রেহানা, তার ছেলে ববি এবং মেয়ে আজমিনার জন্য পূর্বাচল নিউ টাউন প্রকল্পের ২৭ নম্বর সেক্টরের কূটনৈতিক অঞ্চলে অবৈধভাবে ১০ কাঠার ছয়টি প্লট অবৈধভাবে বরাদ্দ নিয়েছেন, যদিও বিদ্যমান বিধি অনুসারে তারা এর যোগ্য ছিলেন না।

২৫ মার্চ দুর্নীতি দমন কমিশন ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে ছয়টি অভিযোগপত্র দাখিল করে। ছয়টি মামলাতেই হাসিনাকে সাধারণ আসামি করা হয়েছে। পরে ৩১ জুলাই হাসিনা, রেহানা, জয়, পুতুল, ববি, টিউলিপ এবং আজমিনাসহ ২৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। গত ২৭ নভেম্বর ৭৮ বছর বয়সী হাসিনাকে তিনটি মামলায় সাত বছর করে মোট ২১ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। পৃথক দুটি মামলায় জয় ও পুতুলকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত।

ওই তিন মামলায় শরীফ, ওয়াছি, পূরবী, আনিছুর, নাসির, সামসুদ্দিন ও খুরশীদকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। আর তিনটি মামলাতেই সাইফুলকে খালাস দেওয়া হয়। সালাহউদ্দিন, তন্ময়, নুরুল ও নায়েব আলীকে দুটি মামলায় বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়, এবং মাজহারুলকে একটি দুর্নীতির মামলায় কারাদণ্ড দেওয়া হয়।